নিজে উপার্জন করে খাওয়ার কথা রাসুল সাঃ বলেছেন।
হাদীসে এসেছে,
হযরত মিক্বদাম ইবনে মা'দি কারুবা রাযি থেকে বর্ণিত
ﻋَﻦِ اﻟْﻤِﻘْﺪَاﻡِ ﺑْﻦِ ﻣَﻌْﺪِﻱ ﻛَﺮِﺏَ - ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ: ﻗَﺎﻝَ: ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ اﻟﻠَّﻪِ - ﺻَﻠَّﻰ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - " «ﻣَﺎ ﺃَﻛَﻞَ ﺃَﺣَﺪٌ ﻃَﻌَﺎﻣًﺎ ﻗَﻂُّ ﺧَﻴْﺮًا ﻣِﻦْ ﺃَﻥْ ﻳَﺄْﻛُﻞَ ﻣِﻦْ ﻋَﻤَﻞِ ﻳَﺪَﻳْﻪِ، ﻭَﺇِﻥَّ ﻧَﺒِﻲَّ اﻟﻠَّﻪِ ﺩَاﻭُﺩَ - ﻋَﻠَﻴْﻪِ اﻟﺴَّﻼَﻡُ - ﻛَﺎﻥَ ﻳَﺄْﻛُﻞُ ﻣِﻦْ ﻋَﻤَﻞِ ﻳَﺪَﻳْﻪِ» "
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,
নিজ হাতের উপার্জন হতে অধিক উত্তম রিজিক কেউ কখনো আহার করেনি।
আর আল্লাহর নবী হযরত দাউদ আঃ নিজ হাতের উপার্জন দ্বারাই দিনাতিপাত করতেন।(মিশকাত-২৭৫৯)
হযরত ইবনে মাসউদ রাযি থেকে বর্ণিত
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ - رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -: " «طَلَبُ كَسْبِ الْحَلَالِ فَرِيضَةٌ بَعْدَ الْفَرِيضَةِ» " رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي " شُعَبِ الْإِيمَانِ.
রাসুলাল্লাহ সাঃ বলেন,হালাল রিযিক তালাশ করা অন্যন্য ফরয বিধানের পরই ফরয।(মিশকাতুল মাসাবিহ-২৭৮১)
,
ওয়াবিসা ইবনে মা'বাদ রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻭﻋﻦ ﻭﺍﺑﺼﺔَ ﺑﻦِ ﻣَﻌْﺒِﺪٍ ﻗَﺎﻝَ : ﺃَﺗَﻴْﺖُ ﺭﺳﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪ ﷺ ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺟِﺌْﺖَ ﺗﺴﺄَﻝُ ﻋﻦِ ﺍﻟﺒِﺮِّ؟ » ﻗُﻠْﺖُ : ﻧَﻌَﻢْ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺍﺳْﺘَﻔْﺖِ ﻗَﻠْﺒَﻚَ، ﺍﻟﺒِﺮُّ : ﻣَﺎ ﺍﻃْﻤَﺄَﻧَّﺖْ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲُ، ﻭﺍﻃْﻤَﺄَﻥَّ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻘَﻠْﺐُ، ﻭﺍﻹِﺛﻢُ : ﻣَﺎ ﺣﺎﻙَ ﻓﻲ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲِ، ﻭﺗَﺮَﺩَّﺩَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺼَّﺪْﺭِ، ﻭﺇِﻥْ ﺃَﻓْﺘَﺎﻙَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻭَﺃَﻓْﺘَﻮﻙَ » ﺣﺪﻳﺚٌ ﺣﺴﻦٌ، ﺭﻭﺍﻩُ ﺃﺣﻤﺪُ ﻭﺍﻟﺪَّﺍﺭﻣِﻲُّ ﻓﻲ " ﻣُﺴْﻨَﺪَﻳْﻬِﻤﺎ ."
তিনি বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট গেলাম।রাসূলুল্লাহ সাঃ আমাকে বললেন,তুমি কি নেকীর কাজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার জন্য এসেছ?আমি বললাম জ্বী হ্যা, ইয়া রাসূলাল্লাহ!
তখন তিনি আমাকে বললেন,তুমি তোমার অন্তরের নিকট ফাতওয়া জিজ্ঞাসা করো।নেকি হল সেটা যার উপর অন্তর প্রশান্তিবোধ করে,এবং যে জিনিষের উপর অন্তর শান্ত থাকে।আর গোনাহ হল সেটা,যা অন্তরে অশান্তি সৃষ্টি করে নাড়িয়ে দেয়,এবং অন্তরকে দ্বিধান্বিত করে ফেলে।যদিও উক্ত কাজ সম্পর্কে মুফতিগণ বৈধতার ফাতাওয়া প্রদাণ করুক না কেন।(মুসনাদে আহমদ-১৭৫৪৫)
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন,
এক্ষেত্রে নিচে কিছু দিকনির্দেশনা দেওয়া হলো:
★নিয়তের পরিশুদ্ধতা:
আপনার প্রতিটি কাজ (যেমন অফিসের দায়িত্ব, ওষুধ তৈরি, মান নিয়ন্ত্রণ, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি) আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করার নিয়ত করুন। হালাল রিজিক উপার্জন ও দায়িত্বশীলতা পালন নিজেই ইবাদত হয়ে যায় যদি নিয়ত সহীহ থাকে।
★ইসলামিক স্কিলশেয়ারিং ও হেলথ অ্যাওয়ারনেস:
আপনি চাইলে আপনার পেশাগত জ্ঞানকে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াতে ব্যবহার করতে পারেন:
ইসলামিক সংগঠন বা মসজিদে স্বাস্থ্য বিষয়ক সেমিনার।
ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে হালাল ওষুধ, হালাল কসমেটিকস, ও হিজামা ইত্যাদি নিয়ে লেখালেখি।
★সৎভাবে এবং ন্যায়ের পথে কাজ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন:
আপনি যদি অফিসে অন্যায় বা অনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারেন এবং অন্যদেরও সচেতন করেন, তবে সেটিও এক প্রকার দাওয়াহ:
ওষুধের গুণগত মান রক্ষা।
মিথ্যা তথ্য, দুর্নীতি, কমিশন ভিত্তিক অনৈতিক কাজ ইত্যাদি থেকে দূরে থাকা।
সততার মাধ্যমে অফিসে ইসলামী মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করা।
★ইসলামিক গবেষণা ও প্রকাশনা:
আপনি চাইলে নিচের বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করতে পারেন:
ইসলামে চিকিৎসা ও ফার্মেসির ভূমিকা।
রাসূল ﷺ এর হাদীসে ব্যবহৃত চিকিৎসা-পদ্ধতি (তিব্বে নববী)।
হালাল ও হারাম ওষুধ বিষয়ে গবেষণা।
★আর্থিকভাবে দ্বীনি প্রজেক্টে সহায়তা:
যেহেতু আপনি একটি কর্পোরেট জব করছেন, নিয়মিতভাবে কিছু অংশ সাদকা করে—
দ্বীনি প্রতিষ্ঠানে অনুদান দিতে পারেন।
পুওর পেশেন্টদের ওষুধ সহায়তা করতে পারেন।
ইসলামিক হেলথ কেয়ার প্রজেক্টে ইনভেস্ট করতে পারেন।
★পরিবার ও সমাজে ইসলামী দাওয়াহ:
সবচেয়ে বড় দাওয়াহ হয় কাছের মানুষের মাঝে:
পরিবারের সদস্যদের ইসলামিক আদর্শে স্বাস্থ্যবিধি শেখানো।
কর্মস্থলে ইসলামের সৌন্দর্য তুলে ধরা।
★নিজের পেশাকে হালাল-হারামের মিশ্রন থেকে দূরে রাখার জন্য ওষুধের গুণগত মান রক্ষা করতে হবে।