আসসালা মুআলাইকুম।
আমি একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। এখন পোড়াশোনা শেষ হয়েছে কয়দিন আগে। বর্তমানে আমি ইসলাম মেনে চলার চেষ্টা করি, ৫ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদ এ পড়ার পাশাপাশি দৈনিক নফল জিকির, ইশরাক, চাশত, আওয়াবিন এবং ঘুমানোর আগে তাহাজ্জুদ ও পড়ার চেষ্টা করি।
আমি হেদায়েত পাবার আগে, ছাত্র থাকা অবস্থায় আমি কিছু মেয়েদের সাথে মিশতাম, পড়াশোনার খাতিরেই। এদের মধ্যে এক মেয়ের থেকে আমার কাছে বিয়ের প্রস্তাব আসে। আমি আমার বাড়ীতে জানাই। কিন্তু আমার বাড়ীতে তখন আমার বিয়ে দেয়ার মত অবস্থা না থাকায় আর আমার নিজের বড় ভাই থাকায় তাদের এই বিষয়টা নিয়ে সিরিয়াস হতে প্রায় ৬-৭ মাস লেগে যায়। এই সময়টা আমি প্রায় ১৫-২০ বারের মত তার সাথে নির্জনে দেখা করি এই ভেবে যে বিয়ের আগে তাকে চেনা দরকার (যা আমার ভুল ছিল)। এর মাঝেই সে এবং আমি একে অপরের প্রতি অনুভুতি তৈরি করে বসি। এরপর যখন আমার পরিবার তাকে দেখতে যায় তখন তাদের আর্থসামাজিক অবস্থা আমাদের সাথে না মেলায় পরিবার থেকে বিয়েটা ভেংগে যায়। এর মধ্যেই বা আগেই আমার মাঝেও অনুতাপ আসে, যে আমার তার সাথে দেখা করে উচিত না এবং আমি তাকে বলে দেই যে আমাদের বিয়ে হবে কিনা আল্লাহ ভালো জানেন, তার আগে এভাবে আর কথা বলব না।
কিন্তু বিয়ে ভেংগে যাওয়ার পর সে বিষয়টা মেনে নিতে পারে না। সে যেহেতু আমার ক্যাম্পাসেরই, সে নানাভাবে আমার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে।
আরেকটি কথা ইসলাম ও ঈমানের দিক থেকে সে আমার সমতুল্য না। আমি ধিরে ধিরে তওবা করে আল্লাহর রাস্তায় ফিরে আসার চেষ্টা করি। কিন্তু সে যদিও বেসিক ইসলাম ধারণ করে, নামাজ পড়ে, পর্দা করে নিকাব সহ কিন্তু আমাকে ভুলতে পারে না। তার বন্ধুরা আমাকে মাঝে মাঝে বলে যে সে এই ২ বছর পরেও ঘুমের মধ্যে আমার নাম বলে, মাঝে মাঝে নাকি একা হয়ে কাঁদে। কিছু বললে সে বলে যে সে আল্লাহর কাছে দুয়া করেছে, এবং এখনো আশা করে যে তার আমার সাথে বিয়ে হবে যদিও আমি তাকে পরিষ্কার করে বলে দিয়েছি যে আমাদের বিয়ে সম্ভব না। কিন্তু সে আশা ছাড়ে না। এভাবে তার বাসায় আসা অনেক পাত্র সে ফিরিয়ে দিয়েছে। এমনো শুনেছি কখনোও কাদতে কাদতে সে অজ্ঞান এর মত হয়ে যায়।
আমি বিয়ে ভেংগে যাবার পর তার সাথে আর কথা বলি না ২ বছর থেকে,কিন্তু ক্যম্পাসে হাটা চলায় দেখা হয়ে যায় দূর থেকে। শুনেছি সে নাকি এটাকে আল্লাহর সাইন হিসেবে নেয়, কারণ সে দুআ করেছে।
এখন তার এই অবস্থা দেখে ইদানিং আমিও একটু সন্দিহান হয়ে পড়েছি যে আমার তাকে এমতাবস্থায় বিয়ে করে ফেলা উচিত কিনা। তার পরিবারের আর্থসামাজিক অবস্থা আমাদের থেকে বেশ নিচে এবং তাদের ইসলামিক অবস্থাও আমাদের পরিবার থেকে নিচে। তবে মেয়ে ইসলামের বেপারে আগ্রহী মনে হয়।
নাকি এখন যেমন আছি তেমনি ভালো, আমি আমার মত অন্য মেয়েকে বিয়ে করে নিব তাকে আল্লাহর উপর ছেড়ে দিয়ে?
বা আমার আর কি করনীয় থাকতে পারে?