আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
52 views
in কুরবানী (Slaughtering) by (5 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহি ওয়াবারকাতুহ উস্তাদ। আমার কিছু প্রশ্ন ছিলো  দ্রুত উত্তর জানালে খুবই মুনাসিব হতো।

১) আমার আম্মি নিজের ব্যবহারের নাকের ফুল, কানের দুল,হাতের ছোট একটা আংটি, গলায় স্বর্নের চেন আছে, এবং অব্যবহৃত ১.৫ ভড়ি স্বর্ন আছে। ব্যবহৃত এবং অব্যবহৃত মিলিয়ে মাপা হয় নি আনুমানিক ২ ভড়ি স্বর্ন তার আছে। জমা টাকা আছে ৩লাখ ৪০ হাজার  আনুমানিক।  এই অবস্থায় আমার আম্মির উপর কি কুরবানি ওয়াজিব হয়েছে? ওয়াজিব হয়ে থাকলে তার যেহেতু আর্নিং সোর্স নেই তাহলে আম্মি তার কুরবানির পশুটি কোন টাকা থেকে কিনবে?  তার কাছে যে এই ৩লাখ ৪০ হাজার জমানো টাকা আছে সেটা থেকে কিনবেন?  তার জন্য কি হজ্ব এবং যাকাত ফরজ হয়ে গিয়েছে? উল্লেখ্য  আম্মির কোনো আর্নিং সোর্স নেই।দেখে এসেছি আম্মির টাকার জন্য আব্বুই যাকাত দিতো।


২)আমি একজন  নার্সিং পড়ুয়া ছাত্রী। রব্বে কারীম এর ঘরের মুসাফির হওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা ( আল্লাহ কবুল করেন দোয়া করবেন উস্তাদ)।  আমি অনেক বছর আগে থেকে একটু একটু করে হজ্জের জন্য সেভিংস করি আলহামদুলিল্লাহ। আমাকে মাসিক খরচ যা দেয়া হয় পরাশুনার জন্য সেটা থেকে কিছু টাকা সেভ করে রেখে দেই, ঈদের কেনাকাটার জন্য যে টাকা দেয়া হয় সেটাও সেভ করি,  সরকারি নার্সিং কলেজ  হওয়ায় সেখান থেকে ২/৩ মাস পর পর আমাদের একটা স্টাইফেন দেয় আমি অইটাকাটাও জমিয়ে রেখে দেই, হাতে যা থাকে ৫/১০/২০/৫০/১০০/১০০০  এভাবে জমিয়ে রেখে দেই হজ্জের জন্য। এই টাকা থেকে জরুরত বসতও আমি কখনো খরচ করিনি। এভাবে জমাতে জমাতে আমার কাছে টোটাল ৮৭,৪১০ টাকা জমেছে।  এই টাকায় আমি মাসে মাসে কিছু টাকা এড করি ১০/৫০/১০০ যা পারি। উল্লেখ্য আমার কোনো আর্নিং সোর্স নেই, হাদিয়া+ স্টাইফেন+ হাতখরচ থেকে বাচানো টাকা টাই হজ্জ সেভিংস এর সাথে এড করে রেখে দেই।
আর স্বর্নের কথা বলতে গেলে আমি রেগুলার পরিধেয় দুইটা  কানের দুল একটা রিং আরেকটা দুল, রিং টা হলে থাওলে পরে থাকি আর বাসায় এলে অইদুলটা পরি,একটা গলার চেন আছে মাপানো হয় নি কখনো  সবমিলিয়ে  আনুমানিক পৌনে একভড়ি হতে পারে। আর রুপার একটা পায়েল( হাদিয়া প্রাপ্ত), দুইজোড়া নুপুর( হাদিয়া প্রাপ্ত)  কখনো মাপাই নি আনুমানিক বলতে পারছি না কতটুকু রুপা আছে।
এখন এই পরিস্থিতিতে কি আমার উপর কুরবানি ওয়াজিব হয়েছে?  ওয়াজিব হয়ে থাকলে আমার যেহেতু কোনো আর্নিং সোর্স নেই তাহলে আমি কুরবানির পশুটি কোন টাকা থেকে কিনবে? হজ্জের জন্য যে টাকা জমাচ্ছি অই টাকা থেকেই কি কিনতে হবে?

আমার সকল কিছু মিলিয়ে আমার উপর কুরবানি, যাকাত ফরজ হয়েছে কিনা জানাবেন।
উস্তাদ সহজ ভাবে একটু বিস্তারিত বুঝিয়ে জানাবেন আমি বাজার দর জানি না আপনি সকল কিছু হিসাব করে আমাকে বলবেন যে হ্যা/ না আমার  এবং আম্মির উপর কুরবানি, যাকাত এসেছে কিনা মিন ফাদ্বলিক।
(জাযাকুমুল্লাহু খইরন)

1 Answer

0 votes
by (629,460 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَنْ وَجَدَ سَعَةً فَلَمْ يُضَحِّ فَلَا يَقْرَبَنَّ مُصَلَّانَا

আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে কুরবানী করে না, সে যেন অবশ্যই আমাদের ঈদগাহের নিকটবর্তী না হয়। (মুসনাদ আহমাদ ৮২৭৩, ইবনে মাজাহ ৩১২৩, হাকেম ৭৫৬৫-৭৫৬৬)

শরীয়তের বিধান হলো,প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থমস্তিষ্ক সম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী, যে ১০ যিলহজ্ব ফজর থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। টাকা-পয়সা, সোনা-রূপা, অলঙ্কার, বসবাস ও খোরাকির প্রয়োজন আসে না এমন জমি, প্রয়োজন অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সকল আসবাবপত্র কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।

আর নিসাব হল স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি, রূপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি, টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্ত্তর ক্ষেত্রে নিসাব হল এর মূল্য সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া। 

সুতরাং কাহারো কাছে যদি স্বর্ণের পাশাপাশি টাকা থাকে,তাহলে তার জন্য করনীয় হলো এই টাকা আর উক্ত স্বর্ণের মূল্য হিসেব করে সারে বাহান্ন ভরি রুপার সমমূল্য হয়েছে কিনা?
হলে তার উপর যাকাত,কুরবানী আবশ্যক হবে।

যিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখ হতে যিলহজ্ব মাসের ১২ তারিখ সূর্যাস্ত, এ সময়ের মাঝে কোনো সময়ে আপনি যদি সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি সমপরিমাণ মূল্যের (প্রায় ৯০০০০+ টাকার) মালিক হোন,আর তাহা যদি দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত হয়,সেক্ষেত্রে আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে, নতুবা কুরবানী ওয়াজিব হবেনা।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,   
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার আম্মুর উপর কুরবানী ওয়াজিব।
তার কাছে যে ৩লাখ ৪০ হাজার জমানো টাকা আছে, সেটা থেকে তিনি কুরবানীর পশু কিনবেন। অথবা কোন স্বর্ণ বা রুপা বিক্রয় করে তা থেকে কিনতে পারেন।

তার উপর যাকাত ও হজ্ব উভয়টি ফরজ।

এক্ষেত্রে তার কোনো মাহরাম পুরুষ এর উপর হজ্ব ফরজ হলে সেক্ষেত্রে তার সাথে তিনি হজ্বে যাবেন।

(০২)
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব।
হজ্জের জন্য যে টাকা জমাচ্ছেন, অই টাকা থেকে কিনতে পারেন,অথবা চাইলে কাহারো থেকে টাকা করজ নিয়ে কুরবানীর পশু কিনতে পারেন, অথবা কোন স্বর্ণ বা রুপা বিক্রয় করে তা থেকে কিনতে পারেন।

আপনার উপর যাকাতও ফরজ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
reshown
উস্তাদ আমার উপর ফরজ হওয়া যাকাত কি এখন পরিশোধ করতে হবে? 
টাকাটা রমাদানের ঈদের পরেই এত বেরেছে।
যদি যাকাত হয়ে থাকে তাহলে কতটাকা যাকাত হয়েছে একটু জানাবেন মিন ফাদ্বলিক। 
আর কর্জ নেয়া টাকা কিভাবে পরিশোধ করতে পারি।আমার বাবার থেকে যদি করজ নেই তাকে কিভাবে পরিশোধ করবো। 

আমার যেহেতু ইনকাম সোর্স নেই সেক্ষেত্রে আমার কুরবানির টাকা কি আমার বাবা দিয়ে দিতে পারবে?  বা আমার নামে আমার বাবা কুরবানী দিতে পারবে?
উস্তাদ দ্রুত জানালে মুনাসিব হয়।। জানা আবশ্যক 
by
?????????? উস্তাদ একটু উত্তর টা জানালে মুনাসিব হয়  
by (629,460 points)
আপনার কাছে যে পরিমাণ স্বর্ণ রূপা রয়েছে সেগুলোর সমমূল্য আর আপনার কাছে যে টাকা রয়েছে সব মুল্য একত্র করলে কতদিন আগে ৯০ হাজার টাকায় পৌছেছিলো?
সেটির একটি হিসাব করে তার একবছর পর হতে যাকাত দিতে হবে।

এক্ষেত্রে যদি দুই বছরের যাকাত দিতে হয় তাহলে দুই বছরের যাকাত দিবেন।

যদি তিন বছরের যাকাত দিতে হয়, তিন বছরের যাকাত দিবেন। 

যত বছরের যাকাত দিতে হয়, তত বছরের যাকাত দিবেন।

আপনার মালিকানায় কয় ভরি স্বর্ণ রয়েছে? কয় ভরি রুপা রয়েছে? সবগুলি নির্দিষ্ট আকারে না বলতে পারলে কত টাকা যাকাত দিতে হবে এটা বলা মুশকিল।
by (629,460 points)
করজ নেওয়া টাকা স্বাভাবিকভাবে পরিশোধ করবেন।

আপনার বাবাকে বলবেন যে এটা আপনার থেকে করজ নিয়েছিলাম এখন আপনি এটা নিয়ে নেন।
by (629,460 points)
হ্যাঁ, আপনার কুরবানির টাকা আপনার বাবা দিয়ে দিতে পারবেন।

বা আপনার নামে আপনার বাবা কুরবানী দিতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে আপনার অনুমতি নেয়া আবশ্যক। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
0 answers 4 views
...