জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم
হাদিস শরিফে এসেছে,
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘খরচের ব্যাপারে তুমি আগে নিজের প্রয়োজনীয় খরচের দায়িত্বশীল, তারপর তোমার স্ত্রীর, তারপর সামর্থ্য হলে তোমার নিকটাত্মীয়ের খরচ তোমার ওপর বর্তাবে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস ৯৯৭)
মা-বাবা ভরণ-পোষণের অধিকারী হওয়ার জন্য শর্ত হলো দুটি।
★এক. তাঁরা এমন দরিদ্র হতে হবে যে তাঁরা নিজের মালিকানার সম্পদে চলতে অক্ষম। এখন কথা হলো, যদি তাঁরা উপার্জনের শক্তি রাখে, তাহলেও তাঁদের সন্তানদের ভরণ-পোষণ দিতে হবে কি না? এ ক্ষেত্রে বিধান হলো, তাঁদের উপার্জনের শক্তি থাকলেও যদি তাঁদের কাছে চলার মতো নগদ টাকাকড়ি না থাকে, তাঁদের সন্তানদের ভরণ-পোষণ দিতে হবে। তাদের সন্তানরা এ কথা বলতে পারবে না যে আপনি তো উপার্জনে সক্ষম, আপনি নিজে উপার্জন করে চলুন। তবে যদি তাঁরা ধনী হন, তথা তাঁদের মালিকানায় নগদ এমন সম্পত্তি থাকে, যা দ্বারা তাঁরা শান্তিতে কালাতিপাত করতে পারেন, তাহলে সন্তানদের ওপর তাঁদের ভরণ-পোষণ দেওয়া ওয়াজিব নয়।
★দুই. সন্তান-সন্ততি সামর্থ্যবান ও উপার্জনে সক্ষম হতে হবে। তাদের সামর্থ্যবান হওয়ার পরিমাণ হলো, তাদের মালিকানার সম্পত্তি বা উপার্জনকৃত আয়ের দ্বারা নিজের ও নিজের স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততির স্বাভাবিক ভরণ-পোষণের পর অতিরিক্ত সম্পদ থাকতে হবে। অন্যথায় তাদের উপার্জনকৃত আয়ের মধ্য থেকে যদি তার নিজের ও স্ত্রী বা সন্তান-সন্ততির ভরণ-পোষণের অতিরিক্ত সম্পদ না থাকে, তাহলে মা-বাবা ও ঊর্ধ্বতন আত্মীয়ের ভরণ-পোষণ দেওয়া ওয়াজিব নয়। যদিও এ ক্ষেত্রে উত্তম হলো, কষ্ট হলেও যথাসাধ্য মা-বাবারও ভরণ-পোষণের খরচ চালিয়ে যাবে। (তাবঈনুল হাকায়েক : ৩/৬৪, রদ্দুল মুহতার : ২/৬৭৮)
সন্তান তার উপার্জনকৃত আয় থেকে নিজের, স্ত্রীর ও সন্তান-সন্ততির ভরণ-পোষণের পর অতিরিক্ত সম্পদ না থাকলে যদিও মা-বাবাকে ভিন্নভাবে ভরণ-পোষণ দেওয়া ওয়াজিব নয়, কিন্তু অভাবগ্রস্ত ও উপার্জনে অক্ষম মা-বাবাকে ছেলে নিজের দারিদ্র্য সত্ত্বেও নিজের সংসারের সঙ্গে মিলিয়ে নিতে হবে এবং কষ্ট হলেও যথাসাধ্য মা-বাবারও ভরণ-পোষণ চালিয়ে যাবে। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া : ১/৪৬৫)
বিস্তারিত জানুনঃ-
কাউকে রেশন দেয়া হলে তাঁর উপর নির্ভরশীল সদস্যরা রেশনের হকদার হন, অর্থাৎ:
স্ত্রী
সন্তান
পরবর্তী তার বাবা মা যদি এমন দরিদ্র হন যে তাঁরা নিজের মালিকানার সম্পদে চলতে অক্ষম,এবং স্বামীর মালিকানার সম্পত্তি বা উপার্জনকৃত আয়ের দ্বারা নিজের ও নিজের স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততির স্বাভাবিক ভরণ-পোষণের পর অতিরিক্ত সম্পদ থাকে,এবং তাঁদের আলাদা রেশন কার্ড না থাকে।
প্রথম অধিকার থাকে সেইসব সদস্যদের, যারা রেশন কার্ডে নাম অন্তর্ভুক্ত এবং স্বামীর উপর আর্থিকভাবে নির্ভরশীল।
স্ত্রী ও সন্তান সাধারণত প্রথম শ্রেণির নির্ভরশীল, তাই তাঁরা সরাসরি হকদার।
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার স্বামীর জন্য রেশন আপনাদের উপর খরচ করা আবশ্যক।
আপনার শশুর শাশুড়ীর উপর নয়।
হ্যাঁ যদি এক্ষেত্রে আপনারা সকলে রাজী হয়ে আপনার শশুর শাশুড়ীর জন্য কিছু বরাদ্ধ রাখেন,এতে কোনো সমস্যা নেই।
অথবা আপনার স্বামীর বাবা মা যদি এমন দরিদ্র হন যে তাঁরা নিজের মালিকানার সম্পদে চলতে অক্ষম,এবং আপনার স্বামীর মালিকানার সম্পত্তি বা উপার্জনকৃত আয়ের দ্বারা নিজের ও নিজের স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততির স্বাভাবিক ভরণ-পোষণের পর অতিরিক্ত সম্পদ থাকে,এবং তাঁদের আলাদা রেশন কার্ড না থাকে,সেক্ষেত্রে সাধ্য অনুযায়ী তাদের ভরনপোষণ এর ব্যবস্থা করা আপনার স্বামীর উপর আবশ্যক।
এক্ষেত্রে রেশন হতে তাদেরকে কিছু দিতে পারে।