আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
39 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (12 points)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ, হযরত।

আশা করছি, আপনি আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছেন। কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন পেশ করছি, যেগুলোর উত্তর জানা আমার জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। দয়া করে কুরআন-সুন্নাহ ও ফিকহের আলোকে এগুলোর সঠিক ব্যাখ্যা ও দিকনির্দেশনা প্রদান করলে আমি কৃতজ্ঞ থাকব।

 

বিয়ে সংক্রান্ত প্রশ্ন:

১. যদি কোনো পাত্র বিদেশে অবস্থান করেন এবং বর্তমানে তার পক্ষে দেশে আসা সম্ভব না হয়, সে ক্ষেত্রে পরিবার যদি মেয়ের বিয়ে ঠিক করে, তাহলে কি মোবাইলের মাধ্যমে বিয়ে সম্পাদন করা শরীয়তসম্মত হবে? যদি জায়েয হয়, তাহলে বিয়ের ক্ষেত্রে কী কী শর্ত বা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে? অনুগ্রহ করে বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করলে উপকারে আসবে।

 

ওযু ও নামাজে মনোযোগ বিঘ্নিত হওয়ার সমস্যা:

২. আমি লক্ষ্য করেছি, ওযু করলেই আমার বায়ু চাপের অনুভূতি আসে। অথচ ওযুর আগে এ সমস্যা তেমন হয় না। অনেক সময় নামাজে দাঁড়ালেই ঘনঘন হাই আসে। এসব কি শয়তানের কোনো ধোঁকা বা কুমন্ত্রণার ফল? এই সমস্যাগুলো থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কোনো দোয়া বা আমল থাকলে জানাবেন দয়া করে।

 

ইমান পুনর্নবায়নের প্রসঙ্গে:

৩. পূর্বে অজ্ঞতা ও মানসিক অস্থিরতার কারণে কখনো আল্লাহর প্রতি খারাপ ধারণা পোষণ করেছি, মুখে গালিগালাজও উচ্চারিত হয়েছে এবং এমন কথাও বলেছি যা ইমান নষ্ট হওয়ার শামিল হতে পারে। যদি সত্যিই আমার ইমান নষ্ট হয়ে থাকে, তাহলে ইমান পুনর্নবায়নের সঠিক পদ্ধতি কী? আমাকে করণীয় কীভাবে সম্পন্ন করতে হবে?

 

নামাজ ও আয়না:

৪. ঘরের দেয়ালে আয়না লাগানো আছে। অনেক সময় আয়নার সামনেই নামাজ পড়তে হয়। আয়নার সামনে নামাজ আদায় করা কি সহীহ হবে? নাকি নামাজের সময় আয়না ঢেকে রাখা আবশ্যক?

 

নারী হারিয়ে গেলে বিজ্ঞপ্তি:

৫. যদি কোনো মহিলা নিখোঁজ হন, তাহলে কি তার ছবি ব্যবহার করে হারানো বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা শরীয়তসম্মত হবে? এ বিষয়ে শরীয়তের দৃষ্টিভঙ্গি জানতে চাই।

 

শুভেচ্ছাবার্তা ও ইসলামী আদব:

৬. আমরা অনেক সময় “জুমা মুবারক”, “শুভ সকাল”, “শুভ রাত্রি”, “আপনার দিনটি শুভ হোক”, “সবার মঙ্গল কামনা করি” এ ধরনের শব্দ ব্যবহার করি। শরীয়তের দৃষ্টিতে এসব কথাবার্তা বলা কি জায়েয? যদি না হয়, তাহলে মুসলিম হিসেবে এর উপযুক্ত বিকল্প কী হতে পারে?

 

সীরাতে রাসূল ﷺ জানার জন্য বই:

৭. রাসূলুল্লাহ ﷺ এর জীবনী জানার জন্য সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ও সহজবোধ্য কোন কিতাবটি পড়া উত্তম হবে? এমন একটি কিতাবের পরামর্শ চাই, যা একজন সাধারণ মুসলমান মনোযোগসহকারে পড়ে রাসূল ﷺ এর জীবন সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পেতে পারে।

 

আল্লাহ তাআলা আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন এবং আমাদের সকলকে সঠিক ইলম অর্জন ও আমলের তাওফিক দান করুন। যাযাকুমুল্লাহু খাইরান।

1 Answer

0 votes
ago by (652,020 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
ইসলামী শরীয়তে বিবাহ শুদ্ধ হবার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে। যথা-
বর ও কনেকে কিংবা তাদের প্রতিনিধিকে ইজাব তথা প্রস্তাবনা ও কবুল বলতে হয়।

উক্ত ইজাব ও কবুলটি বলতে হয় দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক মসলিম পুরুষ বা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলার সামনে।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَ اسۡتَشۡہِدُوۡا شَہِیۡدَیۡنِ مِنۡ رِّجَالِکُمۡ ۚ فَاِنۡ لَّمۡ یَکُوۡنَا رَجُلَیۡنِ فَرَجُلٌ وَّ امۡرَاَتٰنِ مِمَّنۡ تَرۡضَوۡنَ مِنَ الشُّہَدَآءِ اَنۡ تَضِلَّ اِحۡدٰىہُمَا فَتُذَکِّرَ اِحۡدٰىہُمَا الۡاُخۡرٰی

আর তোমরা তোমাদের পুরুষদের মধ্য হতে দু’জন সাক্ষী রাখ, অতঃপর যদি দু’জন পুরুষ না হয় তবে একজন পুরুষ ও দু’জন স্ত্রীলোক যাদেরকে তোমরা সাক্ষী হিসেবে পছন্দ কর, যাতে স্ত্রীলোকদের মধ্যে একজন ভুলে গেলে তাদের একজন অপরজনকে স্মরণ করিয়ে দেয়।
(সুরা বাকারা ২৮২)

হাদিস শরিফে এসেছে, 

لَا يَجُوزُ نِكَاحٌ، وَلَا طَلَاقٌ، وَلَا ارْتِجَاعٌ إِلَّا بِشَاهِدَيْنِ

‘রাসূল (সা.) বলেছেন, দুইজন সাক্ষী ছাড়া বিবাহ, তালাক ও ফিরিয়ে আনা বৈধ হবে না।’ [মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদিস: ১০২৫৪]

قوله صلى الله عليه وسلم : ( لا نكاح إلا بولي وشاهدي عدل ) رواه البيهقي من حديث عمران وعائشة ، وصححه الألباني في صحيح الجامع (7557) 

রাসুলুল্লাহ  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “অভিভাবক ও দুইজন সাক্ষী ছাড়া কোন বিবাহ নেই।” [তাবারানী কর্তৃক সংকলিত, সহীহ জামে (৭৫৫৮)]।

 নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী- “তোমরা বিয়ের বিষয়টি ঘোষণা কর।”[মুসনাদে আহমাদ এবং সহীহ জামে গ্রন্থে হাদিসটিকে ‘হাসান’ বলা হয়েছে (১০৭২)]
۔
ইজাব ও কবুলটি উভয় সাক্ষ্যি স্বকর্ণে শুনতে হবে।

উক্ত তিনটির কোন একটি শর্ত না পাওয়া গেলে ইসলামী শরীয়তে বিবাহ শুদ্ধ হয় না।

উপরোক্ত তিনটি শর্ত  পাওয়া গেলে বিবাহ হবে,অন্যথায় বিবাহ হবেনা।
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,    
বিবাহ সহীহ হওয়ার জন্য শর্ত হল দু’জন আযাদ প্রাপ্ত বয়স্ক বিবেকবান দুই জন মুসলিম স্বাক্ষীর সামনে পাত্র/পাত্রি প্রস্তাব দিবে আর অপরপক্ষে পাত্র/পাত্রি তা কবুল করবে। আর সাক্ষিগণ উভয়ের কথা সুষ্পষ্টভাবে শুনবে। আর শরয়ী এ শর্তাবলী পরিপূর্ণভাবে টেলিফোনে পাওয়া সম্ভব নয়। তাই টেলিফোন বা মোবাইলে বিবাহ করা জায়েজ নয়। {ফাতওয়ায় উসমানী-২/৩০৪,৩০৫}

মোবাইলে বা টেলিফোনে বিবাহ করার পদ্ধতি হল-উভয় পক্ষ থেকে এক পক্ষ অপরপক্ষ যেখানে থাকে সেখানের কোন ব্যক্তিকে উকীল বানাবে। 

তারপর সে উকীল দু’জন সাক্ষীর সামনে বিবাহ করিয়ে দিবে। তাহলে বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যাবে। এছাড়া সরাসরি মোবাইলে বা টেলিফোনে প্রস্তাব ও কবুল করার দ্বারা বিবাহ সহীহ হবে না।

আরো জানুনঃ- 

(০২)
এগুলো শয়তানের ওয়াসওয়াসা।

এক্ষেত্রে করনীয় জানুনঃ- 

(০৩)
আপনি ঈমান নবায়ন করে নিবেন।

এ সংক্রান্ত জানুনঃ- 

(০৪)
আয়নার সামনে সালাত আদায় করা যাবে।

তবে আয়নার দিকে চোখ একদম ফিরানো যাবেনা, বরং নিচের দিকে তাকিয়ে সালাত আদায় করতে হবে। হঠাৎ আয়নার দিকে চোখ পড়লে সঙ্গে সঙ্গে ফিরিয়ে নিতে হবে, তাহলে সালাত আদায়ে কোনো সমস্যা হবে না। 

সুতরাং আয়না ঢেকে রেখে নামাজ পড়লে ভালো হয়।

এ সংক্রান্ত জানুনঃ- 

(০৫)
বিশেষ ওযর বশত এমনটি করে থাকলে,পরবর্তীতে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলে আশা করি আল্লাহ তায়ালা ক্ষমা করবেন।

(০৬)
“জুমা মুবারক” বলাকে অনেক ইসলামী স্কলারগন বিদ'আত বলেছেন।

“শুভ সকাল”, “শুভ রাত্রি” বা এই জাতীয় বাক্য বিজাতীয় সংস্কৃতির অন্তর্ভুক্ত, এগুলো বলা জায়েজ নেই।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৭)
আর রহিকুল মাখতুম পড়তে পারেন।
'সিরাতে খাতামুল আম্বিয়া' গ্রন্থখানা পড়তে পারেন।
সীরাতে মুস্তফা গ্রন্থখানা পড়তে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...