আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
35 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (9 points)
আসসালামু আলাইকুম উস্তায,
আমার হাসবেন্ড তাবলীগে ১০ দিনের জন্য গিয়েছেন। আমাদের পরিবারে আমরা ৪ জন। আমি, আমার হাসবেন্ড, শশুড়, দেবর। আমাদের ঘরে আবার চাচা শশুড়ের পরিবারও থাকেন। অর্থ্যাৎ যৌথ পরিবারের পরিবেশ। আমি ঘরে নিকাব সহ খিমাড় ব্যবহার করে চলি। আমার শাশুড়ী নেই। তাই আমাকে পর্দার সহিত সবকিছু করতে হয়। যেমন আমার দেবর এখন চা খাবেন কিনা এইসব পর্দা আড়ালে জিজ্ঞেস করা। তবে সর্বদা সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকে অন্য কাউকে দিয়ে জিজ্ঞেস করানোর। তবে মাঝে মধ্যে কাউকে পাই না। ওইসময় প্রয়োজনীয় কথা কর্কশ কন্ঠে বলি। আমার দেবর একজন দ্বীনদার মানুষ। আল্লাহর হুকুম আমার হাসবেন্ডের চেয়ে উনি দ্বীনের ক্ষেত্রে একটু এগিয়ে। স্বচ্ছ করে বললে আমি এমন একজনকে চেয়েছিলাম। তাই আমার অনেক সময় ফিতনা কাজ করে। নিজের দিক দিয়ে সচেতন থাকার চেষ্টা করি। কিন্তু দেখা যায় আমার উনাকে এড়িয়ে চলা সম্ভব হচ্ছে না। আমার শাশুড়ী নেই পরিবারে অন্য মাহরাম মহিলাও নেই যে আমাকে হেল্প করবে। আমার হাসবেন্ড বাসায় থাকলে উনি হেল্প করেন। এবং উনি বাসায় থাকলে আমাকে সময় দিলে মনে হয় আমার তেমন ফিতনা কাজ করছে না। বা আমি নিজেকে সামলাতে পারি, কিন্তু উনি আমার থেকে দূরে থাকলে আমার ফিতনা বেশি কাজ করে। আমার বারসিসার কাহিনী মনে পরছে আর ভয় হচ্ছে। আমার দেবরের বিয়ের কথা যতটুকু জানি যে আরো কিছুদিন পর বিয়ের ব্যবস্থা করা হবে। উনার ইনকামও সেরকম না যে পাত্রী পক্ষ সম্মতি জানাবে।
আমার জানার বিষয় হলো আমি কি আমার হাসবেন্ডকে তাবলীগে যেতে মানা করবো? আর আমি কিভাবে নিজেকে হেফাযত করবো এই ফিতনা থেকে? আমার করণীয় কি?
জাযাকুমুল্লাহু খাইরান।

1 Answer

0 votes
ago by (645,900 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ    

وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١] 

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ

অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا لَيْثٌ عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ عَنْ أَبِي الْخَيْرِ عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِيَّاكُمْ وَالدُّخُولَ عَلٰى النِّسَاءِ فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَفَرَأَيْتَ الْحَمْوَ قَالَ الْحَمْوُ الْمَوْتُ.

‘উকবাহ ইবনু ‘আমির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবলেছেন, মহিলাদের নিকট একাকী যাওয়া থেকে বিরত থাক। এক আনসার জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসূল! দেবরের ব্যাপারে কী হুকুম? তিনি উত্তর দিলেন, দেবর হচ্ছে মৃত্যুতুল্য। [বুখারী শরীফ ৫২৩২,মুসলিম ৩৯/৮, হাঃ ২১৭২, আহমাদ ১৭৩৫২] (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৪৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫২)

وَحَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ سَمِعْتُ اللَّيْثَ بْنَ سَعْدٍ، يَقُولُ الْحَمْوُ أَخُ الزَّوْجِ وَمَا أَشْبَهَهُ مِنْ أَقَارِبِ الزَّوْجِ ابْنُ الْعَمِّ وَنَحْوُهُ .

আবূ তাহির (রহঃ) ..... ইবনু ওয়াহব (রহঃ) বলেন, লায়স ইবনু সা'দ (রহঃ) কে আমি বলতে শুনেছি যে, الْحَمْوُ শব্দের অর্থ স্বামীর ভাই (দেবর-ভাসুর) এবং স্বামীর আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে তার (স্বামীর ভাইয়ের) সমপর্যায়ের চাচাত ভাই প্রমুখ (মুসলিম শরীফ  ৫৫৬৯,ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৫৪৮৯, ইসলামিক সেন্টার ৫৫১৩)
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি আপনার স্বামীর সাথে মাস্তুরাত জামাতে যেতে পারেন।

অথবা এই ১০ দিন আপনি আপনার বাবার বাসায় গিয়ে থাকতে পারেন,বা আপনার স্বামীর কোনো নারী আত্মীয়কে এ কয়দিন আপনার সাথে থাকতে বলতে পারেন,যেই নারী আপনার দেবরের মাহরাম।

যাতে দেবরের সাথে আপনার কথা বলতে না হয়,তার থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলা যায়।

অথবা অন্য কোনো উত্তম পন্থা অবলম্বন করতে পারেন। 

কোনো পন্থা অবলম্বন করার সুযোগ না থাকলে সেক্ষেত্রে আপনি ফিতনা থেকে বাঁচতে,নিজের ঈমান আমল হেফাজত করার লক্ষ্যে স্বামীকে তাবলীগে না গিয়ে বাসায় থাকতে বলতে পারবেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...