আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
18 views
ago in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (18 points)

আসসালামু আলাইকুম, শাইখ।

আমার কিছু প্রশ্ন ছিল, যদি উত্তর দিতেন তবে আমি উপকৃত হতাম।

প্রশ্ন ১:

কিছুদিন আগে আমার স্ত্রীর হায়েয শেষ হয়েছে। শেষ দিনে কোনো রক্তপাত হয়নি। ওই সময় আমি খুব উত্তেজিত অবস্থায় ছিলাম। পরে তিনি গোসল করেন, তবে মাথার চুল না খুলেই কেবল মাথায় পানি ঢেলেছেন এবং ভুলবশত নাকে পানি দেওয়া হয়নি। মোটামুটি সব নিয়ম মানা হয়েছে। এরপর আমরা দাম্পত্য সম্পর্কে মিলিত হই।

এখন জানতে চাচ্ছি, যেহেতু নাকে পানি দেওয়া হয়নি, এই কারণে কি আমাদের কোনো গুনাহ হয়েছে? কিংবা এই অবস্থায় আমাদের সহবাস করা কি শুদ্ধ হয়েছে? যদি ভুল হয়ে থাকে, তাহলে এখন আমাদের করণীয় কী?


প্রশ্ন ২:

আমার খালা ও তার পরিবার হজে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন (খালা, খালু, খালাতো ভাই, খালাতো বোন এবং খালার শাশুড়ি – যিনি আমার মায়ের আপন খালা)। জানতে চাই, আমার মা কি তাদের সঙ্গেই হজে যেতে পারবেন?


প্রশ্ন ৩:

কিছুদিন আগে আমরা এখান থেকে তিন দিনের তাবলিগ জামাতে গিয়েছিলাম, প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে, মস্তুরাতসহ। আমরা একটি ভাইয়ের পরিবারের (ওই ভাই, তার স্ত্রী ও মেয়ে) সঙ্গে প্রাইভেট গাড়িতে গিয়েছিলাম। তাঁদের সঙ্গে আরেক ভাইয়ের স্ত্রীও ছিলেন, যিনি তাঁর স্বামীর গাড়িতে যেতে পারেননি আসন সংকটের কারণে। ওই ভাই আবার আরও কিছু ভাই ও তাঁদের স্ত্রীদেরও নিয়ে গিয়েছিলেন, যাদের নিজস্ব গাড়ি ছিল না।

জানতে চাই, এভাবে ভিন্ন ভিন্ন পরিবারের নারীদের (যাঁদের মাহরাম সঙ্গে নেই) একই গাড়িতে ভ্রমণ করা এবং দূরবর্তী সফর করা শরিয়তের দৃষ্টিতে সঠিক হয়েছে কি না?


প্রশ্ন ৪:

আমি জানি, কারো অনুমতি ছাড়া তাদের ঘরের ভেতর তাকানো জায়েজ নয়। কিন্তু আমাদের জানালা দিয়ে অনেকের ঘর দেখা যায়। অনিচ্ছাকৃতভাবে মাঝেমধ্যে আমার দৃষ্টি সেদিকে চলে যায়, যদিও আমি সঙ্গে সঙ্গে চোখ ফিরিয়ে নিই এবং ইস্তিগফার করি।

এই অবস্থায় কি আমার গুনাহ হবে? আমি কী করতে পারি?


প্রশ্ন ৫:

অনেক সময় রাস্তার পাশে বা কোনো বাগানে (যার নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তিগত মালিকানা নেই) ফুল বা ফল দেখা যায়। এ ধরনের স্থান থেকে ফুল ছেঁড়া বা ফল নেওয়া কি জায়েজ?


প্রশ্ন ৬:

আমি যে স্থানে থাকি, তার আশপাশে কোনো মসজিদ নেই। তাই আমরা জুমার নামাজের জন্য একটি ভাড়া করা জায়গায় জামাত করি এবং এর জন্য কিছু খরচ হয়। আমি কি এই খরচে সদকার নিয়তে দান করতে পারি?

আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে নামাজের একটি নির্ধারিত স্থান আছে (যদিও তা মসজিদ নয় এবং সেখানে অন্য ধর্মাবলম্বীরাও প্রবেশ করতে পারেন)। সেখানে নামাজ পড়ার জন্য কিছু জিনিসপত্র কেনা প্রয়োজন। আমি কি এ উদ্দেশ্যে সদকার নিয়তে টাকা দিতে পারব?


জাযাকাল্লাহু খইরান

1 Answer

0 votes
ago by (623,190 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
সুরা বাকারার ২২২ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

২:২২২ وَ یَسۡـَٔلُوۡنَکَ عَنِ الۡمَحِیۡضِ ؕ قُلۡ هُوَ اَذًی ۙ فَاعۡتَزِلُوا النِّسَآءَ فِی الۡمَحِیۡضِ ۙ وَ لَا تَقۡرَبُوۡهُنَّ حَتّٰی یَطۡهُرۡنَ ۚ فَاِذَا تَطَهَّرۡنَ فَاۡتُوۡهُنَّ مِنۡ حَیۡثُ اَمَرَکُمُ اللّٰهُ ؕ اِنَّ اللّٰهَ یُحِبُّ التَّوَّابِیۡنَ وَ یُحِبُّ الۡمُتَطَهِّرِیۡنَ ﴿۲۲۲﴾

আর তারা তোমাকে হায়েয সম্পর্কে প্রশ্ন করে। বল, তা কষ্ট। সুতরাং তোমরা হায়েযকালে স্ত্রীদের থেকে দূরে থাক এবং তারা পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত তাদের নিকটবর্তী হয়ো না। অতঃপর যখন তারা পবিত্র হবে তখন তাদের নিকট আস, যেভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন। নিশ্চয় আল্লাহ তাওবাকারীদেরকে ভালবাসেন এবং ভালবাসেন অধিক পবিত্রতা অর্জনকারীদেরকে। 

রক্ত বন্ধ হওয়ার পর গোসল করে পবিত্র হয়। দ্বিতীয় অর্থানুযায়ী স্ত্রী যতক্ষণ না গোসল করেছে, ততক্ষণ পর্যন্ত তার সাথে সহবাস করা হারাম থাকবে। ইমাম শাওকানী এটাকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। (ফাতহুল ক্বাদীর) আমাদের নিকট দু’টোই আমলযোগ্য, তবে দ্বিতীয়টি প্রাধান্য পাওয়ার অধিক যোগ্য।
,
যখন রক্ত আসা বন্ধ হয়। অর্থাৎ, গোসল ছাড়াই সে পবিত্র হয়ে যাবে। এমতাবস্থায় পুরুষের জন্য তার সাথে (গোসলের পূর্বে) সহবাস করা জায়েয। ইবনে হায্ম এবং অন্য কিছু ইমামগণ এরই সমর্থক। আল্লামা আলবানীও এই মতের সমর্থন করেছেন। (আদাবুয্ যিফাফ ৪৭ পৃষ্ঠা)
,
হায়েজের সর্বোচ্চ সীমা ১০ দিনের মাথায় এসে যদি হায়েজ বন্ধ হয়,তাহলে গোসল ব্যাতিতই সহবাস জায়েজ আছে।
তবে সহবাস গোসল করার পরেই উত্তম।
আর যদি ইহার কম সময়ে হায়েজ বন্ধ হয়ে যায়,তাহলে গোসল করার পর সহবাস জায়েজ আছে।
অথবা এতটুকু সময় অপেক্ষা করবে,যার মধ্যে গোসল করে কাপড় পরিধান করে নামাজ শুরু করতে পারে। বা হায়েজে শেষ হওয়ার পর  নামাজের ওয়াক্ত চলে যায়,আর নামাজ তার যিম্মায় লাযেম তথা আবশ্যকীয় হয়ে যায়।
(ফাতাওয়ায়ে দারুল উলুম দেওবন্দ ১/২১১)

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নের বিবরন মতে উক্ত সহবাসের দরুন আপনাদের গুনাহ হয়নি।

(০২)
যেহেতু এই সফরের আপনার মায়ের মাহরাম হিসেবে তার ভাগিনা (বোনের ছেলে) রয়েছে,সুতরাং এক্ষেত্রে আপনার মায়ের ভাগিনা বালেগ হয়ে থাকলে তার সাথে হজ্বে যাওয়া আপনার মায়ের জন্য জায়েজ আছে।

(০৩)
এভাবে সফরের দূরত্বে মাহরাম পুরুষ ছাড়া ঐ সমস্ত নারীদের মাস্তুরাত জামাতে যাওয়াতে তাদের গুনাহ হয়েছে, তবে আপনাদের গুনাহ হয়নি।

সেই সফরে আপনাদের সাথে গাড়িতে সফর করাতেও তাদের গুনাহ হয়েছে, আপনাদের কোন গুনাহ হয়নি।

(০৪)
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার গুনাহ হবেনা।
করনীয় হলো দেখা মাত্র চোখ ফিরিয়ে নিতে হবে।

বিনা প্রয়োজনে জানালার পার্শে না যাওয়ার চেষ্টা করবেন।

(০৫)
জায়েজ নেই।
তবে সেই জায়গা ও গাছ যদি সরকারী হয়,আর সরকার বা সরকারের দায়িত্বশীল ব্যাক্তি যদি এভাবে ফল/ফুল নেয়াতে অনুমতি 
দেয়,তাহলে নেয়া যাবে।

(০৬)
নফল সদকার নিয়তে দান করতে পারবেন।

ফরজ ওয়াজিব সদকাহ যেমন যাকাত,সদকায়ে ফিতর,মান্নত ইত্যাদি নিয়তে দান করতে পারবেননা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...