আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
33 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।

আমি একজন প্রবাসী মুসলিম। আল্লাহ তাআলার অশেষ অনুগ্রহে আমি বর্তমানে মসজিদে নববীতে খাদেম হিসেবে খেদমতে নিযুক্ত আছি। কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে শরয়ী দিকনির্দেশনা প্রয়োজন, যদি আপনি কুরআন-সুন্নাহর আলোকে কিছু নসিহাহ দান করেন, তাহলে আমার জন্য দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণের কারণ হবে ইনশাআল্লাহ।

প্রশ্ন ১: মসজিদে নববীতে হাদিয়া চাওয়ার বিষয়ে শরয়ী দিক

আমরা জানি, মক্কা-মদিনার হারামাইন শরীফেই চাকরির সুযোগ আল্লাহর একটি বড় নেয়ামত। তবে হুজুর, এখানকার বাস্তবতা হলো, অধিকাংশ খাদেমদের বেতন খুবই সীমিত। ফলে অনেক ভাইকে দেখা যায়, তাঁরা হজ্ব কিংবা উমরাহ করতে আসা মুসল্লিদের নিকট সরাসরি কিছু না চেয়ে ঘুরে-ফিরে হাদিয়া পাওয়ার চেষ্টা করেন। কখনো নামাজ শেষে দরজার পাশে দাঁড়িয়ে থাকেন, যাতে কেউ হাদিয়া দান করে। কখনো এক মুসল্লি কাউকে কিছু দিলে, সাথে সাথে আরও কয়েকজন সেখানে উপস্থিত হয়ে যান। অনেক সময় বলা হয়: “এটা যাকাত, এটা ফিতরা,” অথচ যাকে দান করা হচ্ছে, তিনি নিজেও নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক। এছাড়া কোম্পানি তরফ থেকে কিংবা সরকারি কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এভাবে সম্পূর্ণ হাদিয়া নেওয়া নিষিদ্ধ করে রেখেছে। এবং কাউকে এভাবে পাওয়া গেলে তার নামে মামলা পর্যন্ত দেওয়া হয় এমনকি দেশেও পাঠিয়ে দেওয়া হয়
এমত অবস্থায় প্রশ্ন হলো:
এই পন্থায় মুসল্লিদের কাছ থেকে হাদিয়া চাওয়া বা গ্রহণ করা শরয়ী দৃষ্টিতে কতটুকু বৈধ?

প্রশ্ন ২: চাকরির সীমাবদ্ধতা, বিয়ে এবং বিদেশে থাকা সম্পর্কে পরামর্শ

মসজিদে নববীর খাদেম হওয়া নিঃসন্দেহে আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সৌভাগ্যের একটি। এখানে থেকে ইলমের মজলিসে শরিক হওয়া সহজ হচ্ছে, এবং কিছুটা হলেও দ্বীনি কাজে সময় ব্যয় করার সুযোগ পাচ্ছি—আলহামদুলিল্লাহ। আমি অনলাইন মাদ্রাসা থেকে আলিম প্রস্তুতিমূলক কোর্স করতেছি। এছাড়া উক্ত মাদ্রাসার বিভিন্ন খেদমতে রয়েছি ত্বলিবে ইলমদের।
তবে বাস্তব দিক হলো, এখানে বেতন খুবই কম, এবং কোম্পানির নিয়ম অনুযায়ী ১৫ মাসের আগে দেশে যাওয়ারও কোনো সুযোগ নেই। অন্যদিকে আমি অবিবাহিত, এবং ভবিষ্যতে বিয়ের পর স্ত্রীকে এখানে নিয়ে আসার মতো সামর্থ্যও নেই। অথচ আমরা জানি, বিবাহিত অবস্থায় স্ত্রীর থেকে দূরে দীর্ঘদিন থাকা শরীয়ত নিরুৎসাহিত করে।একইভাবে আশঙ্কা হচ্ছে দেশে চলে আসলে নতুন করে রিজিক তালাশ, সংসারে দায়িত্ব, বাংলাদেশে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে। এরকমটা মনে হচ্ছে ইলম অর্জন থেকে দূরে সরে যাব।
এমত অবস্থায় আমার দোটানা চলছে:

একদিকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর রওযা মোবারক সংলগ্ন এই স্থানে থাকার বরকত।

অন্যদিকে স্ত্রীর হক, সংসার ও দায়িত্ব পালনের বাস্তবতা।

প্রশ্ন হলো:
এই পরিস্থিতিতে আমার জন্য উত্তম করণীয় কী?
এই পবিত্র স্থান ছেড়ে দেশে ফিরে যাওয়া, নাকি পরিবারের দায়িত্ব ও কষ্টের ঝুঁকি নিয়েও এখানেই থেকে যাওয়া—কোনটি আমার জন্য শরয়ীভাবে উত্তম ও আল্লাহর সন্তুষ্টির উপযোগী হবে?

1 Answer

0 votes
by (683,010 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
হযরত সাহল ইবনে হানযালা রাঃ থেকে বর্ণিত,
وَعَنْ سَهْلِ بْنِ الْحَنْظَلِيَّةِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -: " «مَنْ سَأَلَ وَعِنْدَهُ مَا يُغْنِيهِ، فَإِنَّمَا يَسْتَكْثِرُ مِنَ النَّارِ» " قَالَ النُّفَيْلِيُّ وَهُوَ أَحَدُ رُوَاتِهِ فِي مَوْضِعٍ آخَرَ " وَمَا الْغِنَى الَّذِي لَا تَنْبَغِي مَعَهُ الْمَسْأَلَةُ؟ قَالَ: قَدْرُ مَا يُغَدِّيهِ وَيُعَشِّيهِ " وَقَالَ فِي مَوْضِعٍ آخَرَ " أَنْ يَكُونَ لَهُ شِبَعُ يَوْمٍ أَوْ لَيْلَةٍ وَيَوْمٍ ". رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ.
নবীজী সাঃ বলিয়াছেন,যে ব্যক্তি সুওয়াল করল,অথচ তার কাছে যথেষ্ট পরিমাণ মাল রয়েছে, সে যেন বেশী বেশী আগুনকে চাইল।আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ আন-নুফায়লি যিনি উক্ত হাদিসের একজন রাবী(বর্ণনাকারী),তিনি  বলেন: কি পরিমাণ সম্পদ থাকলে সুওয়াল করা যাবে না? মর্মক প্রশ্নের জবাবে নবীজী সাঃ বলেনঃ সকালবিকাল পরিমাণ খাদ্য সংগ্রহ থাকলে সুওয়াল করা যাবে না।নুফাইলি রাহ অন্যত্র বলেন,নবীজী সাঃ বলেছেনঃ যার কাছে একদিন পরিমাণ বা একদিন ও রাত পরিমাণ খাদ্য সংগ্রহ থাকবে তার জন্য সুওয়াল করা হারাম হবে।(আবু-দাউদ-১৮৪৮) এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/3719


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
মসজিদে নববীতে চাকুরী সুযোগ চরম সুভাগ্যর বিষয়। সামর্থ্যবান তথা নেসাব পরিমাণ মালের মালিক কারো জন্য যাকাত ফিতরার মাল গ্রহণের কোনো সুযোগ নাই। তাছাড়া যাকাত ফিতরা ব্যতিত এমনি সাধারণ নফল দান সদকাহ খোজে নেওয়াও জায়েয না।

যেহেতু আপনাকে বিয়ের ব্যবস্থাও করতে হবে এবং পরিবার পরিজনের দেখভালও করতে হচ্ছে, তাই আপনি আপাতত এই চাকুরীতে থাকেন, পাশাপাশি এর চেয়ে ভালো বেতনের চাকুরীর চেষ্টা করেন। আল্লাহ আপনার সকল সমস্যার সমাধান করুক।আমীন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...