আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
31 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (55 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ উস্তাদ। মেয়েরা যে কান ফুটো করে, কানের সেই ফটো সেখানে কি পানি পৌছাতে হয়? ওযু হবে না সেখানে পানি না পৌছালে? ওযু বা ফরজ গোসলের সময় এ কি জরুরি?
আর কানের সেই ফুটোতে একমাত্র রিং জাতীয় দুল পরলে পানি পৌছানো সম্ভব একটু ঘুরালে কিন্তু অন্য কোন দুল পরলে কানের ততটুকু অংশে পানি পৌছায় না, সেই ফুটো তেও পানি পৌঁছে না কারণের। বিষয় টা জানানোর অনুরোধ। জাযাকাল্লাহ খাইরন ফিদ্দুনইয়া ওয়াল আখিরাহ উস্তায।

1 Answer

+1 vote
by (649,740 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  অযুর ভিতর কানের লতির বাহ্যিক অংশের গোড়া পর্যন্ত পানি পৌছানো ফরজ। 

মুখমন্ডলের পরিসীমা হলো  কপালের চুলের গোড়া থেকে থুতনীর নিচ এবং উভয় কানের লতি পর্যন্ত পানি পৌঁছানো।
একবার ধোয়া ফরয, তিন বার ধোয়া সুন্নাত।
(ইমদাদুল আহকাম  ১/৩৬৬) 
۔
পবিত্র কুরআনে সুরা মায়েদাতে আল্লাহ্ তায়ালা বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا إِذَا قُمْتُمْ إِلَى الصَّلَاةِ فَاغْسِلُوا وُجُوهَكُمْ وَأَيْدِيَكُمْ إِلَى الْمَرَافِقِ وَامْسَحُوا بِرُءُوسِكُمْ وَأَرْجُلَكُمْ إِلَى الْكَعْبَيْنِ
অর্থ : “হে মুমিনগণ! যখন তোমরা সালাতের জন্য প্রস্তুত হবে, তখন তোমরা তোমাদের মুখ মন্ডল ও দুই হাত কনুই সহ ধৌত করবে, এবং তোমাদের মাথা মাসেহ করবে, আর দুই পা গোড়ালীসহ ধৌত করবে।” [সূরা মায়িদাহঃ আয়াত-৬]

হাদীস শরীফে এসেছে  

حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الأُوَيْسِيُّ، قَالَ حَدَّثَنِي إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَنَّ عَطَاءَ بْنَ يَزِيدَ، أَخْبَرَهُ أَنَّ حُمْرَانَ مَوْلَى عُثْمَانَ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ، رَأَى عُثْمَانَ بْنَ عَفَّانَ دَعَا بِإِنَاءٍ، فَأَفْرَغَ عَلَى كَفَّيْهِ ثَلاَثَ مِرَارٍ فَغَسَلَهُمَا، ثُمَّ أَدْخَلَ يَمِينَهُ فِي الإِنَاءِ فَمَضْمَضَ، وَاسْتَنْشَقَ، ثُمَّ غَسَلَ وَجْهَهُ ثَلاَثًا، وَيَدَيْهِ إِلَى الْمِرْفَقَيْنِ ثَلاَثَ مِرَارٍ، ثُمَّ مَسَحَ بِرَأْسِهِ، ثُمَّ غَسَلَ رِجْلَيْهِ ثَلاَثَ مِرَارٍ إِلَى الْكَعْبَيْنِ، ثُمَّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ تَوَضَّأَ نَحْوَ وُضُوئِي هَذَا، ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ، لاَ يُحَدِّثُ فِيهِمَا نَفْسَهُ، غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ ".

হুমরান (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি ‘উসমান ইবনু আফফান (রাযি.)-কে দেখেছেন যে, তিনি পানির পাত্র আনিয়ে উভয় হাতের তালুতে তিনবার ঢেলে তা ধুয়ে নিলেন। অতঃপর ডান হাত পাত্রের মধ্যে ঢুকালেন। তারপর কুলি করলেন ও নাকে পানি দিয়ে নাক পরিষ্কার করলেন। তারপর তাঁর মুখমন্ডল তিনবার ধুয়ে এবং দু’হাত কনুই পর্যন্ত তিনবার ধুলেন। অতঃপর মাথা মাসেহ করলেন। অতঃপর দুই পা টাখনু পর্যন্ত তিনবার ধুলেন। পরে বললেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ‘যে ব্যক্তি আমার মত এ রকম উযূ করবে, অতঃপর দু’রাক‘আত সালাত আদায় করবে, যাতে দুনিয়ার কোন খেয়াল করবে না, তার পূর্বের গুনাহ্ ক্ষমা করে দেয়া হবে। (বুখারী শরীফ ১৬০, ১৬৪, ১৯৩৪, ৬৪৩৩; মুসলিম ২/৩, হাঃ ২২৬, আহমাদ ৪৯৩, ৫১৩) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৫৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৬১)
,
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ عَمْرِو بْنِ يَحْيَى الْمَازِنِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ رَجُلاً، قَالَ لِعَبْدِ اللَّهِ بْنِ زَيْدٍ ـ وَهُوَ جَدُّ عَمْرِو بْنِ يَحْيَى ـ أَتَسْتَطِيعُ أَنْ تُرِيَنِي، كَيْفَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَتَوَضَّأُ فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ زَيْدٍ نَعَمْ. فَدَعَا بِمَاءٍ، فَأَفْرَغَ عَلَى يَدَيْهِ فَغَسَلَ يَدَهُ مَرَّتَيْنِ، ثُمَّ مَضْمَضَ وَاسْتَنْثَرَ ثَلاَثًا، ثُمَّ غَسَلَ وَجْهَهُ ثَلاَثًا، ثُمَّ غَسَلَ يَدَيْهِ مَرَّتَيْنِ مَرَّتَيْنِ إِلَى الْمِرْفَقَيْنِ، ثُمَّ مَسَحَ رَأْسَهُ بِيَدَيْهِ، فَأَقْبَلَ بِهِمَا وَأَدْبَرَ، بَدَأَ بِمُقَدَّمِ رَأْسِهِ، حَتَّى ذَهَبَ بِهِمَا إِلَى قَفَاهُ، ثُمَّ رَدَّهُمَا إِلَى الْمَكَانِ الَّذِي بَدَأَ مِنْهُ، ثُمَّ غَسَلَ رِجْلَيْهِ.

আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) .... ইয়াহইয়া আল-মাযিনী (রহঃ) থেকে বর্ণিত, এক ব্যাক্তি ‘আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ (রাঃ)-কে (তিনি আমর ইবনু ইয়াহিয়ার দাদা) জিজ্ঞাসা করলঃ আপনি কি আমাদেরকে দেখাতে পারেন, কিভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতেন? ‘আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ (রাঃ) বলেনঃ হ্যাঁ। তারপর তিনি পানি আনালেন। হাতের উপর সে পানি ঢেলে দু’বার তাঁর হাত ধুইলেন। তারপর কুলি করলেন এবং তিনবার নাকে পানি দিয়ে ঝেড়ে পরিস্কার করলেন। এরপর চেহারা তিনবার ধুইলেন। তারপর দু’ হাত কনুই পর্যন্ত দু’বার করে ধুইলেন। তারপর দু' হাত দিয়ে মাথা মাসেহ করলেন। অর্থাৎ হাত দু’টি সামনে ও পিছনে নিলেন। মাথার সম্মুখ ভাগ থেকে শুরু করে উভয় হাত গর্দান পর্যন্ত নিলেন। তারপর আবার যেখান থেকে নিয়েছিলেন, সেখানেই ফিরিয়ে আনলেন। তারপর দু’পা ধুইলেন।
(বুখারী ১৮৫)

★ফরজ গোসলের সময় নাভী, নাকের ছিদ্র এবং কানের ছিদ্রতে পানি প্রবেশ করানো আবশ্যক।

নাভী, নাকের ছিদ্র এবং কানের ছিদ্রতে পানি না পৌছালে গোসল শুদ্ধ হবে না। এবং এই গোসলের দ্বারা যত নামায পড়া হবে,সবগুলোকেই দোহরাতে হবে।

নাভী, নাকের ছিদ্র এবং কানের ছিদ্রতে পানি না পৌছালে গোসল শুদ্ধ হবে না। এবং এই গোসলের দ্বারা যত নামায পড়া হবে,সবগুলোকেই দোহরাতে হবে।

وَجَبَ تَحْرِيكُ الْقُرْطِ وَالْخَاتَمِ الضَّيِّقَيْنِ وَلَوْ لَمْ يَكُنْ قُرْطٌ فَدَخَلَ الْمَاءُ الثَّقْبَ عِنْدَ مُرُورِهِ أَجْزَأَهُ وَإِلَّا أَدْخَلَهُ وَلَا يَتَكَلَّفُ فِي إدْخَالِ شَيْءٍ سِوَى الْمَاءِ مِنْ خَشَبٍ وَنَحْوِهِ. كَذَا فِي الْبَحْرِ الرَّائِقِ.

সরু কানের দুল এবং আংটি নড়াচড়া করা বাধ্যতামূলক। যদি কানের দুল না থাকে এবং ছিদ্র দিয়ে পানি প্রবেশ করে, তাহলে তার জন্য যথেষ্ট। অন্যথায়, তার সেখানে পানি পৌছানো উচিত। 

তবে পানি ছাড়া অন্য কিছু, যেমন কাঠ বা অনুরূপ জিনিস প্রবেশের চেষ্টা করা উচিত নয়।

(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/১৪) (রদ্দুল মুহতার-১/২৮৯, জাদীদ ফেকহি মাসাঈল-৮৯, জাদীদ মাসাঈল-৯৭)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
অযুর ক্ষেত্রে মেয়েদের কানের সেই ছিদ্রতে (ফুটোতে) পানি পৌঁছানো আবশ্যক নয়। 

তবে ফরজ গোসলের ক্ষেত্রে মেয়েদের কানের সেই ছিদ্রতে (ফুটোতে) পানি পৌঁছানো আবশ্যক।

এক্ষেত্রে কানে রিং/দুল/বড় দুল থাকলে সেখানে পানি দিয়ে রিং/দুল/বড় দুল একটু নড়াচড়া করলেই হয়ে যাবে।

এভাবে দুল নড়াচড়া করে যতটুকু পানি পৌছানো যায়,সেটিই যথেষ্ট। 
অতিরিক্ত কষ্ট করতে হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...