আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
15 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (4 points)
১)স্বনামধন্য একটি কোম্পানিতে কোয়ালিটি অফিসার হিসেবে চাকুরি কি বৈধ হবে? (কোয়লিটি অফিসার = যিনি ঔষধের গুনাগুন, পরিমাপ অক্ষুন্ন আছে কি না দেখে থাকেন)

২)এম. ফার্ম, যা একটি উচ্চতর ডিগ্রি যা কোয়ালিটি অফিসার থেকে পদোন্নতিতে সহায়ক হবে,কুফার রাস্ট্র থেকে এই ডিগ্রিটি নেয়া ইসলামী দৃষ্টিকোন থেকে জানাবেন ইনশাআল্লাহ,যদিও সেখানে স্থায়ী হতে আগ্রহী নন।
৩) ঔষধ কোম্পানি জব, এটি একটি কর্পোরেট সেক্টর,এটি কি দ্বীনের মেজাজের সাথে সাংঘর্ষিক?

৪)ফার্মেসী বিষয়ে ডিগ্রি নিয়ে বর্তমানে কর্পোরেট কম্পানিতে চাকুরিরত কেউ যদি নিজ পেশার মাধ্যমে দ্বীনের ক্ষেদমত করতে চান তাহলে কিভাবে করবেন? এবং নিজের পেশাকে কিভাবে হালাল-হারামের মিশ্রন থেকে দূরে রাখবেন?
৫) একজন মুসলিমের কাছে নববী চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে,তারপরও কেউ যদি ফার্মেসী বিষয়ে ডিগ্রি নিয়েই ফেলেন তিনি কিভাবে দ্বীনের মেজাজ বজায় রেখে এখান থেকে উত্তম রিজিকের সন্ধান ও দ্বীনের ক্ষেদমতে পেশাকে নিয়োজিত করতে পারেন?
উপরের প্রশ্নগুলো সমসাময়িক প্রেক্ষাপটে দাজ্জালীয় চিকিৎসা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং অদূর ভবিষ্যতে একজন মুসলিম কিভাবে নিজেকে প্রস্তুত করবে সে বিষয়ে জানালেও অনেক উপকৃত হবো।

জাযাকাল্লাহু খইরন ফিদ্দুনইয়া ওয়াল আখির।

1 Answer

0 votes
by (642,660 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

নিজে উপার্জন করে খাওয়ার কথা রাসুল সাঃ বলেছেন।
হাদীসে এসেছে,

হযরত মিক্বদাম ইবনে মা'দি কারুবা রাযি থেকে বর্ণিত

 ﻋَﻦِ اﻟْﻤِﻘْﺪَاﻡِ ﺑْﻦِ ﻣَﻌْﺪِﻱ ﻛَﺮِﺏَ - ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ: ﻗَﺎﻝَ: ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ اﻟﻠَّﻪِ - ﺻَﻠَّﻰ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - " «ﻣَﺎ ﺃَﻛَﻞَ ﺃَﺣَﺪٌ ﻃَﻌَﺎﻣًﺎ ﻗَﻂُّ ﺧَﻴْﺮًا ﻣِﻦْ ﺃَﻥْ ﻳَﺄْﻛُﻞَ ﻣِﻦْ ﻋَﻤَﻞِ ﻳَﺪَﻳْﻪِ، ﻭَﺇِﻥَّ ﻧَﺒِﻲَّ اﻟﻠَّﻪِ ﺩَاﻭُﺩَ - ﻋَﻠَﻴْﻪِ اﻟﺴَّﻼَﻡُ - ﻛَﺎﻥَ ﻳَﺄْﻛُﻞُ ﻣِﻦْ ﻋَﻤَﻞِ ﻳَﺪَﻳْﻪِ» "

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,
নিজ হাতের উপার্জন হতে অধিক উত্তম রিজিক কেউ কখনো আহার করেনি।
আর আল্লাহর নবী হযরত দাউদ আঃ নিজ হাতের উপার্জন দ্বারাই দিনাতিপাত করতেন।(মিশকাত-২৭৫৯)

হযরত ইবনে মাসউদ রাযি থেকে বর্ণিত

 عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ - رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -: " «طَلَبُ كَسْبِ الْحَلَالِ فَرِيضَةٌ بَعْدَ الْفَرِيضَةِ» " رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي " شُعَبِ الْإِيمَانِ.

রাসুলাল্লাহ সাঃ বলেন,হালাল রিযিক তালাশ করা অন্যন্য ফরয বিধানের পরই ফরয।(মিশকাতুল মাসাবিহ-২৭৮১)
,

ওয়াবিসা ইবনে মা'বাদ রাযি থেকে বর্ণিত,

ﻭﻋﻦ ﻭﺍﺑﺼﺔَ ﺑﻦِ ﻣَﻌْﺒِﺪٍ  ﻗَﺎﻝَ : ﺃَﺗَﻴْﺖُ ﺭﺳﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪ ﷺ ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺟِﺌْﺖَ ﺗﺴﺄَﻝُ ﻋﻦِ ﺍﻟﺒِﺮِّ؟ » ﻗُﻠْﺖُ : ﻧَﻌَﻢْ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺍﺳْﺘَﻔْﺖِ ﻗَﻠْﺒَﻚَ، ﺍﻟﺒِﺮُّ : ﻣَﺎ ﺍﻃْﻤَﺄَﻧَّﺖْ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲُ، ﻭﺍﻃْﻤَﺄَﻥَّ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻘَﻠْﺐُ، ﻭﺍﻹِﺛﻢُ : ﻣَﺎ ﺣﺎﻙَ ﻓﻲ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲِ، ﻭﺗَﺮَﺩَّﺩَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺼَّﺪْﺭِ، ﻭﺇِﻥْ ﺃَﻓْﺘَﺎﻙَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻭَﺃَﻓْﺘَﻮﻙَ » ﺣﺪﻳﺚٌ ﺣﺴﻦٌ، ﺭﻭﺍﻩُ ﺃﺣﻤﺪُ ﻭﺍﻟﺪَّﺍﺭﻣِﻲُّ ﻓﻲ " ﻣُﺴْﻨَﺪَﻳْﻬِﻤﺎ ."

তিনি বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট গেলাম।রাসূলুল্লাহ সাঃ আমাকে বললেন,তুমি কি নেকীর কাজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার জন্য এসেছ?আমি বললাম জ্বী হ্যা, ইয়া রাসূলাল্লাহ!

তখন তিনি আমাকে বললেন,তুমি তোমার অন্তরের নিকট ফাতওয়া জিজ্ঞাসা করো।নেকি হল সেটা যার উপর অন্তর প্রশান্তিবোধ করে,এবং যে জিনিষের উপর অন্তর শান্ত থাকে।আর গোনাহ হল সেটা,যা অন্তরে অশান্তি সৃষ্টি করে নাড়িয়ে দেয়,এবং অন্তরকে দ্বিধান্বিত করে ফেলে।যদিও উক্ত কাজ সম্পর্কে মুফতিগণ বৈধতার ফাতাওয়া প্রদাণ করুক না কেন।(মুসনাদে আহমদ-১৭৫৪৫)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন,
(০১)
উক্ত চাকরি বৈধ হবে।

(০২)
শরীয়তের দৃষ্টিকোন থেকে বাধা নেই।

(০৩)
দ্বীনের মেজাজের সাথে সাংঘর্ষিক বলে মনে হয়না।

(৪-৫)
এক্ষেত্রে নিচে কিছু দিকনির্দেশনা দেওয়া হলো:

★নিয়তের পরিশুদ্ধতা:
আপনার প্রতিটি কাজ (যেমন অফিসের দায়িত্ব, ওষুধ তৈরি, মান নিয়ন্ত্রণ, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি) আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করার নিয়ত করুন। হালাল রিজিক উপার্জন ও দায়িত্বশীলতা পালন নিজেই ইবাদত হয়ে যায় যদি নিয়ত সহীহ থাকে।

★ইসলামিক স্কিলশেয়ারিং ও হেলথ অ্যাওয়ারনেস:

আপনি চাইলে আপনার পেশাগত জ্ঞানকে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াতে ব্যবহার করতে পারেন:

ইসলামিক সংগঠন বা মসজিদে স্বাস্থ্য বিষয়ক সেমিনার।

ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে হালাল ওষুধ, হালাল কসমেটিকস, ও হিজামা ইত্যাদি নিয়ে লেখালেখি।

★সৎভাবে এবং ন্যায়ের পথে কাজ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন:

আপনি যদি অফিসে অন্যায় বা অনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারেন এবং অন্যদেরও সচেতন করেন, তবে সেটিও এক প্রকার দাওয়াহ:

ওষুধের গুণগত মান রক্ষা।

মিথ্যা তথ্য, দুর্নীতি, কমিশন ভিত্তিক অনৈতিক কাজ ইত্যাদি থেকে দূরে থাকা।

সততার মাধ্যমে অফিসে ইসলামী মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করা।

★ইসলামিক গবেষণা ও প্রকাশনা:

আপনি চাইলে নিচের বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করতে পারেন:

ইসলামে চিকিৎসা ও ফার্মেসির ভূমিকা।

রাসূল ﷺ এর হাদীসে ব্যবহৃত চিকিৎসা-পদ্ধতি (তিব্বে নববী)।

হালাল ও হারাম ওষুধ বিষয়ে গবেষণা।

★আর্থিকভাবে দ্বীনি প্রজেক্টে সহায়তা:

যেহেতু আপনি একটি কর্পোরেট জব করছেন, নিয়মিতভাবে কিছু অংশ সাদকা করে—

দ্বীনি প্রতিষ্ঠানে অনুদান দিতে পারেন।

পুওর পেশেন্টদের ওষুধ সহায়তা করতে পারেন।

ইসলামিক হেলথ কেয়ার প্রজেক্টে ইনভেস্ট করতে পারেন।

★পরিবার ও সমাজে ইসলামী দাওয়াহ:

সবচেয়ে বড় দাওয়াহ হয় কাছের মানুষের মাঝে:

পরিবারের সদস্যদের ইসলামিক আদর্শে স্বাস্থ্যবিধি শেখানো।

কর্মস্থলে ইসলামের সৌন্দর্য তুলে ধরা।

★নিজের পেশাকে হালাল-হারামের মিশ্রন থেকে দূরে রাখার জন্য ওষুধের গুণগত মান রক্ষা করতে হবে।
মিথ্যা তথ্য, দুর্নীতি, কমিশন ভিত্তিক অনৈতিক কাজ ইত্যাদি থেকে দূরে থাকতে হবে।
(কিছু তথ্য সংগৃহীত।)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...