আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
25 views
in পবিত্রতা (Purity) by (9 points)
আসসালামু আলাইকুম। প্রথমেই আমি বলতে চাই, Ifatwa এবং IOM এ ভর্তি হওয়া আমার জীবনে আল্লাহর রহমত গুলোর মধ্যে দুইটি রহমত। আগে বিভিন্ন কারণে লজ্জায় অনেক মাসআলা জানতে পারতাম না কাউকে বলতেও মনে হতো আমি পাগলামি করছি কিন্তু ইসলাম যে কতো সহজ তা হয়ত ভাবি নাই। এখানে আমি অনেক প্রশ্নই করার আগে আলহামদুলিল্লাহ্ উত্তর পেয়ে যাই এবং সে হিসাবে আমল করি। বিশেষ জরুরি হলে প্রশ্ন করি।
আমার সমস্যাটা হচ্ছে,

অনেক সময় একবার পেশাব করলেই ক্লিয়ার হয়ে যায়। এরপরে কাপড় পরতে নিলে বা ওযু করতে নিলে বা ওযু করে এসে নামাজে দাঁড়াতে গেলে মনে হয় পেশাব এসে পড়ছে। তখন কখনও কখনও আসলেই এসে পড়ে আবার কখনও না। এমতাবস্থায় শিউর হওয়ার জন্য আমি আরেকটু অপেক্ষা করে আবার পেশাব করি। তখনও প্রথমবারে যা যা হইছে এমন হইলে পরে আমি আবার কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে আবার  পেশাব করি। এখন ৩/৪ বার এমন করলে স্বাভাবিকভাবে পেশাব ক্লিয়ার থাকেনা/ক্লিয়ার হয়না, তখন উঠে ওযু বা নামাজ পড়তে গেলেও আসলেই পেশাব এসে পড়ে এটা শিউর। সন্দেহ হলেও কিছু করার নেই কারণ নামাজের সময়ও তো কমতে থাকে এতক্ষণ লেইট করলে।
এখন আমার প্রশ্ন হলো, ১/এরকম অবস্থায় নামাজ পড়লে কি সেটা মাযুর হিসাবে ধরা হবে? (তবে শুরু থেকে আমার এ সমস্যাটা ছিল কি ছিলনা সেটা আমি শিউর না।)

২/ দ্বিতীয় প্রশ্ন হচ্ছে একবার পেশাব করলে পরে এরপর আমার পেশাব আসুক না আসুক এ অবস্থায় (সন্দেহ হলেও বা পেশাব আসলেও) আমি ওযু করে নামাজ পড়ে নিলে হবে কি?

৩/ প্রথমবার পেশাব করার পর যখন আবার সন্দেহ হয় তখন যদি সত্যিকার ভাবে পেশাব এসেই থাকে তাহলে কি তা মাযুর হিসাবে গণ্য হবে? নাকি আমি আবার বাথরুমে যাবো? (এভাবে বাথরুমে একবার গেলে বারবার একই সমস্যা হতে থাকে এবং দেরি হতে হতে আস্তাগফিরুল্লাহ নামাজ তরকের পর্যায়ে চলে যায়)
আমি প্রশ্নগুলোর উত্তর পাবার আগেই ইনশাআল্লাহ ইশার নামাজ পড়তে যাবো। তখন আমি একবার বাথরুম করার পরই ওযু করে নামাজ আদায় করে নিবো, সন্দেহ হোক বা আসলেই পেশাব আসুক। তাহলে আমার নামাজ হবে কিনা..?
আপনারা যে সময় নিয়ে উত্তর দিবেন আল্লাহ আপনাদেরকে এর উত্তম বদলা দান করুক। আমার অনেক বড় সাহায্য হবে এগুলোর উত্তর পেলে। আপনারা দ্বীনের চিকিৎসক, আপনাদের প্রেসক্রিপশন ছাড়া আমরা যে অসহায়। আল্লাহ আপনাদের হায়াতে বরকত দিন। আমীন।

1 Answer

0 votes
by (623,190 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

কোনো অসুস্থ ব্যক্তি শরয়ীভাবে মা'যুর প্রমাণিত হওয়ার জন্য শর্ত হলো,

شرط ثبوت العذر ابتداء أن يستوعب استمراره وقت الصلاة كاملا وهو الأظهر كالانقطاع لا يثبت ما لم يستوعب الوقت كله-

শরয়ীভাবে মা'যুর প্রমাণিত হওয়ার জন্য কোনো নামাযের শুরু থেকে শেষ ওয়াক্ত পর্যন্ত উযর স্থায়ী থাকা শর্ত।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৪০)

কোনো ব্যাক্তি মা'যুর প্রমানিত হয়ে যাওয়ার পর পরবর্তী ওয়াক্ত গুলোতে পুরো সময় উক্ত ওযর পাওয়া জরুরি নয়,বরং পরবর্তী প্রতি ওয়াক্তে এক বারও যদি উক্ত ওযর পাওয়া যায়,তাহলে সে মা'যুরই থাকবে।   
,
সুতরাং যদি কোনো একটি নামাযের শুরু থেকে নিয়ে শেষ পর্যন্ত তথা  সম্পূর্ণ ওয়াক্ত আপনার এমনভাবে অতিবাহিত হয় যে,উক্ত সমস্যা বন্ধ না হয়,বরং চলতেই থাকে,এই উযরের কারণে অল্প সময়ে ছোট সুরা দিয়ে হলেও ফরয নামায পড়া আপনার জন্য কোনোভাবেই সম্ভবপর না হয়,তাহলে আপনি মা'যুর। 
আপনি প্রতি ওয়াক্তের জন্য অযু করবেন,এই অযু দিয়ে উক্ত ওয়াক্তের মধ্যে যত ইচ্ছা নামাজ আদায় করতে পারবেন।
(যদি অন্য কোনো অযু ভঙ্গকারী কিছু না পাওয়া যায়।)
,
পরবর্তী ওয়াক্তে আবার অযু করবেন
,
আর যদি আপনার ওযরটি এমন না হয়,তাহলে আপনি শরয়ী ভাবে মা'যুর প্রমাণিত হবেন না।

বিস্তারিত জানুনঃ  

মা'যুরের বিধান ইস্তেহাজা গ্রস্থ নারীর ন্যায়।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ أَبِي ثَابِتٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ جَاءَتْ فَاطِمَةُ بِنْتُ أَبِي حُبَيْشٍ إِلَى النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم فَذَكَرَ خَبَرَهَا وَقَالَ " ثُمَّ اغْتَسِلِي ثُمَّ تَوَضَّئِي لِكُلِّ صَلَاةٍ وَصَلِّي "

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, ফাতিমাহ বিনতু আবূ হুবাইশ রাযিয়াল্লাহু ‘আনহা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে তার ঘটনা বর্ণনা করলে তিনি বললেনঃ তারপর গোসল করবে এবং প্রত্যেক সলাতের জন্য অযু করে সলাত আদায় করবে।
(আবু দাউদ ২৯৮.ইবনু মাজাহ (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ ঋতুবতী নারীর হায়িযের ইদ্দত পূর্ণ হওয়ার পর রক্ত নির্গত হওয়া প্রসঙ্গে, হাঃ ৬২৪), আহমাদ (৬/৪২, ২৬২)

حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ أَيُّوبَ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا أَبُو بِشْرٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، أَنَّ أُمَّ حَبِيبَةَ بِنْتَ جَحْشٍ، اسْتُحِيضَتْ فَأَمَرَهَا النَّبِيُّ صلي الله عليه وسلم أَنْ تَنْتَظِرَ أَيَّامَ أَقْرَائِهَا ثُمَّ تَغْتَسِلُ وَتُصَلِّي فَإِنْ رَأَتْ شَيْئًا مِنْ ذَلِكَ تَوَضَّأَتْ وَصَلَّتْ

‘ইকরিমাহ (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, উম্মু হাবীবাহ বিনতু জাহশের ইস্তিহাযা হলো। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে হায়িযের দিনসমূহে (সলাত ইত্যাদির জন্য) অপেক্ষা করার পর গোসল করে সলাত আদায় করার নির্দেশ দিলেন। অতঃপর অযু করে এক ওয়াক্ত সলাত আদায়ের পর রক্ত দেখা গেলে পরের ওয়াক্তের জন্য পুনরায় অযু করে সলাত আদায় করতে বললেন।
(আবু দাউদ ৩০৫)

আরো জানুনঃ 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনি মা'যুর নন।

(০২)
এক্ষেত্রে পেশাব না আসলে নামাজ হবে।
পেশাব আসলে নামাজ হবেনা।

সুতরাং প্রবল ধারণা হওয়া মাত্র চেক করে পেশাব পেলে পাক হয়ে অযু করে এসে বাকি নামাজ আদায় করবেন।

প্রবল ধারণা না হলে নামাজের পর চেক করবেন। পেশাব পেলে সেক্ষেত্রে সেই নামাজ পুনরায় আদায় করতে হবে।
আর পেশাব না পেলে পুনরায় সেই নামাজ আদায় করতে হবেনা।

(০৩)
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনি মা'যুর নন।

আপনার প্রতি পরামর্শ, আপনি নামাজের আগে ইস্তিঞ্জা করবেননা।

নামাজের পর ইস্তুিঞ্জা করবেন।
নামাজের জন্য আলাদা পাক কাপড় রাখবেন,যেটি শুধুমাত্র নামাজের সময় পরিধান করবেন।

তাহলে আশা করি কোনো সমস্যা হবেনা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 198 views
...