যেকোনো ক্ষেত্রেই চার মাসের বেশি বিদেশ অবস্থান স্ত্রীর অনুমতি সাপেক্ষ।
এমনকি দেশেও যদি কেহ স্ত্রী হতে চার মাসের বেশি দূরে থাকে,সেক্ষেত্রেও এটি স্ত্রীর অনুমতি সাপেক্ষ।
স্বামী-স্ত্রী সর্বদা কাছাকাছি থাকবে, এটাই শরিয়তে কাম্য।
তবে যদি কোনো প্রয়োজনে (যেমন, জেহাদে যাওয়া কিংবা জীবিকা অর্জনের জন্য প্রবাসে যাওয়া) স্বামী দূরে কোথাও যায় তাহলে চার মাসের মধ্যে একবার হলেও স্ত্রীর কাছে ফিরে আসতে হবে।
কারণ নারীরা সাধারণত তাদের স্বামী থেকে চার মাস দূরে থাকতে পারে।
,
হাদিস শরিফে এসেছে,যায়দ বিন আলমাস (রহ.) বলেন,
‘এক রাতে হযরত উমর (রা.) জনগণের খোঁজ-খবর নেয়ার জন্য প্রহরী বেশে বের হয়ে গেলেন। এক বাড়ির পাশ দিয়ে অতিক্রম করার সময় তিনি ঘর থেকে নারী কণ্ঠে কবিতা আবৃত্তি শুনতে পেলেন। ঘরের ভিতর এক মহিলা কবিতা আবৃত্তি করছিল। যার অর্থ হলো,রজনী দীর্ঘ হয়েছে এবং তার এক পার্শ কৃষ্ণবর্ণ ধারণ করেছে। এদিকে দীর্ঘদিন যাবত আমার প্রেমাস্পদ আমার কাছে নেই যে,তার সাথে আমি আমোদ-প্রমোদ করব। আল্লাহর শপথ! যদি এক আল্লাহর ভয় না থাকত তাহলে এ খাটের চার পাশ নড়ে উঠত।
যখন ভোর হলো হযরত উমর (রা.) রাতের কবিতা আবৃত্তিকারিণী মহিলাকে ডেকে আনার নির্দেশ দিলেন। মহিলা খলিফার দরবারে এসে উপস্থিত হলে হযরত উমর (রা.) তাকে জিজ্ঞাসা করলেন,তুমি কি গত রাতে এ-জাতীয় কবিতা আবৃত্তি করেছিলে? মহিলা বলল,হ্যাঁ।
উমর (রা.) বললেন কেন? উত্তরে মহিলা বলল,দীর্ঘদিন যাবত আমার স্বামী জিহাদের ময়দানে রয়েছে। অথচ এমুহূর্তে তার নৈকট্য পাওয়া আমার একান্ত কাম্য ছিল,তার বিরহেই আমি এমনটি করেছি৷ হযরত উমর (রা.) এ কথা শুনে তখনই ঐ মহিলার স্বামীর নিকট ফিরে আসার নির্দেশনা দিয়ে শাহী ফরমান প্রেরণ করলেন। এরপর তিনি তার কন্যা হযরত হাফসা (রা.) এর নিকট গিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করলেন,হে আমার মেয়ে! নারীরা তাদের স্বামী থেকে কতদিন পর্যন্ত ধৈর্য ধারণ করে থাকতে পারে? (প্রজাদের স্বার্থ রক্ষার ইচ্ছা যদি না হত তবে আমি তোমার নিকট এরুপ প্রশ্ন করতাম না) তখন হাফসা (রা.) বললেন,মেয়েরা তাদের স্বামী থেকে চার মাস পর্যন্ত ধৈর্য ধারণ করে থাকতে পারে। এরপর থেকে হযরত উমর (রা.) চার মাস পরপর মুজাহিদ বাহিনীকে ফেরত নিয়ে আসতেন এবং নতুন বাহিনী পাঠিয়ে দিতেন।’ [মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদিস: ১২৫৯৪]
পাপ থেকে হেফাযত এবং পূর্ণ নিরাপত্তার মধ্যে থাকার শর্তে স্বামী-স্ত্রী উভয়ে পারস্পরিক সম্মতিতে দীর্ঘ সময় দূরে থাকায় শরী‘আতে কোন বাধা নেই। তবে পাপের সাথে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকলে অল্প দিনের জন্য হলেও দূরে থাকা বৈধ নয়।
খোলামেলা কথা বলুন
স্বামীর সঙ্গে নির্দ্বিধায় কথা বলুন — সন্দেহ, ভয় বা উদ্বেগ কী নিয়ে।
কথা বলার সময় দোষারোপ নয়, বরং অনুভূতির কথা বলুন:
“তোমার কিছু আচরণে আমি অনিরাপদ অনুভব করি।”
এরকম কথা বলুন।
★মনে সন্দেহ জাগলেই আগে নিজেকে প্রশ্ন করুন:
“এর পেছনে কি কোনো প্রমাণ আছে, নাকি এটা আমার কল্পনা?”
অনেক সময় শুধু মনে হওয়ার কারণেই সন্দেহ জাগে — যা বাস্তব নয়।
★নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়ান
আত্মবিশ্বাসহীনতা থেকে অনেক সময় সন্দেহ জন্ম নেয়।
নিজের পছন্দের কিছু করুন, যেমন ইবাদত,রোযা,যিকির,কুরআন তিলাওয়াত বই পড়া, সেলাইয়ের কাজ বা নতুন কিছু শেখা।
★বিশ্বাস তৈরি করতে সময় দিন
বিশ্বাস রাতারাতি গড়ে ওঠে না। ধীরে ধীরে দুজনের মধ্যে বিশ্বাস গড়ে তুলতে হয়।
ছোট ছোট ইতিবাচক আচরণে বিশ্বাস বাড়ে। সুযোগ দিন।
★যদি মনে হয় আপনি নিজে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না, কোনো পেশাদার কাউন্সেলরের সাহায্য নিন।
একক বা দম্পতি হিসেবে কাউন্সেলিং দুজনেরই উপকারে আসতে পারে।
★আপনি নিজেকে জিজ্ঞেস করতে পারেন:
“এই সন্দেহ আমার জীবনে শান্তি আনছে, নাকি অশান্তি?”
এই প্রশ্নের উত্তর থেকেই আপনি বুঝতে পারবেন, এটা ছাড়ার প্রয়োজন আছে কি না।