আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
33 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ্।

গত বছর অক্টোবরে আমার বিয়ে হয়।ধার্মিক প্রকৃতির ছেলে মনে করে পরিবারের হালকা নিষেধ শর্তেও ওখানে বিয়ে করি।আমার বাবা নাই, বড় ভাই আছেন। আমার বয়স ২৬বছর।

তবে গত  ০২/০৫/২৫ মে মাসে হঠাৎ করে আমি বাপের বাড়ি চলে আসি।শশুর বাড়ি তে ছেলের বাবা এবং সৎ মা আমাকে অপমান অপদস্ত হেয় করে কথা বলে,এবং বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে বলে।এই কথায় আমি রাগ অভিমান করে মন খারাপ করে আমার স্বামীকে বলে বাপের বাড়ি চলে আসছি। সংসার করবো না,যাবো না এরকম কোনো কিছু আমি স্বামী কে বলিও নাই। শুধু বলছি আমার খারাপ লাগছে আমি বাড়ি যাবো।আর চলে আসার  তার দুদিন পরেই ০৫/০৫/২৫ তারিখে  ছেলে পক্ষ আমার বাড়িতে কোনো রকম অবগত করা ছাড়াই তিন তালাকের নোটিশ পাঠায়।তালাকের নোটিশ পেয়ে আমি ও আমার পরিবারের সবাই অবাক হই আর ভেঙ্গে পড়ি। তারই এক সপ্তাহ বাদে আমি জানতে পারে আমি প্রেগন্যান্ট।
এমতাবস্থায় দ্রুত ছেলে পক্ষ কে জানিয়ে দেওয়া হয় প্রেগন্যান্সির বিষয় টা।  কিন্তু ছেলে পক্ষ তারপরও কোনো সাড়া দেয়নি। আমার সাথে বা আমার পরিবারের  কারো সাথে কোনোরুপ যোগাযোগ তারা করেনি।আমরা ছেলেকে কল দিলে কথা বলে না,কল কেটে দেয়।বাচ্চার ব্যাপারে সিদ্ধান্তের জন্য আমরা চেয়ারম্যানের কাছে সালিশ ডাক দিলে ছেলের পরিবার প্রভাব খাটিয়ে নানা তালবাহানায় সালিশ করছে না।এসব দেখে আমার পরিবার আমাকে প্রচুর রকম চাপ সৃষ্টি করছে বাচ্চা নষ্ট করার জন্য। আমি বাচ্চা নষ্ট করতে ইচ্ছুক না।


সারকথা :

১.ছেলেপক্ষ কোনো রকম অবগত ছাড়া  হঠাৎ তিনতালাকের নোটিশ দিয়েছে
২.তালাকের পর আমি জানতে পারি প্রেগন্যান্ট
৩.ছেলে পক্ষ কে প্রেগ্ন্যাসির বিষয় জানানোর পরও তারা কোনো রকম সায় দেয় না।

৪.চেয়ারম্যানের কাছে সালিশ চাইলে নানা অজুহাতে সালিশ করছে না

৫.আমার পরিবার বাচ্চা নষ্ট করতে প্রতিনিয়ত চাপ সৃষ্টি করছে

৬.প্রেগ্ন্যাসির বয়স আনুমানিক ২ মাসের কাছাকাছি। এমতাবস্থায় আমার করণীয় কি? সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে বাচ্চা নষ্ট করা জায়েজ হবে কিনা।

1 Answer

0 votes
by (634,530 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

শরীয়তের বিধান হলো  যদি মহিলা অত্যাধিক দুর্বল হয়, যার কারণে গর্ভধারণ তার জন্য আশঙ্কাজনক হয় এবং গর্ভধারণের মেয়াদ চার মাসের কম হয়। তাহলে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক গর্ভপাত বৈধ হবে। মেয়াদ চার মাসের অধিক হলে কোনোভাবেই বৈধ হবেনা।

খাদ্য, চিকিৎসা, বাসস্থান ইত্যাদির অভাবের কারণে সংসারকে সচ্ছল করার নিয়তে, দৈহিক সৌন্দর্য বা ফিগার ঠিক রাখার উদ্দেশ্যে ,কন্যাসন্তান জন্ম নেয়ার ভয়ে (যাতে পরবর্তীতে এদের বিয়ে শাদীর ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়),অধিক সন্তান নেয়াকে লজ্জার বিষয় মনে করে গর্ভপাত বিশেষত অভাবের কারণে সংসারকে সচ্ছল করার নিয়তে গর্ভপাত করলে আল্লাহর উপর বিশ্বাস ও ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে। কেননা রিজিকের মালিক আল্লাহ।

আল্লাহ তায়ালা  বলেছেন, 

ولا تقتلوا أولادكم خشية إملاق، نحن نرزقهم وإيّاكم إنّ قتلهم كان خطأ كبيراً. 

‘’দারিদ্রতার ভয়ে তোমরা তোমাদের সন্তানকে হত্যা কর না। তাদেরকে এবং তোমাদেরকে আমিই খাদ্য প্রদান করে থাকি।নিশ্চয় তাদেরকে হত্যা করা মহাপাপ…’’(সূরা ইসরা, আয়াত-৩১)

অন্যত্র তিনি বলেন, الشَّيْطَانُ يَعِدُكُمُ الْفَقْرَ . “শয়তান তোমাদের অভাবের ওয়াদা দেয়।” (সূরা আল-বাক্বারা)

আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘স্মরণ কর ওই
দিনকে, যেদিন জীবন্ত সমাধিস্থ নিষ্পাপ
বাচ্চাকে জিজ্ঞেস করা হবে, তোমাকে কোন অপরাধের কারণে হত্যা করা হয়েছে?’ (সূরা তাকয়ির :৮)।
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,   
চার মাসের পূর্বে বিশেষ কিছু কারণে শরীয়ত গর্ভপাতকে অনুমোদন প্রদান করে থাকে।
,
(ক)বর্তমানে কোলে দুধের একটি শিশু রয়েছে,অপরদিকে উক্ত মহিলার গর্ভাশয়ে নতুন সন্তানও উৎপাদিত হচ্ছে। গর্ভের দরুন দুধ একেবারে শুকিয়ে গেছে।অপরদিকে উক্ত সন্তানকে অন্যকোনো উপায়ে লালনপালন করা যাচ্ছেনা। মায়ের দুধ ব্যতীত অন্যকিছুতে সে মূখই দিচ্ছে না।এমতাবস্থায় চারমাস হয়নি এমন গর্ভকে গর্ভপাত করা বৈধ রয়েছে।
,
(খ)কোনো মুসলমান বিজ্ঞ ডাক্তার উক্ত গর্ভবতী মহিলাকে পরিদর্শন করে বলে যে,গর্ভপাত না করলে মহিলার জান বা কোনো অঙ্গ বিনাশের আশঙ্কা রয়েছে।

আরো জানুনঃ 
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে গর্ভপাত (বাচ্চা নষ্ট)
করা জায়েজ হবেনা।

এক্ষেত্রে পারিবারিক চাপে বাচ্চা নষ্ট করলে খালেস দিলে মহান আল্লাহর কাছে তওবা করতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...