আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
77 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম উস্তায।

উস্তায আমি এক মহিলার ক্লাস ৫ এর মেয়েকে আরবি পড়াতে শুরু করি জানুয়ারির ১৪ তারিখ থেকে, যার বেতন ৫০০ টাকা । আর ২০ তারিখ থেকে বাংলা পড়ানো শুরু করি,যার বেতন ১০০০ টাকা।

আর তার আরেক মেয়ে ক্লাস ১০ এ পড়ে, সেই মেয়েকে একটা সাবজেক্ট পড়ানো শুরু করি ফেব্রুয়ারির ৪ তারিখ যার বেতন ১০০০ টাকা আর আরেকটা সাব্জেক্ট ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে পড়ানো শুরু করি যার বেতন ১০০০ টাকা। (মানে দুই মেয়ের মোট বেতন দেবেন ২৫০০ টাকা)

তো ঐ স্টুডেন্টের মা মার্চ এর ১ তারিখে বেতন দেয় ক্লাস ৫ এর মেয়ের বাংলার জন্য ১০০০ আর আরবির জন্য ৫০০। আর ক্লাস ১০ এর মেয়ের জন্য ১০০০। মানে টোটাল ২৫০০ টাকা।

আর এপ্রিলের খুব সম্ভবত ৯ তারিখে ও দুই মেয়ের জন্য ঐ একই ২৫০০ বেতন দেয়। আমার তার সেই "বেতন দেওয়ার তারিখ" টা মনে নেই। খুব সম্ভবত ৯ তারিখ, তবে এর আগেও হতে পারে বা পরেও হতে পারে, আমার মনে নেই।

কিন্তু সেই ৯ তারিখে বেতন দিতে এসে কথা কাটাকাটি হয় আমার তার সাথে। কথা কাটাকাটির কারণ হচ্ছে— আমি উনাকে বলি যে, "আন্টি আপনার ক্লাস ৫ এর মেয়ে ২০ জানুয়ারি থেকে বাংলা শুরু করে আর জানুয়ারির ১৫ তারিখ থেকে আরবি শুরু করে।" তো এই বেতন টা দিয়েন।

কিন্তু সেই আন্টি অস্বীকার করে বলেন যে, "২০ ফেব্রুয়ারি না, তার মেয়ে ১ মার্চ থেকে বাংলা শুরু করে, আর ফেব্রুয়ারি মাসে একদিন এসেছিল শুধু ইংরেজি পড়ার জন্য, তবে আর আসেনি। আর আরবির বিষয়ে নাকি আমার অভিভাবক তাকে বলেছে, সেই জানুয়ারি মাসে ফ্রী পড়ায়া দিব।
আমার অভিভাবক এটা শুনে ঐ মহিলার সামনেই অস্বীকার করে বলেন যে, "উনি ইংরেজি পড়া ফ্রী এর কথা বলেছিলেন, আরবি না। তবে আমার অভিভাবক সাথে এটাও বলেন "ভাবি আমার সঠিক মনে নেই। তবে আমার যতটুকু মনে পড়ছে আমি এটা বলিনি যে আরবি ফ্রী, আমি বলেছি ইংরেজি ফ্রী।"
আর উস্তায ওর সাথে আরেকটা মেয়ে আরবি পড়ত, সেই মেয়েও  জানুয়ারি মাসে বেতন দিয়েই পড়েছে। এবং এখনো আমার কাছে বেতন দিয়েই পড়তেছে।

আর উস্তায বাকি রইলো, সেই মহিলার মেয়ে নাকি জানুয়ারির ২০ তারিখ থেকে বাংলা শুরু করেনি,শুরু করেছে ১ মার্চ থেকে। কিন্তু উস্তায আমি প্রায় সিওর যে তার মেয়ে ২০ তারিখ থেকেই রেগুলার পড়া শুরু করে "বাংলা"। তবে আল্লাহ ই ভালো জানেন,আমার ভুল ও হতে পারে।
তো ঐ মহিলা যেদিন এপ্রিলের ৯ তারিখ(সম্ভাব্য তারিখ) বেতন দিতে আসে সেদিন এই বেতন দেওয়া অস্বীকার করলে, আমি বলি যে, "আন্টি এ টাকা না দিলে তো আমার হক্ক না দেওয়া হবে"। তো তিনি খারাপ ব্যবহার করেন আমার সাথে। আর আমার সম্মানে লাগার কারণে সেই মহিলা যাওয়ার পর, তার যেই ক্লাস ৫ এর মেয়েকে পড়াচ্ছিলাম সে সময়, সেই মেয়েকে বলে দেই যে "তুমি আর তোমার বোন কাল থেকে আর পড়তে আসবেনা। আর তোমাদের জানুয়ারি মাসের কোনো টাকা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। আমি টাকা নিব না। জোর করে আমাকে টাকা দিলেও, সেই টাকা মসজিদে দান করে দিব। (এখন পরবর্তীতে সেই মহিলার ক্লাস ৫ এর মেয়ে সেই মহিলাকে টাকা না দেওয়ার কথা বলেছে কিনা, আমার সেটা জানা নেই।)

তো উস্তায পরবর্তীতে সেই মহিলা আমার অভিভাবককে ৫০০ টাকা দেয়। এবং আমি সেটা নিয়ে মসজিদে দান করে দেই এই নিয়তে যে, " যে সত্য আল্লাহ যেন তার কাছেই সেই টাকার সাওয়াব দেয়"।

(১) এখন উস্তায আমার প্রশ্ন হচ্ছে, এইযে তার মেয়েকে বলেছিলাম টাকা না দিতে, কিন্তু সেই মহিলা তাও টাকা দিয়ে গেছে, এবং আমি ঐ নিয়তে দান করে দিয়েছি। এটা ঠিক আছে কিনা? আমার কি গুনাহ হয়েছে? নাকি  উস্তায এইযে দান করে দিয়েছি ৫০০ টাকা,এই দান করার পরেও আবার ও তাকে ৫০০ টাকা ফেরত দিব? (মানে আমি তো ঐ মহিলার মেয়েকে না করে দিয়েছিলাম যে টাকা নিব না আমি, তোমাদেরদিতে হবে না। দিলেও আমি সেটা দান করে দিব, এবং তারপর ও সেই মহিলা আমার অভিভাবককে টাকা দিয়ে গেছে। এবং আমি সেই ৫০০ টাকা দান ও করে দিয়েছি। তারপরেও কি তাকে এই ৫০০ টাকা আবার ও আমাকে তাদের দিতে হবে নিজের পকেট থেকে? আমি সঠিক জানিনা সেই মহিলার মেয়ে সেই মহিলাকে বলেছে কিনা যে আমি দিতে না করেছি।)

(২) আর আরেকটা প্রশ্ন হচ্ছে— এইযে এপ্রিলের ৯ তারিখে (সম্ভাব্য তারিখ) যে বেতন দিয়ে গেল, কিন্তু উপরে বলেছি যে, তার ক্লাস ১০ এর মেয়ে একটা সাব্জেক্ট শুরু করে ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে। তাহলে হিসাব করলে দেখা যায় ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ মার্চ এর বেতন সেই মহিলা দিছে। আর ১৫ মার্চ থেকে ১৫ এপ্রিলের বেতন ও দিয়েছে।

কিন্তু এখন কথা হচ্ছে, এপ্রিল মাস তো শেষ হয়নি। তার আগেই বেতন দিয়েছে বড় মেয়ের। কিন্তু আমি না করে দেই পড়ানোর কথা ৯ তারিখেই (সম্ভাব্য সে বেতন দিয়েছে এমন তারিখ)।

তাহলে এখন কি আমি সেই মহিলাকে ডেকে নিয়ে টাকা ফেরত দেবো? সেই মহিলা অবশ্য টাকা চায়নি। মাস শেষ ভেবে টাকা দিয়ে গেছে। তার হয়তো মনে নেই, যে তার এক মেয়ে ১৫ তারিখ থেকে পড়া শুরু করেছিল।

আসলে উস্তায আমার সঠিক মনে নেই যে সেই মহিলা এপ্রিলের কয় তারিখ বেতন দিয়ে গেছে। এখন আমি কি তাকে টাকা ফেরত দিব অর্ধেক মাসের, মানে ৫০০ টাকা কি ফেরত দিব? পুরো মাসের বেতন হচ্ছে ১০০০, তো তার মেয়ে ওদিকে ১৫ দিন পড়েছে আর এদিকে ৮ দিনের মতো। তাহলে কত দিব?
৯ তারিখ হিসেব করে দিব নাকি পুরো অর্ধেক মাসের ই বেতন মানে ৫০০ টাকা ফেরত দিব? কিন্তু আমার অভভাবক বলছেন তিনি খুব সম্ভবত ৫০০ টাকা নেবেন না, আর এর পরিবর্তন আবার ও খারাপ ব্যবহার করতে পারেন । তো এখন করণীয় কী? ৫০০ টাকা দান করে দিব,এবং পরে উনাকে কল করে ভালো মন্দ খোঁজ নিয়ে জানিয়ে দেব যে, ৫০০ টাকা আপনার জন্য দান করে দিয়েছি।মনে কিছু রাখিয়েন না।?

1 Answer

0 votes
by (656,190 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
অন্যর মাল তার অন্তরের সন্তুষ্টি ব্যতীত কারো জন্য হালাল হয় না। কেননা আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍْ ﻻَ ﺗَﺄْﻛُﻠُﻮﺍْ ﺃَﻣْﻮَﺍﻟَﻜُﻢْ ﺑَﻴْﻨَﻜُﻢْ ﺑِﺎﻟْﺒَﺎﻃِﻞِ ﺇِﻻَّ ﺃَﻥ ﺗَﻜُﻮﻥَ ﺗِﺠَﺎﺭَﺓً ﻋَﻦ ﺗَﺮَﺍﺽٍ ﻣِّﻨﻜُﻢْ ﻭَﻻَ ﺗَﻘْﺘُﻠُﻮﺍْ ﺃَﻧﻔُﺴَﻜُﻢْ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠّﻪَ ﻛَﺎﻥَ ﺑِﻜُﻢْ ﺭَﺣِﻴﻤًﺎ
হে ঈমানদারগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না। কেবলমাত্র তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করা হয় তা বৈধ। আর তোমরা নিজেদের কাউকে হত্যা করো না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা’আলা তোমাদের প্রতি দয়ালু। (সূরা নিসা(২৯)

এবং হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত,
عن ابن عباس قال;قال رسول اللّٰه صلى اللّٰه عليه و سلم ﻻ ﻳﺤﻞ ﻣﺎﻝ ﺍﻣﺮﺉ ﻣﺴﻠﻢ ﺇﻻ ﺑﻄﻴﺐ ﻧﻔﺲ ﻣﻨﻪ " 
নবী কারীম সাঃ বলেনঃ"কোন মুসলমানের জন্য  অন্য কোনো মুসলমানের মাল তার অন্তরের সন্তুষ্টি ব্যতীত হালাল হবে না। (তালখিসুল হাবীর-১২৪৯)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
সামান্য টাকার জন্য ঝগড়া না বাধানো উচিত ছিলো, যাইহোক আপনি যদি নিশ্চিত না হন যে, ২০ তারিখ পড়া শুরু করেছিলেন কি না? তাহলে সেই টাকা তার মালিককে ফিরিয়ে দিবেন।সদকাহ করলে হক আদায় হবে না। হ্যা, ফিরিয়ে দেয়া অসম্ভব হলে, তখন সদকাহ করা যাবে।

(২) জ্বী, যেহেতু পড়াবেন না ,  তাই ঐ টাকাটা ফিরিয়ে দিয়ে দিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...