আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
10 views
ago in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
আমার বিয়ে হয়েছে ২.৫+।বিয়ের শুরুতে সব ঠিক ছিলো।কিন্তু কিছুদিন পর থেকে সমস্যা শুরু হয়।আমার কাছে মনে হয় আমাদের বদনজর লেগেছে অনেক।কারণ প্রতিবেশিরা কিছুটা হলেও হিংসাত্মক ভাবে আমাদের প্রশংসা করতো অনেক।আমার স্বামীর প্রশংসা করতো অনেক।সে যা-ই হোক, ধীরে ধীরে অনেক ঝগড়া হওয়া শুরু হলো।শুরুর দিকে আমার স্বামী কিছু না বললেও ঝগড়ার এক পর্যায়ে গিয়ে আমি বলা শুরু করলাম এইভাবে - তোমাকে বিয়ে করে ভুল করেছি, আমি তোমার সাথে সংসার করবোনা, আমাকে ডিভোর্স দিয়ে দাও, আমাকে এই অশান্তি থেকে মুক্তি দিয়ে দাও, আমাকে অন্য কোথাও বিয়ে দিয়ে দাও-যে আমাকে রানী বানিয়ে রাখবে, আমাকে কষ্ট দিবেনা।প্রথম প্রথম সে উওরে কিছু বলতোনা।কিন্তু ধীরে ধীরে সে-ও এগুলো বলা শুরু করলো - তোমাকে বিয়ে করে ভুল করেছি, তোমার মত সাইকোকে বিয়ে করে ভুল করেছি, আমি তোমার সাথে সংসার করবোনা, তোমার মত মেয়ের/তোমার মত সাইকোর দরকার নেই আমার, তুমি তোমার মত থাকো, আমাকে আমার মত থাকতে দাও(আমার স্বামী চাকরীর জন্য দূরে থাকে, পাশাপাশি পড়াশুনাও করে, মাঝে মাঝে আসে বাসায়।আমি বাবা মায়ের সাথে থাকি।আমাকে ফোনেও টাইম কম দেয়, তাই বেশিরভাগ সময় এটা নিয়েই ঝগড়া হতো।আমি কল দিয়ে অনেক কান্নাকাটি করতাম৷ সেজন্য ও ঠিকমত পড়তে পারতোনা।আমার স্বামী খুব বেশি ক্যারিয়ার ওরিয়েন্টেড পারসন, আর খুব বেশি রাগী/ঘাড় বাকা মানুষ।রাগ উঠলে সবসময় খুব বেশি চিল্লাচিল্লি না করলেও মাথায় রক্ত উঠে থাকে, তখন ভালো কথা বুঝালেও সহযে বুঝে না।সে যা বুঝে তা-ই।ও চাইতো আমি ওকে বেশি কল না দেই, জব শেষে বাসায় ফিরে রেস্ট নিয়ে যেনো ও পড়তে পারে আমি যেনো ওর সময় নষ্ট না করি, সেজন্য রাগে ও বলতো - তোমার মত তুমি থাকো, আমার মত আমাকে থাকতে দাও, এখন থেকে তোমার রাস্তা তুমি দেখো আমার রাস্তা আমাকে দেখবো, আমাকে মুক্তি দাও এসব থেকে/এসব অশান্তি থেকে।আমাকে দুইদি৷ ঝগড়ার সময় আমার স্বামী জিজ্ঞেস করেছে - বলো তুমি কি চাও - আমি উওরে বলেছি - তালাক চাই।সে উওরে বলেছে ঠিকাছে তোমার আম্মু আব্বুর সাথে কথা বলবো / কথা বলে ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দিবো।এগুলো শুধুমাত্র রাগে বলেছে।যখন সেও এগুলো বলা শুরু করলো তখন আমার মনের মধ্যে ভয় ঢুকে গেলো।ভয়ে আমি এগুলো বলা অনেকটা কমিয়ে দেই।কিন্তু সে রাগ হলেই শুধু এসব বলতো।আবার যখন রাগ ঠান্ডা হয়ে যেতো তখন জিজ্ঞেস করলে বলতো এসব রাগে বলেছে, তালাকের কোনো উদ্দেশ্য নেই।ও শুধু চাইতো আমি যেনো ওকে সময় দিয়ে সাপোর্ট করি পড়াশুনা করে ক্যারিয়ার গড়তে।আমার মনের মধ্যে চিন্তা ঢুকে গেলো।আমি তালাক নিয়ে ভিডিও দেখা শুরু করলাম।বলে রাখা ভালো আমার জীবনে কিছু কারণে আমি আগে অনেক কষ্ট পাই।তখন থেকে আমি ডিপ্রেশনে ভুগতেছি।ওয়াসওয়াসরও সমস্যা আছে।যেটা একবার মাথায় ঢুকে ওটা আর বের হতে চায়না আমার সহযে।তালাক নিয়ে অনেক ভাবা শুরু করলাম।সারাক্ষন ভিডিও দেখতাম এটা নিয়ে।আর স্বামীকে জিজ্ঞেস করতাম তার ইনটেনশন কি ছিলো।সে সবসময় বলতো আমাকে তালাক দেয়ার কোনো ইচ্ছা তার নেই।এগুলো সে রাগে অভিমানে বলে।তাও আমার ভয় হতো।ধীরে ধীরে এগুলো আরও বাড়তে লাগলো।একদিন আমি পিরিয়ড অবস্থায় ছিলাম আমার যতদূর মনে পরে।সে আমাকে বাস্তবতা বুঝানোর জন্য এভাবে বললো কথায় কথায় - ধরো! আমি তোমাকে ডিভোর্স দিলাম, তখন তুমি কি করবা? আমি উওরে বললাম - আল্লাহ তুমি এটা কি বললা? সে আবারও বললো, কি বললাম? ধরো! আমি তোমাকে ডিভোর্স দিলাম তখন তুমি কি করবা? আমি কান্না করে দিয়ে বললাম, আল্লাহ তুমি এভাবে কেনো বললা? এভাবে বললে ডিভোর্স হয়ে যায় ইনটেনশন না থাকলেও।সে উওরে বললো আমিতো তোমাকে ডিভোর্স দেইনি, আমি তোমাকে বাস্তবতা বুঝানোর জন্য বলছি।(তার বলার মানে ছিলো সে যদি আমাকে ভবিষ্যতে ডিভোর্স দিয়ে দেয় তাহলে আমি জীবনে কি করবো, তার উদ্দেশ্য ডিভোর্স দেয়া ছিলোনা।আমাকে বুঝানো ছিল) আমি অনেক কান্নাকাটি করলাম, মনের মধ্যে আরও ভয় ঢুকে গেলো।আরও বেশি ডিভোর্স নিয়ে ভিডিও দেখা শুরু করলাম।আমি টেনশনে শেষ হয়ে যাচ্ছিলাম দিন দিন কিন্তু আমার স্বামী স্বাভাবিক ছিলো।কারণ তার কোনো চিন্তা নেই, সে আমাকে ছাড়তে চায়না তাই।কিন্তু আমার মধ্যে এই ভেবে ভয় ধুকে গেলো যে ডিভোর্স হয়ে গেলো কিনা আমাদের।এরপর একদিন রাগে আমি বাসা থেকে বের হলাম, তাকে কল দিয়ে বললাম আমি তোমার অফিসের সামনে যাবো, সে আমাকে উওরে বললো রাগ করে - তুমি যদি এখন এভাবে আমার অফিসের সামনে আসো তাহলে আমাদের রাস্তা আলাদা হয়ে যাবে - তার উদ্দেশ্য ছিলো আমাকে থামানো যেনো আমি অফিসের সামনে না যাই।ওইদিন আমি আর যাইনি তার অফিসের সামনে।আমাকে সে বললো আমি তোমার আম্মুকে কল দিবো, আমি রাগে বলেছিলাম চিল্লাতে চিল্লাতে যে আমার মাকে কেনো কল দিবা? আমার মা কে কি তুমি বিয়ে করছো? নাকি আমাকে বিয়ে করছো? সেদিন আর তার অফিসের সামনে আমি যা-ই নি।অন্য দিন ভালো সময়ে তাকে না জানিয়েই তার অফিসের সামনে যাই আমি তাকে সারপ্রাইজ দেয়ার জন্য।সেও খুশি মনে আমাকে ওয়েলকাম করে।দুজনেই খুশি ছিলাম।কিন্তু আমি যে যাবো এটা সে আগে থেকে জানতোনা।এর দ্বারা কি তালাক হয়ে যাবে? অন্য একদিন আমি পিরিয়ড অবস্থায় ছিলাম৷ আমি জানতাম মেয়েরা তালাক দিলে তালাক হয়না।আমি জেনে বুঝেই শুধুমাত্র ওকে ভয় দেখানোর উদ্দেশ্য নিয়ে ম্যাসেঞ্জারে ম্যাসেজে ওকে লিখলাম এভাবে - আমি তোমাকে তালাক দিলাম।সে কোনো উওর দেইনি, এটার লিখার পর আমিই কান্না করে দিছি।কেনো এটা লিখলাম।আমার স্বামীকে আমি অনেক বেশি ভালোবাসি।সেও আমাকে অনেক ভালোবাসতো।কিন্তু কেমন যেনো আমাদের মধ্যে আমাদের কে দিয়ে কেউ এগুলো করাচ্ছে কেউ এগুলো বলাচ্ছে মনে হচ্ছে।মনে হচ্ছে কোনো একটা ঘোরের মধ্যে আছি।বিশেষ করে আমি।এরপর আবারও একদিন ঝগড়া হলো, রাগে সে আমার মাকে কল দিয়ে বললো - আম্মু আমাকে এই অশান্তি থেকে মুক্তি দেন, আমি ওর সাথে থাকতে চাইনা / সংসার করতে চাইনা।আম্মু উওরে সম্ভবত বলেছিলো - ঠিকাছে আমি আমার মেয়ের সাথে আগে কথা বলে দেখি কি হয়েছে।আমার স্বামী শুধুমাত্র বিরক্ত হয়ে প্রেসারে এসব বলেছে।আমার স্বামী আর আমার দুজনেরই বয়স কম।আমার স্বামীর তখন বয়স ছিলো ২২। সে খুব স্বাধীনচেতা মানুষ।প্রেসার একদন সহ্য করতে পারেনা।খুব দ্রুত মাথায় রক্ত উঠে যায়।সে স্বজ্ঞানে আমাকে ছাড়তে চায়না কখনো।রাগ উঠলে তার মাথা ঠিক থাকেনা।এরপরেও রাগ হয়ে বহুবার কেনায়া শব্দ বলেছে।আমার স্বামী আমাকে কখনো ডিরেক্ট তালাক দেয়নি।সবসময় রাগে কেনায়া কথা বলেছে।পরে রাগ কমার পর জিজ্ঞেস করলে বলেছে - আমাকে তালাক দিতে চায়না কখনো।এগুলো রাগে অভিমানে, আমাকে থামানোর জন্য, বিরক্ত হয়ে বলে।আবারও একদিন ঝগড়ার সময় অসম্ভব রকমের রাগ হয়ে যায় সে।রাগে চিল্লাতে চিল্লাতে আমাকে বলতে থাকে - তোমার সাথে আমার আজকে থেকে কোনো সম্পর্ক নেই।এভাবে দুইবার বলে।আমি চুপ থাকি।আমি বারবার বলছিলাম এসব বলোনা।এসব বললে সমস্যা হয়।আমি তালাকের কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিলা ততোদিনে।কিন্তু সে রাগ হলেই শুধু কেনায়া শব্দ বলতো।কিন্তু কখনো তালাকের নিয়তে বলেনি।তাও আমার সন্দেহ বা ভয় হতো যে সত্যি যদি তালাকের নিয়তে বলে থাকে তখন কি হবে।আমি তো আমার আল্লাহকে ভয় পাই।তাকে জিজ্ঞেস করলে সে সবসময় একই কথা বলে যে সে আমাকে কখনো ছাড়তে চায়না / আমাকে তালাক দেয়ার ইচ্ছা নেই।আমার সাথে সংসার করতে চায়।একটাবারের জন্যও ঠান্ডা মাথায় আমাকে কখনো বলেনি আমাকে তালাক দেয়ার ইচ্ছা আছে তার।সে রাগের সময় এগুলো বলে পরে ভুলেও যায়।তার এসব মনেও থাকেনা।এগুলো নিয়ে ভাবেও না।চিন্তাও করেনা।কারণ জিজ্ঞেস করলে বলে সে আমাকে ছাড়তে চায়না।আমি যতগুলো কথা লিখলাম তার মাঝে আমি প্রায় সিওর আমার স্বামীর অনেক কথাই মনে নেই।কিন্তু আমার সব মনে আছে। ধীরে ধীরে আমাদের মধ্যে সমস্যা আরও বাড়তে লাগলো৷ আমার স্বামীর আমাকে বিরক্ত লাগা শুরু করলো।চাকরী করে সে ঠিকমত পড়ার টাওম পায়না সেজন্য চিন্তায় তার এমনিতেই মাথা খারাপ হয়ে থাকে, তাই দিনদিন সে আমার থেকে আরও দূরে সরে গেলো।টাইম আরও কম দেয়া শুরু করলো।একদিন জানতে পারলাম সে একটা মেয়ের সাথে অহেতুক ম্যাসেঞ্জারে কিছুদিন কথা বলেছে।সেই মেয়েকে বোন বানিয়েছে।আমার শুনে অনেক রাগ হলো।আমি ভাবলাম আমাকে সময়ে দেয়ার সময় নেই বোন বানানোর সময় কোথায় পায়।সেই মেয়েই আমাকে ম্যাসেজ দিয়েছিলো।সেই মেয়ের ফ্রেন্ড নাকি আমার স্বামীকে পছন্দ করতো তাই।আমার শুনে অনেক রাগ হলো।আমি সেই মেয়েকে আর সেই মেয়ের ফ্রেন্ডকে দূরে সরানোর জন্য মিথ্যা বললাম - বললাম আমি ৩ মাসের প্র‍্যাগনেন্ট।এইজন্য বললাম যেনো সেই মেয়েটার বিবেক কাজ করে আর সে আমার স্বামী পেছনে আর না ছুটে।আমার স্বামীকে আমি বিষয় টা জানালাম।জানানোর পর সে অনেক রাগ হলো আমি কেনো সেই মেয়েকে মিথ্যা বললাম।আমার স্বামী আমাকে আর সেই তার মুখে ডাকা বোনকে কল কনফারেন্সে নিয়ে আমাকে তার সামনে জিজ্ঞেস করলো - তোমার মায়ের দুধের কসম কেটে বলো তুমি প্র‍্যাগনেন্ট? আমি উওর দেইনি শুরুতে।আবারও জিজ্ঞেস করলো।আমি বললাম হ্যা আমি প্র‍্যাগনেন্ট।সে বললো কত দিনের? আমি বললাম ৩ মাসের।সে সেই মেয়ের কল কেটে দিয়ে আমাকে গালি গালাজ শুরু করে অনেক রাগ হয়ে বললো - আমি ২৬-২৭ এপ্রিল আসতেছি বাসায়, এসে যদি দেখি তুমি প্র‍্যাগনেন্ট না তাহলে তোমার আমার রাস্তা আলাদা হয়ে যাবে।আমি প্র‍্যাগনেন্ট না এটা তো সে জানেই, তাও রাগে এটা বলেছে।আবারও এভাবে বলেছে - আমি আসার পর তোমার আম্মুকে সাথে করে নিয়ে গিয়ে তোমাকে টেস্ট করাবো, যদি দেখি তুমি প্র‍্যাগনেন্ট না তাহলে আমি তোমাকে ডিভোর্স দিয়ে দিবো।নাহলে আমি আসার সময় সাথে করে ডিভোর্স পেপার নিয়ে আসবো।এটা বলে ফোন কেটে দেয়।অনেক বেশি রাগ হয়ে ছিলো সেদিন।এরপর দিন আমি জিজ্ঞেস করলাম কল দিয়ে, যখন রাগ থামলো সে বললো এভাবে - তোমার ধৈর্য নেই।তুমি অনেক বিরক্ত করো আমাকে।আমার যদি তোমাকে ছাড়ার ইচ্ছাই থাকতো, এতদিনে ছেড়ে দিতাম।তুমি আমাকে এত্ত বিরক্ত করো যে রাগে এসব বলি।আমার তোমাকে ডিভোর্স দেয়ার কোনো ইচ্ছা নেই। এরপর সাথে ফোনে স্বামী স্ত্রীর মত কথাও বলে। ২৬-২৭ তারিখে সে আর আসেনা।একেবারে ২.৫ মাস পরে আসে।এর মাঝে আমার ৩ পিরিয়ড পার হয়ে যায়।খুশি মনে আসে।এর মাঝে ফোনে আমাদের মধ্যে ভালো কথাও হয়।আমাকে টাকাও পাঠায় খরচের জন্য।আমি খুব ভেঙে পরি এই ভেবে যে এভাবে তো শর্ত তালাক হয়ে যায়।এভাবে বলার পরে সে আর সেই ২৬-২৭ তারিখে আসেনি।২.৫ মাস পরে আসে আমার ৩ পিরিয়ড পার হওয়ার পর।এর মাঝে একদিন আমার অনেক বেশি কষ্ট হচ্ছিলো, তখন সে ঈদের জন্য তার গ্রামের বাড়িতে যায়।আমি রাগে বাসা থেকে বের হই তাকে এই বলে যে আমিও তার বাড়িতে যাবো।আমি আমাকে আটকানোর জন্য ফোনে এই ভাবে বলে যে - তুমি যদি ৫ মিনিটের মধ্যে বাসায় ব্যাক না করো তাহলে তোমার আমার রাস্তা আলাদা হয়ে যাবে।এটা সে শুধুমাত্র আমাকে ভয় দেখানোর জন্য বাসায় ফেরানোর জন্য বলে।কারণ যে জানে একমাত্র এটা বললেই আমি ভয় পাবো।আমিও।সাথে সাথে বাসায় ব্যাক করি, কিন্তু আমার বাসায় আসতে ৫ মিনিটের বেশি লাগে। তাকে বললাম এভাবে বললে তো শর্ত তালাক হয়ে যায়।সে বললো আমার উদ্দেশ্য তালাক দেয়া না।তোমাকে বাসায় ফেরানো।আর আমি ৫ মিনিটের মধ্যে বাসায় যেতে বলিনি, বলেছি যেদিকে যাচ্ছো সেদিকে যেনো আর না যাও বাসায় দিকে ৫ মিনিটের মধ্যে রওনা হও সেটা বলেছি।এগুলো ঘটার আগে আমার স্বামী আমাকে একদিন এইভাবে বলে - শোনো আমি তোমার স্বামী না? তোমার দ্বায়িত্ব আমার না? আমি কখন কি কিভাবে বলি সেটার দ্বায়ভার আমার।আমি কেনো বলি সেটা আমি ভালো জানি।তুমি এসব নিয়ে আর ভাববানা।ঠিকমত পড়াশুনা করো এসব চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দিয়ে।এগুলো ঘটার পরেও একদিন সেইম এভাবেই বলে।

আমি সব বিস্তারিত বললাম।আমি চিন্তায় শেষ হয়ে যাচ্ছি।আমার স্বামীকে আমি খুব বেশি ভালোবাসি।আমার স্বামীও আমাকে খুব বেশি ভালোবাসতো।কিন্তু সে আমার উপর খুব বিরক্ত হয়ে গেছে ইদানীং।সে নিজে চাকরী করে নিজের ইনকামে পড়াশুনা করে।তাকে হেল্প করার কেউ নেই।তাই সে এত বেশি ভাবে ক্যারিয়ার নিয়ে।সে চায় আমি তাকে সাপোর্ট করি।আমিও চাই সাপোর্ট করতে।কিন্তু সে এত কম সময় দেয় বলেই আমাদের মধ্যে এত ঝগড়া।সে আমাকে ছাড়তে চায়না।আমিও চাইনা।সে কখনো বলেনি আমাকে সে এসব তালাক দেয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে বলেছে।কিন্তু আমার মধ্য থেকে ভয় যায়না।আমি আল্লাহ কে ভালোবাসি।আমি জাহান্নামে যেতে চাইনা।তাই আমার অনেক চিন্তা হচ্ছে।প্লিজ আমার সব কথাগুলো ভালো করে পরে আমাকে বলবেন? আমার সম্পর্ক টা এখনো হালাল আছে কিনা? আল্লাহ না করুন যদি হালাল না থাকে তাহলে কি এখনো কোনো করনীয় আছে? প্লিজ আমার জীবন টা একটু শান্তিতে কাটানোর জন্য সাহায্য করুন।আমি জানি প্রতিদিন হাজার হাজার মেইল আপনারা পান।আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি দিন দিন চিন্তায়।নামাজ খাওয়া কিচ্ছু ভালো লাগেনা।প্লিজ আমাকে একটু সাহায্য করুন বিস্তারিত বলে।প্লিজ।আমার স্বামী এসব নিয়ে ভাবেই না।কারণ সে জানে সে আমার সাথে সংসার করতে চায়।কিন্তু আমি এসব নিয়ে ভাবা বন্ধই করতে পারছি না।আমি আল্লাহর সাথে নাফরমানি করতে চাইনা।অনেক ভুল করে ফেলেছি জানি রাগে অভিমানে। আমার আরও ধৈর্যশীল হওয়া উচিত ছিলো।আমাকে প্লিজ সাহায্য করুন আল্লাহর ওয়াস্তে প্লিজ।প্লিজ।প্লিজ।

1 Answer

0 votes
ago by (635,130 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَحَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ سَمِعَ ابْنَ شِهَابٍ يَقُولُ فِي الرَّجُلِ يَقُولُ لِامْرَأَتِهِ بَرِئْتِ مِنِّي وَبَرِئْتُ مِنْكِ إِنَّهَا ثَلَاثُ تَطْلِيقَاتٍ بِمَنْزِلَةِ الْبَتَّةِ قَالَ مَالِك فِي الرَّجُلِ يَقُولُ لِامْرَأَتِهِ أَنْتِ خَلِيَّةٌ أَوْ بَرِيَّةٌ أَوْ بَائِنَةٌ إِنَّهَا ثَلَاثُ تَطْلِيقَاتٍ لِلْمَرْأَةِ الَّتِي قَدْ دَخَلَ بِهَا وَيُدَيَّنُ فِي الَّتِي لَمْ يَدْخُلْ بِهَا أَوَاحِدَةً أَرَادَ أَمْ ثَلَاثًا فَإِنْ قَالَ وَاحِدَةً أُحْلِفَ عَلَى ذَلِكَ وَكَانَ خَاطِبًا مِنْ الْخُطَّابِ لِأَنَّهُ لَا يُخْلِي الْمَرْأَةَ الَّتِي قَدْ دَخَلَ بِهَا زَوْجُهَا وَلَا يُبِينُهَا وَلَا يُبْرِيهَا إِلَّا ثَلَاثُ تَطْلِيقَاتٍ وَالَّتِي لَمْ يَدْخُلْ بِهَا تُخْلِيهَا وَتُبْرِيهَا وَتُبِينُهَا الْوَاحِدَةُ قَالَ مَالِك وَهَذَا أَحْسَنُ مَا سَمِعْتُ فِي ذَلِكَ

মালিক (রহঃ) বলেনঃ তিনি ইবন শিহাব (রহঃ)-কে বলিতে শুনিয়াছেন, যে ব্যক্তি তাহার স্ত্রীকে বলিলঃ “আমার তোমা হইতে দায়িত্বমুক্ত হইয়াছি। তুমিও আমা হইতে দায়িত্বমুক্ত।” ইহা দ্বারা তালাকাই আল-বাত্তা-এর মতো তিন তালাক প্রযোজ্য হইবে।

যে ব্যক্তি নিজের স্ত্রীকে বলিলঃ (أَنْتِ خَلِيَّةٌ أَوْ بَرِيَّةٌ) “তুমি দায়মুক্ত” (أَنْتِ بَائِنَةٌ) “তুমি আমা হইতে পৃথক।” মালিক (রহঃ) বলেনঃ সে স্ত্রী যাহার সঙ্গে সহবাস করা হইয়াছে এইরূপ হইলে তবে তাহার স্বামীর উপরিউক্ত বাক্যগুলির দ্বারা তাহার উপর তিন তালাক বর্তাইবে। আর যদি সেই স্ত্রী এমন হয় যাহার সহিত সহবাস করা হয়নি, তবে ধর্মত স্বামীকে বিশ্বাস করা হইবে এবং তাহার নিকট জিজ্ঞাসা করা হইবে-সে উপরিউক্ত বাক্যগুলি দ্বারা এক তালাক উদ্দেশ্য করিয়াছে, না তিন তালাক। যদি সে এক তালাক উদ্দেশ্য করিয়াছে বলিয়া প্রকাশ করে তাহা হইলে এই বিষয়ে সেই ব্যক্তিকে হলফ দেওয়া হইবে। (যেহেতু স্বামীর উক্তির দ্বারা স্ত্রীর প্রতি এক তালাক বায়েন প্রযোজ্য হইয়াছে, তাই পুনর্বিবাহ ছাড়া স্বামী সেই স্ত্রীকে গ্রহণ করিতে পারবে না) তাই সে বিবাহের প্রস্তাবকারী হিসাবে অন্য লোকদের মতো একজন বলিয়া পণ্য হইবে। ইহার কারণ এই যে, যে স্ত্রীর সহিত সঙ্গম করা হইয়াছে সেই স্ত্রী তিন তালাক ছাড়া দায়িত্বমুক্ত বা স্বামী হইতে পৃথক হইবে না। আর যাহার সহিত সঙ্গম হয় নাই সেই স্ত্রী এক তালাক দ্বারা দায়িত্বমুক্ত ও পৃথক হইয়া যায়।

মালিক (রহঃ) বলিয়াছেনঃ এ বিষয়ে যাহা আমি শুনিয়াছি তন্মধ্যে ইহাই আমার নিকট উত্তম।
(মুয়াত্তা মালিক ১১৬৫)

ফাতওয়ার কিতাবে আছেঃ 

وَالضَّرْبُ الثَّانِي: الْکِنَايَاتُ، وَلاَيَقَعُ بهَا الطلاَقُ إلاَّبِنِيَةٍ، اَوْ دَلالَةٍ حَالٍ. وَهِيَ عَلَی ضَرْبَيْنِ: مَنْها ثَلاَثَةُ اَلْفَاظٍ يَقَعُ بهَا الطّلاقُ الرَّجْعِيُّ،وَلاَيَقَعُ بهَا إِلا وَاحَدَةٌ، وَهِيَ قَوْلُهُ: اعْتَدِّي، وَاسْتَبْرِئِي رَحِمَکِ، وَاَنْتِ وَاحِدَةٌ، وَبَقِيَةُ الْکِنَايَاتِ إِذا نَوَی بهَا الطلاَقَ کَانَتْ وَاحِدَةً بَائِنَةً، وَإِنْ نَوَی بِهَا ثَلاَثاً کَانَتْ ثَلاَثاً، وَإِنْ نَوَی اثْنَتَيْنِ کَانَتْ وَاحِدَةً، وَهَذَا مِثْلُ قَوْلِهِ: اَنْتِ بَائِنٌ، وَبَتَّةٌ، وَبَتْلَةٌ، وَحَرَامٌ، وَحَبْلُکِ عَلَی غَارِبِکِ، وَالْحَقی بِاَهْلِک، وَخَلِيَةٌ، وَبَرِيّةٌ، وَوَهَبْتُکِ لاهْلِکِ، وَسَرَّحْتُکِ، وَاخْتَارِيْ، وَفارَقْتُکِ، وَاَنْتِ حُرَّةٌ، وَتَقَنَّعِي، وَتَخَمَّرِي، وَاسْتَتِرِيْ، وَاغْرُبِيْ، وَابْتَغِي الاَزْوَاجَ، فَإِنْ لَمْ يَکُنْ لَهُ نِيَةٌ لَمْ يَقَعْ بِهٰذِهِ الاَلْفَاظِ طَلاَقٌ؛ إِلا اَنْ يَکُوْنَا فِيْ مُذَاکَرَةِ الطّلاَقِ؛ فَيَقَعُ بِهَا الطّلاَقُ فِيْ الْقَضَاءِ، وَلاَيَقَعُ فِيْمَابَيْنَةُ وَبَيْنَ اﷲِ تَعَالَی إِلاَّ اَنْ يَنْوِيَهُ، وَإِنْ لَمْ يَکُوْنَا فِيْ مَذَاکَرَةِ الطّلاَقِ، وَکَانافِيْ غَضَبٍ اَوْ خُصُوْمَةٍ، وَقَعَ الطّلاَقُ بِکُلِّ لَفْظٍ لاَ يُقْصَدُ بِهِ السَّبُّ وَالشَّتِيْمَةُ، وَلَمْ يَقَعْ بِمَا يُقْصَدُبِهِ السَّبُّ وَالشَّتِيْمَةُ إِلاَّ اَنْ يَنْوِيَةُ.
احمد بن محمد البغدادي المعروف بالقدوري، مختصر القدوري: 363. 364، موسسة الريان للطباعة والنشر والتوزيع، بيروت
برهان الدين علي المرغيناني، الهداية شرح البداية، 1: 241، المکتبة الاسلامية

সারমর্মঃ  
২য় প্রকার,কেনায়া বাক্য।
এর দ্বারা তালাক হবেনা,কিন্তু তালাকের নিয়ত অথবা অবস্থার ভিত্তিতে তালাক হবে। কেনায়া বাক্য দুই প্রকার। এর মধ্যে তিনটি শব্দ এমন আছে, যার দ্বারা  তালাকে রজয়ী পতিত হয়। 
সেগুলো হলোঃ- তুমি ইদ্দত পালন করো,তুমি তোমার গর্ভাশয় মুক্ত করো,তুমি এক।

আর কেনায়া তালাকের অন্যান্য শব্দ,যেক্ষেত্রে তালাকের নিয়ত করলে বায়েন তালাক হয়। তিন তালাকের নিয়ত করলে তিন তালাক পতিত হয়। 
যদি দুই তালাকের নিয়ত করে,সেক্ষেত্রে এক তালাক পতিত হয়।
যেমনঃ- তুমি বিচ্ছিন্ন, তুমি সম্পর্ক মুক্ত,তুমি ভিন্ন,তুমি হারাম,তুমি শুণ্য,তুমি মুক্ত,তোমার রশি তোমার কাঁধে,তুমি তোমার পরিবারবর্গের সাথে মিলিত হও,আমি তোমাকে তোমার পরিবারের জন্য হেবা-দান করলাম,আমি তোমাকে মুক্ত করে দিলাম,আমি তোমাকে বিচ্ছিন্ন করে দিলাম,তোমার বিষয় তোমার হাতে,তুমি আযাদ,তুমি ঘোমটা পড়,তুমি ওড়না দ্বারা নিজেকে আবৃত করো,তুমি আড়াল হও (পর্দা করো), তুমি বিদূরিত হও, তুমি বের হয়ে যাও,তুমি চলে যাও,তুমি দন্ডায়মান হও (দাঁড়িয়ে যাও), তুমি অন্য স্বামী খুজো।
স্বামীর যদি এখানে নিয়ত না থাকে,তাহলে এ সব বাক্য দ্বারা তালাক হবেনা। তবে মুযাকারায়ে তালাকের ক্ষেত্রে হলে কাযা'আন তালাক হবে। দিয়ানাতান তালাক হবেনা,কিন্তু যদি নিয়ত করে,তাহলে তালাক হবে।
আর যদি মুযাকারায়ে তালাকের ক্ষেত্রে না হয়,বরং রাগ ও ঝগড়াঝাটির অবস্থায় হয়,তাহলে প্রত্যেকটি কেনায়া বাক্য বলার দ্বারাই তালাক হবে,কিন্তু যেসব বাক্য দিয়ে গালি গালাজ উদ্দেশ্য করা হয়,সেসব বাক্য দ্বারা তালাক হবেনা,কিন্তু যদি নিয়ত করে,তাহলে তালাক হবে।

(কুদুরী ৩৬৩.৩৬৪. হেদায়া শরহুল বিদায়াহ ১/২৪১,শরহে বিকায়াহ ২/৭৭)

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
সে রাগ হলেই শুধু কেনায়া শব্দ বলতো।কিন্তু কখনো তালাকের নিয়তে বলেনি।তাও আমার সন্দেহ বা ভয় হতো যে সত্যি যদি তালাকের নিয়তে বলে থাকে তখন কি হবে।আমি তো আমার আল্লাহকে ভয় পাই।

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত বাক্যগুলি বলার সময় আপনার স্বামীর যেহেতু তালাকের নিয়ত ছিলোনা,তাই এক্ষেত্রে তালাক হয়নি।

★তদুপরি আপনার যেহেতু তালাকের নিয়ত থাকার সন্দেহ/ভয় হচ্ছে,আর শর্তযুক্ত বাক্য গুলো দ্বারা মনে হচ্ছে তাহা তালাকের নিয়তেই বলা হতে পারে,প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে, সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সতর্কতা মূলক এক তালাকে বায়েন ধরে নিয়ে পুনরায় বিবাহ পড়িয়ে নিয়ে ঘর সংসার চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ থাকবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...