আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
19 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ
আমার ছেলে ২০২৩ সালের ২১ জুলাই অর্থাৎ ২ মুহাররম ১৪৪৫ হিজরী সনে জন্মগ্রহণ করে। আজকে ২০২৫ সালের ২১ জুলাই ইংরেজি মাস অনুসারে ওর পূর্ণ ২ বছর হলো। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে সন্তানকে পূর্ণ ২ বছর মাতৃদুধ পান করাতে বলেছেন। এখন আমার প্রশ্ন হলো,
১. চন্দ্র মাসের হিসেব অনুসারে আমার ছেলের ২ বছর কি পূর্ণ হয়েছে?  আর যদি ২ বছর পূর্ণ না হয় তাহলে চন্দ্র মাসের হিসেব করে কবে ওর ২ বছর পূর্ণ হবে সেটা কিভাবে জানতে পারবো?
২.সন্তানের সওয়াবের জন্য বা কল্যানের জন্য আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার নিয়তে বাসায় রান্না করা খাবার গরীব মানুষকে দিলে বা খাওয়ালে কি সেটা জায়েজ হবে?
৩.কোনকিছু দান করার সময় যদি নিয়ত করি এটা দানের মাধ্যমে যে সওয়াব হবে সেটা আমাকে, সন্তান ও স্বামীর আমলনামায় সওয়াব দিও তাহলে এটা কি জায়েজ হবে?  সঠিক হবে?

৪.২ বছরের সন্তানকে কেউ টাকা হাদিয়া দিলে মা যদি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সেই টাকা সওয়াবের নিয়তে দান সাদাকা করে তাহলে কি সেটা হালাল বা জায়েজ হবে?  যিনি টাকা হাদিয়া দিয়েছেন তার উপার্জন যদি মিশ্র হয় তাহলে কি সেই হাদিয়া থেকে দান করা হালাল হবে?

1 Answer

0 votes
by (647,730 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
ইসলামী শরীয়তে শিশুকে চন্দ্রমাসের হিসাবে সর্বোচ্চ দুই বছর (২৪ মাস) পর্যন্ত দুধ পান করানো যাবে। দুই বছরের অধিক দুধ পান করানো যাবে না। 

আল্লাহ তাআলা বলেন-
وَ الْوَالِدٰتُ یُرْضِعْنَ اَوْلَادَهُنَّ حَوْلَیْنِ كَامِلَیْنِ لِمَنْ اَرَادَ اَنْ یُّتِمَّ الرَّضَاعَةَ
মায়েরা তাদের সন্তানদের পূর্ণ দু বছর দুধ পান করাবে। এ সময়কাল তাদের জন্য, যারা দুধ পান করানোর মেয়াদ পূর্ণ করতে চায়। (সূরা বাকারা ২৩৩)

উক্ত নির্ধারিত সময় পার হবার পরেও কেউ যদি নিজ সন্তানকে দুধ খাওয়ায় তাহলে তা জায়েয হবে না এবং সন্তানের জন্য উপকারী হবে না। কেননা যেটা সন্তানের জন্য উপযোগী সেটাই আল্লাহু তাআলা বিধান দিয়েছেন।

বিশুদ্ধ মত অনুযায়ী সন্তানকে দুধ পান করানোর মেয়াদ চন্দ্র বছর হিসেবে দুই বছর। 

কারণ কুরআন মাজীদে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-
(তরজমা) আর মায়েরা তাদের সন্তানদের পূর্ণ দুই বছর দুধ পান করাবে। (এ বিধান) তার জন্য যে দুধ পানের (মেয়াদ) পূর্ণ করতে চায়। -সূরা বাকারা : ২৩৩

আরেক আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, আর তার (সন্তান) দুধ ছাড়ানো হয় দু বছরে। -সূরা লুকমান : ১৪

সুতরাং দুই বছর পূর্ণ হওয়ার পর সন্তানকে আর দুধ পান করানো যাবে না। তাই আড়াই বছর পর্যন্ত পান করানো যাবে- বলে অনেকে যাবে বলে  এ কথা ঠিক নয়। 
-সূরা বাকারা : ২৩৩; তাফসীরে তবারী ৪৯৬২; মুখতাসারুত তহাবী ২২০; ফাতহুল কাদীর ৩/৩০৯; গুনইয়াতু যাবীল আহকাম শুরুম্বুলালীয়া ১/৩৫৫, ৩৫৬; আলবাহরুর রায়েক ৩/২২৩

যেহেতু এক্ষেত্রে কিছু ইমামদের মত আড়াই বছরের কথাও বলা আছে, তাই সমাজের কিছু মানুষ আড়াই বছরের কথা বলে থাকেন। তবে এটি নির্ভরযোগ্য মত নয়।

আরো জানুনঃ
.
তবে দুই বছরের মধ্যে যদি বাচ্চাকে দুধ ছাড়ানো সম্ভব না হয়, তাহলে বিশেষ প্রয়োজনে তারপরেও দুধ পান করানো হারাম হবেনা। তবে কোনোভাবেই যেনো আড়াই বছর পার না হয়।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নের বিবরন মতে ২ মুহাররম ১৪৪৭ হিজরী সনে আপনার সন্তানের ২ বছর পূর্ণ হবে। 

আজ ২৬ শে মুহাররম ১৪৪৭ হিজরী,সুতরাং আজ থেকে আরো ২৪ দিন আগে আপনার সন্তানের ২ বছর পূর্ণ হয়েছে।

সুতরাং দ্রুত দুধ ছাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে। 

(০২)
সন্তানের সওয়াবের জন্য বা কল্যানের জন্য আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার নিয়তে বাসায় রান্না করা খাবার গরীব মানুষকে দিলে বা খাওয়ালে সেটা জায়েজ হবে

এতে কোনো সমস্যা নেই।

(০৩)
হ্যাঁ এটি জায়েজ হবে,সঠিক হবে।

(০৪)
সে টাকা দান করা জায়েজ হবেনা।

হ্যাঁ যদি হালালের তুলনায় তার হারাম উপার্জন বেশি হয়,আর সন্তানের বাবা যদি নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক হয় অর্থাৎ যাকাত ফরজ হওয়ার মতো সম্পদ যদি সন্তানের বাবার থাকে,সেক্ষেত্রে প্রশ্নের বিবরন মতে  হাদিয়ার সেই টাকা গ্রহণ করাই যেহেতু জায়েজ হয়নি,তাই সে টাকা ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া দান সদকাক করে দিবেন।

এটি জায়েজ,বরং জরুরীও বটে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...