আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
29 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু, আমি একটা বিষয়ে একটু জানতে চাই। আসলে আমি ছোটবেলা থেকে নানি বাড়িতে বড় হয়েছি আর আমার বড় মামা আমাকে দেখাশোনা করেছে। আমার মামা আসলে চাইত আমি বাইরের দেশে পড়াশোনা করি উনি নিজে খুব মডার্ন। উনি চাই যে আমি নিজেও ওই ভাবেই চলাফেরা করি। দীর্ঘদিন ধরে খুব একটা সিদ্ধান্তে ভুগতেছিলাম যেহেতু উনি ছাড়া আমাদের আর্থিকভাবে সাহায্য করার কেউ নেই ও তাই  বুঝতেছিলাম না যে আসলে কি করব। উনি সবসময় চায় যে আমি ইহুদি একটা দেশে সেটেল হয় বিশেষ করে জার্মানি অথবা আমেরিকা। কিন্তু আমি আসলে এসবের উল্টোদিকে ছিলাম আমি চাচ্ছিলাম না কোনভাবেই যে সেসব দেশে আমি যাই। আর আমার পর্দা করা নিয়ে ওনার অনেক অসুবিধা আছে এটা নিয়েও কথা শুনি আমি। ইসলাম নিয়ে, আল্লাহকে নিয়ে উল্টো পাল্টা কথা বলে। এসবের জন্য আমি চাচ্ছিলাম আমার মাহরাম হয়ে গেলে আর এরকম একজন থেকে সাহায্য নিতে হবেনা। এদিকে আমার আম্মুও চাচ্ছিলেন যে আমার বিয়ে হয়ে যাক যেহেতু আমার অনার্স পড়াটা শেষ হয়েছে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছি। কিন্তু সমস্যাটা এখানেই যে আমার বিয়ের বিষয়ে মামার কোনভাবে ইচ্ছা ছিল না আর যদিও উনি বিয়ের বিষয়ে বললেও ওনার কথা ছিল যে উনি বাইরের দেশের কোন বিদেশী কারো সাথে আমাকে বিয়ে দিবে। এটা নিয়ে আসলে অনেক দোয়া করার পরে আল্লাহ  আমার বিয়ের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন আলহামদুলিল্লাহ। আমার হাজব্যান্ড দ্বীনি কিন্তু বিষয়  হচ্ছে উনি খুব ভালো একটা চাকরি এখনো করেন না, হাত খরচের মত একটা আর্নিং করেন। তাই আসলে পরিবার থেকে সিদ্ধান্ত হয় যে একটা ভাল চাকরি করবে তারপরে আমাকে তুলে নিবে আর কি। এর মধ্যে মামা আমাকে খুব চাপাচাপি করে যে বিদেশে যাওয়ার জন্য। তাই বাধ্য হয়ে আমাকে আসলে আসার জন্য সিদ্ধান্ত নিতে হয়। আবার আমি না  বলব তার কোন সুযোগ ছিলনা কারণ আমি বিয়ের আগে বিদেশে যাওয়ার জন্য একটা জায়গায় কিছু টাকা দিয়ে ফেলেছিলাম কিন্তু তারা পরবর্তীতে টাকাটা ফেরত দিতে রাজি হয়নি। আমার  হাজবেন্ডেরও দেওয়ার ক্ষমতা ছিল না টাকাটা। কিভাবে মামাকে ফেরত দিব টাকাগুলো সেটার প্রশারে আমি আসলে ওই টাকার জন্যই আমার মালেশিয়াতে আসা লাগে। এখন আমার স্টাডি করা আর আমি বিবাহিত আমার মাহারামও নাই সাথে আমি চিন্তা করতেছি যে এই পড়াটা আসলে আমার জন্য ঠিক হবে কিনা নাকি আমি মাঝ পথে ফিরে আসব। ডিসেম্বরে আমার পড়াটা শেষ হয়ে যাবে মাস্টার্স কমপ্লিট হয়ে যাবে। আসার আগে নিয়ত করেছিলাম এবং দোয়া করেছিলাম যে এই পড়াটা উম্মতের কল্যাণে লাগলে তাহলে আল্লাহ আমাকে সাহায্য করো না হলে তুমি আমাকে অন্য কোন পথ দেখাও। বেশ বাধাবিঘ্নের মধ্য থেকে আমি আসতে পেরেছি। কিন্তু এখন বুঝতে পারছি না এখানে আসলে আমার থাকাটা ঠিক হচ্ছে কিনা যেহেতু আমি বিবাহিত। বাড়িতে সহশিক্ষা নিয়ে বলায় বলতেছে আর তো ৬মাস, শেষ করে ফিরতে। আমার হাজবেন্ডের ইনকাম ওইভাবে নেই যে এখন আমি যে ফিরে যাব বা বাড়িতেও যেতে পারব না ঝামেলা করে আবার পাঠিয়ে দেবেন। আমি বাড়িতে বলতেছি যে আমি ফিরে যেতে চাই কিন্তু বাসা থেকে বলতেছে আর তো ছয়টা মাস আছে তুমি ছয়টা মাস পড়াশোনা করে তারপর আসো তারপর তোমাকে তুলে দেওয়া হবে আর তোমার হাজবেন্ডের একটা ভালো ইনকাম হয়ে যাবে এর মধ্যে তাহলে এ বিষয়টা একটা ভালো দিকে আসবে। এখন হাসবেন্ডকে বলেছি সবটাই ওনি আর আমি ভাবছি যতটুকু ইনকাম, এর মধ্যে আর নিজেরা কিছু চেষ্টা করে চলব এই ৬মাস, আসলে ওনার কখনো ইচ্ছা ছিলনা এ বিষয়ে, শুধু অপরাগতায় সিদ্ধান্ত নেয়া। এখন আমি  এই বিষয়ে কি করবো আমাকে একটু সাহায্য করুন সিদ্ধান্ত নিতে খুব অসুবিধা হচ্ছে আমার ইস্তেখারা করছি কিন্তু তারপরও কনফিউজড যে আসলে কোনদিকে যাব। এখন মাঝপথে পড়াশোনাটা ছেড়ে চলে এসে বাসায় না জানিয়ে হাসবেন্ড এর সাথে সংসার শুরু করব নাকি পড়াশুনা করে তার পরে ফিরব এটাই হচ্ছে সমস্যা এখন আমার। কারণ বাসায় বুঝতে চাইছে না বিষয়টা। আর এ অবস্থায় আমি কি করব আমিও বুঝতে পারছি না।

একটু জানালে মুনাসিব হতো ইং শা আল্লাহ।  জাযাকুমুল্লহ।

1 Answer

0 votes
by (629,460 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

শরীয়তের বিধান হলো  মহিলাদের জন্য তার মাহরাম পুরুষ ব্যতীত ৪৮মাইল বা তদাপেক্ষা বেশী দুরুত্বের সফর করা জায়েয নয়। এর কম হলে জায়েয আছে । তবে সর্বাবস্থায় মাহরাম পুরুষের সাথে সফর করাই উত্তম। আর গাইরে মাহরামদের সাথে সফর করা মারাত্তক গোনাহ।হাদীসে মাহরাম ব্যতীত মহিলাদের সফরের ব্যপারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা এসেছে। -বুখারী শরীফ হা: নং১০৮৬,ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৪২।
,
সফর কমপক্ষে ৭৮ কিলোমিটারের চেয়ে কম হলে মহিলাগণ পর্দার সাথে একা একা সফর করতে পারবে। ৭৮ কিলোমিটারের চেয়ে বেশি হলে স্বামী বা মাহরাম ছাড়া কারো সাথে বা একা সফর করা জায়েজ নয়। {আহসানুল ফাতওয়া-৪/৯৫}
,
عن أبي سعيد الخدري قال قال رسول الله صلى الله عليه و سلم لا يحل لإمرأة تؤمن بالله واليوم الآخر أن تسافر سفرا يكون ثلاثة أيام فصاعدا إلا ومعها أبوها أو ابنها أو زوجها أو أخوها أو ذو محرم منها

হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ আল্লাহ তাআলা এবং কিয়ামত দিবসের উপর ঈমান রাখে
এমন কোন মহিলার জন্য জায়েজ নয়, তিন দিন বা এর চেয়ে অধিক দিনের সফর করে অথচ তার সাথে তার পিতা, তার ছেলে, বা তার স্বামী বা তার ভাই কিংবা কোন মাহরাম না থাকে। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৪২৩}
,
আরো জানুনঃ

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি যেহেতু মাহরাম পুরুষ ছাড়াই সে দেশে চলে গেছেন এবং সেখানে মাহরাম পুরুষ ছাড়াই অবস্থান করতেছেন আবার সেখান থেকে মাহরাম পুরুষ ছাড়াই ফিরে আসবেন সুতরাং আপনার এসব কাজই শরীয়াহ নীতিমালা বিরোধী,যাহা অমান্যের দরুন আপনার গুনাহ হচ্ছে।

আপনার প্রতি পরামর্শ থাকবে আপনার পরিবার যেহেতু বাকি ছয় মাস পড়াশোনা করে আসতে বলতেছেন, সুতরাং ফিতনায় পতিত হওয়ার আশংকা না থাকলে ঈমান আমল পর্দা পালনে কোনো সমস্যা না হলে বরং সর্বক্ষেত্রে পূর্ণ ভাবে শরীয়ত মেনে চলতে পারলে এই ছয় মাস আপনি সেখানে পড়াশোনা করে বাসায় আসবেন।

সহ শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠান হলে সেসব প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করার জন্য যেসব শর্তাবলী রয়েছে সেসব শর্তাবলী মেনে পড়াশোনা করবেন।

এ সংক্রান্ত জানুনঃ- 

সর্বোপরি এভাবে শরীয়তের বিধান না মানা দরুন মহান আল্লাহতালার কাছে খালেস দিলে ইস্তেগফার চালিয়ে যাবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...