আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
75 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (2 points)
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যদি রিয়া হয়ে যায় এই ভয়ে। বর্ণনাকারীর মত করেই হুবহু তুলে ধরলাম।
---

আমার বয়স সম্ভবত ৭ থেকে ১২ এরকম হবে। আমি তখন ক্লাস ২-৬ এর মধ্যে কোন এক ক্লাসে পড়তাম। খুব সম্ভবত রমজান মাসে হবে ঘটনাটা। (আল্লহুম্মাগফিরলি সময়টি সঠিক মনে নেই)।
তখন বয়স কম হলেও নিয়মিত নামাজ কালাম পরার চেষ্টা করতাম। পরিবারের ভাইবোনেরা মিলে ভরে উঠতাম, নামাজ পড়ে একসাথে উনারা কুরআন পড়তেন আমি আরবি শেখার বই পড়তাম। ২-৩ দিন সকাল বেলা আমরা আরবি পড়ার সময় মাঝে মাঝেই খুব মিষ্টি একটা সুঘ্রাণ ভেসে আসত বাতাসে। কেমন বলে বুঝানো সম্ভব হত না।
সেসময় এমন অভ্যাস হয়ে গেছিল, ঘুমের মাঝে ভয় পেলে আয়াতুল কুরসি/ ইখলাস পরার চেষ্টা করতাম। মনের অজান্তেই পড়তাম। বলতে পারেন একধরনের রিফ্লেক্স এর মত হয়ে গিয়েছিল। অটোম্যাটিক চলে আসত।
একদিন সকালে আমার বোনেরা আমাকে বলল ঘুমের মধ্যে আমি নাকি কুরআন তিলাওয়াত (সুরা ফাতিহা, ইখলাস, ফালাক, নাস ইত্যাদি) করছিলাম, আর হাতের কোষে তাসবীহ পড়ছিলাম। আমি বিশ্বাস করতে চাইছিলাম না। মনে মনে ভাবতাম ধুর আমি কি এত ইমানদার? কিছুক্ষণ পর মনে করার চেষ্টা করলে আলহামদুলিল্লাহ সব মনে পড়ে। ভাই বোনেরা জিজ্ঞেস করলেও প্রথম প্রথম বলতে চাচ্ছিলাম না। পড়ে বলেছিলাম কিনা ওদের সেটাও মনে নেই। হয়ত ম্যাকে বলেছিলাম হয়ত মা নিষেধ করেছিল আর কাউকে জানাতে। হয়ত আল্লাহকে দেখার পার্ট বাদ দিয়ে বাকিটা বলেছিলাম। আমি স্বপ্নে সেদিন কাকে দেখেছিলাম জানিনা। তবে স্বপ্নে অনেকেই বলতেছিল অইত আল্লাহ। আমি উনাকে দেখলাম, কিন্তু মুখ দেখতে পারিনাই বা মনে নেই। উনার বিস্তারিত বর্ণনা এখানে উল্লেখ না করি। কারণ যেহেতু অনেক দিন আগের কথা, উনাকে নিয়ে মিথ্যা বলা হয় কিনা আবার শিরক হয় কিনা সেই ভয়ে, আল্লহুম্মাগফিরলি।  সিজদাহ করেছিলাম কিনা সেটাও স্পষ্ট মনে নাই। তিনি আমার উপর রেগে ছিলেন কিনা খুশি ছিলেন সেটাও এতদিনে মনে নেই। তবে উনাকে দেখে অন্যরকম একটা শান্তি বিরাজ করছিল। হয়তবা সেদিনের স্বপ্নেই হবে বা আরেকটা সেপারেট স্বপ্নে আমি দেখি, আমি মসজিদে ইমামতই করছিলাম। অনেকেই বলতেছিলেন আমাকে নামাজ পড়াতে। সেদিনের সলাতের কুরআন তিলাওয়াতের শব্দই আমার ভাই বোনেরা শুনেছিলেন। এটা মনে আছে।
সেসময় আমাদের বাড়িতে সম্ভবত আমার দাদী ছিলেন। সঠিক মনে নেই। তবে উনি অনেক পরহেজগার আল্লাহর বান্দি ছিলেন। আল্লাহ উনাকে জান্নত নসিব করুন। কবরের আজাব থেকে মাফ করুন।
যাই হোক আমার এই স্বপ্নের ঘটনাটা আগে মাঝে মাঝে মনে হত। কিন্তু অনেক বছর যাবত একদমই মনে হতনা। ইমান আমল কমে গিয়েছিল। আড্ডাবাজি বেড়ে গিয়েছিল। কিছু বছর আগেও ইবাদত করলে অন্যরকম শান্তি কাজ করত। দুয়া করলে কবুল হত। এখন আর আগের মত হয়না কিছুই। তবে চেষ্টা করছি। আড্ডাবাজি বন্ধ করেছি। আমি একটা বিষয় খেয়াল করেছি মানুষের সাথে কম মিশলে বা ভালো মানুষদের সাথে মিশলে ইমান আমল উন্নত হয়। প্রোডাক্টিভ হওয়া যায়। জানিনা কেন আজ হঠাত সেই স্বপ্নের কথা মনে হল। তাই শেয়ার করলাম। আমার প্রশ্নগুলোঃ
১। আল্লাহকে স্বপ্নে দেখা সম্ভব? আমি কি সেদিন আল্লাহকেই দেখেছিলাম?
২। আল্লাহ ও রাসুল (সঃ) কে স্বপ্নে দেখার উপায় কি?
৩। ইবাদাতে আগের মত তৃপ্তি পেতে করনীয় কি?
৪। ইদানীং নামাজে প্রায়ই রাকাত ভুলে যাই। খুব কষ্ট লাগে। নামাজে আগের মত মনোযোগ বাড়াতে পারিনা। নামাজের মনোযোগ বাড়ানোর উপায় কি? রাকাত ভুলে গেলে করনীয় কি?

যেহেতু ঘটনাটা অনেক আগের তাই হয়ত অনেক কিছুই বিস্তারিত ভুলে গেছি বা সঠিক মনে নেই। তবে আল্লাহকে দেখার বিষয় এবং নামাজ পড়ানোর বিষয়টি মনে আছে। আল্লহুম্মাগফিরলি।
জাযাকাল্লহু খইরন

1 Answer

0 votes
by (658,350 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আল্লাহকে বাস্তবে দেখা তথা চর্মচক্ষু দ্বারা কখনো সম্ভবপর নয়।তবে স্বপ্নে দেখা যেতে পারে।কিভাবে দেখা যাবে,সেটা অাল্লাহই ভালো জানেন।

 মু'আয ইবনু জাবাল (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, একদিন প্রত্যুষে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সাথে ফজরের নামায আদায় করতে আসতে বাধাপ্রাপ্ত হন। এমনকি আমরা সূর্য উদিত হয়ে যাওয়ার আশংকা করলাম। তিনি তাড়াতাড়ি বের হয়ে এলে সালাতের জন্য ইকামাত দেয়া হল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সংক্ষেপে সালাত আদায় করলেন। তিনি সালাম ফিরানোর পর উচ্চস্বরে আমাদেরকে ডেকে বললেনঃ তোমরা যেভাবে সারিবদ্ধ অবস্থায় আছ সেভাবেই থাক। তারপর তিনি আমাদের দিকে ফিরে বসলেন অতঃপর বললেনঃ সকালে তোমাদের নিকট আসতে আমাকে কিসে বাধাগ্রস্ত করেছে তা এখনই তোমাদেরকে বলছি।
আমি রাত্রে উঠে উযূ করলাম এবং সামর্থ্যমত নামায পড়লাম। নামাযের মধ্যে আমি তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়লাম। অতঃপর আমি ঘুমিয়ে পড়লাম, এমন সময় আমি আমার বারাকাতময় প্রভুকে খুব সুন্দর অবস্থায় (স্বপ্নে) দেখতে পেলাম। তিনি বললেন, হে মুহাম্মাদ। আমি বললামঃ প্ৰভু! আমি উপস্থিত। তিনি বললেন, উর্ধ্বজগতের অধিবাসীগণ (শীর্ষস্থানীয় ফেরেশতাগণ) কি ব্যাপারে বিতর্ক করছে? আমি বললামঃ প্ৰভু! আমি জানি না। আল্লাহ তা'আলা এ কথা তিনবার বললেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমি তাকে দেখলাম যে, তিনি তার হাতের তালু আমার দুই কাঁধের মাঝখানে রাখলেন। আমি আমার বক্ষস্থলে তার হাতের আঙ্গুলের শীতলতা অনুভব করলাম। ফলে প্রতিটি জিনিস আমার নিকট আলোকোদ্ভাসিত হয়ে উঠল এবং আমি তা জানতে পারলাম। আল্লাহ তা'আলা বললেন, হে মুহাম্মাদ! আমি বললামঃ প্ৰভু! আমি আপনার নিকট হাযির। তিনি বললেন, উর্ধ্বজগতের বাসিন্দাগণ কি ব্যাপারে বিতর্ক করছে? আমি বললামঃ কাফফারাত প্রসঙ্গে (তারা বিতর্ক করছে)।
তিনি বলেন, সেগুলো কি? আমি বললামঃ হেঁটে সালাতের জামা'আতসমূহে হাযির হওয়া, নামাযের পর মসজিদে বসে থাকা এবং কষ্টকর অবস্থায়ও উত্তমরূপে উযূ করা। তিনি বললেন, তারপর কি ব্যাপারে (তারা বিতর্ক করেছে)? আমি বললামঃ খাদ্যপ্রার্থীকে আহার্যদান, নম্রতার সাথে কথা বলা এবং রাতে মানুষ যখন ঘুমিয়ে পড়ে সেই সময় সালাত আদায় করা প্রসঙ্গে।
আল্লাহ তা'আলা বললেন, তুমি কিছু চাও, বলঃ “হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে ভাল ও কল্যাণকর কাজ সম্পাদনের, মন্দ কাজসমূহ বর্জনের, দরিদ্রজনদের ভালবাসার তাওফীক চাই, তুমি আমায় ক্ষমা কর ও দয়া কর। তুমি যখন কোন গোত্রকে বিপদে ফেলার ইচ্ছা কর তখন তুমি আমাকে বিপদমুক্ত রেখে তোমার কাছে তুলে নিও। আমি প্রার্থনা করি তোমার ভালবাসা, যে তোমায় ভালবাসে তার ভালবাসা এবং এমন কাজের ভালবাসা যা তোমার ভালবাসার নিকটবর্তী করে দেয়।” রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ স্বপ্লটি অবশ্যই সত্য। অতএব তা পড়, তারপর তা শিখে নাও।(তিরমিযি-৩২৩৫)এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/33785


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...