আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
36 views
in কুরবানী (Slaughtering) by (55 points)

আসসালামু আলাইকুম 
 

১) একজন জানতে চেয়েছে, কুরবানী কি ঘরের একজন সদস্য আদায় করলে হবে নাকি ঐ ঘরে যাদের সামর্থ্য আছে তাদের প্রত্যেককে আলাদা করে আদায় করতে হবে? এ বিষয়ে কুরআন হাদীসের আলোকে বললে উপকৃত হতাম। 


 

২) কুরবানীদাতা নিজের চুল জিলহজের প্রথম দশ দিনে কাটতে চাইলে সেক্ষেত্রে কাটলে কি শুধু মুস্তাহাব আমল ভঙ্গ হবে?


 

৩) পশু কুরবানির সময় কিছু রক্ত গায়ে বা কাপড়ে এসে লাগলে শুধু সেই অংশ পানি দিয়ে ধুইলে পবিত্র হবে? নাকি কাপড় বা দেহ থেকে পুরো রক্ত ছাড়াতে হবে? 



 

৪) কুরবানীর ঈদের দিন এবং আগের ১/২ দিন অনেক সময় পানি দিয়ে পশুর মল মূত্র এবং রক্ত পরিষ্কার করা হয়। তখন বিল্ডিংএর বাইরের দিকে এসব পানি জমা হয়ে থাকে যদিও বেশিরভাগই বাইরে চলে যায়। এ তরল কি নাপাক? যদি জুতা সে তরলে লাগে তাহলে তা নাপাক ধরবো ?


 

জাযাকাল্লাহু খাইরান

1 Answer

0 votes
by (629,460 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَنْ وَجَدَ سَعَةً فَلَمْ يُضَحِّ فَلَا يَقْرَبَنَّ مُصَلَّانَا

আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে কুরবানী করে না, সে যেন অবশ্যই আমাদের ঈদগাহের নিকটবর্তী না হয়। (মুসনাদ আহমাদ ৮২৭৩, ইবনে মাজাহ ৩১২৩, হাকেম ৭৫৬৫-৭৫৬৬)

শরীয়তের বিধান হলো,প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থমস্তিষ্ক সম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী, যে ১০ যিলহজ্ব ফজর থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। টাকা-পয়সা, সোনা-রূপা, অলঙ্কার, বসবাস ও খোরাকির প্রয়োজন আসে না এমন জমি, প্রয়োজন অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সকল আসবাবপত্র কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।

আর নিসাব হল স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি, রূপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি, টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্ত্তর ক্ষেত্রে নিসাব হল এর মূল্য সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া। 

সুতরাং কাহারো কাছে যদি স্বর্ণের পাশাপাশি টাকা থাকে,তাহলে তার জন্য করনীয় হলো এই টাকা আর উক্ত স্বর্ণের মূল্য হিসেব করে সারে বাহান্ন ভরি রুপার সমমূল্য হয়েছে কিনা?
হলে তার উপর যাকাত,কুরবানী আবশ্যক হবে।

যিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখ হতে যিলহজ্ব মাসের ১২ তারিখ সূর্যাস্ত, এ সময়ের মাঝে কোনো সময়ে আপনি যদি সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি সমপরিমাণ মূল্যের (প্রায় ৯০০০০+ টাকার) মালিক হোন,আর তাহা যদি দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত হয়,সেক্ষেত্রে আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে, নতুবা কুরবানী ওয়াজিব হবেনা।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,   
(০১)
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

اَلَّا تَزِرُ وَازِرَۃٌ وِّزۡرَ اُخۡرٰی ﴿ۙ۳۸﴾ 

তা এই যে, কোন বোঝা বহনকারী অন্যের বোঝা বহন করবে না।
(সুরা নাজম ৩৮)

কুরবানী একটি ইবাদত। এটি প্রতিটি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক ব্যক্তির উপর আবশ্যক হয়। 

যা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আদায় করা আবশ্যক। পরিবারের প্রতিটি সদস্য প্রাপ্ত বয়স্ক এবং নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে প্রতিজনের উপরই কুরবানী আবশ্যক। সেই সাথে প্রতিজনেরই কুরবানী করতে হবে। একজনের কুরবানী করার দ্বারা বাকিদের কুরবানী আদায় হবে না।

ঘরের প্রত্যেক সদস্যের উপর যাকাত ফরজ হলে যেমন প্রত্যেক জনকেই যাকাত আদায় করতে হয়, একজনের যাকাত আদায়ের দ্বারা আরেকজনের যাকাত আদায় হয় না,ঘরের প্রত্যেক সদস্যের উপর হজ্ব ফরজ হলে যেমন প্রত্যেকেরই হজ্ব আদায় করতে হয়, একজনের হজ্বের দ্বারা অন্যজনের হজ্ব আদায় হয় না, ঠিক তেমনি ঘরের প্রত্যেক সদস্যের উপর কুরবানী ওয়াজিব হলে প্রত্যেককেই কুরবানী দিতে হবে, একজনের কুরবানী দ্বারা অন্য জনের কোরবানি আদায় হবে না।

হ্যাঁ, এমন হতে পারে যে, যৌথ পরিবারের সদস্যদের মাঝে ৫ জনের উপর কুরবানী করা আবশ্যক। এখন এ ৫জন মিলে একটি কুরবানীর গরুতে অংশ নিল। তাতে বাহ্যিকভাবে গরু একটি হলেও যেহেতু প্রতিজনের ভাগেই অন্তত এক ভাগ পড়ছে, তাই সবার ওয়াজিব কুরবানী আদায় হয়ে যাবে।

কিংবা কুরবানীর পশু কিনল একজন। আর বাকিদের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে উক্ত কুরবানী বাকিদের পক্ষ থেকে কুরবানী করে দিলে, সবার কুরবানী আদায় হবে। বাকিদের জানিয়ে তাদের অনুমতিক্রমে তাদের পক্ষ থেকে কুরবানীর নিয়তে জবাই না করলে বাকিদের কুরবানী আদায় হবে না।

(০২)
হ্যাঁ, এক্ষেত্রে শুধু মুস্তাহাব আমল ভঙ্গ হবে।

এ সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ- 

(০৩)
এটা দৃশ্যমান নাপাকি, সুতরাং শরীরে এবং কাপড়ে যেখানে যেখানে রক্ত লাগবে, প্রত্যেকটি স্থান ভালোভাবে ধৌত করতে হবে যাতে আপনি নিশ্চিত হন যে সেখানে আর কোন রক্ত নেই।

শরীর/কাপড়ে কোথায় কোথায় রক্ত লেগেছে এ সম্পর্কে আপনি নিশ্চিত না হলে পুরো শরীর/পুরো কাপড় পাক করবেন।

(০৪)
প্রশ্নের বিবরন মতে সেই তরল নাপাক।
জুতায় সেই তরল লাগলে এমতাবস্থায় জুতায় নাপাকির নাপাকির চিহ্ন বা গন্ধ পেলে সেই জুতা পাক করবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...