ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,
وَلَوْ كُتِبَ الْقُرْآنُ عَلَى الْحِيطَانِ وَالْجُدَرَانِ بَعْضُهُمْ قَالُوا: يُرْجَى أَنْ يَجُوزَ، وَبَعْضُهُمْ كَرِهُوا ذَلِكَ مَخَافَةَ السُّقُوطِ تَحْتَ أَقْدَامِ النَّاسِ، كَذَا فِي فَتَاوَى قَاضِي خَانْ.
كِتَابَةُ الْقُرْآنِ عَلَى مَا يُفْتَرَشُ وَيُبْسَطُ مَكْرُوهَةٌ، كَذَا فِي الْغَرَائِبِ.
দেয়ালে লিখিত কুরআনে বিষয়ে শরয়ী বিধি-বিধান নিয়ে উলামাদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। কিছুসংখ্যক উলামায়ে কেরাম এটাকে জায়েযই মনে করেন।আবার কিছুসংখ্যক উলামায়ে কেরাম এটাকে অপছন্দ করে থাকেন।এজন্য যে,হয়তো তা মানুষের পদতলে পৃষ্ট হতে পারে।(ফাতাওয়ায়ে কাযিখান)এবং বসা বা ঘুমানোর জায়গায় কুরআন লিখা মাকরুহ। (গারাঈব)(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া;৫/৩২৩)
অনুপযুক্ত স্থানে কুরআন লিখা অনুচিত। মসজিদের দেয়ালে অযথা কুরআনের আয়াত না লিখাই ভালো।(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যা-১৫/২৬৩)
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!
ফুকাহায়ে কেরামদের উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা বুঝা গেল যে,পদপৃষ্ঠ সম্ভাবনাময় স্থানে কুরআন লিখা মাকরুহ।যদি দেয়ালে এমনভাবে লিখা হয় যা কখনো পড়ে গিয়ে পদপৃষ্ঠ হওয়া বা অসম্মানিত হওয়ার সম্ভাবানা নাই, তাহলে তা নাজায়েয হবে না। তবে সেটা আমাদের সালাফদের রীতিনীতি নয়।তাই এত্থেকে বেঁচে থাকাই উত্তম।
https://www.ifatwa.info/7221
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
মুহাব্বতের কারণে "আল্লাহ" বা "মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম" এর নাম দেয়ালে বা ছবির ফ্রেমে যত্ন সহকারে সংরক্ষণ করে রাখা জায়েয হলেও তা সালাফদের রীতিনীতি নয়। আল্লাহ এবং রাসূলের নাম অন্তরে রাখাই কাম্য।
(২) জায়েয হবে। তবে না দেয়াই উত্তম। তবে যদি দিতেই হয়, তাহলে নিজে তাদের ঘরের এমন স্থানে বেঁধে দিতে হবে যেখান পড়ে যাবার কোনো সন্দেহ থাকবে না।
(৩)এমনভাবে লিখতে হবে, যা কখনো পড়ে গিয়ে পদপৃষ্ঠ হওয়া বা অসম্মানিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না, বা থাকতে পারবে না।
(৪) জ্বী লিখে রাখা যাবে, তবে শর্ত হল, এমন ভাবে লিখে রাখতে হবে , যাতে পড়ে গিয়ে পদপৃষ্ঠ হওয়া বা অসম্মানিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।
(৫) কুরআন বা দ্বীনি বইয়ে পৃষ্ঠা মার্ক করে রাখা বা হাদিয়া দেয়া যাবে, যেখানে লেখা থাকবে আরবিতে বা ইংরেজিতে "ইকরা", " রব্বি যিদনি ইলমা", "বিসমিল্লাহ", যেন পেইজও মার্ক করা যায় আর লেখাটা চোখে পড়লে যেন পড়া যায়। এ সব জায়েয হবে, কেননা এখানের অসম্মাণের কোনো সম্ভাবনা নাই।
(৬) এই ধরনের ক্যালিগ্রাফি, বুকমার্ক বিক্রি করা হালাল হবে। তবে বিক্রি করার পূর্বে এসব জিনিষকে এমনভাবে তৈরী করতে হবে, যা ক্রয় করার পর তাকে শুধু ঐ জায়গায়ই রাখা যায়, যেখানে কখনো ঐ জিনিষ অসম্মাণিত হবে না।
(৭) বড় ড্রইং খাতায় কেউ যদি মুহাব্বাত করে কাবা, মাসজিদে নববী, মাসজিদুল আকসা এবং এ ধরনের ছোট ক্যালিগ্রাফিগুলো আঁকে ও যথাযথভাবে সংরক্ষণ করে, তাহলে তা জায়েজ হবে ।এতে কোনো সন্দেহ নাই।