সরকারের কোনো আইন ইসলাম বিরোধী না হলে তা মানা ওয়াজিব।
তবে শরীয়াহ বিরোধী কোনো আইন মানা যাবেনা।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «السَّمْعُ وَالطَّاعَةُ عَلَى المَرْءِ المُسْلِمِ فِيمَا أَحَبَّ وَكَرِهَ، مَا لَمْ يُؤْمَرْ بِمَعْصِيَةٍ، فَإِذَا أُمِرَ بِمَعْصِيَةٍ فَلاَ سَمْعَ وَلاَ طَاعَةَ»
হযরত আব্দুল্লাহ রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, মুসলিম আমীরের কথা পছন্দ হোক বা না হোক তার কথা শোনা ও মানা উচিত যতক্ষণ না সে গোনাহের আদেশ করে। যদি সে গোনাহের আদেশ করে, তাহলে তার কথা শোনা ও মানা যাবে না। [বুখারী, হাদীস নং-৭১৪৪]
হাদীসে বর্ণিত রয়েছে।
ﻟَﺎ ﻃَﺎﻋَﺔَ ﻟِﻤَﺨْﻠُﻮﻕٍ ﻓِﻲ ﻣَﻌْﺼِﻴَﺔِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋَﺰَّ ﻭَﺟَﻞَّ
আল্লাহর অবাধ্যতায় কোনো মাখলুকের অনুসরণ করা যাবে না।(মুসনাদে আহমদ-১০৯৮)
রাষ্ট্রীয় আইন-কানুন প্রতিটি নাগরিকের জন্য মান্য করা আবশ্যক-যতক্ষণ না তা শরিয়া বিরোধী হয়।
শরীয়াহ বিরোধী আইন না হলে বিনা ওযরে তাহা না মানলে গুনাহগার হতে হবে।
ইসলামী স্কলারগন বলেছেন,
রাষ্ট্রীয় আইন অনুসরণ না করলে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, জান-মালের ক্ষতি এবং নানা দুর্ভোগে পতিত হয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর মানুষের নিরাপত্তা, কল্যাণ সাধন এবং বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধ করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব-যা শরিয়তের দৃষ্টিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কেউ যদি এসব আইন লঙ্ঘন করে তাহলে সে নিজেকে নানা বিপদাপদ, শাস্তি ও লাঞ্ছনার মধ্যে নিক্ষেপ করবে-যা ইসলামে নিষেধ।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَاصِمٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ زَيْدٍ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ جُنْدُبٍ، عَنْ حُذَيْفَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " لاَ يَنْبَغِي لِلْمُؤْمِنِ أَنْ يُذِلَّ نَفْسَهُ " . قَالُوا وَكَيْفَ يُذِلُّ نَفْسَهُ . قَالَ " يَتَعَرَّضُ مِنَ الْبَلاَءِ لِمَا لاَ يُطِيقُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
হুযাইফা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন মু'মিন ব্যক্তির জন্য নিজেকে অপমানিত করাটা শোভনীয় নয়। সাহাবীগণ প্রশ্ন করেন, সে নিজেকে কিভাবে অপমানিত করে? তিনি বললেনঃ এমন কঠিন বিষয়ে লিপ্ত হওয়া যার সামর্থ্য তার নেই।
সহীহ,তিরমিযী ২২৫৪, ইবনু মাজাহ ৪০১৬, আহমাদ ২৩৪৪৪, সহীহাহ্ ৬১৩।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব।
শাইখ বিন বায রাহ. বলেন,
أن القوانين إذا كانت لا تخالف الشرع فلا بأس بها، النظم تسمى بالقوانين وتسمى بالنظم، فكل قانون ونظام ينفع المسلمين ولا يخالف شريعة الله لا بأس به، من المرور أو في القضاء أو في أي الدوائر الحكومية أو في أي مكان.
“আইন-কানুন যদি শরিয়ত বিরোধী না হয় তাহলে তাতে কোনও সমস্যা নাই। শৃঙ্খলাকে আইন বলা হয়। সুতরাং যে সকল আইন-শৃঙ্খলা মুসলিমদের উপকার করে ও আল্লাহর আইন লঙ্ঘন করে না তাতে কোনও সমস্যা নাই। যেমন: ট্রাফিক, বিচার বিভাগ, সরকারি অফিস বা অন্য যে কোন স্থানে হোক না কেন।”
দারুল উলুম দেওবন্দ এর 38510 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে লাইসেন্স ব্যাতিত কাজ করার মধ্যে বেইজ্জতির ভয় আছে,আর্থিক ক্ষতির ভয় আছে।
নিজেকে ক্ষতির মধ্যে ফেলানোর শরীয়ত অনুমোদন দেয়না।
সুরা বাকারার ১৯৫ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
وَ لَا تُلۡقُوۡا بِاَیۡدِیۡکُمۡ اِلَی التَّهۡلُکَۃِ ۚۖۛ وَ اَحۡسِنُوۡا ۚۛ اِنَّ اللّٰهَ یُحِبُّ الۡمُحۡسِنِیۡنَ ﴿۱۹۵﴾
তোমরা নিজ হাতে নিজদেরকে ধ্বংসে নিক্ষেপ করো না। আর সুকর্ম কর। নিশ্চয় আল্লাহ সুকর্মশীলদেরকে ভালবাসেন।
আরো জানুনঃ
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে লাইসেন্স ব্যাতিত মোটর সাইকেল চালানোকে ইসলাম অনুমোদন দেয়না।