আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
15 views
ago in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (19 points)
আসসালামু আলাইকুম সম্মানিত উস্তাজ। এক স্ত্রী স্বামীর এবং শশুরবাড়ির জুলুমের স্বীকার হয়ে বাবার বাড়ি চলে যেতে চাইছে কারন তার মানসিক অবস্থা খুবই খারাপ।মনে হয় কিছু দিনপর এইগুলো ভাবতে ভাবতে পাগলই হয়ে যাবে কিন্তু স্বামী তাকে সুইসাইডের ভয় দেখায়,আর কালকে শশুর শাশুড়ীর সাথে কথা বলেছে।শশুর হ্যা বা না বলবে না আরে অনেক বেশিকথা শোনা লাগছে।মেয়েটি তাদের কাছে অপছন্দনীয় কারন হচ্ছে পর্দা।শশুরের মেয়ে আর মেয়ে জামাইকে কেউ কষ্ট দিলে কেউ তার মন পাবে না।সব একদিকে আর তার মেয়ে আরেকদিক।তার মেয়ে জামাই ঐ স্ত্রীর নামে প্রতিনিয়ত নালিশ দিয়েছে,এমনকি মেয়ের মার নামেও তার জামাই নালিশ দিয়েছে। তাদের এইসব আর সহ্য হয়না,সংসারে যেন পরগাছা মনে হয় নিজেকে।মেয়ের মা আার নানীর দোষ হয় তারা নাকি বাড়ি দেখতে এসে মেয়ে সব সামলাতে পারবে,(এটা তাদের ভাষায় না) কিন্তু তার যখন বিয়ে করাতে গিয়েছিল তখনও মেয়ে পরপুরুষের সামনে নিকাব সরাবেনা,কান্নাকাটি করেছিল তারপরও তারা বিয়েতে রাজি হয়েছিল তখনতো না করলোনা বিয়েতে,এখন এই মেয়েটা সব দিক দিয়ে জুলুমের স্বীকার।৬ মাসের প্রেগন্যন্ট অবস্থায় এসব আর সহ্য করতে পারছেনা,এখন চলে যেতে চাইলে স্বামী সুইসাইড এর ভয় দেখায় সবাই বিপক্ষে
১.মেয়েটি যদি তার মাকে ফোন দেয় ও আসতে বলে এবং আসার পার নিশ্চয়ই বাড়িতে অনেক কথাবলাবলি হবে এবং তখন গীবত বা কোনো হারাম কথা হলে মেয়েটির কি গুনাহ হবে?( স্বামী বলতে বারন করে)

২.আর তার স্বামী যদি সুইসাইড এর দিকে যায় তাহলে কি মেয়েটি খুনি হয়ে যাবে?
উস্তাদ দোয়া করবেন,একটা আল্লহর প্রিয় হতে চাওয়া মেয়ে কখোনো সামান্য বিষয়ে আলাদা হতে চাইবেনা অবশ্যই সমস্যা তার নিকট অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে।

1 Answer

0 votes
ago by (644,070 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ عَمْرِو بْنِ الأَحْوَصِ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي أَنَّهُ، شَهِدَ حَجَّةَ الْوَدَاعِ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ وَذَكَّرَ وَوَعَظَ فَذَكَرَ فِي الْحَدِيثِ قِصَّةً فَقَالَ " أَلاَ وَاسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ خَيْرًا… أَلاَ وَحَقُّهُنَّ عَلَيْكُمْ أَنْ تُحْسِنُوا إِلَيْهِنَّ فِي كِسْوَتِهِنَّ وَطَعَامِهِنَّ " .

সুলাইমান ইবনু আমর ইবনুল আহওয়াস (রহঃ) হতে তার পিতার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
বিদায় হজ্জের সময় তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলেন। তিনি আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা ও গুণগান করলেন এবং ওয়াজ-নাসীহাত করলেন। এ হাদীসের মধ্যে বর্ণনাকারী একটি ঘটনা বর্ণনা করে বলেন, তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ স্ত্রীদের সাথে ভালো আচরণের উপদেশ নাও। ... জেনে রাখ! তোমাদের প্রতি তাদের অধিকার এই যে, তোমরা তাদের উত্তম পোশাক-পরিচ্ছদ ও ভরণপোষণের ব্যবস্থা করবে। (সুনানে তিরমিযী ১১৬৩)

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে রয়েছে-

تجب السكني لها عليه في بيت خال

মর্থার্থ: স্ত্রীর জন্য আলাদা ঘরের ব্যবস্থা করা স্বামীর উপর আবশ্যক। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াত, ১/৬০৪)

قَوْلُهُ خَالٍ عَنْ أَهْلِهِ إلَخْ) ؛ لِأَنَّهَا تَتَضَرَّرُ بِمُشَارَكَةِ غَيْرِهَا فِيهِ؛؛ لِأَنَّهَا لَا تَأْمَنُ عَلَى مَتَاعِهَا وَيَمْنَعُهَاذَلِكَ مِنْ الْمُعَاشَرَةِ مَعَ زَوْجِهَا وَمِنْ الِاسْتِمْتَاعِ إلَّا أَنْ تَخْتَارَ ذَلِكَ؛ لِأَنَّهَا رَضِيَتْ بِانْتِقَاصِ حَقِّهَا هِدَايَةٌ )

স্ত্রীকে এমন একটি বাসস্থান দান করা স্বামীর জন্য ওয়াজিব,যা স্বামীর পরিবার থেকে খালি থাকবে,কেননা সে অন্যর উপস্থিতির ধরুণ কষ্ট উপভোগ করবে,এবং তার মাল সামানা পুরোপুরি সংরক্ষিত থাকবে না।তৃতীয় কারো উপস্থিতি স্বামী-স্ত্রীর পারিবারিক জীবন ও একান্ত সময় অতিবাহিত করতে ব্যাঘাত সৃষ্টি করবে। এ জন্য একটি পৃথক বাসস্থান স্ত্রীর মৌলিক অধিকার।তবে যদি সে তার নিজ অধিকার বিসর্জন দিতে রাজি হয় যায় তাহলে তার জন্য অনুমিত রয়েছে (যদি এক্ষেত্রে গোনাহের কোনো সম্ভাবনা না থাকে)

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/430

ইসলামের দিক-নিদের্শনা হচ্ছে বিবাহের পরে স্বামীর প্রথম কতর্ব্য হলো স্ত্রীর জন্য এমন একটি বাসস্থানের ব্যবস্থা করা যেখানে স্ত্রী মানুষের দৃষ্টি থেকে নিরাপদ থাকবে। কেননা পর্দা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরজ বিধান। আর এই বিধান পালন করার জন্য স্বামীর কতর্ব্য স্ত্রীকে সাহায্য করা। সেই সাথে অন্যান্য সকল কষ্ট থেকে স্ত্রীর আরামের ব্যবস্থা করতে হবে। তবে স্ত্রীকে শ্বশুর ও শাশুড়ির সাথেই থাকতে হবে এমন বাধ্যও করা যাবে না। কেননা এমন কোন অধিকার স্বামীর নেই। তবে এই ক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রী উভয়কে সামাজিক অবস্থার উপর বিবেচনা করেও কিছু কাজ করতে হবে।

যদি কোন স্বামী তার স্ত্রীকে স্বামীর পরিবারের সাথে অথবা অন্য আত্মীয়ের সাথে থাকার কথা বলে কিন্তু স্ত্রী কারো সাথে থাকার কথা রাজি না হয় তাহলে স্ত্রীকে আলাদা রাখার ব্যবস্থা করা স্বামীর কতর্ব্য। কেননা স্ত্রীর সকল কিছু রক্ষা করা ও নিরাপদে বসবাস করার দায়িত্ব স্বামীর।

আরো জানুনঃ 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
এক্ষেত্রে যেহেতু বিষয়টি সংশোধন করার জন্য মেয়েটি তার মাকে এসব বলছে,তাই এটি জায়েজ হনে।

এমতাবস্থায় মেয়েটির গীবতের গুনাহ হবেনা।

এ সংক্রান্ত জানুনঃ- 

(০২)
না,মেয়েটি খুনি হবেনা।

তবে এক্ষেত্রে তার স্বামীর উচিত, স্ত্রীর জন্য আলাদা বাসস্থানের ব্যবস্থা করে স্ত্রীকে নিয়ে সেই আলাদা বাসায় থাকা।
কোনোভাবেই আত্মহত্যার দিকে না যাওয়া।

আত্মহত্যা থেকে বাঁচতে করনীয় জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...