আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
45 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (28 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ উস্তাদ।
আমার বয়স ২৫+।  মাস্টার্স পরীক্ষা হয়ে রেজাল্টও হয়ে গেছে। ৩য় বারের মতো পাত্রপক্ষ দেখতে আসবে। এর আগের ২ পাত্রের সামনে যাওয়া হয়েছে থ্রিপিসের সাথে বড় নামাজের হিজাবের মতো হিজাব পড়ে। আমার মা চেয়েছিলো ভালো করে পুরো শরীর ঢেকে শাড়ি পড়িয়ে আর বড় ওড়না দিয়ে হিজাব পড়িয়ে পাত্রের সামনে নিয়ে যেতে। আমি যাই নি। থ্রিপিস- নামাজের বড় হিজাব পড়েই গিয়েছিলাম। পরে এটার জন্য অনেক কথা শুনতে হয়েছে যে আমার একদম সাধারণ পোশাক আশাকের জন্যই উনাদের পছন্দ হয় নি।
যাই হোক, এবার আমার মা খুব ইমোশনালি চাচ্ছেন এবং আমাকে চাপ দিচ্ছেন পাত্রের সামনে বড় করে একদম পুরো শরীর ঢেকে শাড়ি আর সাথে বড় ওড়না হিজাব করে পাত্রের সামনে যেতে। অবয়ব বুঝা যাবে না। শুধু হাতের কবজি, পায়ের পাতা আর মুখ দেখা যাবে ইন শা আল্লাহ।
এর সাথে তিনি আরো চাপ দিচ্ছেন একদম সাধারণ ফেস না রেখে পাউডার, লিপস্টিক এসব দেওয়াতে। লিপস্টিক খুব বেশি পরিমাণে না হলেও মোটামুটি দেখলেই বুঝা যাবে যে মেয়ে ঠোঁটে কিছু দিয়েছে। দেখতে যেন সুন্দর লাগে। আমার কনফিডেন্স লেভেল খুবই নিচু। এসবে অনেক জড়তা কাজ করে। আমার মনে হয় আমাকে এসব দিলে দেখতে বাজে লাগে, আমার খুব অস্বস্তি হয়। কিন্তু তারা একদম কিচ্ছু শুনতে নারাজ। এভাবেই যেতে বলছেন। শাড়ির রং লাল, বড় হিজাবটাও লাল।  আমার খুব লজ্জা লাগছে এই ভেবে যে একজন দ্বীনদার ছেলে এরকম ভাবে একজন পাত্রীকে দেখলে পাত্রীর দ্বীনদারতা নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন কিনা।
সাধারণত আমি মাহরাম এবং গায়রে মাহরাম স্ট্রিক্টলি মেইনটেইন করি, এবং মহিলা বা মাহরামদের সামনেও কখনো অল্পসল্পও সাজগোজ করতে স্বস্তিবোধ করি না। আমার অস্বস্তি লাগে মুখে কিছু দিলেই। মনে হয় আমাকে মানায় না। অথচ পাত্র তো আমাকে দেখে ভাবতে পারেন আমি বোধহয় সবসময় এমন সাজি, ঢিলেঢালা দ্বীনদার ভেবে বসে কি না!
আমার কাছে হালকা সাজও অনেক অস্বস্তিকর,বিশেষ করে লিপস্টিক। তাই এই হালকা সাজেও পাত্রের সামনে যাওয়া মেনে নিতে পারছি না। আবার যেহেতু ফতোয়া ঘেঁটে দেখলাম জায়েজ আছে, মা এর বিরুদ্ধেও যেতে সাহস পাচ্ছি না। যদি দেখতাম জায়েজ নেই, তাহলে স্ট্রংলি আম্মুকে সেটা দেখিয়ে এটা থেকে রেহাই পাওয়ার চেষ্টা করতাম।


উস্তাদ, এভাবে সেজে গেলে কি পাত্রের মনে পাত্রীর দ্বীনদারিতা নিয়ে নেতিবাচক প্রভাব পরতে পারে?

1 Answer

0 votes
by (648,870 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাযি থেকে বর্ণিত,

(إِذَا خَطَبَ أَحَدُكُمْ الْمَرْأَةَ ، فَإِنْ اسْتَطَاعَ أَنْ يَنْظُرَ إِلَى مَا يَدْعُوهُ إِلَى نِكَاحِهَا ، فَلْيَفْعَلْ)

যদি কেউ কোনো মহিলাকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে চায়,তাহলে সে যেন যযথাসম্ভব ঐ মহিলাকে দেখে নেয়।(সুনানু আবি দাউদ-২০৮২)

হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,

عن أبي هريرة، قال: كنت عند النبي صلى الله عليه وسلم، فأتاه رجل فأخبره أنه تزوج امرأة من الأنصار، فقال له رسول الله صلى الله عليه وسلم: «أنظرت إليها؟»، قال: لا، قال: «فاذهب فانظر إليها، فإن في أعين الأنصارشيئا»

তিনি বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর পাশে বসা ছিলাম।একব্যক্তি এসে বলল, আমি আনসারি এক মহিলাকে বিয়ে করতে চাই।রাসূলুল্লাহ বললেন,তুমি কি পাত্রী দেখেছো?তিনি বললেন,না।রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন,যাও গিয়ে পাত্রী দেখে আসো।কেননা আনসারীদের চোখে নীল বা এ জাতীয় কিছু থাকে।(সহীহ মুসলিম-১৪২৪)

পাত্র-পাত্রীর পরস্পর দেখা সাক্ষাৎ ও আলাপ চারিতার কয়েকটি মূলনীতি-
(১)খালওয়াত হতে পারবে না।
(২)মুবাহ বিষয় ব্যতীত অন্য কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাবে না।
(৩)ফিতনা থেকে নিরাপদ থাকতে হবে।যদি কামভাব জাগ্রত হওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে যায়,অথবা কোনো একজন উপভোগ করতে শুরু করে নেয়,তাহলে তখন সেটা হারাম হয়ে যাবে।
(৪)মহিলা নরম ভাষায় কথা বলতে পারবে না।
(৫)মহিলা পূর্ণ হেজাব তথা কবজা পর্যন্ত হাত,টাখনু পর্যন্ত পা,এবং মুখ ব্যতীত সমস্ত শরীর ঢেকে রাখবে।
(৬)প্রয়োজন অতিরিক্ত কথাবর্থা বলা যাবে না।
যখন এই সব শর্ত পাওয়া যাবে, তখনই মূলত পাত্র-পাত্রী পরস্পর আলোচনা ও দেখা সাক্ষাৎ করতে পারবে।

 এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/2898

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
পাত্রের সামনে পাত্রী মুখে হালকা পাতলা প্রসাধনী ব্যবহার করতে পারবে। যেমন লিপস্টিক, কাজল,হালকা পাউডার ব্যবহার ইত্যাদি তবে শর্ত হলো এমন কোনো সাজ গ্রহণ করা যাবে না, যাতেকরে পাত্র পক্ষকে ধোঁকায় নিপতিত করা হয়।

প্রশ্নে উল্লেখিত পোশাকে পাত্রের সামনে গেলে যেহেতু হাতের কবজি এবং পায়ের পাতা দেখা যাবে তাই এ ধরনের পোশাক পরিধান করে পাত্রের সামনে যাওয়া জায়েজ হবেনা।

চাপ প্রয়োগ করলে ফ্যামিলির চাপ মানা যাবেনা।
জবরদস্তি করে পাঠিয়ে দিলে সেক্ষেত্রে এর গুনাহ আপনার ফ্যামিলির হবে।
তবুও ইস্তেগফার পাঠ করার পরামর্শ থাকবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
উস্তাদ আমার বলতে একটু ভুল হয়েছে। আফওয়ান। হাতের কবজি না, শুধু হাতটাই দেখা যাবে বুঝাতে চেয়েছিলাম। 
by (648,870 points)
এক্ষেত্রে সমস্যা নেই।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...