★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে বালেগ হওয়ার সময়কাল থেকে ওমরী কাজার হিসেব করে তাহা আদায় করতে হবে।
মেয়েদের বালেগাহ হওয়া স্বপ্নদোষের মাধ্যমে , হায়েজ আসার মাধ্যমে, গর্ভধারণ করা ইত্যাদির মাধ্যমে প্রকাশিত হতে পারে।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا مُؤَمَّلُ بْنُ هِشَامٍ، - يَعْنِي الْيَشْكُرِيَّ - حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، عَنْ سَوَّارٍ أَبِي حَمْزَةَ، - قَالَ أَبُو دَاوُدَ وَهُوَ سَوَّارُ بْنُ دَاوُدَ أَبُو حَمْزَةَ الْمُزَنِيُّ الصَّيْرَفِيُّ - عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم " مُرُوا أَوْلَادَكُمْ بِالصَّلَاةِ وَهُمْ أَبْنَاءُ سَبْعِ سِنِينَ وَاضْرِبُوهُمْ عَلَيْهَا وَهُمْ أَبْنَاءُ عَشْرِ سِنِينَ وَفَرِّقُوا بَيْنَهُمْ فِي الْمَضَاجِعِ " . - حسن صحيح
‘আমর ইবনু শু‘আইব (রহঃ) থেকে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও তার দাদার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের সন্তানদের বয়স সাত বছর হলে তাদেরকে সলাতের জন্য নির্দেশ দাও। যখন তাদের বয়স দশ বছর হয়ে যাবে তখন (সলাত আদায় না করলে) এজন্য তাদেরকে মারবে এবং তাদের ঘুমের বিছানা আলাদা করে দিবে।
আহমাদ (২/১৮০, হাঃ ৬৬৮৯ এবং ২/১৮৭), হাঃ ৬৭৫৬), হাকিম (১/১৯৭) বায়হাক্বী (৩/৮৪) ‘আমর ইবনু শু‘আইব সূত্রে।
এখানে রাসুল সাঃ পিতা মাতাকে তার সন্তান যেনো নামাজী হয়,সেটার জন্য শক্ত তাকীদ হিসেবে এটা বলেছেন।
ছোট অবস্থায় যদি নামাজের প্রতি অভ্যস্ত না হয়,তাহলে বড় হওয়ার পর সাধারণত নামাজে অভ্যাস্ত হতে অনেক কঠিন হয়,তাই এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
,
ফুকাহায়ে কেরামগন বলেছেন,
ছেলে বা মেয়ের বালেগ তথা প্রাপ্ত বয়স্ক হবার মূল নিদর্শন বীর্যস্খলন হওয়া। এটির প্রকাশক অনেক কিছুই হতে পারে। যেমন
১
ছেলে মেয়েদের সেটি স্বপ্নদোষের মাধ্যমে প্রকাশিত হতে পারে।
২
ছেলেদের দাড়ি গোফ উঠা আর মেয়েদের স্তন বড় হওয়া ইত্যাদির মাধ্যমে প্রকাশ পেতে পারে।
৩
মেয়েদের হায়েজ আসা, গর্ভধারণ করা ইত্যাদির মাধ্যমেও বালেগ হওয়া সাব্যস্ত হয়।
وَإِذَا بَلَغَ الْأَطْفَالُ مِنكُمُ الْحُلُمَ [٢٤:٥٩]
তোমাদের সন্তান-সন্ততিরা যখন বায়োঃপ্রাপ্ত হয়, [সূরা আননূর-৫৯]
এইতো গেল নিদর্শন হিসেবে বালেগ হওয়া নির্ধারণ করা। যা নির্ধারণ করা খুবই সহজ।
কিন্তু কথা হল, যদি নিদর্শন বুঝা না যায়,তাহলে বয়স হিসেবে কিভাবে বালেগ হওয়া নির্ধারণ করবে?
বয়সের ভিত্তিতে বালেগ ও নাবালেগ নির্ধারণে ফুক্বাহায়ে কেরামের মাঝে বিস্তর মতভেদ হয়ে গেছে। আসলে এটি নির্ণয় করা একটু দূঃরহ ব্যাপারও। কারণ সমাজ, পরিবেশ এবং রাষ্ট্রের আবহওয়ার ভিন্নতার কারণে মানুষের শারীরিক গঠনে, আচরণে ভিন্নতা দেখা দেয়। সেই হিসেবে প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়া না হওয়ার বিষয়টিও যেহেতু শরীরের সাথে অনেকটা সম্পর্কিত, তাই এটির বয়সসীমা নির্ধারণও বেশ দুঃসাধ্য বিষয়।
এ কারণেই ফুক্বাহায়ে কেরামের মাঝে বালেগ হবার বয়স নির্ধারণে মতভেদ হয়ে গেছে। যেমন-
ক)
সতের বছর।
খ)
পনের বছর।
ইত্যাদি।
তবে প্রাধান্য পাওয়া বক্তব্য হল, বালেগ হবার উপরোক্ত আলামতগুলো যদি কোন ছেলে বা মেয়ের মাঝে প্রকাশিত না হয়, তাহলে সন্তানের বয়স পনের বছর হলেই উক্ত ছেলে মেয়ে বালেগ হয়েছে বলে ধর্তব্য হবে।
عن ابن عمر رضي الله عنهما أنه عُرِض على النبي صلى الله عليه وسلم يوم أُحدٍ وله أربع عشرة سنة فلم يُجِزْه، وعُرِض عليه يوم الخندق وله خمس عشرة سنة فأجازه.
ইবনে উমর রাঃ উহুদের জিহাদে অংশ নেবার অনুমতি চাইলেন, তখন তার বয়স ছিল চৌদ্দ বছর। রাসূল সাঃ তাকে অনুমতি প্রদান করেননি। কিন্তু খন্দকের জিহাদের অংশ নিতে অনুমতি চাইলে অনুমতি দেয়া হয়, তখন তার বয়স ছিল পনের বছর। [আলআহাদ ওয়ালমাছানী, হাদীস নং-৭৪৬]
বুঝা গেল, শরীয়তের মুকাল্লাফ হতে হলে আর কোন আলামত না থাকলে বয়স হিসেবে কমপক্ষে পনের বছর হতে হয়।
দ্রষ্টব্য
আল ইনায়া শারহুল হেদায়া ৮/২০১;আদ্দুররুল মুখতার ৬/১৫৩;তাফসীরে কুরতুবী ১২/১৫১, -সহীহ বুখারী হাদীস : ২৬৬৪, ৪০৯৭; আললুবাব ফী শরহিল কিতাব ২/১৬।
ওমরি কাজা সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ