আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
15 views
in সালাত(Prayer) by (19 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ শায়খ

ঈদের ছুটিতে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে সফরকালে রাস্তায় সালাম আদায় করতে হয়েছিল।ঐ দিনের মাগরিব সালাত বাসে আদায় করেছিলাম।ওজু ছিল কিন্তু কিবলা ঠিক ছিল কিনা জানা নাই।আর দাঁড়িয়ে তাকবীর দিয়ে বাসের সীটে বসে সালাত আদায় করেছিলাম। আবার আসার দিনও গাড়িতে কসর পড়েছিলাম।

১/কসরের কাযা কি কসরই হবে নাকি পুরো সালাত পড়তে হবে?

২/ সফরকালে কসর পড়তে হবে? নাকি পুরো সালাতই আদায় করতে হবে?

৩/ চলন্ত বাসে থাকতেই যদি দেখি ওজু বা তায়াম্মুম করতে পারছি না। কিন্তু সালাতের সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে।তখন কি করা উচিত।ওজু ছাড়ায় সালাত আদায় করব? পরে কাযা করব? নাহলে কি করতে হবে?

৪/ আমি সিহরে আক্রান্ত।রমজান মাসে রুকইয়াহ চলাকালীন বমি হয়েছিল। কিন্তু আমি রোজা রেখেছিলাম।রুকইয়াহ এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে বমি হয়েছিল।সেই রোজা কি কাযা করতে হবে?

৫/ কারো থেকে কষ্ট পেয়ে যদি তার সাথে দূরত্ব বাড়িয়ে দিই,কথা কম বলি (প্রয়োজনে বলি)। প্রয়োজন ছাড়া না বলি।তাহলে কি আল্লাহ রাগ করবেন? কেউ বার বার কষ্ট দিলে তার সাথে কেমন ব্যবহার করা উচিত?যদি সে ভালো ব্যবহার বা বিনয়ীতাকে দূর্বলতা ভেবে কষ্টদায়ক ব্যবহার করে?

1 Answer

0 votes
by (639,720 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/36976/ ফতোয়ায় উল্লেখ করা হয়েছেঃ
আয়েশা রাযি. বলেন,

فُرِضَتِ الصَّلَاةُ رَكْعَتَيْنِ رَكْعَتَيْنِ فِي الْحَضَرِ وَالسَّفَرِ، فَأُقِرَّتْ صَلَاةُ السَّفَرِ، وَزِيدَ فِي صَلَاةِ الْحَضَرِ

মুকিম ও মুসাফির অবস্থায় নামায দু’দু রাক’আত ফরজ করা হয়েছিল। পরে সফরের নামায ঠিক রাখা হল কিন্তু মুকিমের নামাযে বৃদ্ধি করা হল। (বুখারী ১০৪০ মুসলিম ৬৮৫)

অপর হাদিসে এসেছে,

عِيسَى بْنُ حَفْصِ بْنِ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ عَنْ أَبِيهِ قَالَ صَحِبْتُ ابْنَ عُمَرَ فِى طَرِيقٍ – قَالَ – فَصَلَّى بِنَا رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ أَقْبَلَ فَرَأَى نَاسًا قِيَامًا فَقَالَ مَا يَصْنَعُ هَؤُلاَءِ قُلْتُ يُسَبِّحُونَ. قَالَ لَوْ كُنْتُ مُسَبِّحًا أَتْمَمْتُ صَلاَتِى يَا ابْنَ أَخِى إِنِّى صَحِبْتُ رَسُولَ اللَّهِ – ﷺ – فِى السَّفَرِ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ أَبَا بَكْرٍ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ عُمَرَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَصَحِبْتُ عُثْمَانَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَقَدْ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ (لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِى رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ

ইবনে উমর রাযি. বলেন, নিশ্চয় আমি রাসুলুল্লাহ ﷺ এর সাথে সফর করেছি, তিনি মৃত্যুবরণ করার আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি আবু বকর রাযি. এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও আমরণ সফরে ২ রাকাতই পড়েছেন। আমি উমর রাযি. এর সাথেও সফর করেছি তিনি মৃত্যু পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি  উসমান রাযি. এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আর আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, আমি তোমাদের জন্য রাসুলুল্লাহ ﷺ এর মাঝে রেখেছি উত্তম আদর্শ। (মুসলিম ১৬১১)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
শরীয়তের বিধান হলোঃ
কসর নামাজের কাজা মুকিম অবস্থায় আদায় করলে কসর করেই কাজা আদায় করতে হবে।

আরো জানুনঃ

(০২)
শরীয়তের বিধান হলো শরয়ী সফরের দূরত্বে কোন স্থানে গিয়ে সেখানে যদি কমপক্ষে পনের দিন থাকার নিয়ত না করে, তাহলে কসর পড়তে হবে। ১৫ দিন বা তার চেয়ে বেশি দিন থাকার নিয়ত করলে কসর করতে পারবে না।

৭৮ কিলোমিটার হল সফরের দূরত্ব। এর কম নয়। সুতরাং কেউ যদি ৭৮ কিলোমিটার দূরত্বের সফরের নিয়তে বের হয় কেবল সেই ব্যক্তি কসর পড়তে পারে। এরচে’কম দূরত্বের সফরের জন্য কসর পড়া জায়েজ নয়।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★৭৮ কিলোমিটার দূরত্বের সফরের নিয়তে বের হলে সেক্ষেত্রে সফর কালে কসর নামাজ আদায় করবে।

(০৩)
তায়াম্মুম করাও সম্ভব না হলে সেক্ষেত্রে নামাজ আদায় না করে গন্তব্য স্থলে এসে কাজা আদায় করবেন।

আল্লাহর কাছে তওবা করবেন।
এমন সময় সফর করা ঠিক নয় যাতে নামাজ কাজা হয়ে যায়।

এজন্য সবচেয়ে ভালো হয় এশার নামাজ আওয়াল ওয়াক্তে আদায় করে সফরে বের হওয়া অথবা ফজরের নামাজ আওয়াল ওয়াক্তে আদায় করে সফরে বের হওয়া।

(০৪)
অনিচ্ছায় মুখ ভরে বমি হলে রোযা ভাঙ্গবে না।
এক্ষেত্রে সেই রোযার কাজা আদায় করতে হবেনা।

ইচ্ছাকৃত ভাবে বমি করলে মুখ ভরে হলে রোযা ভেঙ্গে যাবে। এমতাবস্থায় সেই রোযার কাজা আদায় করতে হবেনা।

মুখ ভরে না হলে রোযা ভাঙ্গবে না।

ইচ্ছাকৃত হল মুখে আঙ্গুল দিয়ে এভাবে কোন পদ্ধতিতে ইচ্ছাকৃত মুখ ভরে বমি করলে রোযা ভেঙ্গে যাবে। অনিচ্ছায় হলে বা ইচ্ছাকৃত মুখ ভরে না হলে রোযা ভাঙ্গবে না।

(০৫)
এক্ষেত্রে তিন দিনের বেশি কথা বলা বন্ধ করা জায়েজ হবেনা সামনাসামনি দেখা হলে বা ফোন দিলে কমপক্ষে সালাম বিনিময় করতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 355 views
...