আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
28 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (30 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারোকাতুহ
আমার বান্ধবীর স্বামী তার বিয়ের আগের প্রেমিকার সাথে পরকীয়ায় লিপ্ত হয়। এবং এটাকে হালাল করার জন্য সে গোপনে হয়তো বিয়েও করেছে। যদিও কেউ জানে না এই বিষয়ে। তাকে জিজ্ঞেস করলেও এড়িয়ে যায়, কথা বলে না, বলে অন্য কথা বল।

একজন নেককার স্ত্রী, সন্তান থাকা সত্ত্বেও যদি কোনো পুরুষ আগের করা পাপের দিকে এগোই এবং সেটাকে হালাল করার জন্য সবার গোপনে মাসনা করে। তাহলে কি সেইটা শরীয়তসম্মত? যে মেয়েকে বিয়ে করবে তার বাবার অনুমতি বা সাক্ষ্যের কি দরকার নেই?
বিষয়টা এমন না যে সে তার প্রথম স্ত্রীকে ভালোবাসে না। তাকে অসম্ভব ভালোবাসে, তাকেও ছাড়তে পারছে না। আবার আগের প্রেম করা সেই মেয়েকেও ছাড়তে পারছে না। এমতাবস্থায় আমার বান্ধবীর করণীয় কি? তার তো বাঁচা মরার মতো অবস্থা হয়ে গেছে শায়েখ। অনুগ্রহ করে বিস্তারিত উত্তর দিবেন মিন ফাদ্বলিক।

1 Answer

0 votes
by (646,500 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://www.ifatwa.info/6683 নং ফাতওয়ায় বর্ণিত রয়েছে ,
শরীয়তের বিধান মতে একাধিক স্ত্রীর মাঝে যদি ইনছাফ করতে পারে,তাহলে প্রয়োজনের স্বার্থে একাধিক বিবাহ করতে পারবে।

আল্লাহ তায়ালা বলেন
فانكحوا ما طاب لكم من النساء مثنى وثلاث ورباع 
তোমরা বিবাহ করবে নারীদের মধ্যে যাকে তোমার ভালো লাগে—দুই, তিন অথবা চার। আর যদি আশঙ্কা করো যে সুবিচার করতে পারবে না, তাহলে একজনকে (বিয়ে করো)।(সুরা : নিসা, আয়াত-৩)

দ্বিতীয় বিয়ে করার ইসলামী শর্ত বেশ কঠিন অনেক কড়া। আগের স্ত্রীর সব ধরনের হক আদায়ের পর নতুন বিয়ের পরেও সমান তালে সব অধিকার পালন করার আত্মবিশ্বাস থাকলেই কেবল যৌক্তিক কারণে দ্বিতীয় বিয়ে করা যায়।
قال اللہ تعالی:فإن خفتم ألا تعدلوا فواحدة الآیة (سورہ نسا، آیت:۳)
 আল্লাহতায়ালা বলেন, একাধিক বিয়ের সুবিধা যাদের আছে, তারা যদি সম অধিকার বজায় রাখার ক্ষেত্রে ভীত হও, তাহলে এক বিয়ে পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাক। 
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِىِّ ﷺ قَالَ : «إِذَا كَانَتْ عِنْدَ الرَّجُلِ امْرَأَتَانِ فَلَمْ يَعْدِلْ بَيْنَهُمَا جَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَشِقُّه سَاقِطٌ». رَوَاهُ التِّرْمِذِىُّ وَأَبُوْ دَاودَ وَالنَّسَائِىُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِىُّ
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি কোনো পুরুষের দু’জন সহধর্মিণী থাকে আর সে তাদের মধ্যে যদি ন্যায়বিচার না করে, তবে সে কিয়ামতের দিন একপাশ ভঙ্গ (অঙ্গহীন) অবস্থায় উঠবে। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/6683

একাধিক স্ত্রীর মাঝে দুই বিষয়ে সমতা রক্ষা করা অতীব প্রয়োজন। স্ত্রীদের সঙ্গে রাতযাপন ও ভরণ-পোষণ। 

এ দুই অধিকার সব স্ত্রীর ক্ষেত্রে সমানভাবে স্বামীকে পালন করে যেতে হবে। কোন স্ত্রী সুন্দর বা অসুন্দর, আর কোনটি কুমারী বা বিধবা তা পার্থক্য করা যাবে না। 

কিন্তু কোনো স্ত্রীর প্রতি মনের ভালোবাসা বেশি হওয়া, আবার অন্য স্ত্রীর প্রতি কম হওয়া তা সমতার অন্তর্ভুক্ত নয়। কেননা, এটি মনের বিষয়, আর মনের ওপর কারও কোনো অধিকার নেই। একাধিক স্ত্রীর ক্ষেত্রে শুধু রাতযাপন ও খরচাপাতি এ দুই বিষয়ে সমতা ধর্তব্য। এটাই হলো একাধিক স্ত্রীর মধ্যে সমতা রক্ষার ইসলামি শরিয়তের বিধান। 

হাদিসে আছে, হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, নবী করিম (সা.) স্ত্রীদের মধ্যে পালাবণ্টন করতেন এবং ন্যায়বিচার করতেন। আর বলতেন, হে আল্লাহ! আমি আমার শক্তি-সামর্থ্যানুযায়ী পালাবণ্টন করলাম। সুতরাং যাতে শুধু তোমার ক্ষমতা রয়েছে, তাতে আমার শক্তি নেই। কাজেই তাতে তুমি আমাকে ভর্ৎসনা করো না। (তিরমিজি : ১১৭০, আবু দাউদ : ২১৩৬)।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন,
শরীয়তের বিধান মতে একাধিক স্ত্রীর মাঝে যদি ইনছাফ করতে পারে,উপরোক্ত শর্তাবলী পুরোপুরি ভাবে মেনে চলতে পারে,তাহলে প্রয়োজনের স্বার্থে একাধিক বিবাহ করতে পারবে।

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার বান্ধবীর স্বামী যদি শরীয়ত সম্মত পন্থায় দুইজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ স্বাক্ষীর উপস্থিতিতে দ্বিতীয় বিবাহ করে থাকে, আর সেই দ্বিতীয় স্ত্রী যদি বালেগাহ হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে উক্ত বিবাহ সহীহ হয়ে যাবে।

তবে আপনার বান্ধবীর স্বামী যেহেতু দুই স্ত্রীর মাঝে ইনসাফ কায়েম করতে পারছেন না, দ্বিতীয় বিবাহ করার শর্তাবলী মেনে চলতে পারছেন না, তাই তার জন্য এই দ্বিতীয় বিবাহ করা জায়েজ হয়নি।

এমতাবস্থায় আপনার বান্ধবী যদি ২য় বিবাহ কোনোভাবেই মানতে না চান,সতীনের সাথে একসাথে বা আলাদা বাসায় থেকে ঘর সংসারে রাজী না হন,সেক্ষেত্রে করণীয় হলো তিনি তার স্বামীর সাথে একান্তে বসে বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করে সমাধানের পথ বের করবেন।

একান্তে আলাপ করে যদি কোন সমাধানের পথ বের না হয়, সেক্ষেত্রে পারিবারিকভাবে দুই পরিবারের মুরব্বিদের মাধ্যমে মিটিং করে তার স্বামীকে বুঝাতে পারেন।

ইনশাআল্লাহ কোন সমাধানের পথ বের হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...