আসসালামু আলাইকুম উস্তায।
ইদ্দতকাল সম্পর্কে আরো দুইটা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছিলাম, আবার অন্য আরেকটা প্রশ্ন করার জন্য প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি । আফওয়ান
প্রশ্ন নং -1) ইউরোপের যেকোনো দেশে স্থায়ী ভাবে অবস্থানের জন্য,আমার মা আমাকে অনেক অনুরোধ করতেছেন। কারনগুলো হলো:
১)আমার যে ফ্যামিলিতে বিবাহ ঠিক করা হয়ে গিয়েছে। সেই পরিবারে আমাকে যৌথ ফ্যামিলিতে থাকতে হবে ,যেখানে পর্দা করে চলা খুব কঠিন হবে। দেবর ভাসুর তারা দ্বীন সম্পর্কে একেবারেই উদাসীন। তাদের সাথেই এক বাসায় থাকতে হবে।
বোরকা পরে রান্না করতে হবে , পরিবারের সব কাজগুলো করতে হবে ,বোরকা পড়েই। কারন রান্নাঘরের পাশেই টিউবওয়েল, রান্নাঘরের ভিতরে ঢুকেই টিউবওয়েল এ যেতে হয় ।রান্নাঘরের ভিতর দিয়ে যাতায়াত করেন দেবর ভাসুররা। নিজের রুমে যতক্ষণ থাকবো ততটুকু সময় শুধু পর্দার ভিতরে থাকতে পারবো। এছাড়া অন্যান্য সময় বোরকা পরে থাকতে হবে এমন অবস্থা । স্বামীকে নিয়ে আলাদা থাকার কোন উপায় নেই । যদি আমার স্বামী পর্দার জন্য আমাকে নিয়ে আলাদা বাসায় থাকেন, তাহলে আমার শশুড় শাশুড়ি একদমই নারাজ হয়ে যাবেন আমার স্বামীর উপর । উল্লেখ্য দেবর ভাসুর থেকে হবু স্বামীর আয় বেশি ,তাই শাশুড়িমা আলাদা হতে দিবেন না। মনে হয় না উনি কোনদিন আমার পর্দার জন্য ,আলাদা বাসার ব্যবস্থা করবেন বলে । আমার জানামতে দেবর ভাসুর উনারা নেশা জাতীয় কোন কিছু সেবন করে থাকেন। এমন ধরনের মানুষ দেরকে নিয়ে একসাথে চলাফেরা করা কতটা পর্দার ক্ষেত্রে গুরুতর সমস্যা হবে তা বলা বাহুল্য। স্বামী মোটামুটি দ্বীন বুঝেন। তবে জানা নাই নিজের ভাইদের সামনে আমাকে কতটুকু পর্দা করতে দিবেন।
২) যদি কোনোভাবে আমি পর্দার গুরুত্ব বুঝিয়ে দাইয়ুসের শাস্তির ব্যাপারে বলে স্বামীকে বুঝাতে পারি, আলাদা বাসার ব্যবস্থা করার জন্য । তবুও এটা আমার এবং আমার স্বামীকে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে বলে মনে হচ্ছে । হিংসার কারন হয়ে যাব আমরা। কারণ বর্তমানে ঐ পরিবারের ভরনপোষন এর খরচ আমার হবু স্বামী বহন করে। দেবর ভাসুর তারা তাদের আয়ের কিছু অংশ পরিবারে দেয়। বেশিরভাগই নিজেরা নিজের ইচ্ছেমতো খরচ করে। আলাদা হয়ে গেলে তো তাদের একটা দায়িত্ব বহন করতে হবে। নিজের ইচ্ছেমতো খরচ করতে পারবেনা।
৩) ভাসুরের ছেলের পড়ালেখার খরচ ও আমার হবু স্বামী বহন করে । আমার সাথে বিয়ে ঠিক হওয়ার ব্যাপারে ভাসুরের স্ত্রীর মত ছিল না। ভাসুরের স্ত্রীর ইচ্ছে ছিল তার সন্তানাদির লালন পালন , পড়ালেখা যাবতীয় খরচ আমার হবু স্বামী বহন করবে। * অন্তরের খবর আল্লাহই ভালো জানেন। আচরন আর কথাবার্তা, দীর্ঘদিনের পরিচিতি থেকে এটা বুঝতে পেরেছি। এমনকি ঐ মহিলা যাদু ও করে থাকেন । এমনটা ও অনেকবার শুনেছি। হবু স্বামী আমার আপন খালাতো ভাই । খালার পরিবারের ব্যক্তিদের ব্যাপারে অনেক ধারনা আছে ।এই সুবাধে বিষয় গুলো জানা ।
৪) আমার মা আমাকে বার বার বিদেশে চলে যেতে বলার কারন হলো : আমি একজন তালাকপ্রাপ্ত নারী, আমার আগের স্বামীর ব্যাপারটাও অন্যান্য সমস্যার সাথে যাদু সংক্রান্ত সমস্যা ও ছিল । বিয়ের অল্প দিনের মধ্যেই আকস্মিকভাবে সংসারটা ভেঙে যায় । এজন্যে আম্মা ভয় পাচ্ছেন এই সংসারটা ও যাদু বা হিংসা বশবর্তী হয়ে কোন ক্ষতির আশংকা করছেন।
৫ )দেবরের স্ত্রী পর্দা বিষয়ে একটু ও সচেতন না। এবং হবু স্বামী দেবরের স্ত্রীর সাথে খুব ভালো সম্পর্ক । স্বামী যদি দেবরের স্ত্রীর সাথে এরকম গভীর সম্পর্কে থাকে , তাহলে জানা নাই আমি কেমন আচরন করতে পারি । এটা নিয়ে ও সমস্যা হতে পারে । আমি মনে করি ঐ মহিলা থেকে দূরে থাকাই সবচেয়ে ভালো। স্বামীকে ও বুঝানো যাবেনা। ঐ মহিলাকে ও সরানো যাবেনা।
৬) দাওয়াতের নিয়ত আছে আমার। আলিম প্রিপারিটি কোর্সে 2 nd সেমিস্টারে হিন্দু, খ্রিষ্টান ধর্ম সম্পর্কে মোটামুটি ভালোই ধারনা হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ । আল্লাহ পাক যদি তাওফিক দান করেন , দাওয়াত দেওয়ার নিয়ত আছে,আলহামদুলিল্লাহ ।দাওয়াত দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ ।
৭ )আমার আপন চাচাতো ভাই অনেকবার প্রস্তাব দিছিলো আমাকে বিয়ের জন্য । সে এবং তার পরিবারের সদস্যদের সাথে আমাদের জায়গা সংক্রান্ত সমস্যা ছিল ছোটবেলা থেকেই,এজন্য চাচাতো ভাইয়ের সাথে বিয়ে দেননি। তারা ও আমাদের সাথে শত্রুতা পূর্ণ মনোভাব করে।এমনকি আমার বড় বোনের স্বামীর বাড়ির সাথে যোগাযোগ করে, বড়বোনের সংসারটা ও ভেঙে দিয়েছে । আশংকা করছি তাদের থেকে কোন ক্ষতি হতে পারে , তারা বারবার খুজঁ ও নিতেছে আমার হবু স্বামী কবে সৌদি থেকে আসবে, কবে বিবাহ সংঘটিত হবে।
৮)আমার আগের স্বামী ও ক্ষতি করতে পারে, তালাকের ক্ষেত্রে সে খুব অগ্রগামী ছিল, পরে তালাকের সময় আবার তালাক দিতে অনাগ্রহী ও ছিল।তবে এটা লোক দেখানোর জন্য ছিল কি না তা জানিনা।পরবর্তীতে তো তালাক হয়ে যায় । বর্তমানে সে আমার ছবি ইত্যাদি দিয়ে আমাকে বিরক্ত করে বিভিন্নভাবে।
এমন অবস্থায় আমার ইউরোপের কোনো দেশে স্থায়ী ভাবে বসবাস করার উদ্দেশ্যে যাওয়া কি জায়েজ হবে?
প্রশ্ন নং -2) হবু স্বামীর সাথে প্রয়োজনে মেসেজে কথা বলা যাবে? প্রয়োজন যেমন: হবু স্বামী সে সৌদিতে থাকে ,তার আব্বা আম্মাকে বলেছিল তার রুমের সাথে একটি বাথরুম তৈরি করার জন্য । যাতে আমার রুম থেকে বাহির হতে না হয়। কিন্তু তারা এই কাজ করতে অনেক দেরি করতেছে।কাজ শুরু ই করতেছে না। বাথরুম তৈরি করার পর সে দেশে আসবে। আর আগে আসবে না বলছে। তারা যে কাজ শুরু ই করে নি, আমি কি তাকে এই খবর টা বলতে পারি ?
বিয়ে ঠিক করে রেখে সম্পর্ক টা হারাম অবস্থায় আছে, সম্পর্ক হালাল করার জন্য কোন পদক্ষেপ ই তার বাবা মা নিচ্ছে না।
আর এইদিকে আমার মা বাবা বলেন আমি কেন অন্তত মেসেজে ও তার সাথে কথা বলিনা।
সে (হবু স্বামী)ও আমার বোন কে বলেছিল আমি কেন মেসেজে ও কথা বলিনা।
এমতাবস্থায় দু একটা মেসেজে কথা বলা যাবে প্রয়োজনে?