আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
26 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (19 points)
আসসালামু আলাইকুম মুহতারাম আমরা একটা ইসলামী সংগঠন করতে চাচ্ছি যেখানে বিভিন্ন দাওয়াতি কাজ করার ইচ্ছা যেমন বিশুদ্ধ তাওহীদের দাওয়াত পহেলা বৈশাখ thirty first night ভ্যালেন্টাইন্স ডে ইত্যাদি।
এখন আমরা যারা নামাজে অলসতা করে অথবা দিনের বিভিন্ন ফরজ ওয়াজিব বিধানে পালন করতে অনাগ্রহী তাদেরকে প্রতি মাসে মুজাকারা দাওয়াত দিয়ে তাদের কে বিভিন্ন ভাবে নসিহত করা এবং পাশাপাশি আমাদেরও ভিতরে যেতে বিশুদ্ধ তাওহীদের বীজ বপন হয় এইজন্য এদের মধ্যে তাওহীদের আলোচনা করা। বিশেষ করে তাওহিদের আলোচনা থাকবে আর যাদের কে দাওয়াত দিয়ে আনবো তাদের দূর্বল দিক বিবেচনা করে নসিহত করবো।


এখন আমার প্রশ্ন হল এখানে সাধারণত আমরা নিজেরাই তাবলীগের বাহিরা যেভাবে মুজাকারা করেন এইভাবে বয়ান করবো এবং যদি সম্ভব হয় কোন বা দ্বীনদার মাধ্যমে ইসলামী সেমিনারের ব্যবস্থা করব। (মাঝে মধে)

১.এখন এইভাবে যদি করি তাহলে কি আমার ভয় হচ্ছে সাতপন্থীদের মত কোন উগ্র দল তৈরি হওয়ার আশংকা কি আছে? যদিও আমরা আলেমের তথ্যাবদানে সংগঠনটি চালাবো এবং উলামায়ে কেরামের সোহবতে থাকার জন্য আলোচনাও করব ইনশাল্লাহ।
২.আর এটা কি বেদাত হবে?

1 Answer

0 votes
by (629,460 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ [٥:٢] 

সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। {সূরা মায়িদা-২}

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْكُوفِيُّ، حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ بَشِيرٍ، عَنْ شَبِيبِ بْنِ بِشْرٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ يَسْتَحْمِلُهُ فَلَمْ يَجِدْ عِنْدَهُ مَا يَتَحَمَّلُهُ فَدَلَّهُ عَلَى آخَرَ فَحَمَلَهُ . فَأَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرَهُ فَقَالَ " إِنَّ الدَّالَّ عَلَى الْخَيْرِ كَفَاعِلِهِ "

নাসর ইবন আবদুর রহমান কূফী (রহঃ) ..... আনাস ইবন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এক ব্যাক্তি এসে একটি বাহন চাইলে। কিন্তু নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের কাছে তার আরোহণের জন্য কিছু পেলেন না। তাই তিনি অন্য একজনের কাছে পাঠিয়ে দিলেন, ঐ ব্যক্তি তাকে একটি বাহন দিল। পরে সে এসে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে তা জানালে তিনি বললেনঃ ভাল কাজের পথ প্রদর্শনকারী তা সম্পাদনকারীর মতই। 

হাসান সহীহ, সহিহাহ ১১৬০, তা'লিকুর রাগীব ১/৭২, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ২৬৭০ [আল মাদানী প্রকাশনী]

وَحَدَّثَنِي عَنْ مَالِك أَنَّهُ بَلَغَهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَا مِنْ دَاعٍ يَدْعُو إِلَى هُدًى إِلَّا كَانَ لَهُ مِثْلُ أَجْرِ مَنْ اتَّبَعَهُ لَا يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ أُجُورِهِمْ شَيْئًا وَمَا مِنْ دَاعٍ يَدْعُو إِلَى ضَلَالَةٍ إِلَّا كَانَ عَلَيْهِ مِثْلُ أَوْزَارِهِمْ لَا يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ أَوْزَارِهِمْ شَيْئًا

মালিক (রহঃ) বলেনঃ তাহার নিকট খবর পৌছিয়াছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরমাইয়াছেনঃ যেকোন আহবানকারী হিদায়াতের দিকে আহবান করিবে তবে তাহাকে তাহার অনুসরণকারীদের সমান পুণ্য দেওয়া হইবে। অনুসরণকারীদের পুণ্য হইতে বিন্দুমাত্র কম করা হইবে না। আর যেকোন আহবানকারী পথভ্রষ্টতার দিকে আহবান করিবে, তবে তাহার উপর অনুসরণকারীদের পাপসমূহের সমান পাপ বৰ্তাইবে। তাহাতে অনুসরণকারীদের পাপসমূহের এতটুকুও কম করা হইবে না।
(মুয়াত্তা মালিক ৪৯৬)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
لَأَنْ يَهْدِيَ اللَّهُ بِكَ رَجُلًا وَاحِدًا خَيْرٌ لَكَ مِنْ أَنْ يَكُونَ لَكَ حُمْرُ النَّعَمِ

“তোমার মাধ্যমে যদি আল্লাহ একজন লোককেও হেদায়েত দেন তবে তা তোমার জন্য একটি লাল উট পাওয়া থেকেও উত্তম।” (বুখারী ১২/৩৭)

তিনি আরো বলেন:

مَنْ دَعَا إِلَى هُدًى كَانَ لَهُ مِنْ الْأَجْرِ مِثْلُ أُجُورِ مَنْ تَبِعَهُ لَا يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ أُجُورِهِمْ شَيْئًا

“যে ব্যক্তি হেদায়েতের পথে আহবান করে সে ঐ পরিমাণ সওয়াবের অধিকারী হয় যে ব্যক্তি তদনুযায়ী আমল করে। কিন্তু এতে আহ্বানকারীর সওয়াব কমানো হয় না।”(সুনানু আবি দাউদ-৪৬০৯)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত কাজ যদি কোনো বিজ্ঞ, হক্কানী উলামায়ে কেরামদের তত্ত্বাবধানে করেন,তাদের মত ও পরামর্শ ব্যাতিত কোনো পদক্ষেপ না নেন,উলামায়ে কেরামগন যদি আপনাদের কাজের সাথে যুক্ত থাকেন,সেক্ষেত্রে আপনি যেমন আশংকা করছেন,সেরকমটি হবেনা,ইনশাআল্লাহ। 

আল্লাহ তায়ালা আপনাদের উক্ত কাজে সহায় হোন,আমিন।

(০২)
এটি বিদ'আত হবেনা।

এটিও সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ হতে নিষেধের অন্তর্ভুক্ত হবে।

সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে নিষেধ এটি আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে এক মহান দায়িত্ব।

আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন:

«لُعِنَ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا مِنْ بَنِيْ إِسْرَآئِيْلَ عَلَى لِسَانِ دَاوُوْدَ وَعِيْسَى بْنِ مَرْيَمَ، ذَلِكَ بِمَا عَصَوْا وَّكَانُوْا يَعْتَدُوْنَ، كَانُوْا لَا يَتَنَاهَوْنَ عَنْ مُّنْكَرٍ فَعَلُوْهُ، لَبِئْسَ مَا كَانُوْا يَفْعَلُوْنَ».

‘‘বানী ইস্রাঈলের (ইহুদি ও খ্রিস্টানদের) কাফিরদের উপর লা’নত দাঊদ ও ’ঈসা বিন্ মারইয়াম (‘আলাইহিমুস-সালাম) এর মুখে এবং তা এ কারণে যে, তারা ছিলো ওহীর আদেশ বিরোধী এবং সীমা লঙ্ঘনকারী। তারা একে অপরকে কৃত গর্হিত কাজ থেকে নিষেধ করতো না। মূলতঃ তাদের উক্ত কাজ ছিলো অত্যন্ত নিকৃষ্ট’’। (মা’য়িদাহ্ : ৭৮-৭৯)

’হুযাইফাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:

وَالَّذِيْ نَفْسِيْ بِيَدِهِ ! لَتَأْمُرُنَّ بِالـْمَعْرُوْفِ، وَلَتَنْهَوُنَّ عَنِ الـْمُنْكَرِ، أَوْ لَيُوْشِكَنَّ اللهُ أَنْ يَّبْعَثَ عَلَيْكُمْ عِقَابًا مِّنْهُ، ثُمَّ تَدْعُوْنَهُ، فَلَا يُسْتَجَابُ لَكُمْ.

‘‘সে সত্তার কসম যাঁর হাতে আমার জীবন! তোমরা অবশ্যই একে অপরকে সৎ কাজের আদেশ করবে এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করবে। তা না হলে আল্লাহ্ তা‘আলা অচিরেই তোমাদের উপর তাঁর পক্ষ থেকে বিশেষ শাস্তি পাঠাবেন। তখন তোমরা তাঁকে ডাকবে; অথচ তিনি তোমাদের ডাকে সাড়া দিবেন না’’। (তিরমিযী ২১৬৯)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...