আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ
শাইখ আমার বিয়ে হয়েছে ১ বছর। আমার স্বামীর মাঝে দ্বীনদারিতা নেই, আর না উনি
একজন ভালো মানুষ।
প্রথমত দ্বীনদারীর বিষয়টি: উনি একজন আলিম কিন্তু ৫ ওয়াক্ত সলাত-ই আদায় করেন না। ফোনে শর্টস এগুলো দেখেন, নন মাহরামমেইনটেইন করেন না। সর্বোপরি দ্বীনের হুকুম-আহকাম মেইনটেইন করেন না।
ভালো মানুষ না: উনি খুব বদ মেজাজী, পুরুষবাদী, গালিবাজ, ইগোওয়ালা, বড় কাউকে সম্মান করে কথা বলে না। অলস প্রকৃতির, কথায় কথায় গালি দেয়।ইভেন উনি উনার বাপ মাকেও একবার ঘর থেকে বের করে দিয়েছিলো। বিয়ের ১ মাস যাওয়ার পর থেকে এখনপর্যন্ত উনি অসংখ্যবার আমার গায়ে হাত তুলেছেন। আমি বলছিনা আমার কোনো ভুল ছিল না, আমার ভুলগুলো বড় ছিলনা। এমনভুল ছিল না যেগুলোর কারণে এমন মারধর করা লাগবে।
যেমন: একবার দাওয়াতে খাওয়াতে বসার পর জানালার পর্দা ফাঁকা ছিল আমি খেয়াল করি নি। পরে উনি এসে যখন দেখলো ফাঁকাতখন আমাকে ভীষণরকম গালিগালাজ করেছেন। গায়ে হাত তুলেছেন আমার নানী শ্বাশুড়ির সামনে। যখন নানী শ্বাশুড়ি বাঁধা দিতেগেছেন তখন উনাকে বলেছেন তুই বাঁধা দিস না।
আরেকবার আমি ছাতার কভার হারিয়ে ফেলেছিলাম উনি সেজন্য বাজে রিয়্যক্ট করেন। গায়ে হাত তুলেন। পরে আমার একটা জামাকেটে বলছে যে কভার বানিয়ে দিতে পরে বানিয়ে দিয়েছিলাম।
একবার আমি গরুর মাংসের জন্য ছোট আলু কেটেছিলাম। এটা আমি কেন বড় আলু নিয়ে চাক চাক করে কাটি নাই এখন খুব বাজে ব্যবহার করেছেন।
উনার প্রতি আমার মুহাব্বাত আসে না।প্রচণ্ড ঘৃণা উনার প্রতি। ভুল বুঝাবুঝির কারণে আমার মায়ের সাথে কথা বলতে দেন না,বেড়াতেযেতে দেয় না,উনাদের গালিগালাজ করে। উনার সাথে থাকতে হলে উনার এসব জুলুম সহ্য করে থাকতে হবে। নিজের কোনো স্বাধীনতাথাকবে না। স্বাধীনতা বলতে নারীবাদী বিষয় না,একজন স্বাভাবিক মানুষের যতটুকু স্বাধীনতা লাগে।আমি এই এক বছর জুলুম আরস্বাধীনতা এই দোনটা বিষয়ে স্যাক্রিফাইস করেছি।কোনো টু শব্দ করি নাই।আর একারণে ঝামেলাও তেমন এগোতো না আমার দিকথেকে। এজন্য আমার প্রতি তার অন্তরে সফটনেস আছে, কেয়ার আছে।আমার মনে হয়না এসব আরো কয়েকবছর পর থাকবে কেননাপ্রথম ১-২ বছর থাকেই।তবে আমি আর তার এস্কব দিন দিন নিতে পারছি না যদিও আগের থেকে কিছুটা ক্লমেছে।আমার মাঝে প্রচুরতিক্ততা চলে এসেছে।এখন আমারও মুখ দিয়ে তার কটু কথার বিরুদ্ধে কথা চলে আসে।
আমি অনেক চিন্তা ভাবনা করে বুঝলাম যে,এইখানে আমি সব স্যাক্রিফাইস করে তার থেকে নিজেকে যুলুমের মাত্রা কিছুটা কমাতেপারলেও প্রকৃত সুখী হতে পারবো না।অবশ্য এখন আমার কাছে যুলুম আর যুলুম মনে হয় না, অনেকটা অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি। আরআমার কাছে সুখের মানদণ্ড দ্বীনদারিতা আর ভালো ব্যাবহার।আমার মনে হয় যে কেনো আমি সারাজীবন এতো কষ্ট করবো!তার চেয়েভালো আমি এখান থেকে চলে যাই, সাময়িক কষ্ট হবে তার পর হয়ত আল্লাহ আমাকে উত্তম কিছু দিবেন।
আমার প্রশ্ন: এমতাবস্থায় তালাক চাওয়া জায়েজ হবে?
আর জায়েজ হলে আপনার এই ক্ষেত্রে পরামর্শ কি থাকবে শাইখ।