আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
27 views
ago in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম
একটু দ্রুত উত্তর দিলে উপকৃত হই। আমার স্বামী প্রবাস থাকে সে মাঝে মাঝেই আমার সাথে ফোনে শারীরিক বিভিন্ন কিছু দেখতে চাই এবং উত্তেজনামুলক কথা বলতে চাই। সেক্ষেত্রে উত্তেজনা বসত সে অনেক নোংরা কথা বলে আমি যদি তার সাথে সাই দেই তবে তিনি আমার প্রতি খুশি হন সাই না দিলে রাগান্বিত হন। আমি তার হক নষ্ট করছি বলেও মনে হয়।এক্ষেত্রে তিনি যে নোংরা কথাগুলো বলেন তার সাথে কি আমার সায় দেওয়া উচিত হবে?তার ধারনা স্বামী স্ত্রি যে কোন কিছু বলতে পারবে তৃতীয় কেউ না জানলে এতে কোন গোনাহ নেই।এটা কতটুকু সত্যি?

 আমার এমন কিছু গোপন গুনাহ আছে যেগুলোর ব্যাপারে আমি সাবধান থাকতে চাই যেন আল্লাহ ছাড়া কোন সাক্ষী না থাকে। কিন্তু এই কথাগুলা স্বামীর থেকে লুকানোর কারণে আমি অনেক বড় একটা প্রবলেমে পড়ছি যৌন জীবনে। আমার স্বামী চাই তার সাথে আমি প্রত্যেকটা খুঁটিনাটি বিষয়ে আলোচনা করি সেটা আমার করা গোপন গোনাহ এর ব্যাপারে হলেও। কিন্তু আমি জানি গুনাহ এর ব্যাপারে সাক্ষী রাখা মানে হাশরে ফেসে যাওয়া। আমার স্বামীর কাছে এ ব্যাপারে বলাই সে বলছে সংসারের শান্তির জন্য তোমার এগুলো বলা উচিত এবং সে বলছে যদি এমন ভয় থাকে আমি আল্লাহ কে সাক্ষি রেখে ওয়াদা করছি কখনোই তোমার জান্নাতের পথে বাধা হবো না। এখন কি আমার গোনাহ এর ব্যাপারে আমার স্বামীর সাথে আলোচনা করা ঠিক হবে?

1 Answer

0 votes
ago by (640,830 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

ছবি ভিডিও শরীয়তের দৃষ্টিতে হারাম।হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত,

عن ﺍﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗﺎﻝ : ﺳﻤﻌﺖ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﻘﻮﻝ :( ﻣﻦ ﺻَﻮَّﺭ ﺻﻮﺭﺓ ﻓﻲ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ ﻛُﻠِّﻒ ﺃﻥ ﻳَﻨْﻔُﺦ ﻓﻴﻬﺎ ﺍﻟﺮُّﻭﺡ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ ﻭﻟﻴﺲ ﺑﻨﺎﻓﺦ )

তরজমাঃ- ইবনে আব্বাস রাঃ বলেন, আমি নবী কারীম সাঃ কে বলতে শুনেছি, যে তিনি বলেছেন,
যে ব্যক্তি পৃথিবীতে কোন(জানোয়ারের) ছবি আকবে,কিয়ামতের দিন তাকে দায়িত্ব দেয়া হবে,সে যেন উক্ত ছবির ভিতরে রূহ প্রদান করে, অথচ রূহ প্রদান করা তার জন্য কস্মিনকালে ও সম্ভব হবে না(অতঃপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করে আযাব প্রদান করা হবে)(সহীহ বুখারী -৫৬১৮)

ﻭَﻗَﺎﻝَ : ﺇﻥْ ﻛُﻨْﺖَ ﻻَ ﺑُﺪَّ ﻓَﺎﻋِﻼً ﻓَﺎﺻْﻨَﻊِ ﺍﻟﺸَّﺠَﺮَ ، ﻭَﻣَﺎ ﻻَ ﻧَﻔْﺲَ ﻟَﻪ 

হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ কে এক ব্যক্তি ছবি আকার অনুমতি প্রার্থনা করলে তিনি উত্তরে বললেনঃযদি তোমার ছবি একে উপার্জন করতেই হয় তাহলে তুমি গাছের ছবি আকো বা এমন ছবি আকো যাতে কোনো প্রাণীর ছবি নেই।(সহীহ বুখারী- ২২২৫) বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/2253

ভিডিও কলে কাউকে দেখা আয়নায় দেখার ন্যায়।
শরীয়তের বিধান হলো যাদের সঙ্গে কথা বলা ও দেখা করা জায়েজ, তাদের সঙ্গে ভিডিও কলের মাধ্যমে কথা বলা ও দেখা করাও জায়েজ। শর্ত হলো, কলটি রেকর্ড করা যাবে না। স্কিন শট নেওয়া যাবে না। যেহেতু এখনো বেশির ভাগ ফিকহবিদের মতে ছবি-ভিডিও নিষিদ্ধ। কিন্তু যাদের সঙ্গে দেখা করা নিষিদ্ধ; বরং পর্দা করা ফরজ, তাদের সঙ্গে ভিডিও কলের মাধ্যমে কথা বলাও নিষিদ্ধ। (ফিকহি মাক্বালাত : ৪/১২৩-১৩০)

স্বামী বা স্ত্রীর গোনাহে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকলে কিছুতেই চার মাসের বেশি সময় স্ত্রী থেকে দূরে থাকার অনুমতি ইসলাম প্রদান করে না।
আর মোবাইলে অশ্লীল ছবি দেখা কোন সমাধান নয়। বরং এর দ্বারা অন্তর কলুষিত হয়। অন্তর মরে যায়।
স্ত্রীর সর্বাঙ্গ সরাসরি দেখা জায়েজ আছে। যদিও গোপনাঙ্গের দিকে সরাসরি তাকানো উচিত নয়। এতে স্মৃতিশক্তি কমে যায়।
অপ্রয়োজনে ছবি তুলা যেহেতু হারাম। আর উলঙ্গ ছবি সেতো আরো মারাত্মক গোনাহের কাজ।
তাই এহেন দৃষ্টিকটূ ও অপছন্দনীয় কাজগুলো পরিত্যাগ করতে হবে।
.
★ইসলামী স্কলাররা বলেছেন যে ইন্টারনেটে চ্যাটিং প্রোগ্রামের মাধ্যমে স্ত্রীর সাথে কথা বলে অথবা তাকে দেখে বা তার ছবি দেখে তৃপ্ত হওয়া জায়েয।
তবে সাবধান থাকতে হবে অন্য কেউ যেন স্বামী-স্ত্রীর আলাপচারিতা শুনতে না পায়, অথবা গোয়েন্দাগিরি না করে।

আরো জানুনঃ- 

কিছু উলামায়ে কেরামদের মতে যেহেতু যেই জিনিস সরাসরি দেখা জায়েজ, সেটি ভিডিওতেও দেখা জায়েজ, সেই হিসেবে আপনি আপনার স্ত্রীর ভিডিও মোবাইলে অন্যকে না দেখানো,না শোনানোর শর্তে রাখা জায়েজ আছে।     
তবে কোনোভাবেই হস্তমৈথুন করা জায়েজ হবেনা। 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
স্বামী স্ত্রী মোবাইলে ভিডিও কলে লজ্জাস্থান দেখানোর মাধ্যমে তৃপ্ত হতে পারবে।

তবে সাবধান থাকতে হবে অন্য কেউ যেন স্বামী-স্ত্রীর আলাপচারিতা শুনতে না পায়, অথবা গোয়েন্দাগিরি না করে।

এবং এক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রী কাহারোই হস্তমৈথুন করা জায়েজ হবেনা। 

এক্ষেত্রে নোংরা কথা বললে স্বামী স্ত্রীর কেউ যদি কষ্ট না পায়,সেক্ষেত্রে তাহা নাজায়েজ হবেনা।

নাজায়েজ মূলক কথা বলা যাবেনা।
কেননা এ স্বভাব মুমিনের সাথে যায় না। হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে-

لَيْسَ الْمُؤْمِنُ بِالطَّعَّانِ، وَلَا اللَّعَّانِ، وَلَا بِالْفَاحِشِ، وَلَا بِالْبَذِيءِ.

মুমিন (অন্যের) দোষ চর্চাকারী হয় না, লানতকারী, অশ্লীল ও গালিগালাজকারী হয় না (বাজে কথা বলে না)। -জামে তিরমিযী, হাদীস ১৯৭৭

★আপনার গোপন গুনাহ (যাহা আল্লাহ ছাড়া কেহউ জানেনা) স্বামীকে জানানো উচিত হবেনা।
এক্ষেত্রে আপনার গোপন গুনাহ আছে,এটা আপনার স্বামী জানলো কিভাবে?
মনে রাখতে হবে গুনাহ প্রকাশ করাও গুনাহ।

হ্যাঁ যদি অন্য কোনো মাধ্যমে স্বামীর কাছে আপনার গোপন গুনাহ প্রকাশ হয়েই যায়,সেক্ষেত্রে বিষয়টি নিয়ে সত্য উদঘাটনের জন্য তিনি আরো প্রশ্ন করলে তার জবাব দেয়া যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...