পাওনা টাকা ফেরত প্রসঙ্গে।

Question

আসসালামু আলাইকুম।
আমার বাবা একজন পাইকারি ওষুধের ব্যবসায়ী। তিনি আগে চাকরি করত।  বর্তমানে তার পেনশন এর টাকা দিয়ে এই ব্যবসা শুরু করেছেন 1 বছর হলো। তিনি চাকরি থাকা অবস্থায় বা এখন সব অবস্থা তেই তার মা মানে আমার দাদীর সব হক পূরণ করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু মাঝে মাঝে তা সম্ভব হয় নি। আমার দাদী এতে খুবই অসন্তুষ্ট হন। তিনি সব সময় বদ দুআ করেন। বলেন যে '  তোর টাকা মানুষ খাবে। তোর টাকা ভূতে খাবে। তোর কিছু থাকবে না। সব ধ্বংস হয়ে যাবে। ' আমার বাবা মাঝে মাঝে রাগ হয় কিন্তু খুব বেশি কিছু বলে না। এখন আমার বাবার ব্যবসা খুব ই খারাপ যাচ্ছে। বিক্রি কম হচ্ছে। আবার যারা টাকা ধার নিয়েছে তারা ফেরত দিচ্ছে না । অনেকে বাবার থেকে প্রতারণা করে টাকা নিয়ে আর ফেরত দিচ্ছে না। আমার বাবা এতে খুবই চিন্তিত। প্রায় 20 লাখ টাকা তিনি মানুষকে দিয়েছেন। এখন কেউ তাকে আর ফেরত দিচ্ছে না। দিনদিন আমাদের আর্থিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে। আমরা সবাই দুআ করতেসি । আমার দাদীকে দুয়া করতে বলে আমার বাবা । তখন বাবার সামনে ভালো দুআ করলেও বাবা না থাকলে আবার আগের মতো বলে যে ওর কিছু থাকবে না। মন থেকে বলে কিনা জানি না। তারপর আমার বাবার বড় ভাই অর্থাৎ আমার বড় বাবা তার ক্ষেত্রেও এমন করে বলে। আমার বড় বাবা কখনও উন্নতি করতে পারেন নি। যদিও উন্নতি অবনতি সব আল্লার পক্ষ থেকে পরীক্ষা কিন্তু আমাদের মনে হয় আমার দাদীর এমন বদ দুআ র কারণে এমন টি হয়। এমন মনে হওয়ার কারণ হলো আমার ফুপি । আমার দাদী কখনও তাকে এমন করে কোনো কথা বলেন না। তার জন্য সব সময় দুআ করেন। সে আমার দাদীর সাথে খারাপ ব্যবহার করলেও কখনও বদ দুআ করেন । অথচ আমার বাবা বা বড় বাবা এমনটা করেন না। আর আমার বাবা নামাজ পড়েন মাঝে মাঝে। যখন দেখেন যে তার ব্যবসায় খারাপ অবস্থা তখন আর নামাজ পড়েন না। আমরা বোঝালেও বোঝেন না। আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন। আমাদের সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছেন। আমাদের সাথে কথা না বলার কারণে নিজেই কষ্ট পাচ্ছেন । কিন্তু নিজের জেদের কাছে পরাজিত হবেন না। তার ধারণা আমাদের ভরণ পোষণ দিতে গিয়ে তার ব্যবসায় লাভ সব বেরিয়ে যায়। তার ব্যবসায় অবনতি হচ্ছে।

প্রশ্ন 1:আমার বাবা এখন কিভাবে এই টাকা তুলতে পারেন? এই বিষয় এ কি কোনো নির্দিষ্ট আমল করতে হবে? তাহলে কি? যেহেতু আমার  বাবা নামাজ পড়েন না। সে ক্ষেত্রে আমাদের কি করণীয়?

প্রশ্ন 2: আমার দাদী  বিনা ওজরে আমার বাবা আর বড় বাবা কে যে বদ দুআ করেন( হয়তো মন থেকে নয়) সেগুলোর কি কোনো প্রভাব পড়বে? যদি না পরে তাহলে কেনো এমন হচ্ছে? আমার দাদীর বলা সেই কথা কিভাবে মিলে যাচ্ছে ? যে আমার বাবার টাকা ধ্বংশ হয়ে যাবে। সে ধ্বংশ হয়ে যাবে।
প্রশ্ন 3: কেউ কোনো অপরাধ না করলে তার নামে বদ দুআ করলে কি কোনো ক্ষতি হবে?

Answer 1

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ-

আলহামদুলিল্লাহ!

(১) আপনার বাবা দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামায তাকবীরে উলার সাথে পড়বেন। এবং তাহাজ্জুদ নামায পড়ে আল্লাহর কাছে সমস্যার সমাধান চাইবেন।বেশী বেশী ইন্নলিল্লাহ পড়বেন।

(২) মাতাপিতার বদ-দু'আ সন্তানের জন্য কাল হয়ে দাড়ায়।কিছু দু'আ আল্লাহ সাথে সাথেই কবুল করে নেন,এর মধ্যে একটি দু'আ হল,মাতাপিতার দু'আ। সুতরাং নিজের ভবিষ্যত জীবনকে নিরাপদ রাখার স্বার্থে মাতাপিতার সন্তুষ্টি অর্জন একান্ত জরুরী ও কাম্য।তবে ইবাদত কবুল হয় না, বিষয়টা এভাবে বলা যাবে না।

মায়ের বদ-দু'আর কারণে জুরাইজ নামাক একজন ওলীকে আল্লাহ অপবাদে আরোপিত করেছিলেন।বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/1855

তবে মাতাপিতা যদি অন্যায়ভাবে সন্তানের উপর নারাজ থাকেন,তাহলে এমতাবস্থায় সন্তানের উপর মাতাপিতার বদ'দুআ পতিত হবে না।এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/9915

(৩) কেউ কোনো অপরাধ না করলে তার নামে বদ দুআ করলে তার কোনো ক্ষতি হবে না।