আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
381 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (18 points)
closed by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু
১. সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য নয়, মুহাব্বতের কারণে কেউ যদি "আল্লাহ"  বা "মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম" এর নাম লিখে দেয়ালে বা ছবির ফ্রেমে টেবিলে রাখে যত্ন সহকারে তাহলে কি তা জায়েজ হবে?
২. আল্লাহর প্রতি, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি ভালোবাসা বৃদ্ধি পাবে এই উদ্দেশ্যে আত্মীয় ছোট ভাইবোনকে এভাবে লিখে হাদিয়া দেয়া যাবে কি?
৩. একইভাবে কোনো ছোট দরুদ লিখে রাখা যাবে কি, এই উদ্দেশ্যে যে কেউ টেবিলের সামনে আসলে একবার দরুদ পড়বে?
৪. এভাবে "সুবহান আল্লাহ"  "আলহামদুলিল্লাহ" "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ" ইত্যাদি ছোট যিকিরগুলো লিখে রাখা যাবে কি সবার পড়ার উদ্দেশ্যে? এবং এগুলো হাদিয়া দেয়া যাবে কি?
৫. কুরআন বা দ্বীনি বইয়ে পৃষ্ঠা মার্ক করে রাখার জন্য এমন বুকমার্ক বানানো বা হাদিয়া দেয়া যাবে কি, যেখানে লেখা থাকবে আরবিতে বা ইংরেজিতে "ইকরা", " রব্বি যিদনি ইলমা", "বিসমিল্লাহ", যেন পেইজও মার্ক করা যায় আর লেখাটা চোখে পড়লে যেন পড়া যায়?
৬. এইধরনের ক্যালিগ্রাফি, বুকমার্ক বিক্রি করা হালাল হবে কি? এখানে কোনো কুরআনের আয়াত বা হাদিসকে প্রাধান্য দেয়া হবে না, কারণ মর্যাদার ব্যাপারটা খেয়াল করা হবে ইন শা আল্লাহ।
৭. বড় ড্রইং খাতায় কেউ যদি মুহাব্বাত করে কাবা, মাসজিদে নববী, মাসজিদুল আকসা এবং এ ধরনের ছোট ক্যালিগ্রাফিগুলো আঁকে ও যথাযথভাবে সংরক্ষণ করে তাহলে তা জায়েজ হবে কি?
জাযাকাল্লাহু খইরন শায়েখ।
closed

1 Answer

0 votes
by (590,550 points)
selected by
 
Best answer
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,
وَلَوْ كُتِبَ الْقُرْآنُ عَلَى الْحِيطَانِ وَالْجُدَرَانِ بَعْضُهُمْ قَالُوا: يُرْجَى أَنْ يَجُوزَ، وَبَعْضُهُمْ كَرِهُوا ذَلِكَ مَخَافَةَ السُّقُوطِ تَحْتَ أَقْدَامِ النَّاسِ، كَذَا فِي فَتَاوَى قَاضِي خَانْ.
كِتَابَةُ الْقُرْآنِ عَلَى مَا يُفْتَرَشُ وَيُبْسَطُ مَكْرُوهَةٌ، كَذَا فِي الْغَرَائِبِ.
দেয়ালে লিখিত কুরআনে বিষয়ে শরয়ী বিধি-বিধান নিয়ে উলামাদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। কিছুসংখ্যক উলামায়ে কেরাম এটাকে জায়েযই মনে করেন।আবার কিছুসংখ্যক উলামায়ে কেরাম এটাকে অপছন্দ করে থাকেন।এজন্য যে,হয়তো তা মানুষের পদতলে পৃষ্ট হতে পারে।(ফাতাওয়ায়ে কাযিখান)এবং বসা বা ঘুমানোর জায়গায় কুরআন লিখা মাকরুহ। (গারাঈব)(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া;৫/৩২৩)

অনুপযুক্ত স্থানে কুরআন লিখা অনুচিত। মসজিদের দেয়ালে অযথা কুরআনের আয়াত না লিখাই ভালো।(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যা-১৫/২৬৩)

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!
ফুকাহায়ে কেরামদের উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা বুঝা গেল যে,পদপৃষ্ঠ সম্ভাবনাময় স্থানে কুরআন লিখা মাকরুহ।যদি দেয়ালে এমনভাবে লিখা হয় যা কখনো পড়ে গিয়ে পদপৃষ্ঠ হওয়া বা অসম্মানিত হওয়ার সম্ভাবানা নাই, তাহলে তা নাজায়েয হবে না। তবে সেটা আমাদের সালাফদের রীতিনীতি নয়।তাই এত্থেকে বেঁচে থাকাই উত্তম।https://www.ifatwa.info/7221

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
মুহাব্বতের কারণে "আল্লাহ" বা "মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম" এর নাম দেয়ালে বা ছবির ফ্রেমে যত্ন সহকারে সংরক্ষণ করে রাখা জায়েয হলেও তা সালাফদের রীতিনীতি নয়। আল্লাহ এবং রাসূলের নাম অন্তরে রাখাই কাম্য।

(২) জায়েয হবে। তবে না দেয়াই উত্তম। তবে যদি দিতেই হয়, তাহলে নিজে তাদের ঘরের এমন স্থানে বেঁধে দিতে হবে যেখান পড়ে যাবার কোনো সন্দেহ থাকবে না।

(৩)এমনভাবে লিখতে হবে, যা কখনো পড়ে গিয়ে পদপৃষ্ঠ হওয়া বা অসম্মানিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না, বা থাকতে পারবে না।

(৪) জ্বী লিখে রাখা যাবে, তবে শর্ত হল, এমন ভাবে লিখে রাখতে হবে , যাতে পড়ে গিয়ে পদপৃষ্ঠ হওয়া বা অসম্মানিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।

(৫) কুরআন বা দ্বীনি বইয়ে পৃষ্ঠা মার্ক করে রাখা  বা হাদিয়া দেয়া যাবে, যেখানে লেখা থাকবে আরবিতে বা ইংরেজিতে "ইকরা", " রব্বি যিদনি ইলমা", "বিসমিল্লাহ", যেন পেইজও মার্ক করা যায় আর লেখাটা চোখে পড়লে যেন পড়া যায়। এ সব জায়েয হবে, কেননা এখানের অসম্মাণের কোনো সম্ভাবনা নাই।

 (৬) এই ধরনের ক্যালিগ্রাফি, বুকমার্ক বিক্রি করা হালাল হবে। তবে বিক্রি করার পূর্বে এসব জিনিষকে এমনভাবে তৈরী করতে হবে, যা ক্রয় করার পর তাকে শুধু ঐ জায়গায়ই রাখা যায়, যেখানে কখনো ঐ জিনিষ অসম্মাণিত হবে না। 

(৭) বড় ড্রইং খাতায় কেউ যদি মুহাব্বাত করে কাবা, মাসজিদে নববী, মাসজিদুল আকসা এবং এ ধরনের ছোট ক্যালিগ্রাফিগুলো আঁকে ও যথাযথভাবে সংরক্ষণ করে, তাহলে তা জায়েজ হবে ।এতে কোনো সন্দেহ নাই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...