আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
20 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (10 points)
আসসালামু আ'লাইকুম উস্তাজ ,

আমার স্বামী দ্বীন মানেনা আমি যা মানতাম আস্তে আস্তে ছেড়ে দিলাম । তার আমার প্রতি মোহাব্বত নাই ,বন্ধু বান্ধব আর রাজনীতি এসব ই সব। আমাকে অনেকেই বলেছে হুজুর থেকে পানি পড়া এনে খাওয়াতে কিন্তু আমি এসবে যাইনি । এদিকে আমার আর তার উপরব যাদু ও জ্বিনের প্রভাব আছে আত্মীয়স্বজন থেকে।। আমি তার গোনাহ তার ত্রুটি ই বেশী দেখি ,আমি নর্মাল থাকতে চাই কিন্তু সে বাসায় আসলেই তার ভুল ত্রুটি সামনে আসে আর আমি রেগে যাই। আর তর্কে লিপ্ত হই আর রাগ উঠলে আমি কি বলি নিজেও জানিনা বলার পরে আফসো হয়
আমাকে একটা আমল দিন যে আমল দ্বারা আমার মাথা ঠান্ডা থাকবে ,জিহবা নরম থাকবে । আমি আগে এমন হাওলাতে ছিলাম নাহ আমি আই ও এম এর স্টুডেন্ট আগে তালিম দিতাম দাওয়াতি কাজও করা হইসে । কিন্তু বিয়ের ৭-৮ মাস পর থেকে আমি চ্যাঞ্জ হই । এখন আমাকে একটা আমল বাতিয়ে দেন যা দ্বারা জিহবা এর দাড়ালো কথা থেকে আমার স্বামী বাচিবে আর আমার মেজাজ ঠান্ডা থাকবে তার দোষ যেন স্কিপ করতে পারি।।
আর একটা আমল দেন যে আমলের দ্বারা আমার স্বামী হেদায়েত পাবে ,এবং আমার আল্লাহ কে দুনিয়ার উর্ধে ভালোবাসবে ,দ্বীনি কাজে লিপ্ত হবে । এবং আমাকে ভালোবাসবে প্রায়োরিটি দিবে আমার প্রতি মোহাব্বত বাড়বে ।
আর আমরা আজ ঠিক করেছি দুইজন দুইজন কে তালিম দিব ,যেহেতু ইসলামের সে ফরজে আঈন সম্পর্কে একদম ই জানেনা ,হক্ব এর ব্যাপারে জানেনা ,তার স্বালাতে খুশু খুজু নেই। ,আমি কোন বই গুলো চুজ করতে পারি আমাদের হেদায়েত এর জন্য প্লাস ভালো সম্পর্ক বিল্ড আপ এর জন্য।। আমারো ইলম নেই আমি আলিম ব্যাচ এর ৩য় সেমিস্টারে এসে স্টাডি অফ হই গেসে।
আর আমরা মান্ডায় থাকি ওখানে আই ও এম এর অফিস আছে ওখানে তালিম ,কুর আন শেখার ব্যাবস্থা আছে কি? আমার স্বামী কে আমি রিকুয়েষ্ট করেছি যেন ওখানে যান তিনি। আমি জানি ওনার আশে পাশে উস্তাজরা থাকলে সেই উসিলাই পরিবর্তন এর আশা করা যায় । তার আশে পাশের সবাই বাজে রকমের ।
সব মিলিয়ে আমাকে কিছু আমল দিন পরিক্ষিত আমল যার রেজাল্ট মাস্ট আসবেই । আমার এই একটাই চাওয়া সে আল্লাহ ওয়ালা হয়ে যাক আমিও তাই হই আর শেষ সময় রবের জন্য কাটাতে পারি দাওয়াতী কাজে থাকতে পারি। কিন্তু রাজনীতির নেশা আর বাজে বন্ধুত্ব তাকে অন্ধ করে তুলছে আমি ফ্রেন্ডস ছাড়তে বলিনা পরে আমাকে ভুল বুঝে । এমনিও তর্ক বিতর্ক টানা হতে থাকে।

জাজাকাল্লাহু খইরন ।

1 Answer

0 votes
ago by (638,220 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ أَنَسٍ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «الْمَرْأَةُ إِذَا صَلَّتْ خَمْسَهَا وَصَامَتْ شَهْرَهَا وَأَحْصَنَتْ فَرْجَهَا وَأَطَاعَتْ بَعْلَهَا فَلْتَدْخُلْ مِنْ أَىِّ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ شَاءَتْ»

আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোনো মহিলা যদি পাঁচ ওয়াক্ত সলাত আদায় করে, রমাযানের সিয়াম পালন করে, গুপ্তাঙ্গের হিফাযাত করে, স্বামীর একান্ত অনুগত হয়। তার জন্য জান্নাতের যে কোনো দরজা দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশের সুযোগ থাকবে।
(মিশকাতুল মাসাবিহ ৩২৫৪.হিলইয়াতুল আওলিয়া ৬/৩০৮।)

خَيْرُ النِّساءِ الَّتِي تَسُرُّهُ إذا نَظَرَ وَتُطِيعُهُ إذا أمَرَ ولا تُخالِفُهُ في نَفْسِها ولا مالِها بِما يَكْرَهُ.

‘‘শ্রেষ্ঠ রমণী সেই, যার প্রতি তার স্বামী দৃষ্টিপাত করলে সে তাকে খুশি করে দেয়, কোন আদেশ করলে তা পালন করে এবং তার জীবন ও সম্পদে স্বামীর অপছন্দনীয় বিরুদ্ধাচরণ করে না।’’

لَوْ كُنْتُ آمِرًا أَحَدًا أَنْ يَسْجُدَ لِأَحَدٍ لَأَمَرْتُ الْمَرْأَةَ أَنْ تَسْجُدَ لِزَوْجِهَا.

‘‘যদি আমি কাউকে কারো জন্য সিজদা করতে আদেশ করতাম, তাহলে নারীকে আদেশ করতাম, সে যেন তার স্বামীকে সিজদা করে।’’

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
স্বামীর উপর এভাবে রাগ করবেননা।
আপনাকে বিশেষ কয়েকটি নসিহত করবো-

(ক) আপনার স্বামীর বদ অভ্যাস সম্পর্কে অন্য কাউকে জানাবেন না। কেননা গোনাহে গোপন রাখা ওয়াজিব। তাই গোপন রাখার চেষ্টা করুন।

(খ) পূর্ণ আগ্রহের সাথে তাকে সময় দিন। তাকে কখনো একা ছেড়ে দিবেন না। বরং সর্বদা তার সাথে লেগে থাকুন। তার সকল প্রকার পছন্দের জিনিষকে নিজের পছন্দ বানিয়ে তার সাথে সর্বদা থাকার চেষ্টা করুন।

(গ) তার হেদায়তের জন্য দু'আ করতে থাকুন।

এসবের পরেও যদি কোনো প্রকার ফায়দা না হয় তথা যদি স্বামী এই বদ অভ্যাস থেকে বিরত না থাকে, তাহলে এমতাবস্থায় স্ত্রীর সামনে দু'টি পথ থাকবে-

(এক) হয়তো আপনি স্বামীর বদ অভ্যাস দূর হওয়ার জন্য দু'আ করবেন। এটাই সর্বাবস্থায় উত্তম হিসেবে বিবেচিত হবে।

(দুই) এমতাবস্থায় আপনার হক ঠিকমতো আদায় না সেক্ষেত্রে হলে আপনি তালাক চাইলে তাহা নাজায়েজ হবেনা। 

আমাদের মনে রাখতে হবে, পরকালে আমাদের সবাইকে নিজ নিজ আ'মলের হিসাব নিকাশ দিতে হবে।কারো পাপের বোঝাকে অন্য কেহ বহন করবে না।

আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ

ﻭَﻟَﺎ ﺗَﺰِﺭُ ﻭَﺍﺯِﺭَﺓٌ ﻭِﺯْﺭَ ﺃُﺧْﺮَﻯ ﻭَﺇِﻥ ﺗَﺪْﻉُ ﻣُﺜْﻘَﻠَﺔٌ ﺇِﻟَﻰ ﺣِﻤْﻠِﻬَﺎ ﻟَﺎ ﻳُﺤْﻤَﻞْ ﻣِﻨْﻪُ ﺷَﻲْﺀٌ ﻭَﻟَﻮْ ﻛَﺎﻥَ ﺫَﺍ ﻗُﺮْﺑَﻰ الخ

কেউ অপরের বোঝা বহন করবে না। কেউ যদি তার গুরুতর ভার বহন করতে অন্যকে আহবান করে কেউ তা বহন করবে না-যদি সে নিকটবর্তী আত্নীয়ও হয়।
(সূরা ফাতির-১৮)

সুতরাং বর্তমান পরিস্থিতে স্বামীকে বুঝিয়ে এই গোনাহের কাজ থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করুন। ধৈর্য্য সহকারে পরিস্থিতির মোকাবেলা করার চেষ্টা করুন। আল্লাহ অবশ্যই এর জন্য আপনাকে উত্তম বিনিময় দান করবেন। 

এ সম্পর্কে আরো জানতে ভিজিট করুন-- https://www.ifatwa.info/295

★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
আপনার উপরোক্ত মেহনত ও দরদ আরও বেশি কার্যকরী ও সহজ হবে, যদি তাকে কোন হক্কানী আলেমের সঙ্গে সম্পর্ক করিয়ে দিতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি প্রথমে তাকে কোন হক্কানী আলেমের বয়ান শোনার জন্য আগ্রহী করে তুলতে পারেন। ওলামাদের মজলিসে আসা যাওয়ার জন্য উৎসাহ দিতে পারেন।

আল্লাহ তাআলা বলেন,يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اتَّقُواْ اللّهَ وَكُونُواْ مَعَ الصَّادِقِينَ হে ঈমানদারগণ, আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক। (সূরা আত তাওবাহ ১১৯)

প্রিয় বোন, উক্ত মেহনত আপনাকে চালিয়ে যেতে হবে প্রতিনিয়ত। পাশাপাশি তার হেদায়তের জন্যও দোয়া করতে হবে নিয়মিত। কোন অবস্থায় আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হওয়া যাবে না। আশাহত হয়ে চেষ্টা কিংবা দোয়া বর্জন করবেন না। ইনশাআল্লাহ একদিন না একদিন সাফল্য পাবেন। وَمَنْ يَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ فَهُوَ حَسْبُهُ ‘যে আল্লাহর উপর ভরসা করে আল্লাহই তার জন্য যথেষ্ট।’ (সূরা ত্বলাক : ৩)

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,لاَ يَرُدُّ الْقَضَاءَ إِلاَّ الدُّعَاءُ ভাগ্য পরিবর্তন হয় না দোয়া ব্যতীত। (তিরমিযী ২১৩৯)

★রাগ উঠলে রাসুল সাঃ এর নির্দেশ মানতে হবে।
আর আল্লাহ তায়ালার কাছে রাগ কমানোর জন্য দোয়া করতে হবে,ধৈর্য ধারনের চেষ্টা করতে হবে।  
,
রাগ কমানোর আমল সংক্রান্ত বিস্তারিত  জানুনঃ 

★স্বামীর অন্তরে আপনার প্রতি মহব্বত বৃদ্ধি করতে হবে। এজন্য করণীয় জানুনঃ-


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...