আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
39 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (13 points)
reshown by
১। কেমন স্বপ্ন দেখলে সেটাকে স্বপ্নদোষ বলে এবং গোসল ফরজ হয়?

২। ফরজ গোসলের সময় যদি লজ্জাস্থানে হাত দেয়া হয়, তবে এই গোসল দিয়ে নামাজ পড়া যাবে?

৩। গোস্ত বানিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে কুরবানির গরুর গোস্ত দিলে সেটা খাওয়া যাবে?

৪। কেউ যদি বলে আমার নামে বা অমুকের  নামে কুরবানি দেয়া হয়েছে , এই নিয়তে কুরবানি দিলে   সেই গোস্ত খাওয়া যাবে??

1 Answer

0 votes
by (643,650 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
স্বপ্নদোষ হলে গোসল ফরজ হবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
হযরত উম্মে সালমা রাযি থেকে বর্ণিত,

عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ أَنَّهَا قَالَتْ جَاءَتْ أُمُّ سُلَيْمٍ امْرَأَةُ أَبِي طَلْحَةَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ : ( إِنَّ اللَّهَ لَا يَسْتَحْيِي مِنْ الْحَقِّ هَلْ عَلَى الْمَرْأَةِ مِنْ غُسْلٍ إِذَا هِيَ احْتَلَمَتْ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَعَمْ إِذَا رَأَتْ الْمَاءَ )

তিনি বলেন,হযরত আবু তালহা রাযি এর স্ত্রী উম্মে সুলাইম রাযি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট এসে বললেন,ইয়া রাসূলুল্লাহ সাঃ! নিশ্চয় আল্লাহ হককে প্রকাশ করতে লজ্জাবোধ করেন না,মহিলার উপর কি গোসল ফরয হবে, যখন মহিলার স্বপ্নদোষ হবে?
রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন,হ্যা মহিলার উপরও গোসল ফরয হবে,যখন মহিলা পানিকে দেখবে।(সহীহ বোখারী-৩৭৩,সহীহ মুসলিম-৪৭১)

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ خَالِدٍ الْخَيَّاطُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ الْعُمَرِيُّ، عَنْ عُبَيْدِ اللهِ، عَنِ الْقَاسِمِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ سُئِلَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَنِ الرَّجُلِ يَجِدُ الْبَلَلَ وَلَا يَذْكُرُ احْتِلَامًا قَالَ " يَغْتَسِلُ " . وَعَنِ الرَّجُلِ يَرَى أَنَّهُ قَدِ احْتَلَمَ وَلَا يَجِدُ الْبَلَلَ قَالَ " لَا غُسْلَ عَلَيْهِ " . فَقَالَتْ أُمُّ سُلَيْمٍ الْمَرْأَةُ تَرَى ذَلِكَ أَعَلَيْهَا غُسْلٌ قَالَ " نَعَمْ إِنَّمَا النِّسَاءُ شَقَائِقُ الرِّجَالِ "

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এমন ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল, যে ঘুম থেকে জেগে (বীর্যপাতে দরুণ কাপড়) ভিজা দেখতে পায় অথচ স্বপ্নদোষের কথা তার স্মরণ হচ্ছে না। তিনি বললেন, তাকে গোসল করতে হবে। এটাও জিজ্ঞাসা করা হল যে, এক ব্যক্তির তার স্বপ্নদোষ হয়েছে বলে মনে পড়ছে, অথচ কাপড়ে কোন ভিজা দেখতে পেল না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাকে গোসল করতে হবে না। উম্মু সুলাইম (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রসূল! নারীরাও (পুরুষের) অনুরূপ কিছু দেখতে পেলে তাদেরও কি গোসল করতে হবে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, নারীরা তো পুরুষের মতই।
তিরমিযী (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ কেউ জাগ্রত হয়ে কাপড় ভিজা পেলো কিন্তু স্বপ্ন দোষের কথা স্মরণ হচ্ছে না, হাঃ ১১৩), ইবনু মাজাহ (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ কারো স্বপ্ন দোষের কথা মনে হচ্ছে কিন্তু কাপড় ভিজা দেখলো না হাঃ ৬১২), আহমাদ (৬/২৫৬), দারিমী (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, কেউ কাপড় ভিজা দেখলো কিন্তু স্বপ্ন দোষের কথা স্মরণ করতে পারলো না, এরূপ অবস্থায় করণীয় কি? হাঃ ৭৫৬,আবু দাউদ ২৩৬),

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
স্বপ্নদোষের কারণে গোসল ফরয হবে।মনে থাকুক বা নাই থাকুক।যদি জাগ্রত হওয়া পর বীর্যের আছর পরিলক্ষিত হয়,তাহলে এক্ষেত্রে গোসল ফরয হবে।
অন্যথ্যায় নয়।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০২)
এটি কোনো সমস্যা নয়।
বরং লজ্জাস্থান পাক করতে ডলে ধোয়ার জন্য সেখানে হাত দেয়া তো জরুরীও বটে।

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত গোসলে নামাজ আদায়ে কোনো সমস্যা নেই।

হাদীস শরীফে রাসুল সাঃ এর ফরজ গোসলের পদ্ধতি বর্ণনা করা হয়েছে।     

حَدَّثَنَا الْحُمَيْدِيُّ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ سَالِمِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ، عَنْ كُرَيْبٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنْ مَيْمُونَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم اغْتَسَلَ مِنَ الْجَنَابَةِ، فَغَسَلَ فَرْجَهُ بِيَدِهِ، ثُمَّ دَلَكَ بِهَا الْحَائِطَ ثُمَّ غَسَلَهَا، ثُمَّ تَوَضَّأَ وُضُوءَهُ لِلصَّلاَةِ، فَلَمَّا فَرَغَ مِنْ غُسْلِهِ غَسَلَ رِجْلَيْهِ.

মাইমূনাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অপবিত্রতার গোসল করলেন। তিনি নিজের লজ্জাস্থান ধুয়ে ফেললেন। তারপর হাত দেয়ালে ঘষলেন এবং তা ধুলেন। তারপর সালাতের উযূর ন্যায় উযূ করলেন। গোসল শেষ করে তিনি তাঁর দু’পা ধুয়ে নিলেন। (বুখারী ২৬০২৪৯ ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৫৮)
,
حَدَّثَنَا مُوسَى، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ سَالِمِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ، عَنْ كُرَيْبٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَتْ مَيْمُونَةُ وَضَعْتُ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مَاءً لِلْغُسْلِ، فَغَسَلَ يَدَيْهِ مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلاَثًا، ثُمَّ أَفْرَغَ عَلَى شِمَالِهِ فَغَسَلَ مَذَاكِيرَهُ، ثُمَّ مَسَحَ يَدَهُ بِالأَرْضِ، ثُمَّ مَضْمَضَ وَاسْتَنْشَقَ وَغَسَلَ وَجْهَهُ وَيَدَيْهِ، ثُمَّ أَفَاضَ عَلَى جَسَدِهِ، ثُمَّ تَحَوَّلَ مِنْ مَكَانِهِ فَغَسَلَ قَدَمَيْهِ

ইবনু ‘আববাস (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, মাইমূনাহ্ (রাযি.) বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর জন্য গোসলের পানি রাখলাম। তিনি তাঁর হাত দু’বার বা তিনবার ধুয়ে নিলেন। পরে তাঁর বাম হাতে পানি নিয়ে তাঁর লজ্জাস্থান ধুয়ে ফেললেন। তারপর মাটিতে হাত ঘষলেন। তারপর কুলি করলেন, নাকে পানি দিলেন, তাঁর চেহারা ও দু’হাত ধুয়ে নিলেন। অতঃপর তাঁর সারা দেহে পানি ঢাললেন। তারপর একটু সরে গিয়ে দু’পা ধুয়ে নিলেন। (বুখারী ২৫৭,২৪৯ ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৫৫)

(০৩)
এক্ষেত্রে কুরবানী দাতার গুনাহ হবে।
কসাই যদি সেই গোশত গ্রহণ করে,এরপর সে বা তার পরিবারের সদস্যরা তাহা হয়ে খায়,সেক্ষেত্রে কসাইয়ের গুনাহ হবেনা।
এক্ষেত্রে কুরবানী দাতার গুনাহ হবে।

এমতাবস্থায় যিনি গোশত বানিয়ে দিয়েছেন,তার জন্য উচিত ছিলো প্রথমেই পারিশ্রমিকের বিষয় স্পষ্ট করার।

যাতে কুরবানীর গোশত হতে কোনোক্রমেই যেনো পারিশ্রমিক না দেয়া হয়।

টাকা দিয়েই যেনো পারিশ্রমিক দেয়,এমনটি নিশ্চিত করেই যেনো তিনি গোশত বানিয়ে দেন।

আরো জানুনঃ- 

(০৪)
এটি যেহেতু মান্নতের কুরবানী নয়,বা মাইয়্যিতের অসিয়তের কুরবানীও নয়,সুতরাং সেই গোশত খাওয়া যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (13 points)
১। ঘুম থেকে উঠে কাপর বা লজ্জাস্থান  তো সাদাস্রাবের  জন্যও আর্দ্র থাকতে পারে, তাহলে কেমন আর্দ্রতা দেখলে গোসল করতে হবে? 
২। ফরজ গোসলে তো সমস্ত শরীর ধুতে হয় এই ধোয়াটা কি পা ধোয়া ব্যতীত যে ওযু করা হয় সেই ওযুর পর যে পানি ঢালা হয় তাহলে কি পানি ঢালার সময়ই সমস্ত শরীর ধৌত করতে হবে নাকি ওযু করার আগে যদি কোনো অঙ্গ ধৌত করা হয়ে যায় সেই অঙ্গ ওযুর পর পানির ঢালার সময় না ধৌত করলেও হবে? 
৩। ওযু করে পানি ঢালার সময় লজ্জাস্থানে হাত দেয়া যাবে? 
৪। ওযু করার সময় যদি শরীরে বা যেখানে ওযু করা হচ্ছে সে জায়গায় নাপাকি থাকলে ওযু হবে?  

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...