আসসালামু আলাইকুম। আমি একজন ডাক্তার, উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণের জন্য গাইনি বিভাগে আছি। দুই বছর পার হয়েছে। আরো তিন বছর বাকি সামনে। আমার স্বামী, উনি একজন চিকিৎসক।আমরা দুজনেই প্র্যাকটিসিং আলহামদুলিল্লাহ।
১.আমার স্বামী আমার থেকে, ছোট ডিগ্রি কমপ্লিট করছেন। উনার ডিগ্রী টা কিছুটা, কাজের দিক থেকে, সম্মানের দিক থেকে আমার ডিগ্রি থেকে ছোট। এজন্যই কিনা জানিনা, আমাদের মধ্যে কিছু কিছু না কিছু ঝামেলা লেগেই থাকে। উনি মনে করেন আমি অনেক বেশি অহংকারী। কিন্তু আদতে সেটা না। উনি এজন্য ছোটখাটো কোন বিষয়ে হুটহাট রাগ করে বসে থাকেন। আমার বাবা বিয়ের আগে, উনার কাছে কথা নিয়েছিলেন জব না করতে দিলে, উনি বিয়ে দিবেন না আমাকে। উনারা সেই শর্তে রাজি হয়ে বিয়ের জন্য এগিয়ে আসেন। আমার স্বামী, টাকা পয়সার সাপোর্ট দিচ্ছেন আমাকে। কিন্তু,
একদিন একটা কথায় উনি বলেছেন, উনি মহিলাদেরকে সার্জন হিসেবে পছন্দ করেন না (গাইনি একটা সার্জারির subject, গাইনিতে পাশ করলে সার্জন হতে হয়)। আমি তখন প্রশ্ন করলাম, তাহলে মহিলা ডাক্তাররা কি হবে? উনি বলল কিছুই না বাসায় থাকবে।
আরেকবার আরেকটা কথায়, উনি বললেন, উনি আমার জন্য দাইউস হতেও রাজি আছেন। আমার পরীক্ষার ফরম ফিলাপের জন্য আমাকে বাইরে যেতে হবে। সেজন্য এই কথা বলেছেন।
এছাড়া, আমার বিভিন্ন রেজাল্ট এর সংবাদে উনি খুব একটা খুশি হন না।
এসব কথায় কি, আচরণে কি মনে হয় উনি আমার পড়াশোনা, উচ্চতর ডিগ্রি, চাকরি করা, এগুলি খুব একটা পছন্দ করছেন না?উনি মুখে বলেন উনার আমার কোন কিছুতে সমস্যা নেই।
কিন্তু মাঝেমধ্যে, এইসব টুকটাক কথাবার্তা আমাকে ভাবিয়ে তুলে। এবং প্রায়ই আমাদের মধ্যে ঝামেলা চলতে থাকে। কথা বলা বন্ধ থাকে।
শায়খ, আমার প্রশ্ন হল, স্বামীর মৌখিক সম্মতি আছে(যেহেতু আমার বাবা ওনাকে শর্ত দিয়েছিলেন) কিন্তু উনি কি মন থেকে মানতে পারছেন না? আসলে উনার সাথে, খোলামেলা এসব নিয়ে ভালো করে আলাপ করা/কোন ডিসিশন নেয়া কোনভাবেই সম্ভব না। উনার কথা হচ্ছে, আমি আমার বাবা মার সাথে কথা বলে আমার পড়াশোনা, ক্যারিয়ার এসব বিষয়ে ডিসিশন নিব। উনি এখানে কিছুই বলবেন না।
যদি এরকম হয়, চাকরির ক্ষেত্রে (ডাক্তারের উচ্চতর শিক্ষার জন্য) স্বামীর মৌখিক সম্মতি থাকে, কিন্তু কার্যকলাপে, নাখোশ /মন খারাপ থাকে /অপছন্দ থাকে, তাহলে, কে আগানো উচিত ওয়াইফ এর ক্ষেত্রে পোস্ট গ্রাজুয়েশন বা জবের জন্য?
কি করা উচিত এই অবস্থায় আল্লাহ তাআলার হুকুম টা কি?
এখন আপাতত ছুটিতে আছি। কি করবো বুঝতে পারছি না। এই অবস্থায়, কি করা উচিত দয়া করে জানাবেন। এক্ষেত্রে স্বামীর, মৌখিক সম্মতি থাকা সত্ত্বেও, কার্যকলাপে নাখোশ থাকা /মনে মনে নাখোশ থাকার জন্য (যেটা উনার কথায় মনে হচ্ছে, যদিও ঠিক বুঝতে পারছি না)আমাকে কি গুনাহগার হতে হবে???? কোনভাবেই আমি আমার আচরণে বড় ডিগ্রীর কোন প্রভাব পড়তে দেই না, কিন্তু উনি, নিজে থেকেই কিছু বলেন না, কিন্তু আচরণে প্রকাশ করেন, মাঝেমধ্যে আমাকে খোঁচা দিয়ে কথা বলেন। বুঝতে পারছি না কি করব? আমার পরিবার থেকে পড়াশোনা কমপ্লিট করার একটা চাপ আছে। উনি নিজে মুখে বলেন উনার কোন সমস্যা নেই, কিন্তু এরকম নেগেটিভ আচরণ, অল্পতেই রিয়েক্ট করা, এসব বিষয় চলতে থাকে । এককথায়, এই অবস্থায় উনার এসব আচরণ কি আমার ক্যারিয়ারের প্রতি নেগেটিভ থাকার কারণে কি হচ্ছে? যদি সে আমার ক্যারিয়ারের প্রতি নেগেটিভ থাকে, সে ক্ষেত্রে শুধু তার মৌখিক সম্মতি যথেষ্ট হবে শরীয়তের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে? খুব পেরেশানিতে আছি দয়া করে জানালে খুব উপকৃত হতাম। ওনাকে বুঝিয়ে কোন লাভ নেই কোন বিষয়ে। ( যেহেতু স্ত্রীর ক্যারিয়ারের জন্য স্বামীর সম্মতি জরুরী)