আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
45 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (11 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম উস্তায।
ইদ্দতকাল সম্পর্কে  আরো দুইটা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছিলাম, আবার অন্য আরেকটা প্রশ্ন করার জন্য প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি । আফওয়ান
প্রশ্ন নং -1)  ইউরোপের যেকোনো দেশে স্থায়ী ভাবে অবস্থানের  জন্য,আমার মা আমাকে অনেক অনুরোধ করতেছেন।  কারনগুলো হলো:
১)আমার যে ফ্যামিলিতে বিবাহ ঠিক করা হয়ে গিয়েছে।  সেই পরিবারে আমাকে  যৌথ ফ্যামিলিতে থাকতে হবে ,যেখানে পর্দা করে চলা খুব কঠিন হবে। দেবর ভাসুর তারা দ্বীন সম্পর্কে একেবারেই উদাসীন। তাদের সাথেই এক বাসায় থাকতে হবে।
বোরকা পরে রান্না করতে হবে , পরিবারের সব কাজগুলো করতে হবে ,বোরকা পড়েই। কারন রান্নাঘরের পাশেই টিউবওয়েল, রান্নাঘরের ভিতরে ঢুকেই টিউবওয়েল এ যেতে হয় ।রান্নাঘরের ভিতর দিয়ে  যাতায়াত করেন দেবর ভাসুররা।   নিজের রুমে যতক্ষণ থাকবো ততটুকু সময় শুধু পর্দার ভিতরে থাকতে পারবো। এছাড়া অন্যান্য সময় বোরকা পরে থাকতে হবে এমন অবস্থা । স্বামীকে নিয়ে আলাদা থাকার কোন উপায় নেই । যদি আমার স্বামী পর্দার জন্য আমাকে নিয়ে আলাদা বাসায়  থাকেন, তাহলে আমার শশুড় শাশুড়ি একদমই নারাজ হয়ে যাবেন আমার স্বামীর উপর । উল্লেখ্য দেবর ভাসুর থেকে হবু স্বামীর আয় বেশি ,তাই শাশুড়িমা আলাদা হতে দিবেন না।  মনে হয় না উনি কোনদিন আমার পর্দার জন্য ,আলাদা বাসার  ব্যবস্থা করবেন বলে । আমার জানামতে দেবর ভাসুর উনারা নেশা জাতীয় কোন কিছু সেবন করে থাকেন।  এমন ধরনের মানুষ দেরকে নিয়ে একসাথে চলাফেরা করা  কতটা পর্দার ক্ষেত্রে গুরুতর সমস্যা হবে তা বলা বাহুল্য। স্বামী মোটামুটি দ্বীন বুঝেন। তবে জানা নাই নিজের ভাইদের সামনে আমাকে কতটুকু পর্দা করতে দিবেন।
২) যদি কোনোভাবে আমি পর্দার গুরুত্ব বুঝিয়ে দাইয়ুসের শাস্তির ব্যাপারে বলে স্বামীকে বুঝাতে পারি, আলাদা বাসার ব্যবস্থা করার জন্য ।  তবুও এটা আমার এবং আমার স্বামীকে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে বলে মনে হচ্ছে । হিংসার কারন হয়ে যাব আমরা। কারণ বর্তমানে ঐ পরিবারের ভরনপোষন এর খরচ আমার হবু স্বামী বহন করে। দেবর ভাসুর তারা  তাদের আয়ের কিছু অংশ পরিবারে দেয়।  বেশিরভাগই নিজেরা নিজের ইচ্ছেমতো খরচ করে। আলাদা হয়ে গেলে তো তাদের একটা দায়িত্ব বহন করতে হবে। নিজের ইচ্ছেমতো খরচ করতে পারবেনা।
৩) ভাসুরের ছেলের পড়ালেখার খরচ ও আমার হবু স্বামী বহন করে । আমার সাথে বিয়ে ঠিক হওয়ার ব্যাপারে  ভাসুরের স্ত্রীর মত ছিল না। ভাসুরের স্ত্রীর ইচ্ছে ছিল তার সন্তানাদির লালন পালন , পড়ালেখা যাবতীয় খরচ আমার হবু স্বামী বহন করবে। * অন্তরের খবর আল্লাহই ভালো জানেন। আচরন আর কথাবার্তা, দীর্ঘদিনের পরিচিতি থেকে এটা বুঝতে পেরেছি। এমনকি ঐ মহিলা যাদু ও করে থাকেন । এমনটা ও অনেকবার শুনেছি। হবু স্বামী আমার আপন খালাতো ভাই । খালার পরিবারের ব্যক্তিদের ব্যাপারে অনেক ধারনা আছে ।এই সুবাধে বিষয় গুলো জানা ।
৪) আমার মা আমাকে বার বার বিদেশে চলে যেতে  বলার কারন হলো : আমি একজন তালাকপ্রাপ্ত নারী, আমার আগের স্বামীর ব্যাপারটাও অন্যান্য সমস্যার সাথে যাদু সংক্রান্ত সমস্যা ও ছিল । বিয়ের অল্প দিনের মধ্যেই আকস্মিকভাবে সংসারটা ভেঙে যায় । এজন্যে আম্মা ভয় পাচ্ছেন এই সংসারটা ও যাদু বা হিংসা বশবর্তী হয়ে কোন ক্ষতির আশংকা করছেন।
৫ )দেবরের স্ত্রী  পর্দা বিষয়ে একটু ও সচেতন না। এবং হবু স্বামী দেবরের স্ত্রীর সাথে খুব ভালো সম্পর্ক । স্বামী যদি দেবরের স্ত্রীর সাথে এরকম গভীর সম্পর্কে থাকে , তাহলে জানা নাই আমি কেমন আচরন করতে পারি । এটা নিয়ে ও সমস্যা হতে পারে । আমি মনে করি ঐ মহিলা থেকে দূরে থাকাই সবচেয়ে ভালো। স্বামীকে ও বুঝানো যাবেনা। ঐ মহিলাকে ও সরানো যাবেনা।
৬) দাওয়াতের নিয়ত আছে আমার। আলিম প্রিপারিটি কোর্সে 2 nd সেমিস্টারে হিন্দু, খ্রিষ্টান ধর্ম সম্পর্কে  মোটামুটি ভালোই ধারনা হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ  । আল্লাহ পাক যদি তাওফিক দান করেন , দাওয়াত দেওয়ার  নিয়ত আছে,আলহামদুলিল্লাহ ।দাওয়াত দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো  ইনশাআল্লাহ ।
৭ )আমার আপন চাচাতো ভাই অনেকবার প্রস্তাব দিছিলো আমাকে বিয়ের জন্য । সে এবং তার পরিবারের সদস্যদের সাথে আমাদের জায়গা সংক্রান্ত সমস্যা ছিল ছোটবেলা  থেকেই,এজন্য চাচাতো ভাইয়ের সাথে বিয়ে দেননি। তারা ও আমাদের সাথে শত্রুতা পূর্ণ  মনোভাব করে।এমনকি আমার বড় বোনের স্বামীর বাড়ির সাথে যোগাযোগ করে, বড়বোনের সংসারটা ও ভেঙে দিয়েছে ।  আশংকা করছি তাদের থেকে কোন ক্ষতি হতে পারে , তারা বারবার খুজঁ ও নিতেছে আমার হবু স্বামী কবে সৌদি থেকে আসবে, কবে বিবাহ সংঘটিত হবে।
৮)আমার আগের স্বামী ও ক্ষতি করতে পারে,  তালাকের ক্ষেত্রে সে খুব অগ্রগামী ছিল, পরে তালাকের সময় আবার তালাক দিতে অনাগ্রহী ও ছিল।তবে এটা লোক দেখানোর জন্য ছিল কি না তা জানিনা।পরবর্তীতে তো তালাক হয়ে যায় । বর্তমানে  সে আমার ছবি ইত্যাদি দিয়ে আমাকে বিরক্ত করে বিভিন্নভাবে।
এমন অবস্থায় আমার ইউরোপের কোনো দেশে স্থায়ী ভাবে বসবাস করার উদ্দেশ্যে যাওয়া কি জায়েজ হবে?

প্রশ্ন নং -2) হবু স্বামীর সাথে প্রয়োজনে মেসেজে কথা বলা যাবে? প্রয়োজন যেমন: হবু স্বামী সে সৌদিতে থাকে ,তার আব্বা আম্মাকে বলেছিল তার রুমের সাথে একটি বাথরুম তৈরি করার জন্য । যাতে আমার রুম থেকে বাহির হতে না হয়। কিন্তু তারা এই কাজ করতে অনেক দেরি করতেছে।কাজ শুরু ই করতেছে না। বাথরুম তৈরি করার পর সে দেশে আসবে। আর আগে আসবে না বলছে। তারা যে কাজ শুরু ই করে নি, আমি কি তাকে এই খবর টা বলতে পারি ?
বিয়ে ঠিক করে রেখে  সম্পর্ক টা হারাম অবস্থায় আছে, সম্পর্ক হালাল করার জন্য কোন পদক্ষেপ ই তার বাবা মা  নিচ্ছে না।
আর এইদিকে আমার মা বাবা বলেন আমি কেন অন্তত মেসেজে ও তার সাথে কথা বলিনা।

এমতাবস্থায় দু একটা মেসেজে কথা বলা যাবে প্রয়োজনে?

1 Answer

0 votes
by (680,910 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
(১)
অমুসলিম দেশে বসবাস, স্থায়ী হোক বা অস্থায়ী হোক, যখন এ এমন আলোচনা আসে, তখন তাদের ধর্মীয় নিয়ম নীতি বা তাদের সংস্কৃতি নিয়ে প্রশ্ন আসে?
তাছাড়া হাদীসে এসেছে,
আবু দাঊদ শরীফে হযরত সামুরা ইব্ন জুনদুব (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ স. ইরশাদ করেন :
ﻣﻦ ﺟﺎﻣﻊ ﺍﻟﻤﺸﺮﻛﻴﻦ ﻭﺳﻜﻦ ﻣﻌﻪ، ﻓﺎﻧﻪ ﻣﺜﻠﻪ –
“যে ব্যক্তি অমুলিমদের সাথে চলাফেরা করবে এবং তাদের সাথে বসবাস করবে, সেও তাদের অনুরূপ হবে”। (আবু দাঊদ, কিতাবুদ্দাহায়া) এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/3447

বাণিজ্যের উদ্দেশ্যেও কাফেরদের রাষ্ট্রে গমণ করে, তাহলে তার জন্য সেখানে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত সময় অবস্থান করা মাকরূহ।' (মাআলিমুস সুনান লিল-খাত্তাবী : [আবু সুলায়মান আল খাত্তাবী, মৃত্যু : ৩৮৮ হি.] খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ৪৩৭)

হযরত মাকহুল (রাযি.) থেকে সুনানে আবু দাউদের মারাসিলে বর্ণিত হয়েছে যে, হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াল্লাম ইরশাদ করেছেন :
لا تتركوا الذرية ازاء الـعـدو.
‘নিজের সন্তানদের মুশরিকদের মধ্যে বিচরণ করতে দেবে না।(আবু-দাউদ)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
সাধারণত অমুসলিম দেশে স্থায়ী বা অস্থায়ী বসবাস নাজায়েয ও হারাম। তবে দাওয়াত ও তাবলীগের নিয়তে বসবাস করা যাবে। প্রশ্নের বিবরণমতে যদি আপনারা দাওয়াত ও তাবলীগের পাক্কা ইরাদা অন্তরে রাখতে পারেন, তাহলে আপনি/আপনারা অমুসলিম দেশে বসতি স্থাপন করতে পারবেন।

(২) প্রশ্নে উল্লেখিত আলোচনা প্রয়োজনের অন্তর্ভুক্ত নয়, তাই আপনি হবু স্বামীর স্বামীর সাথে এরকম অপ্রয়োজনীয় আলোচনা চালিয়ে যেতে পারবেন না। শুধুমাত্র বিশেষ প্রয়োজনে আলোচনা করতে পারবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...