আসসালামু আলাইকুম।
আবার বাসা থেকে আমার ভার্সিটি খরচ বাদে আর কিছুই দেয়না। মাদ্রাসায় পড়াশুনার খরচ, একজন মেয়ে হিসেবে দরকারী সব কিছু , ভাড়া টাকাও আমার নিজে টিউশনি করিয়ে ব্যায় করি। যা খুবই কষ্টকর। এমন নয় যে আমাদের টাকা পয়শায় প্রবলেম কিন্ত পিতা মাতা দেয়না । অনেক সময় কারন ছাড়াই অনেক খারাপ গালাগাল করে থাকেন আমার আম্মু। খাবার খাওয়া নিয়েও বলেন আলাদা খেতে। ঘরের বাইরের মানুষের কাছেও আমার বদনাম ছড়ায়, আমার বোনের কাছে যাচ্ছে তাই বলে মিথ্যে কথা যা আমি জানিই না। আমি অনেক আগে থেকেই অনেক অসুস্থ কিন্ত ঠিক মত ডাক্তার দেখায়নি আজ অব্দি। অসুস্থ হয়ে পরে থাকলেও বাবা মা আসেনা, এমনকি কারন ছাড়াই কথা বলেনা,আমি বলতে গেলেও বলেনা। এমন নয় যে আমি বড় কোন অন্যায় করেছি তাই এমন করছে, এটা ছোট থেকেই হয়ে আসছে। যে কারনে অনেক সময়েই মনে হত বড় হবার পরে যে আমার মাথার উপর নিজের একজন মানুষের ছায়া দরকার (হাজবেন্ড)।
বাসায় বলেছিলাম দ্বীনদ্বার পাত্র চাই। মসজিদের ইমামের কাছে খোজ করতে পাত্র। কিন্ত প্রস্তাব যদি তারা দেখে তাহলে দ্বীনের কথা বাদ হয়ে যায় টাকা পয়শা আগে চলে আসে। অবস্থা এমন হয়েছিল যে আমি অনেক ভীত হয়ে গেছিলাম এসবে বহুত আগেই। অনেক ট্রমা - ভয় থেকে সময় পার করেছিলাম বিয়ে নিয়ে। এরপর নিজেই বাসায় জানিয়ে দেই আমাকে তখনই বিয়ে না দিতে, তাতেও অনেক বিপত্তি বাজে ।
অনেক চেষ্টা করেছি সহশিক্ষা এড়াতে। কিন্ত পারিনি ভার্সিটি লাইফে এসে তবুও দ্বীনকে সাথে মাদ্রাসাতেও পড়েছি। কিন্ত যা ভয় পেয়েছি নিজেকে নিয়ে যা চিন্তাও করিনি তাই হয়েছে।
আমি একটি সম্পর্কে জরিয়ে যাই দেড় বছর আগে।
কিছুদিন পরেই বিয়ের কথা বাসায় বলি হারাম থেকে বেড় হবার জন্য। ছেলের পরিবারও ভালো অর্থিক ভাবে / ছেলে ইসলাম পালনে ভালো , যাতে করে আমার তাকে মানতে প্রবলেম হচ্ছিল না। কিন্ত বাসায় জানাতেই অনেক গালাগাল করে , অনেক খারাপ ব্যাপার হয়। ইভেন বিয়ে করে পতিতা হতে চাচ্ছি এমন কথাও শুনি, মারতেও আসে আমাকে, এদিক সেদিক আমার নামে আম্মু যাচ্ছে তাই বলে। যতই বলি ছেলে ভালো কিন্ত লাভ হয়না । এমনকি বিয়ে হলে বাসা থেকে আর দুই পয়শাও দিবেনা বাসায় রাখবেনা তাও জানিয়ে দেয়। অনেক জটিলতায় সময় পার করেছি। আমার পরিবারের এই সকল সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে রাজি হয়েছিলাম বিয়েতে কিন্ত পরে ছেলে পক্ষের মতামতের জটিলতার কারনে শেষে বিয়ে হয়নি। মূল কারন ছেলের মা তার নিজ পছন্দে তার ছেলেকে বিয়ে দিবে, তার মা কিছুটা মর্ডান মেয়ে চায় হয়ত। ছেলে যতই বুঝায় মেয়ে দ্বীন পালন করে, পড়াশুনায় ভালো, অর্থনৈতিক ভাবে স্বচ্ছল কিন্ত লাভ হয়না। এরপর আমার বাসাতেও বেকে বসে কারন ছেলের মা রাজি না হওয়াতে। সব ভেংয়ে যায়।
দেড় বছর চেষ্টা করি পরিবার মানাতে, তিনিও চেষ্টা করেন বড় চাকরির যাতে তার পরিবার মানে/ আমাকে নিয়ে আলাদা থাকতে পারে । কিন্ত চাকরি হচ্ছিলনা, আর ব্যাবসাতেও প্রতারনায় পরে যাই দুজনে। সব সম্বল শেষ।
এখন দুজনের বয়স ২৩ বছর +। পাপ থেকে দূরে থাকা অনেক কষ্টের ছিল, অনেক পাপ হয়ে যেত, নামায মিচ যেত, ধীরে ধীরে আমল হারিয়ে যাচ্ছিল। ভার্সিটি এক হওয়াতে চাইলেই যোগাযোগ অফ করতে পারিনি। তার মধ্যে ভার্সিটিতে বেশ জটিলতায় ছিলাম, যে আমার বাধ্য হয়েও তার সাহায্য নিতে হত কিছু বিষয়ে। অনেক দুস্বপ্ন দেখতাম আগুন / আমি জাদুকারি / নিজের বাচ্চা মেরে ফেলি / সাপ/ আমি পাপ করছি /কেউ আমাকে বলছে বিয়ে করতে এসব/ তিনি মারা গেছেন।
প্রতি মুহুর্তে মনে হত আমি এই পাপের মধ্যে ইন্তেকাল করলে আল্লাহকে কি জাবাব দেব! তার মধ্যে পরিবারকে সেভাবে না পাওয়ায় একাকিত্বে খুব অসহায় হয়ে যাই।
সব কিছুর প্রেক্ষিতে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেই এবং দুইজন সাক্ষির সামনে উনি আমাকে প্রস্তাব দেন এবং আমি তা কবুল করি।
যেমন : উনি বলেন আমি ওমুক, পিতা - মাতা ওমুক এবং ওমুকের সন্তান ওমুককে (এত টাকা) দেনমোহর দিয়ে বিয়ে করলাম, আপনি কি আমাকে কবুল করছেন?
এবং আমি ওনার প্রস্তাব গ্রহন করেছি।
ওনার সাথে আমার দেনমোহর নিয়ে কথা হয়েছিল বিয়ের কিছুক্ষন আগে যে, মোহরের কিছু অংশ বিয়ের পরেই দিবে দিবেন এবং বাকী অংশ টাকা হবার পরে দিবেন। উনিও ওনার কথা রাখেন, যা আদায় করার কথা ছিল তা উনি আদায় করেছেন মোহর।
নিজেই কষ্টে আছি মা বাবা জানেনা তা নিয়ে। কিন্ত চাইলেই সম্বভ না এখনই জানানো। আর মন মানাতে পারছিনা আসলেই বিবাহ হয়েছে কিনা।
প্রশ্ন হচ্ছে * আমাদের বিয়ে হয়েছে কিনা?
** বিবাহ পরবর্তী সব কিছু এখন থেকে চলতে পারবে কিনা?
মেলা মেশা করতে ভয় পাচ্ছি। কারন এক হাদিসে এসেছে অভিভাবক ছাড়া বিবাহ বাতিল। আবার অনেকে বলে বিবাহ হয়েছে অনেকে বলে হয়নি। খুবই ডেসপারেট হয়ে আছি। আবার যদি বিয়ে হয়েও থাকে তবে তো হাজবেন্ড চাচ্ছেন কিন্ত মেলা মেশা করছিনা এতেও গুনাহ হবে। আমাকে সাহায্য করবেন উত্তর খোলাসা করে দিয়ে।
***আর যদি আমার কাহিনির প্রেক্ষিতে বিবাহ পূর্ন হয়ে থাকলে কিভাবে, কেন হয়েছে তাও ক্লিয়ার করবেন।
আর আমার বাবা মা আমার সাথে যে আচরন করেন যা আমি শুরুতেই বলছি এই বিষয়টি নিয়ে কোন নসিহা পেশ করবেন আমার উপর, আমি চেষ্টা করি সর্ববস্থায় তাদের খুশি রাখার।