আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
32 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
কোনো নারীর কাছে স্বর্ণ আছে;যেটা সাড়ে সাত ভরি থেকে কম [বর্তমান বাজার মূল্যে পাঁচ লক্ষাধিক টাকার স্বর্ণ] কয়েক গ্রাম রূপা আছে(৩ - ৫) গ্রামের মত হয়তো); যা সাড়ে বায়ান্ন তোলা থেকে কম। আর ৯৩০০ টাকা আছে। তার নিজস্ব কোনো ইনকাম নাই। তার মাহরামের উপর পরিপূর্ণ নির্ভরশীল।

৯৩০০ টাকার মধ্যে ২০০০ টাকা কর্জ দিয়েছে এবং বাকি টাকা বিভিন্ন খাতে খরচ করবে বলে নিয়ত করেছে।

ক.যে পরিমাণ রূপা আছে, সে রূপার জন্য কি রূপার নিসাব ধরে যাকাত,,কুরবানী আদায় করতে হবে?

খ.রূপা যদি তার স্বামীর কাছে বিক্রি করে অর্থ নেয় তাহলে কি কোনো সমস্যা হবে?

গ. পরে আবার স্বামীর থেকে কিনে নিয়ে ব্যবহার করল,কিন্তু কুরবানী আগে, যাকাত আদায় করার সময়ের আগে তার কাছে বিক্রি করে অর্থ নিয়ে নিলো; যাতে যাকাত কুরবানী আদায় না করতে হয়। এটা কি জায়েয হবে?

ঘ. সারাবছর নির্দিষ্ট একটা পরিমাণ টাকা জমলে সেটা যদি যাকাত আদায়ের সময়ের আগে খরচ করে ফেলা হয়; যা যাকাত আদায়ের অর্থের পরিমানে না,তাহলে কি জায়েয হবে?

ঙ. উমরা আদায়ের উদ্দেশ্যে জমানো টাকা কি যাকাতের নিসাব হবে, কুরবানীর সময় কুরবানীর নিসাব হবেন?

২. ৫ মাসের সন্তান সম্ভব হওয়া অবস্থায় একধরনের মেডিকেল টেস্ট করা যায় যাতে বাচ্চার সম্পূর্ণ দেহ দেখা যায়, কোনো শারীরিক ত্রুটি থাকলে সেটাও দেখা যায়; মায়ের শারীরিক ক্ষতির সম্ভাবনা আছে। এটা করা কি জায়েয হবে?

৩. বয়স হবার কারণে একজন নারীর  চুল সম্পুর্ণ সাদা হয়ে গেছে। তিনি মেহেদী দেন নিয়মিত। কিন্তু তার বর তার মেহেদী দেয়া চুল পছন্দ করছে না। কালো করতে বলছে। এমতাবস্থায় কি তার জন্য চুল কালো করা জায়েজ হবে?

1 Answer

0 votes
by (629,460 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী স্বর্ণের ক্ষেত্রে যাকাতের নিসাব হল বিশ মিসকাল। -সুনানে আবু দাউদ ১/২২১; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক  হাদীস ৭০৭৭, ৭০৮২
আধুনিক হিসাবে সাড়ে সাত ভরি।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا بَكْرُ بْنُ خَلَفٍ وَمُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى قَالَا حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ بْنُ مُوسَى أَنْبَأَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ إِسْمَعِيلَ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ وَاقِدٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ وَعَائِشَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَأْخُذُ مِنْ كُلِّ عِشْرِينَ دِينَارًا فَصَاعِدًا نِصْفَ دِينَارٍ وَمِنْ الْأَرْبَعِينَ دِينَارًا دِينَارًا

ইবনু ‘উমার ও ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)  থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি বিশ দিনার বা তার চেয়ে কিছু বেশি হলে অর্ধ দিনার এবং চল্লিশ দিনারে এক দিনার (যাকাত) গ্রহণ করতেন।

ইবনে মাজাহ ১৭৯১ ইরওয়াহ ৮১৩।
দারাকুতনী ১৮৭৯, ১৮৯২।

সাড়ে ৫২ ভরি রুপা হলে তার উপর যাকাত ফরজ। 
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
عن أبي سعيد الْخُدْرِي رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : «ليس فيما دون خمس أَوَاقٍ صدقة، ولا فيما دون خمس ذَوْدٍ صدقة، ولا فيما دُونَ خمسة أَوْسُقٍ صدقة».  
[صحيح] - [متفق عليه]

আবূ সা‘ঈদ আল-খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “পাঁচ উকিয়ার কম রৌপ্যমুদ্রায় যাকাত নেই এবং পাঁচটি উটের কমের ওপর যাকাত নেই। পাঁচ ওয়াসাক এর কম শষ্যের ওপর যাকাত নেই।”
(বুখারী,মুসলিম)

শরীয়তের বিধান হলো যদি কাহারো কাছে সোনা-রুপা, টাকা-পয়সা কিংবা বাণিজ্য-দ্রব্য- এগুলোর কোনোটি পৃথকভাবে পূর্ণ  নিসাব পরিমাণ না থাকে, কিন্তু এসবের একাধিক সামগ্রী এ পরিমাণ রয়েছে, যা একত্র করলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার সমমূল্য বা তার চেয়ে বেশি হয় তাহলে এক্ষেত্রে সকল সম্পদ হিসাব করে যাকাত দিতে হবে।
(মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস ৭০৬৬,৭০৮১; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ৬/৩৯৩)

আরো জানুনঃ  

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
ক, প্রশ্নে উল্লেখিত বোনের টাকার পাশাপাশি স্বর্ণ ও রুপারও যাকাত দিতে হবে।

এক্ষেত্রে তিনি উক্ত স্বর্ণ ও রুপার বর্তমান বাজার মুল্য ধরে তার মালিকানায় থাকা টাকার সাথে যোগ করবেন।
এরপর পুরোটার শতকরা আড়াই পার্সেন্ট তথা চাল্লিশ ভাগের এক ভাগ যাকাত হিসেবে প্রদান করবেন।

তার উপর কুরবানী ওয়াজিব। 
তাকে অবশ্যই কুরবানী দিতে হবে।

খ, এতে কোনো সমস্যা নেই।
তখন তিনি তার মালিকানায় থাকা স্বর্ণ ও টাকার যাকাত আদায় করবেন।

গ, এক্ষেত্রেও তার ওপর যাকাত ও কুরবানী উভয়টি আবশ্যক হবে।

ঘ, এক্ষেত্রে বছর পূর্ণ হওয়ার আগে যদি সেই টাকা খরচ করে ফেলা হয়, তার মালিকানায় যদি নেসাব পরিমাণ সম্পদ আর না থাকে, সেক্ষেত্রে তার ওপর যাকাত ফরজ হবে না।

ঙ, হ্যাঁ সেই টাকাও যাকাত ও কুরবানীর নেসাবের অন্তর্ভুক্ত হবে।

(০২) 
সেই মেডিকেল টেস্ট এর নাম কি?

এটা যদি আল্ট্রাসনোগ্রাফি হয়,সেক্ষেত্রে এর বিধান জানুনঃ- 

আর যদি অন্য কোনো টেস্ট হয়,যাহা 
বিজ্ঞ ডাক্তারদের মতে এক্ষেত্রে মায়ের শারীরিক ক্ষতির যদি প্রবল সম্ভাবনা থাকে,সেক্ষেত্রে সে টেস্ট করানো জায়েজ হবেনা।

(০৩)
প্রশ্নের বিবরণ মতে এটি জায়েজ হবেনা। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ الْحَلَبِيُّ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ وَهُوَ ابْنُ عَمْرٍو عَنْ عَبْدِ الْكَرِيمِ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَفَعَهُ أَنَّهُ قَالَ قَوْمٌ يَخْضِبُونَ بِهَذَا السَّوَادِ آخِرَ الزَّمَانِ كَحَوَاصِلِ الْحَمَامِ لَا يَرِيحُونَ رَائِحَةَ الْجَنَّةِ 

আব্দুর রহমান ইবন আবদুল্লাহ হালাবী (রহঃ) ... ইবন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ শেষ যমানায় এমন কতক লোক হবে, যারা কবুতরের বুকের মত কালো খিজাব লাগাবে, তারা বেহেশতের গন্ধও পাবে না।
(নাসায়ী ৫০৭৪ মিশকাত ১৪৫২, গায়াতুল মারাম ১০৭।)
,
أَخْبَرَنَا يُونُسُ بْنُ عَبْدِ الْأَعْلَى قَالَ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ قَالَ أَخْبَرَنِي ابْنُ جُرَيْجٍ عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ عَنْ جَابِرٍ قَالَ أُتِيَ بِأَبِي قُحَافَةَ يَوْمَ فَتْحِ مَكَّةَ وَرَأْسُهُ وَلِحْيَتُهُ كَالثَّغَامَةِ بَيَاضًا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ غَيِّرُوا هَذَا بِشَيْءٍ وَاجْتَنِبُوا السَّوَادَ 
ইউনুস ইবন আবদুল আ'লা (রহঃ) ... জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মক্কা বিজয়ের দিন আবু কুহাফাকে আনা হলে তাঁর মাথা সাগামা (সাদা রঙের ফল বিশেষ)-এর মত সাদা ছিল। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এই রংকে কোন কিছু দ্বারা পরিবর্তিত করে দাও কিন্তু কালো রং দ্বারা নয়।
(নাসায়ী ৫০৭৫ সহীহ। ইবন মাজাহ ৩৬২৪, মুখতাসার মুসলিম ১৩৪৭, সহীহাহ ৪৯৬)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...