আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
28 views
in কুরবানী (Slaughtering) by (6 points)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

 

কুরবানীর পশু জবেহ করার সুন্নাহ পদ্ধতি 

আমাদের মসজিদের ইমাম দ্রুত জবেহ করতে পারে।  এতে পশুর কম কষ্ট হবে, ইনশাআল্লাহ 
তাই ইমাম কে দিয়ে জবেহ করাই। খুশি হয়ে ইমাম কে বকশিসও দেই।  পারিশ্রমিক ও বকশিস হিসেবে টাকা দেই। 

গোস্ত প্রস্তুত করার জন্য শ্রমিক এর প্রয়োজন হয় না তেমন।  তারপর ও স্বেচ্ছায় অনেকে শ্রম দেয়। আমরা নিষেধ করি না। পারিশ্রমিক হিসেবে গোস্ত চায়।  কিন্তু আমি জানি  পারিশ্রমিক হিসেবে গোস্ত দেওয়া আল্লাহর রাসূল স. থেকে  নিষেধ আছে। তাই আমরা টাকা দেই।  এরপর তাদের কে গোস্ত দেই।  

১.  হাদিয়া কি ? পারিশ্রমিক না দিয়ে কি শুধু হাদিয়া হিসেবে গোস্ত দেয়া যায়  যেখানে সবাই পারিশ্রমিক হিসেবে গোস্ত আশা করে ? শুধু জানতে চাই , কেননা আমি পারিশ্রমিক হিসেবে টাকা দেয়ার পর গোস্ত দেওয়ার পক্ষে। 

. কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এটি জানে না।  ইমাম/খতিব  জুমুআর দিন এই বিষয়ে বয়ান করলেও তারা আমলে নেয় না।  তাই তারা পারিশ্রমিক হিসেবে গোস্ত দেয়। 
  আমার মনে হয় ভুল বুঝার পর গোস্তর সমপরিমাণ টাকা সদকা করে দিলেই কুরবানী শুদ্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু তারা যদি ২টার একটাও না করে তাহলে এদের কুরবানীর গ্রহণযোগ্যতার হুকুম কি ? 

৩. কি বলে জবেহ করতে হয় ?  "بسمِ اللهِ اللهُ أكبر"
("বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার") বা   "بسمِ اللهِ وَاللهُ أكبر" ("বিসমিল্লাহি  ওয়া আল্লাহু আকবার")
? যতবার ছুরি চালাতে হয়, ততবার ই কি কিছু বলতে হয় ? যেমন "আল্লাহু আকবার। "  বললে  কি বিদ'আত  হবে ?
জবেহকারী  আল্লাহর নাম নেয়ার পাশাপাশি  জবেহ করতে সহায়তাকারীরা কিংবা কুরবানীর অংশীদারগণ  "বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার" বললে কি কোনো সমস্যা ? জবেহকারী  আল্লাহর নাম নিতে ভুলে গেলে জবেহ করতে সহায়তাকারীরা কিংবা কুরবানীর অংশীদারগণ আল্লাহর নাম নিলে কি কুরবানী সহীহ হবে ?


৪.১ পশু জবেহ করার সুন্নত পদ্ধতি কি ? 
৪.২ শরিকদের নাম কিভাবে নিবে ?

৪.৩ অনেক নির্দয় কসাই পশুর প্রাণ ত্যাগ করার পূর্বে পশুর অন্য কোন অঙ্গ  যেমন ঘাড় মটকানো, পায়ের শিরা কাটা, চামড়া ছাড়ানো ইত্যাদি কেটে পশুকে কষ্ট দেয়। এতে কুরবানী কবুল হওয়ার হুকুম কি ?

1 Answer

0 votes
by (629,460 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
হাদীস শরীফে এসেছে-

حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَوْنٍ، أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ يَعْنِي ابْنَ عُيَيْنَةَ، عَنْ عَبْدِ الْكَرِيمِ الْجَزَرِيِّ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: أَمَرَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ أَقُومَ عَلَى بُدْنِهِ وَأَقْسِمَ جُلُودَهَا وَجِلَالَهَا، وَأَمَرَنِي أَنْ لَا أُعْطِيَ الْجَزَّارَ مِنْهَا شَيْئًا، وَقَالَ: نَحْنُ نُعْطِيهِ مِنْ عِنْدِنَا

‘আলী (রাযি.) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে তাঁর কুরবানীর পশু দেখাশোনা, চামড়া বিতরণ ও তার আচ্ছাদন সাদাকা করতে নির্দেশ দেন এবং কসাইকে তা থেকে কিছু না দেয়ার নির্দেশ করেন। বর্ণনাকারী বলেন, তবে কসাইকে আমরা নিজেদের পক্ষ থেকে আলাদাভাবে পারিশ্রমিক দিতাম।
(বুখারী,মুসলিম,আবু দাউদ ১৭৬৯)

حديث عَلِيٍّ رضي الله عنه، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَمَرَهُ أَنْ يَقُومَ عَلَى بُدْنِهِ، وَأَنْ يَقْسِمَ بُدْنَهُ كُلَّهَا لُحُومَهَا وَجُلُودَهَا وَجِلاَلَهَا وَلاَ يُعْطِيَ فِي جِزَارَتِهَا شَيْئًا

আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তাঁকে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর নিজের কুরবানীর জানোয়ারের পাশে দাঁড়াতে আর এগুলোর সমুদয় গোশ্ত, চামড়া এবং পিঠের আবরণসমূহ বিতরণ করতে নির্দেশ দেন এবং তা হতে যেন কসাইকে পারিশ্রমিক হিসেবে কিছুই না দেয়া হয়। (বুখারী, হাঃ ১৭১৭, মুসলিম, হাঃ ১৩১৭)

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে রয়েছে-

ولا يعطى أجر الجزار والذابح منها

পারিশ্রমিক হিসেবে কসাই ও জবাইকারীকে কুরবানীর গোশত দেওয়া যাবে না । ( ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া,৫/৩০১)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যারা শ্রম দিবে, তাদেরকে পারিশ্রমিক দেওয়ার পর অন্যান্য ১০ জন মানুষের মত কুরবানীর গোশত দিতে পারেন। এতে কোন সমস্যা নেই। তবে পারিশ্রমিক হিসেবে কুরবানির গোশত দিতে পারবেন না।

সুতরাং আপনার মত সহীহ।

আরো জানুনঃ- 

(০২)
এক্ষেত্রে তাদের কুরবানীর গোশত বিক্রির গুনাহ হবে।  যাহা জায়েজ নেই।

(০৩)
জবাইয়ের সময় বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলতে হবে।
শুধু আল্লাহু আকবার বললেও হবে।

যতবার ছুরি চালাতে হয়, ততবার ই বলা আবশ্যক নয়। শুরুতে একবার বললেই যথেষ্ট। 
"আল্লাহু আকবার। "  বললে বিদ'আত হবেনা।

জবেহকারী  আল্লাহর নাম নেয়ার পাশাপাশি  জবেহ করতে সহায়তাকারীরা কিংবা কুরবানীর অংশীদারগণ  "বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার" বললে কোনো সমস্যা নেই।

জবেহকারী আল্লাহর নাম নিতে ভুলে গেলে জবেহ করতে সহায়তাকারীরা কিংবা কুরবানীর অংশীদারগণ আল্লাহর নাম নিলেও কুরবানী সহীহ হবে, তারা আল্লাহর নাম না নিলেও কুরবানী সহীহ হবে। 

কেননা এক্ষেত্রে জবেহকারী ভুলক্রমে আল্লাহর নাম নেয়নি।

শরীয়তের বিধান অনুসারে এক্ষেত্রেও জবাই শুদ্ধ হয়ে যায়।

আরো জানুনঃ- 

(৪.১)
ইসলামী শরীয়ত সম্মত পন্থায় জবাই করার পদ্ধতি হলো হলোঃ 
মুসলিম অথবা আহলে কিতাব ব্যাক্তি বিসমিল্লাহ বলে জবাই করবে।
জবাই করার সময় চারটি রগ কাটতে হবে। সে চারটি রগ হচ্ছে, শ্বাস নালী, খাদ্যনালী এবং শ্বাস নালীর দুই পার্শ্বের দুটি মোটা রগ। কোনো কারণে চারটি রগ না কেটে তিনটি কাটলে গোশত খাওয়া বৈধ হবে। কিন্তু তিনটির কম কাটলে সেই পশু বা পাখি মৃত বলে গণ্য হবে এবং তা খাওয়া বৈধ হবে না।  (বেহেশতি জেওর, পৃষ্ঠা-৩৭৫)

যে কোন পশু জবাই করার সময় আল্লাহর নাম তথা বিসমিল্লাহ বা আল্লাহু আকবার বা আল্লাহ তাআলার সাথে খাস আল্লাহ তাআলার যে কোন নাম উচ্চারণ করা আবশ্যক। যদি ইচ্ছাকৃত ভাবে  আল্লাহর নাম না নেয়া হয়, তাহলে উক্ত পশু খাওয়া জায়েজ হবে না।

আরো জানুনঃ- 

(৪.২)
তাদের নাম নেয়ার আবশ্যকীয়তা নেই।

কুরবানীর পশু ক্রয়ের সময় শরীকদের নামেই ক্রয় করা হয়েছে,আর সেই অনুযায়ী টাকা দেয়া হয়েছে,সুতরাং সেটিই যথেষ্ট হবে।

জবাইয়ের সময় নাম নেয়ার আবশ্যকীয়তা নেই।

(৪.৩)
কুরবানীর পশুর প্রাণ ত্যাগ করার পূর্বে পশুর কোন অঙ্গ যেমন ঘাড় মটকানো, পায়ের শিরা কাটা, চামড়া ছাড়ানো ইত্যাদি কেটে পশুকে কষ্ট দেওয়া নাজায়েজ । 
কেননা পশুকে কষ্ট দেয়া আদৌ বৈধ নয়।
,
★তবে এতে গোশত হারাম হবেনা।
সেই পশুর গোশত খেতে কোনো সমস্যা নেই।   
কুরবানী কবুল হওয়ার সাথে এর কোনো সম্পৃক্ততা নেই

নিয়ত খালেস থাকলে এবং হালাল টাকায় কুরবানী দিলে সেক্ষেত্রে আপনার কুরবানী কবুল হবে,ইনশাআল্লাহ। 

আরো জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 302 views
...