আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
30 views
ago in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
আমার স্বামী প্রবাসী। আমাদের বিয়ে হয়েছে ৫ বছর, বিয়ের আগে প্রবাসে ছিলো তো তারপর এসে বিয়ে করে ২.৫ বছর থেকে আবার যায়।যাওয়ার আগে আমার কয়েকজন ভাসুরের বউ আমার স্বামীর ব্যাপারে অনেক খারাপ কথা বলে যিনা করেছে এমন কথা।সেইখান থেকেই আমার মনে সন্দেহ তৈরি হয় কিন্তু আমি নিজ চোখে দেখিনি কখনো।সে সিগারেট খায় আমার থেকে লুকিয়ে সেটাও সবাই জানে আমিও জানি অনেক নিষেধ করি এই নিয়ে অনেক ঝামেলা হতো প্রবাসে যাওয়ার আগে।তারপরর প্রবাসে যাওয়ার ২২ মাস পরে দেশে আসে তখনও আমার ভিতরে নানা কথা নিয়ে সন্দেহ হয়।

১.সে সিগারেট খায় এটা জানার জন্য আমি মোবাইলে রেকর্ড অন করে দিই,সে বুঝতে না পেরে সবকিছু করে, সেইদিন সে গাজার আসরে বসে সেটাই রেকর্ডে ওঠে এমনকি ১ বার গাজা মুখেও দেই,পরবর্তীতে অস্বীকার করে।  এই নিয়ে অনেক সন্দেহ হয়
২.তারপর সে আবার প্রবাসে যায় তারপর ৩-৪ জন বিদেশি মেয়ে ব্লগারের কাছে মেসেজ দেই মানে একটা করে লাইক দেই ইনবক্সে। আমি তখন সব দেখতে পারি তো আমি তখন ওই মেয়ের নামে আইডি ওপেন করে কথা বলি সেও কথা বলে। তারপর আমি সহ্য করতে না পেরে বলে দিই আপনি কিসব করছেন।তখন অনেক কান্নাকাটি করি পরে সেও মাফ চাই এবং আইডি ডিএক্টিভ করে দেই।কিন্তু ওইযে একটা সন্দেহ ভিতরে প্রবেশ করেছে সেইটা এখনো মনে পড়ে এখনো মনেহয় আমার স্বামী মনেহয় এমনই করে এমনই খারাপ লোকে যা বলত সব সত্যি।।তখন সেই আগের দিনে খারাপ কাজ করেছে লোকে বলত সেগুলো সত্যি মনেহয়।। তখন আরো কষ্টে পড়ি ঝামেলা করি

এমনকি সে কোথায় যাচ্ছে কি করছে সব জানতে চাই,কাজ করলেও ফোন রিসিভ না করলে মনেহয় এখন সিগারেট খাচ্ছে, মনেহয় দেশেও মনেহয় তার  অবৈধ সম্পর্ক আছে আরও অনেক কিছু।কেউ যদি অনেক আগের কোনো খারাপ কথা বলে সেটাও মানতে পারিনা।

আমার সন্দেহ করার অনেকগুলো কাজ করেছে আমি প্রমাণ পাইছি এমনকি মিথ্যাও বলে।সেটারও প্রমান পাইছি।আশেপাশের  লোক যদি একটু কিছু বলে তাতেই আমার সন্দেহ আকাশ সমান হয়।

আমার অন্তরে এই ব্যাধি এই অশান্তি খুবই পেরেশানিতে থাকি কিভাবে মুক্তি মিলবে।আমি দ্বীনের বুঝ মোটামুটি পাওয়ার পর থেকেই এগুলো আমার ভিতরে আরো ভয়ংকর রুপ ধারন করছে আমি চাইনা সে খারাপ পথে যাক আমি চাই সে ভালো পথে থাক হালাল পথে থাকবে কিন্তু এইরকম হয় এমনকি তাকে কুরআন শিখতে বলেছি সে কয়দিন শেখে বিভিন্ন অযুহাত দেখাই।আমার ভিতরে সবসময় পেরেশান হয়ে থাকে

1 Answer

0 votes
ago by (635,130 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

যেকোনো ক্ষেত্রেই চার মাসের বেশি বিদেশ অবস্থান স্ত্রীর অনুমতি সাপেক্ষ।
এমনকি দেশেও যদি কেহ স্ত্রী হতে চার মাসের বেশি দূরে থাকে,সেক্ষেত্রেও এটি স্ত্রীর অনুমতি সাপেক্ষ।

স্বামী-স্ত্রী সর্বদা কাছাকাছি থাকবে, এটাই শরিয়তে কাম্য।
তবে যদি কোনো প্রয়োজনে (যেমন, জেহাদে যাওয়া কিংবা জীবিকা অর্জনের জন্য প্রবাসে যাওয়া) স্বামী দূরে কোথাও যায় তাহলে চার মাসের মধ্যে একবার হলেও স্ত্রীর কাছে ফিরে আসতে হবে।

কারণ নারীরা সাধারণত তাদের স্বামী থেকে চার মাস দূরে থাকতে পারে।
,
হাদিস শরিফে এসেছে,যায়দ বিন আলমাস (রহ.) বলেন,
‘এক রাতে হযরত উমর (রা.) জনগণের খোঁজ-খবর নেয়ার জন্য প্রহরী বেশে বের হয়ে গেলেন। এক বাড়ির পাশ দিয়ে অতিক্রম করার সময় তিনি ঘর থেকে নারী কণ্ঠে কবিতা আবৃত্তি শুনতে পেলেন। ঘরের ভিতর এক মহিলা কবিতা আবৃত্তি করছিল। যার অর্থ হলো,রজনী দীর্ঘ হয়েছে এবং তার এক পার্শ কৃষ্ণবর্ণ ধারণ করেছে। এদিকে দীর্ঘদিন যাবত আমার প্রেমাস্পদ আমার কাছে নেই যে,তার সাথে আমি আমোদ-প্রমোদ করব। আল্লাহর শপথ! যদি এক আল্লাহর ভয় না থাকত তাহলে এ খাটের চার পাশ নড়ে উঠত।
যখন ভোর হলো হযরত উমর (রা.) রাতের কবিতা আবৃত্তিকারিণী মহিলাকে ডেকে আনার নির্দেশ দিলেন। মহিলা খলিফার দরবারে এসে উপস্থিত হলে হযরত উমর (রা.) তাকে জিজ্ঞাসা করলেন,তুমি কি গত রাতে এ-জাতীয় কবিতা আবৃত্তি করেছিলে? মহিলা বলল,হ্যাঁ।
উমর (রা.) বললেন কেন? উত্তরে মহিলা বলল,দীর্ঘদিন যাবত আমার স্বামী জিহাদের ময়দানে রয়েছে। অথচ এমুহূর্তে তার নৈকট্য পাওয়া আমার একান্ত কাম্য ছিল,তার বিরহেই আমি এমনটি করেছি৷ হযরত উমর (রা.) এ কথা শুনে তখনই ঐ মহিলার স্বামীর নিকট ফিরে আসার নির্দেশনা দিয়ে শাহী ফরমান প্রেরণ করলেন। এরপর তিনি তার কন্যা হযরত হাফসা (রা.) এর নিকট গিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করলেন,হে আমার মেয়ে! নারীরা তাদের স্বামী থেকে কতদিন পর্যন্ত ধৈর্য ধারণ করে থাকতে পারে? (প্রজাদের স্বার্থ রক্ষার ইচ্ছা যদি না হত তবে আমি তোমার নিকট এরুপ প্রশ্ন করতাম না) তখন হাফসা (রা.) বললেন,মেয়েরা তাদের স্বামী থেকে চার মাস পর্যন্ত ধৈর্য ধারণ করে থাকতে পারে। এরপর থেকে হযরত উমর (রা.) চার মাস পরপর মুজাহিদ বাহিনীকে ফেরত নিয়ে আসতেন এবং নতুন বাহিনী পাঠিয়ে দিতেন।’ [মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদিস: ১২৫৯৪]

পাপ থেকে হেফাযত এবং পূর্ণ নিরাপত্তার মধ্যে থাকার শর্তে স্বামী-স্ত্রী উভয়ে পারস্পরিক সম্মতিতে দীর্ঘ সময় দূরে থাকায় শরী‘আতে কোন বাধা নেই। তবে পাপের সাথে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকলে অল্প দিনের জন্য হলেও দূরে থাকা বৈধ নয়। 

বিদেশে থাকার আরো শর্তাবলী জানুনঃ- 

আরো জানুনঃ- 

★স্বামীকে অতিরিক্ত সন্দেহ করা থেকে বাঁচার উপায় হলোঃ-

খোলামেলা কথা বলুন

স্বামীর সঙ্গে নির্দ্বিধায় কথা বলুন — সন্দেহ, ভয় বা উদ্বেগ কী নিয়ে।

কথা বলার সময় দোষারোপ নয়, বরং অনুভূতির কথা বলুন:
 “তোমার কিছু আচরণে আমি অনিরাপদ অনুভব করি।” 
এরকম কথা বলুন।

★মনে সন্দেহ জাগলেই আগে নিজেকে প্রশ্ন করুন:

“এর পেছনে কি কোনো প্রমাণ আছে, নাকি এটা আমার কল্পনা?”

অনেক সময় শুধু মনে হওয়ার কারণেই সন্দেহ জাগে — যা বাস্তব নয়।

★নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়ান

আত্মবিশ্বাসহীনতা থেকে অনেক সময় সন্দেহ জন্ম নেয়।

নিজের পছন্দের কিছু করুন, যেমন ইবাদত,রোযা,যিকির,কুরআন তিলাওয়াত বই পড়া, সেলাইয়ের কাজ বা নতুন কিছু শেখা।

★বিশ্বাস তৈরি করতে সময় দিন

বিশ্বাস রাতারাতি গড়ে ওঠে না। ধীরে ধীরে দুজনের মধ্যে বিশ্বাস গড়ে তুলতে হয়।

ছোট ছোট ইতিবাচক আচরণে বিশ্বাস বাড়ে। সুযোগ দিন।

★যদি মনে হয় আপনি নিজে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না, কোনো পেশাদার কাউন্সেলরের সাহায্য নিন।

একক বা দম্পতি হিসেবে কাউন্সেলিং দুজনেরই উপকারে আসতে পারে।

★আপনি নিজেকে জিজ্ঞেস করতে পারেন:

“এই সন্দেহ আমার জীবনে শান্তি আনছে, নাকি অশান্তি?”
এই প্রশ্নের উত্তর থেকেই আপনি বুঝতে পারবেন, এটা ছাড়ার প্রয়োজন আছে কি না।
(কিছু তথ্য সংগৃহীত।)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
আপনি আপনার স্বামীর সাথে থাকবেন।
তিনি বিদেশে গেলে আপনিও তার সাথে যাবেন।
এক সাথে নিয়মিত থাকলে আশা করি সমস্যার সমাধান মিলবে।

পাশাপাশি তাকে দ্বীনদার বানানোর জন্য কমপক্ষে এক চিল্লায় পাঠানোর চেষ্টা করুন।উপরোক্ত পরামর্শ মেনে চলুন।
পাশাপাশি মহান আল্লাহর কাছে দোয়া চালিয়ে যাবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

ago by (2 points)
উনি দুবাই থাকে,কোনোভাবে কি একা যাতায়াত করার মাসআলা আছে?
ago by (635,130 points)
এক্ষেত্রে একা সেখানে গেলে মাহরাম ছাড়া সফরের গুনাহ আপনার হবে। 

এমতাবস্থায় তওবা আবশ্যক হবে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...