আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
25 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম।
মুহতারাম,

এক জন মানুষ কিভাবে অহংকার থেকে বাঁচবে?  ।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।

1 Answer

0 votes
by (76,710 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/12453/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

অহংকার একটি খারাপ গুণ। এটি ইবলিস ও দুনিয়ায় তার সৈনিকদের বৈশিষ্ট্য; আল্লাহ যাদের অন্তর আলোহীন করে দিয়েছেন।

,

সর্বপ্রথম আল্লাহ ও তাঁর সৃষ্টির উপর যে অহংকার করেছিল সে হচ্ছে— লানতপ্রাপ্ত ইবলিস। যখন আল্লাহ তাকে নির্দেশ দিলেন— আদমকে সেজদা কর; তখন সে অসম্মতি জানিয়ে বলল: “আমি তার চেয়ে উত্তম। আমাকে বানিয়েছেন আগুন দিয়ে; তাকে বানিয়েছেন মাটি দিয়ে।” আল্লাহ তাআলা বলেন: “আর আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করলাম, এরপর আকার-অবয়ব তৈরি করেছি। অতঃপর আমি ফেরেশতাদেরকে বললাম—আদমকে সেজদা কর; তখন সবাই সেজদা করল। কিন্তু ইবলিস সেজদাকারীদের মধ্যে ছিল না। আল্লাহ বললেন: আমি যখন তোকে সেজদা করার আদেশ দিলাম তখন কিসে তোকে সেজদা করতে বাধা দিল? সে বলল: আমি তার চেয়ে উত্তম। আমাকে বানিয়েছেন আগুন দিয়ে; তাকে বানিয়েছেন মাটি দিয়ে।” [সূরা আরাফ, আয়াত: ১১-১২]

,

তাই অহংকার ইবলিসি চরিত্র। যে ব্যক্তি অহংকার করতে চায় সে জেনে রাখুক সে শয়তানের চরিত্র গ্রহণ করেছে। সে সম্মানিত ফেরেশতাদের চরিত্র গ্রহণ করেনি, যারা আল্লাহর আনুগত্য করে সেজদায় লুটিয়ে পড়েছিল।

,

অহংকার অহংকারীর জান্নাত থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণ, ইজ্জতের মালিক আল্লাহকে সরাসরি দেখতে না পাওয়ার কারণ। দলিল হচ্ছে এ দুইটি হাদিস:

,

১. আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন তিনি বলেন: “যার অন্তরে বিন্দু পরিমাণ অহংকার আছে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। একলোক বলল: যে কোন লোক পছন্দ করে তার জামাটা ভাল হোক, তার জুতাটা ভাল হোক? তিনি বললেন: নিশ্চয় আল্লাহ সুন্দর; তিনি সৌন্দর্য পছন্দ করেন। অহংকার হচ্ছে— সত্যকে উপেক্ষা করা এবং মানুষকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা।”[সহিহ মুসলিম]

সত্যকে উপেক্ষার অর্থ: সত্য জেনেও সেটাকে প্রত্যাখ্যান করা।

মানুষকে তুচ্ছ করার অর্থ: মানুষকে ছোট করা, হেয় করা।

,

২. আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি অহংকারবশতঃ কাপড় ঝুলিয়ে হাঁটবে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার দিকে তাকাবেন না। আবু বকর (রাঃ) বললেন: আমার কাপড়ের একটা অংশ ঝুলে পড়ে যায়; আমি বারবার সেটাকে টেনে নেই। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: তুমি তো অহংকারবশতঃ সেটা কর না।” [সহিহ বুখারি (৩৪৬৫)]


,

অহংকার প্রতিরোধ করার উপায় হল- নিজেকে অন্য দশজন মানুষের মত মনে করা। অন্যসব লোককে নিজের সমতুল্য মনে করা। তারাও এক বাপ-মা থেকে জন্মগ্রহণ করেছে। যেভাবে আপনিও এক বাপ-মা এর ঘরে জন্মগ্রহণ করেছেন। আর আল্লাহভীতি ব্যক্তির মর্যাদা পরিমাপের মানদণ্ড। আল্লাহ তাআলা বলেন: “নিশ্চয় তোমাদের যে ব্যক্তি বেশি তাকওয়াবান সে আল্লাহর নিকট বেশি সম্মানিত।”[সূরা হুজুরাত, আয়াত: ১৩]

,

অহংকারী মুসলিমের জানা থাকা উচিত সে যতই বড় হোক না কেন পাহাড় সমান তো আর হতে পারবে না; জমিন ছিদ্র করে তো বেরিয়ে যেতে পারবে না। যেমনটি আল্লাহ তাআলা বলেছেন: “অহংকারবশে তুমি মানুষকে অবজ্ঞা করো না এবং পৃথিবীতে গর্বভরে পদচারণ করো না। নিশ্চয় আল্লাহ কোন দাম্ভিক অহংকারীকে পছন্দ করেন না। পদচারণায় মধ্যবর্তিতা অবলম্বন কর এবং কণ্ঠস্বর নীচু কর। নিঃসন্দেহে গাধার স্বরই সর্বাপেক্ষা অপ্রীতিকর।”[সূরা লোকমান, আয়াত: ১৭-১৮]

,

কুরতুবী বলেন:

“পৃথিবীতে গর্বভরে পদচারণ করো না” এখানে অহংকার থেকে বারণ করা হয়েছে এবং বিনয়ী হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আয়াতে المرح শব্দের অর্থ- তীব্র আনন্দ। কেউ কেউ বলেছেন: হাঁটার মধ্যে অহংকার করা, কেউ বলেছেন: কোন মানুষের তার মর্যাদার সীমা অতিক্রম করে যাওয়া।

কাতাদা বলেছেন: হাঁটার ক্ষেত্রে অহংকার। কেউ কেউ বলেছেন: প্রত্যাখান। কেউ কেউ বলেছেন: উদ্যম।

এ উক্তিগুলো সমার্থবোধক। কিন্তু এগুলো দুইভাগে বিভক্ত:

একটি: নন্দিত অপরটি: নিন্দিত।

অহংকার, প্রত্যাখান, দাম্ভিকতা এবং কোন মানুষের তার সীমা অতিক্রম করা: নিন্দিত।

আর আনন্দ ও উদ্যমতা: নন্দিত। [তাফসিরে কুরতুবী ১০/২৬০]

,

অহংকার প্রতিরোধ করার আরেকটি উপায় হলো- 

এটি মনে রাখা যে, অহংকারীকে কিয়ামতের দিন পিঁপড়ার ন্যায় ছোট করে হাশর করা হবে মানুষের পায়ের নীচে মাড়ানো হবে। অহংকারী মানুষের নিকট অপছন্দীয় যেমনিভাবে সে আল্লাহর নিকটও অপছন্দনীয়। মানুষ বিনয়ী, নম্র, ভদ্র, সহজ, সরল মানুষকে ভালবাসে। আর কঠিন ও রুঢ় স্বভাবের মানুষকে ঘৃণা করে।

,

অহংকার প্রতিরোধ করার আরেকটি উপায় হলো- অহংকারী যে পথ দিয়ে বের হয়েছে পেশাবও সে পথ দিয়ে বের হয়। তার সৃষ্টির সূচনা হয়েছে নাপাক বীর্য থেকে। তার সর্বশেষ পরিণতি হচ্ছে- পচা লাশ। এ দুই অবস্থার মাঝখানে সে পায়খানা বহন করে চলছে। সুতরাং অহংকার করার মত কী আছে?!!

,

আমরা আল্লাহর নিকটে প্রার্থনা করছি তিনি যেন আমাদেরকে অহংকার থেকে মুক্তি দেন এবং আমাদেরকে বিনয় দান করেন। ( সংগৃহিত)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...