আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
27 views
in ওয়াসওয়াসা by (13 points)
আসসালামু আলাইকুম, একটু আগে সুরা কাহফের ১০৩-১০৪ আয়াত সামনে আসলো, যেখানে আল্লাহ পাক সর্বাপেক্ষা ক্ষতিগ্রস্থদের বর্ণনা করছিলেন যে 'তারা সেই সব লোক, পার্থিব জীবনে যাদের সমস্ত দৌড়-ঝাঁপ সরল পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে, অথচ তারা মনে করে তারা খুবই ভালো কাজ করছে।' আমি যতটুক পেরেছি এটার তাফসীর দেখেছি যে এখানে বুঝানো হয়েছে যারা কোন কোন বিষয়কে সৎ মনে করে তাতে পরিশ্রম করে। কিন্তু আল্লাহর কাছে তাদের সে পরিশ্রম বৃথা এবং সে কর্মও নিস্ফল। কুরতুবী বলেনঃ এ অবস্থা দুটি কারণে সৃষ্টি হয়। (এক) ভ্ৰান্তবিশ্বাস এবং (দুই) লোক দেখানো মনোবৃত্তি। এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে আমার কিছু ওয়াসওয়াসার সমস্যা অনেক বছর ধরেই আছে এবং আমি প্রতিনিয়ত এর থেকে বেঁচে থাকার জন্য আমল করি। আমি জানি এসব পাত্তা দিয়ে আমি আল্লাহর নিকটে যাওয়ার চেয়ে শয়তানের ধোঁকায় পড়ে পিছিয়ে যেতে পারি। তাও ওয়াসওয়াসার কারণে মাঝেমাঝে আমার আমলে অনেক ক্ষতি হয়ে যায়। এখন আমি কি এই সর্বাপেক্ষা ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তর্ভুক্ত হবো??
যদিও কিছু কিছু সময় আমার ওয়াসওয়াসা সত্যি হয়, তাও যদি আমি আল্লাহ থেকে দূরে যাওয়ার ভয়ে সেগুলোকে পাত্তা না দেই তাহলে কি সওয়াব হবে আমার? কারণ একটা পাত্তা দিল আবার সমস্যা বাড়ে। আর যখনই কোন ভুল হয়ে যায় অথবা আমি কোন গুনাহের লিপ্ত হই আমি সেটাকে গুনাহই মনে করি কখনও নেকীর কাজ ভাবি না, সামান্য কিছু হলেও। তাও কি আমি এই আয়াতের আওতায় পড়বো? জাযাকুমুল্লাহ!

1 Answer

0 votes
by (645,180 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

قُلۡ ہَلۡ نُنَبِّئُکُمۡ بِالۡاَخۡسَرِیۡنَ اَعۡمَالًا ﴿۱۰۳﴾ؕ 

বলুন, আমরা কি তোমাদেরকে এমন লোকদের কথা জনাব, যারা আমলের দিক থেকে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্ৰস্ত?
(সুরা কাহাফ ১০৩)

اَلَّذِیۡنَ ضَلَّ سَعۡیُہُمۡ فِی الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا وَ ہُمۡ یَحۡسَبُوۡنَ اَنَّہُمۡ یُحۡسِنُوۡنَ صُنۡعًا ﴿۱۰۴﴾ 

ওরাই তারা, পার্থিব জীবনে যাদের প্রচেষ্টা পণ্ড হয়, যদিও তারা মনে করে যে, তারা সৎকাজই করছে।
(সুরা কাহাফ ১০৪)

এখানে প্রথম দুই আয়াত এমন ব্যক্তি ও দলকে অন্তর্ভুক্ত করেছে, যারা কোন কোন বিষয়কে সৎ মনে করে তাতে পরিশ্রম করে। কিন্তু আল্লাহর কাছে তাদের সে পরিশ্রম বৃথা এবং সে কর্মও নিস্ফল। কুরতুবী বলেনঃ এ অবস্থা দুটি কারণে সৃষ্টি হয়। (এক) ভ্ৰান্তবিশ্বাস এবং (দুই) লোক দেখানো মনোবৃত্তি। [কুরতুবী]

اُولٰٓئِکَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا بِاٰیٰتِ رَبِّہِمۡ وَ لِقَآئِہٖ فَحَبِطَتۡ اَعۡمَالُہُمۡ فَلَا نُقِیۡمُ لَہُمۡ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ وَزۡنًا ﴿۱۰۵﴾ 

. তারাই সেসব লোক, যারা তাদের রব-এর নিদর্শনাবলী ও তার সাথে তাদের সাক্ষাতের ব্যাপারে কুফরি করেছে। ফলে তাদের সকল আমল নিস্ফল হয়ে গেছে; সুতরাং আমরা তাদের জন্য কেয়ামতের দিন কোন ওজনের ব্যবস্থা রাখব না।
(সুরা কাহাফ ১০৫)

অর্থাৎ তাদের আমল বাহ্যতঃ বিরাট বলে দেখা যাবে, কিন্তু হিসাবের দাঁড়িপাল্লায় তার কোন ওজন হবে না। কেননা, কুফর ও শির্কের কারণে তাদের আমল নিস্ফল ও গুরুত্বহীন হয়ে যাবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ কেয়ামতের দিন দীর্ঘদেহী স্থূলকায় ব্যক্তিকে নিয়ে আসা হবে, আল্লাহর কাছে মাছির ডানার সমপরিমাণও তার ওজন হবে না। অতঃপর তিনি বলেনঃ যদি এর সমর্থন চাও, তবে কুরআনের এই আয়াত পাঠ কর- (فَلَا نُقِيمُ لَهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَزْنًا) [বুখারীঃ ৪৭২৯, মুসলিমঃ ৪৬৭৮]

ذٰلِکَ جَزَآؤُہُمۡ جَہَنَّمُ بِمَا کَفَرُوۡا وَ اتَّخَذُوۡۤا اٰیٰتِیۡ وَ رُسُلِیۡ ہُزُوًا ﴿۱۰۶﴾ 

জাহান্নাম, এটাই তাদের প্রতিফল, যেহেতু তারা কুফরী করেছে এবং আমার নিদর্শনাবলী ও রাসূলগণকে গ্ৰহণ করেছে বিদ্ররূপের বিষয়স্বরূপ।
(সুরা কাহাফ ১০৬)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
উপরোক্ত আয়াতগুলি হতে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে যে এখানে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দ্বারা মূলত কাফেরদেরকে বুঝানো হয়েছে।

মুসলিমরা এর অন্তর্ভুক্ত নয়, তাই আপনি যেহেতু মুসলিম আপনি আর অন্তর্ভুক্ত হবেন না।

সুতরাং বিষয়টি নিয়ে আর পেরেশানি না হওয়ার পরামর্শ থাকবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...