আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
55 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (6 points)
আমার এক বান্ধবী হিন্দু , সে আমাকে প্রশ্ন করেছে - গাজায় ফিলিস্তিনে এতো মানুষ মারা যাচ্ছে ,আল্লাহ তো চাইলেই বাচাতে পারেন । তাহলে আল্লাহ কেন বাচান না মানুষদের ?? এটার উত্তর যদি দিতেন ভালো হতো। যাতে ইসলাম নিয়ে আমার ওই বান্ধবীর মনে খারাপ ধারণা না আসে ,ইসলামের সঠিক ইতিহাস জানতে পারে ।
by (14 points)
হ্যাঁ আপু, ভবিষ্যৎবাণী আছে!! 

সাওবান (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ খাদ্য গ্রহণকারীরা যেভাবে খাবারের পাত্রের চতুর্দিকে একত্র হয়, অচিরেই বিজাতিরা তোমাদের বিরুদ্ধে সেভাবেই একত্রিত হবে। এক ব্যক্তি বললো, সেদিন আমাদের সংখ্যা কম হওয়ার কারণে কি এরূপ হবে? তিনি বললেনঃ তোমরা বরং সেদিন সংখ্যাগরিষ্ঠ হবে; কিন্তু তোমরা হবে প্লাবনের স্রোতে ভেসে যাওয়া আবর্জনার মত। আর আল্লাহ তোমাদের শত্রুদের অন্তর হতে তোমাদের পক্ষ হতে আতঙ্ক দূর করে দিবেন, তিনি তোমাদের অন্তরে ভীরুতা ভরে দিবেন। এক ব্যক্তি বললো, হে আল্লাহর রাসূল! ‘আল-ওয়াহ্ন’ কি? তিনি বললেনঃ দুনিয়ার মোহ এবং মৃত্যুকে অপছন্দ করা।

[সুনান আবু দাউদ, হাদিস নং ৪২৯৭ , সহিহ হাদিস] হাদিসটি দেখুন

এখন যদি এমন না ঘটত, ইসলামবিরোধীরা নিজেরাই বলত, "কেন এমন হচ্ছে না?!" এদিক দিয়ে না হয় ঐ দিক দিয়েও ভুল ধরার চেষ্টা করত। 
সুতরাং, "দুনিয়ার মোহ এবং মৃত্যুকে অপছন্দ করার" জন্য এমন হচ্ছে। পিরিয়ড। 



এবার একটু UNO REVERSE খেলতে পারেন আপনার বান্ধবীর সাথে! তাকে জিজ্ঞেস করুন, "গজনি মাহমুদ যখন ভারতে এসে সোমনাথ মন্দির,  থানেশ্বর মন্দির, নগরকোট মন্দির ধ্বংস করেছিলেন, তখন তাদের ৩৩ কোটি দেবতা কোথায় ছিল? বর্তমানে পাকিস্তানে মারাত্মক পরিমাণে হিন্দু নির্যাতন করা হয়, এখন ওদের দেবতারা কি করছে?" 

এর কোনও জবাব ওদের নাই! আমি জানি কি বলবে! বলবে ওদের আসলে ৩৩ কোটি দেবতা নাই, এর জবাবে মহাভারত উল্লেখ করবেন, 
"And then the thirty-three crores of gods and all the powerful Marutas and the Sadhyas with the Vasus returned to the charge." 
[Mahabharata, Vana parva (বনপর্ব), অধ্যায় ২৩০ (SECTION CCXXX) ] লিংক


1 Answer

0 votes
by (677,850 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

আল্লাহ অবশ্যই সবকিছু করতে সক্ষম, তিনিই সৃষ্টি করেছেন আমাদের এবং তিনি আমাদের জীবনে যা ঘটছে, সব জানেন। কিন্তু এই দুনিয়া পরীক্ষার জায়গা — কষ্ট, দুঃখ, যুদ্ধ, আনন্দ সবই পরীক্ষার অংশ:

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَ لَنَبۡلُوَنَّکُمۡ بِشَیۡءٍ مِّنَ الۡخَوۡفِ وَ الۡجُوۡعِ وَ نَقۡصٍ مِّنَ الۡاَمۡوَالِ وَ الۡاَنۡفُسِ وَ الثَّمَرٰتِ ؕ وَ بَشِّرِ الصّٰبِرِیۡنَ ﴿۱۵۵﴾ۙ 

“আমি অবশ্যই তোমাদেরকে একটু ভয়, ক্ষুধা, ধন-সম্পদ, প্রাণ ও ফল-ফসলের ক্ষতির মাধ্যমে পরীক্ষা করবো। আর ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও।”
 সূরা বাকারা, আয়াত ১৫৫

গাজায় মানুষ শুধু কষ্ট পাচ্ছে না, অনেকেই ধৈর্য, সাহস, ইমান দিয়ে দৃষ্টান্ত তৈরি করছে — এটাই এক ধরনের শহিদী মর্যাদা ও পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পথ।

সকল অন্যায়ের জবাব কিয়ামতের দিন হবে।
এই দুনিয়ায় সব ন্যায্য বিচার সবসময় হয় না — অনেক জালিম পার পেয়ে যায়, আর মজলুম কষ্ট পায়। কিন্তু:

“অবশ্যই আল্লাহ্ জালিমদের কোনো অবস্থাতেই ছেড়ে দেবেন না, তবে তিনি তাদেরকে এমন একটি দিন পর্যন্ত বিলম্ব দেন যাতে তাদের চোখ হতবাক হয়ে যাবে।”
(সূরা ইবরাহিম, আয়াত ৪২)

সুতরাং চূড়ান্ত বিচার হবে আখেরাতে। দুনিয়ার অন্যায় কোনোভাবেই “চিরস্থায়ী” নয়।

★মুসলমানরা কি আজ একতাবদ্ধ?

আমরা নিজেরাই কতটুকু ঐক্যবদ্ধ? আজ অনেক মুসলিম দেশ নির্যাতিত মুসলিমদের জন্য কিছুই করে না, বরং রাজনীতি আর স্বার্থ নিয়ে ব্যস্ত। অনেক সময় মুসলিমদের দুর্বলতা ও গাফেলতির কারণেও আল্লাহর সাহায্য আসে না।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

 اِنَّ اللّٰہَ لَا یُغَیِّرُ مَا بِقَوۡمٍ حَتّٰی یُغَیِّرُوۡا مَا بِاَنۡفُسِہِمۡ ؕ

“আল্লাহ কোনো কওমের অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না তারা নিজেদের অবস্থার পরিবর্তন ঘটায়।”
— সূরা রা’দ, আয়াত ১১

আল্লাহর দয়া ও সাহায্য সবসময় দৃশ্যমান হয় না।
অনেক সময় আমরা ভাবি আল্লাহ সাহায্য দেন মানেই যুদ্ধ থেমে যাবে। কিন্তু সাহায্য আসতে পারে অন্য ভাবেও।

★মুসলিম হিসেবে আমাদের দায়িত্ব:

দোয়া করা – গাজা, কাশ্মীর, সিরিয়া, চীনের মুসলিমদের জন্য।

সাহায্য পাঠানো – যতটুকু সম্ভব আর্থিক বা সামাজিক সহায়তা।

গনসচেতনতা তৈরি – মানুষকে জানানো, প্রতিবাদ করা।

নিজেকে সংশোধন – নামাজ, তাকওয়া, একতা ফিরিয়ে আনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
একজন বিন্দু বোনের প্রশ্ন ছিলো এটা । তাই গাজা নিয়ে কোন ভবিষ্যতবাণী কি আছে ? কিয়ামতের কোন আলামত কি আছে ? যাতে সেই হিন্দু বোনকে বুঝাতে সুবিধা হয় । 
by (677,850 points)
সহিহ বুখারি ও মুসলিমে বর্ণিত:

 عَنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ:
"طُوبَى لِلشَّامِ"
قُلْنَا: لِمَ ذَاكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟
قَالَ: "إِنَّ مَلَائِكَةَ الرَّحْمَةِ بَاسِطَةٌ أَجْنِحَتَهَا عَلَيْهَا"

অনুবাদ:
জায়েদ ইবনে সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সঃ) বললেন:
"শাম (অঞ্চল) এর জন্য সুসংবাদ!"
আমরা বললাম: হে আল্লাহর রাসূল, কেন?
তিনি বললেন: "কারণ রহমতের ফেরেশতারা তাদের ডানাগুলো শামের ওপর বিস্তৃত করে রেখেছে।"
(তিরমিজি, হাসান সহিহ)

★এই হাদিস থেকে বোঝা যায়, শাম অঞ্চল বিশেষ ফজিলতপূর্ণ ও আল্লাহর বিশেষ রহমতের অধীন। গাজা যেহেতু শামের অন্তর্ভুক্ত, তাই এটিও এর আওতায় পড়ে।

★ফিলিস্তিন বা বাইতুল মুকাদ্দাস মুক্তির ভবিষ্যদ্বাণী

একটি হাদিসে রাসূল (সাঃ) ভবিষ্যৎবাণী করেছেন যে, বাইতুল মুকাদ্দাস (জেরুজালেম) এক সময় মুসলিমদের নিয়ন্ত্রণে আসবে:

"لَتُقَاتِلُنَّ الْيَهُودَ فَلَتَقْتُلُنَّهُمْ، حَتَّى يَقُولَ الْحَجَرُ: يَا مُسْلِمُ، هَذَا يَهُودِيٌّ تَحْتِي فَاقْتُلْهُ."
(সহিহ মুসলিম)

অনুবাদ:
তোমরা অবশ্যই ইয়াহুদিদের (ইহুদিদের) সাথে যুদ্ধ করবে, এবং তাদের পরাজিত করবে; এমনকি পাথরও বলবে, ‘হে মুসলমান, আমার নিচে একজন ইয়াহুদি লুকিয়ে আছে, তাকে হত্যা করো।’

এই হাদিস অনেক ইসলামি বিশ্লেষক ভবিষ্যতের একটি সংঘর্ষ বা যুদ্ধের প্রতীক হিসেবে ব্যাখ্যা করেন, যেখানে মুসলমানরা ফিলিস্তিনের দখল ফিরিয়ে নেবে।

★শেষযুগে মুজাহিদদের অবস্থান

কিছু হাদিসে শেষ যামানায় আল্লাহর পক্ষ থেকে বিজয় প্রাপ্ত মুজাহিদদের একটি দল সম্পর্কে বলা হয়েছে যারা "বাইতুল মুকাদ্দাস ও এর আশেপাশে" অবস্থান করবে।

সুনান আবু দাউদে আছে:

"لاَ تَزَالُ طَائِفَةٌ مِنْ أُمَّتِي يُقَاتِلُونَ عَلَى الْحَقِّ، ظَاهِرِينَ عَلَى مَنْ نَاوَأَهُمْ، حَتَّى يُقَاتِلَ آخِرُهُمْ الْمَسِيحَ الدَّجَّالَ"
قِيلَ: وَأَيْنَ هُمْ؟ قَالَ: "بِبَيْتِ الْمَقْدِسِ وَأَكْنَافِ بَيْتِ الْمَقْدِسِ"

অনুবাদ:
"আমার উম্মতের একটি দল সর্বদা সত্যের উপর লড়াই করতে থাকবে, যারা তাদের বিরোধিতা করবে তাদের ওপর বিজয়ী থাকবে, এমনকি তারা দাজ্জালের সঙ্গেও যুদ্ধ করবে।"
জিজ্ঞেস করা হলো: তারা কোথায় থাকবে?
তিনি বললেন: "বাইতুল মুকাদ্দাস ও এর আশপাশে।"

★গাজা, যেহেতু বাইতুল মুকাদ্দাসের (জেরুজালেম) নিকটবর্তী, অনেক ইসলামি বিশ্লেষক মনে করেন এই হাদিস তাদেরকেও নির্দেশ করতে পারে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...