আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
12 views
ago in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (14 points)
১. আসসালামু আলাইকুম,
আমার এক আত্মীয়া কনসিভ করেছেন ৪৫ দিন হলো,বাচ্চার হার্টবিট আসে নাই।

শারীরিক এবং পারিপার্শ্বিক কারণে উনি বাচ্চা টা রাখতে চাচ্ছেন না।

আগের দুইটা বাবু সিজারে হইছে, ছোটজনের দেড় বছর বয়স।

এঅবস্থায় এবরশন করা জায়েজ হবে কি?
২. আসসালামু আলাইকুম।
আমার একটা প্রশ্ন ছিল। আমাদের ফ্যামিলিতে লোন নিয়ে ঘর করা হয়। সেই ঘরগুলো ভাড়া দেওয়া হয়। এই ভাড়া দিয়েই আবার লোন দেওয়া হয়। লোন দেওয়া শেষ হলে আবার সংসারে খরচ করা হয়।এই লোন নেওয়া টা কতটা জায়েজ? আর লোন পরিশোধ হয়ে গেলে সেই ঘরভাড়া কি জায়েজ হবে?

৩. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু
ব্যাংক এ টাকা রাখলে টাকা রাখার ইন্টারেস্ট দেই আবার একটা নির্দিষ্ট সময় পর টাকা কেটে নেই ব্যাংক এ টাকা রাখার জন্য। তাও কি ইন্টারেস্ট টা দান করে দিতে হবে?
সেই টাকা দিয়ে কি নিজের জন্য বই কেনা যাবে?

৪. আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।

আমার মাসের প্রতিদিনই রক্তপাত থাকে যার কারণে আমি  হায়েজের দিন গুলো কি গত মাসে যেভাবে হয়েছে ওই তারিখটাকে অনুসরণ করে হায়েজের দিন গণনা করব। এই প্রথমবার প্রতিদিনের রক্তপাত হচ্ছে ওভারিতে সিস্ট থাকার কারণে। কিছুদিন আগে ধরা পড়েছিল তখন ১৫ ২০ দিনের মতো থাকতো এখন মাসে প্রতিদিনই থাকে এখন আমি হায়েজ এর দিনকে পূর্বের তারিখ অনুযায়ী ধরতে পারি। আর হায়েজের শেষ তারিখ ১০ দিন পর্যন্ত পূর্বেও ছিল ওই হিসাব করে কি ধরবো। এ বিষয়ে জানালে উপকৃত হতাম।

৫. চুরির টাকায় কেনা খাবার না খেয়ে ফেলে দিলে কোনো গুণাহ হবে?

আমি ১০০% শিউর না যে টাকাটা চুরির।আমি ৯০% শিউর টাকা চুরি করা হয়েছে।
এখন কি মিথ‍্যে ধারনা করার কারণে গুণাহ হবে?
আর খাবার কি না ফেলে দিয়ে খেয়ে ফেলব?

৬. আসসালামু আলাইকুম,
একজন আপু, এশার নামাজে বিতির এর ক্ষেত্রে এভাবে পড়েন,

প্রথম দুই রাকাত পড়ে তাসাহুদে না বসে দাড়িয়ে যান এরপর সূরা ফাতিহা এবং অন্য সূরা মিলিয়ে পড়ে হাত উঠিয়ে আল্লাহু আকবার বলে আবার হাত বেঁধে দুআ কুনুত পাঠ করেন । এখন তিনি জানান এই ভাবে পড়া টা কি সহিহ হচ্ছে? বা তার নামাজ কি আদায় হচ্ছে বিতিরের? যদি না হয় তাহলে বিস্তারিত ভাবে বুঝিয়ে বলবেন একটু।

1 Answer

0 votes
ago by (649,470 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
শরীয়তের বিধান হলো  যদি মহিলা অত্যাধিক দুর্বল হয়, যার কারণে গর্ভধারণ তার জন্য আশঙ্কাজনক হয় এবং গর্ভধারণের মেয়াদ চার মাসের কম হয়। তাহলে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক গর্ভপাত বৈধ হবে। মেয়াদ চার মাসের অধিক হলে কোনোভাবেই বৈধ হবেনা।

খাদ্য, চিকিৎসা, বাসস্থান ইত্যাদির অভাবের কারণে সংসারকে সচ্ছল করার নিয়তে, দৈহিক সৌন্দর্য বা ফিগার ঠিক রাখার উদ্দেশ্যে ,কন্যাসন্তান জন্ম নেয়ার ভয়ে (যাতে পরবর্তীতে এদের বিয়ে শাদীর ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়),অধিক সন্তান নেয়াকে লজ্জার বিষয় মনে করে গর্ভপাত বিশেষত অভাবের কারণে সংসারকে সচ্ছল করার নিয়তে গর্ভপাত করলে আল্লাহর উপর বিশ্বাস ও ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে। কেননা রিজিকের মালিক আল্লাহ।

আল্লাহ তায়ালা  বলেছেন, 

ولا تقتلوا أولادكم خشية إملاق، نحن نرزقهم وإيّاكم إنّ قتلهم كان خطأ كبيراً. 

‘’দারিদ্রতার ভয়ে তোমরা তোমাদের সন্তানকে হত্যা কর না। তাদেরকে এবং তোমাদেরকে আমিই খাদ্য প্রদান করে থাকি।নিশ্চয় তাদেরকে হত্যা করা মহাপাপ…’’(সূরা ইসরা, আয়াত-৩১)

অন্যত্র তিনি বলেন, الشَّيْطَانُ يَعِدُكُمُ الْفَقْرَ . “শয়তান তোমাদের অভাবের ওয়াদা দেয়।” (সূরা আল-বাক্বারা)

আধুনিক যুগে ভ্রুণহত্যা জাহেলি যুগে কন্যাসন্তানকে
জীবন্ত সমাধিস্থ করার নামান্তর। তখন বাবা নিজ মেয়েকে গর্তে পুঁতে ফেলত; আর এখন আধুনিক যন্ত্রপাতি দ্বারা
মায়ের পেটেই শিশুকে মেরে ফেলা হয়। এ দুই হত্যার মধ্যে বাহ্যত কোনো তফাত নেই। এজন্য

রাসুলুল্লাহ (সা.) ভ্রুণহত্যাকে ‘গুপ্তহত্যা’ বলে উল্লেখ করেছেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘স্মরণ কর ওই
দিনকে, যেদিন জীবন্ত সমাধিস্থ নিষ্পাপ
বাচ্চাকে জিজ্ঞেস করা হবে, তোমাকে কোন অপরাধের কারণে হত্যা করা হয়েছে?’ (সূরা তাকয়ির :৮)।
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,   
চার মাসের পূর্বে বিশেষ কিছু কারণে শরীয়ত গর্ভপাতকে অনুমোদন প্রদান করে থাকে।
,
(ক)বর্তমানে কোলে দুধের একটি শিশু রয়েছে,অপরদিকে উক্ত মহিলার গর্ভাশয়ে নতুন সন্তানও উৎপাদিত হচ্ছে। গর্ভের দরুন দুধ একেবারে শুকিয়ে গেছে।অপরদিকে উক্ত সন্তানকে অন্যকোনো উপায়ে লালনপালন করা যাচ্ছেনা। মায়ের দুধ ব্যতীত অন্যকিছুতে সে মূখই দিচ্ছে না।এমতাবস্থায় চারমাস হয়নি এমন গর্ভকে গর্ভপাত করা বৈধ রয়েছে।
,
(খ)কোনো মুসলমান বিজ্ঞ ডাক্তার উক্ত গর্ভবতী মহিলাকে পরিদর্শন করে বলে যে,গর্ভপাত না করলে মহিলার জান বা কোনো অঙ্গ বিনাশের আশঙ্কা রয়েছে।

আরো জানুনঃ 
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত বোনের যেহেতু বর্তমানে কোলে দুধের একটি শিশু রয়েছে,অপরদিকে উক্ত মহিলার গর্ভাশয়ে নতুন সন্তানও উৎপাদিত হচ্ছে।

এখন এ গর্ভের দরুন দুধ যদি একেবারে শুকিয়ে যায়,অপরদিকে উক্ত সন্তানকে যদি অন্যকোনো উপায়ে লালনপালন করা যায়, মায়ের দুধ ব্যতীত অন্যকিছুতে সে মূখই না দেয়, সেক্ষেত্রে যেহেতু চারমাস হয়নি,সুতরাং  এক্ষেত্রে গর্ভপাত করা জায়েজ।

(০২)
হালাল টাকায় লোন পরিশোধ করলে সেক্ষেত্রে সসম্পূর্ণ লোন পরিশোধ হয়ে গেলে সেই ঘরভাড়া জায়েজ হবে।

(০৩)
তার পরেও ইন্টারেস্ট এর টাকা ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনদের মাঝে দান করতে হবে।

সেই টাকা দিয়ে কোনোক্রমেই নিজের জন্য বই ক্রয় করা যাবেনা।

(০৪)
পূর্বের মাস গুলোতে আপনার যে কয়দিন হায়েজ আসার অভ্যাস ছিলো,এই মাসের শুরুতেও আপনি সে কয়দিন হায়েজ ধরবেন। 
এরপর ১৫ দিন পবিত্রতা ধরবেন।
এরপর আগের মাস গুলোতে আপনার যে কয়দিন হায়েজ আসার অভ্যাস ছিলো,সে কয়দিন হায়েজ ধরবেন। 
এরপর ১৫ দিন পবিত্রতা ধরবেন।

এভাবেই হিসাব চালু রাখবেন।

পবিত্রতার দিন গুলিতে নামাজ আদায় করতে হবে।

সেই দিন গুলির নামাজ অনাদায়ী থাকলে সেই নামাজ গুলির কাজা আদায় করে নিতে হবে।

(০৫)
এ খাবার খাওয়াও যাবেনা, ফেলে দেওয়াও যাবে না। যে চুরি করেছে তার কাছে ফেরত দিতে হবে।

যাতে করে সে মালিকের কাছে এটা ফেরত দিয়ে আসে।

মালিককে না পেলে কোন ভাবে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা বিকাশ ইত্যাদিতে পাঠিয়ে দিবে।

(০৬)
২য় রাকাতে বৈঠক না করার দরুন এভাবে তার বিতর নামাজ সহীহ হচ্ছেনা।
এক্ষেত্রে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...