আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
12 views
ago in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (11 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।
1. আমার অল্পতেই রাগ ওঠে। আমি চেষ্টা করেও এটা কমাতে পারছি না। রাগের মাথায় কথা বলার পরে অনুশোচনায় ভুগি। এর জন্য প্রায়ই বাবা মার সাথে কথা কাটাকাটি হয়। তারা অন্যায্য কিছু বললেই আমি প্রতিউত্তর  করে ফেলি। অনেক সময় আমার বাবা মা আমাকে অভিশাপ দিয়ে ফেলে।আমার মায়ের কাছে আমি মাফ চেয়ে নেই। তিনি মাফ করেন। কিন্তু আমার বাবা মাফ করেন না।তিনি অনেক ভয়াবহ অভিশাপ দিয়েছেন। তিনি একটা ঘটনা শুনায়ে হয়তো সেরকম যেন আমার সাথে হয় সেটা অভিশাপ দিয়েছেন। আমাদের এক আত্মীয় তার বাবার সাথে খারাপ আচরণের কারণে তার বাবা তাকে অভিশাপ দিয়েছিল। পরে বাবা মাফ করলেও তার পরিণতি অনেকটাই সেই অভিশাপের মতো হয়েছিল। আজও আমার বাবা সেই ঘটনা বলে বলতেছেন যে মাফ করলেও অভিশাপ লাগেই এমন। এখন যেহেতু আমি রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না, অনবরত আমার কবীরা গুনাহ হচ্ছে, তার উপর আবার তাদের অভিশাপ। আমি মানসিকভাবে অনেকটাই বিপর্যস্ত এই মুহুর্তে।  নিজের পরিবর্তন আনতে পারছি না, চুপ থাকতে পারছি না, আর এতো পাপ আর তাদের অভিশাপ। আমার এখন কি করা উচিত? আমি কি মৃত্যু কামনা করব? আল্লাহ কি এই গুনাহ মাফ করবে? আমার ইহকাল, পরকাল সব তো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমাকে পরামর্শ দিবেন দয়া করে। আমার বাবার অভিশাপ নিয়ে আমি খুব ভয়ে আছি।
2. মা বাবার হক নষ্টের পাপ কি আল্লাহ মাফ করেন?

3. সুন্দর মৃত্যু চেয়ে কীভাবে দুআ করা যায়?
4. আমি কি এই পরিস্থিতিতে আল্লাহর মাফের আশা করতে পারি? মৃত্যু যে চাইব এখন তো অনেক পাপ হয়ে গেছে এই আচরণের জন্য। সেক্ষেত্রে আমি কীভাবে দুআ করব?

1 Answer

0 votes
ago by (635,130 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

পিতামাতার জন্য রাগের অবস্থায় সন্তানদের বদ দুয়া,অভিশাপ দেওয়া উচিত নয়। 
কারন কোন সময় যে আল্লাহ তায়ালা সেসব বদ দুয়া কবুল করে নিবেন,তাহা কেহই বলতে পারেনা।
এমনও হতে পারে যে পিতা মাতা বুঝে না বুঝে অযথাই সন্তানের জন্য বদ দুয়া করলো, আল্লাহ তায়ালা তা পুরোপুরি ভাবে কবুল করে নিলো,তখন এটা সন্তানের জন্য শাস্তির কারন হয়ে দাড়াবে।
বিষয়টি পিতামাতাকে বুঝানো দরকার।

উভয় পক্ষ থেকেই চেষ্টা করা দরকার,যে এই অবস্থায় যেনো পৌছাতে না হয়।

পিতা মাতা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে এহেন কথা না বলার,আর সন্তান চেষ্টা করবে,এমন কোনো কাজ না করার,যাতে পিতা মাতা কষ্ট পায়।
(কিতাবুল ফাতওয়া ৬/২১৪)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِي جَعْفَرٌ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ هُرْمُزَ، قَالَ قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " نَادَتِ امْرَأَةٌ ابْنَهَا، وَهْوَ فِي صَوْمَعَةٍ قَالَتْ يَا جُرَيْجُ. قَالَ اللَّهُمَّ أُمِّي وَصَلاَتِي. قَالَتْ يَا جُرَيْجُ. قَالَ اللَّهُمَّ أُمِّي وَصَلاَتِي. قَالَتْ يَا جُرَيْجُ. قَالَ اللَّهُمَّ أُمِّي وَصَلاَتِي. قَالَتِ اللَّهُمَّ لاَ يَمُوتُ جُرَيْجٌ حَتَّى يَنْظُرَ فِي وَجْهِ الْمَيَامِيسِ. وَكَانَتْ تَأْوِي إِلَى صَوْمَعَتِهِ رَاعِيَةٌ تَرْعَى الْغَنَمَ فَوَلَدَتْ فَقِيلَ لَهَا مِمَّنْ هَذَا الْوَلَدُ قَالَتْ مِنْ جُرَيْجٍ نَزَلَ مِنْ صَوْمَعَتِهِ. قَالَ جُرَيْجٌ أَيْنَ هَذِهِ الَّتِي تَزْعُمُ أَنَّ وَلَدَهَا لِي قَالَ يَا بَابُوسُ مَنْ أَبُوكَ قَالَ رَاعِي الْغَنَمِ ".

আবূ হুরাইরাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এক মহিলা তার ছেলেকে ডাকল। তখন তার ছেলে গীর্জায় ছিল। বলল, হে জুরায়জ! ছেলে মনে মনে বলল, হে আল্লাহ্! (এক দিকে) আমার মা (এর ডাক) আর (অন্য দিকে) আমার সালাত! মা আবার ডাকলেন, হে জুরাইজ! ছেলে বলল, হে আল্লাহ্! আমার মা আর আমার সালাত! মা আবার ডাকলেন, হে জুরায়জ! ছেলে বলল, হে আল্লাহ্! আমার মা ও আমার সালাত। মা বললেন, হে আল্লাহ্! পতিতাদের সামনে দেখা না যাওয়া পর্যন্ত যেন জুরায়জের মৃত্যু না হয়। এক রাখালিনী যে বকরী চরাতো, সে জুরায়জের গীর্জায় আসা যাওয়া করত। সে একটি সন্তান প্রসব করল। তাকে জিজ্ঞেস করা হল- এ সন্তান কার ঔরসজাত? সে জবাব দিল, জুরায়জের ঔরসের। জুরায়জ তাঁর গীর্জা হতে নেমে এসে জিজ্ঞেস করলো, কোথায় সে মেয়েটি, যে বলে যে, তার সন্তানটি আমার? (সন্তানসহ মেয়েটিকে উপস্থিত করা হলে) জুরায়জ বলেন, হে বাবূস! তোমার পিতা কে? সে বলল, বকরীর অমুক রাখাল। (বুখারী ১২০৬.২৪৮২, ৩৪৩৬, ৩৪৬৬; মুসলিম ৪৫/২, হাঃ ২৫৫০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১১২৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১১৩৩)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
মা বাবার অভিশাপের কারণে আপনার ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে পরামর্শ থাকবে, এক্ষেত্রে আপনি আপনার মা বাবার কাছে মাফ চেয়ে নিবেন। 
মাফ না করলে প্রয়োজনে পা ধরে মাফ চেয়ে নিবেন।

আপনার মা বাবাকে বলবেন, তারা যেনো আপনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে ও প্রশ্নে উল্লেখিত অভিশাপ,বদ দুয়া যেনো কবুল না হয়,সে জন্য যেনো দোয়া করে।

হিকমতের পথ অবলম্বন করে চলবেন,যাতে আর অভিশাপ না দেয়।

আরো জানুনঃ- 

রাগ উঠলে তাহা নিয়ন্ত্রণ এর উপায় জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...