আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
33 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ।সম্প্রতি আমি কিছু ব্যাপারে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। এ প্রেক্ষাপটে আমার কি করণীয় তা জানার জন্য আপনাদের দারস্থ হয়েছি। মাসয়ালা নির্ধারণ করার সুবিধার্থে আমি পুরো বিষয়টি তুলে ধরছি।

বর্তমানে আমার বয়স ২৪ বছর। আমার জন্মের ৬ ঘণ্টা পর আমার মা মারা গিয়েছেন। মা মারা যাওয়ার তিন মাস পর আমার বাবা দ্বিতীয় বিবাহ করেন। আমার যিনি সৎ মা তার অবিবাহিত অবস্থায় আমার বাবার সাথে বিয়ে হয়। উনার আমার প্রতি আচরণ টা একদম একজন সাধারণ মা যেমন সেরকমই ছিল এমন কি আমার সৎ মায়ের দিকের আত্মীয় স্বজনরাও আমার সাথে রক্তের সম্পর্কের মতোই আচরণ করেন। যার কারণে আমি উনারা জানানোর আগে কখনো বুঝতে পারিনি উনি আমার সৎ মা। এমনকি আমার অফিসিয়াল সকল কাগজ পত্রে আমার সৎ মায়ের নাম দেওয়া। জমি জমা সংক্রান্ত ঝামেলা হওয়ার সুবাদে আমাকে আব্বু জানাতে বাধ্য হয়েছিল তখন আমি ক্লাস নাইনে পড়তাম। এস এস সি তে থানায় প্রথম হওয়ার কারণে মায়ের দিকের রক্তের সম্পর্কের আত্মীয়রা ফোন নাম্বার কালেক্ট করে যোগাযোগ করা বাড়িয়ে দেয়। এটা আমার সৎ মা একদমই পছন্দ করতেন না। উনার ভাষ্যমতে যখন আমি ছোট বেলা থেকে কষ্ট করে লালন পালন করেছি তখন তো কেউ খোঁজ নেয়নি। এখন ভালো পড়াশোনা করার কারণে যোগাযোগ করতে আসছে। যেহেতু উনারা পছন্দ করতেন না তাই আমি মাঝে মধ্যে সিম বন্ধ করে রাখতাম যাতে উনারা যোগাযোগ করতে না পারে। তবে যোগাযোগ একদম বিচ্ছিন্ন হয়নি। গতবছর বিয়ের জন্য বায়োডাটা তৈরি করার সময় মায়ের নামের জায়গায় আমার সৎ মায়ের নাম দেওয়া হয়েছে এবং উপরোক্ত কোনো কিছুই উল্লেখ করা হয়নি। একটা প্রোপোজাল কিছু দিন আগানোর পর যখন পাত্র কে সবিস্তারে জানানো হয় তখন উনি কিছুটা আপত্তি করে বলেছেন "ব্যাপারটা আপনার আগে বায়োডাটা তে উল্লেখ করা প্রয়োজন ছিল কারণ হয়তো আমার কোনো সমস্যা হতো না তবে আমার পরিবারের সবাই এটা মেনে নিবে না" সাথে উনি একটা সাজেশন দিয়েছেন যাতে বায়োডাটা তে বিস্তারিত উল্লেখ করি।

প্রশ্ন ক: শুরুতেই কি বায়োডাটা তে বিস্তারিত উল্লেখ করবো? (কিন্তু আমার বাবা মা একদমই চায়না এই ব্যাপার টা অন্য কেউ জানুক তাই তারা আমার বায়োডাটাতেও এই ব্যাপার উল্লেখ করতে ইচ্ছুক না।কিন্তু আমি এই ব্যাপার টা জানাতে ইচ্ছুক তবে কিছুটা আগানোর পরে জানাতে চাই যেহেতু আমার স্কিন টোন কিছুটা ডার্ক এবং হাইট একটু কমই তাই অনেক সমন্ধ আগেই না করে দেওয়া হয়)

প্রশ্ন খ: আমার নিজের মায়ের দিকের আত্মীয়ের সাথে ভালো ভাবে যোগাযোগ না রাখার কারণে আমি কি গোনাহগার হচ্ছি? (নানা নানি ছাড়া সবাই জীবিত আছেন)
প্রশ্ন গ : অফিশিয়াল কোনো কাগজ পত্রে নিজের মায়ের কোনো স্বীকৃতি নেই এতে আমি বা আমার পরিবার কোনো গোনাহগার হবো কিনা?

(এক বোনের পক্ষ থেকে)

1 Answer

0 votes
by (680,280 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
হযরত আবু যর রাযি থেকে বর্ণিত,
عَنْ أَبِي ذَرٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: (لَيْسَ مِنْ رَجُلٍ ادَّعَى لِغَيْرِ أَبِيهِ وَهُوَ يَعْلَمُهُ إِلا كَفَرَ، وَمَنْ ادَّعَى قَوْمًا لَيْسَ لَهُ فِيهِمْ نَسَبٌ فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنْ النَّارِ).
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যে ব্যক্তি নিজ পিতা ব্যতীত অন্য কাউকে বাবা সাব্যস্ত করবে,সে যেন ছোট কুফরী করল,এবং যে ব্যক্তি নিজেকে অন্য কোনো বংশের বলে দাবী করবে,সে যেন তার জায়গা জাহান্নাম কে বানিয়ে নেয়। (সহীহ বোখারী-৩৫০৮,সহীহ মুসলিম-৬১)এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/7645

মানুষের প্রয়োজন তিন প্রকারের হতে পারে।
(১)জরুরত (এমন প্রয়োজন যা না হলে নয়) : 
এমন এক ধরনের প্রয়োজন, যা ছাড়া জীবন হুমকির মুখে পড়ে যায়। যেমন, মরুভূমিতে ক্ষুধার্ত একজন মানুষ, যার কাছে কোনো খাবার নেই। (এই পরিস্থিতিতে মানুষটি জীবন বাঁচানোর তাগিদে হারাম বস্তুও ভক্ষণ করতে পারবে)।
আল্লামা হামাওয়ী রাহ জরুরতের ব্যাখ্যা এভাবে করেন যে,
الضرورۃ بلوغہ حدا إن لم یتناول الممنوع ہلک أوقارب۔ (حموي علی ہامش الأشباہ، مطبع دیوبند ۱/ ۱۴۰، کراچی ۱/ ۱۱۹، مطبع زکریا دیوبند ۱/ ۲۵۲) 
মর্মার্থঃ জরুরত হল মানুষ এমন এক পর্যায়ে পৌছে যাওয়া যে, যদি সে নিষিদ্ধ জিনিষ সমূহ না করে, তাহলে সে ধ্বংস হয়ে যাবে বা ধ্বংসের নিকটবর্তী হয়ে যাবে।
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/3283

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
বিশেষ জরুরত বশত আপনি প্রথমেই সৎ মায়ের আলোচনা আনবেন না। তবে কিছুটা এগুনোর পর যখন পাত্র পাত্রীর একান্ত দেখা সাক্ষাৎ হবে, তখন কানে কানে পাত্রকে বিষয়টা অবগত করবেন। মিথ্যা বলার কোনো প্রয়োজনীয়তা নাই। আপনি সৎ মাকে নিজের মায়ের মত মনে করবেন। নিজ মায়ের আত্মীয় স্বজনদের সাথে যোগাযোগ কমিয়ে নিবেন।বর্ণিত পরিস্থিতি অনুযায়ী  তাদের সাথে যোগাযোগ না রাখলে গোনাহ হবে না। মনে রাখবেন, আপনার প্রস্রাব পায়খানা পরিস্কার করে যেই মহিলা আপনাকে লালন পালন করেছে, ঐ মহিলা থেকে আপন এই পৃথিবীতে আপনার আর কেউ-ই হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...