আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
52 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (11 points)
আমি এতদিন জানতাম ইসলামে ট্রান্সজেন্ডার সহ সকল প্রকার নারীর বেশধারী পুরুষ এবং vise versa নিষিদ্ধ। কিন্তু আজ চ্যাটজিপিটিকে জিজ্ঞেস করে এটা পেলাম৷
|
|

"মুখান্নাছদের ব্যাপারে চার মাজহাবের ঐতিহ্যগত অবস্থান
মুখান্নাছ কাদের বলা হয়?
ইবনে হাজার আসকালানী (রহ.) বলেন:
"মুখান্নাছ দুই ধরণের — এক, যাদের এই বৈশিষ্ট্য প্রকৃতিগত; দুই, যারা ইচ্ছাকৃতভাবে মেয়েলি আচরণ করে বা নারীর মতো পোশাক পরিধান করে।"
(ফতহুল বারি, 10/260)

প্রকৃতিগত মুখান্নাছদের প্রতি আচরণ
১. স্বভাবগত মুখান্নাছদের প্রতি কঠোরতা নেই
এমন মুখান্নাছ যারা জন্মগতভাবে বা প্রকৃতিগতভাবে মেয়েলি স্বভাবের, এবং যারা নারীর মতো আচরণ করে না ইচ্ছাকৃতভাবে, বরং তাদের স্বভাব এমন — তাদের প্রতি নবী (সা.) প্রথমে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেননি। তারা নবীজির ঘরেও যাতায়াত করতেন।

→ এই অবস্থায় নবী (সা.) কেবল তখন নিষেধ করেন, যখন তাদের মধ্য থেকে একজন নারীদের দেহ নিয়ে আলোচনা করে এবং গোপন কথা বুঝতে পারে — তখন রাসূল (সা.) বলেন:

"এদেরকে তোমরা তোমাদের ঘরে প্রবেশ করতে দিও না।"
(সহীহ বুখারী, 5235)

হাদীস ব্যাখ্যায় ইমাম নববী (রহ.) বলেন:

"যদি এমন মুখান্নাছ হয় যে নারীদের প্রতি আগ্রহ নেই, তাহলে তার প্রবেশে আপত্তি নেই, যতক্ষণ না সে অশ্লীলতা বা গোপন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে।"
(শরহ মুসলিম, 14/163)
তাদেরকে শাস্তি দেওয়া হয়নি
নবী (সা.) বা সাহাবাদের যুগে প্রকৃতিগত মুখান্নাছদের শরিয়ত দণ্ড বা হাদ দেওয়া হয়নি, বরং তাদের কার্যকলাপ সীমাবদ্ধ করা হয়েছে শুধুমাত্র নিরাপত্তা ও পর্দার কারণে।
যাদেরকে ইসলাম কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছে
যারা ইচ্ছাকৃতভাবে নারীর মতো কথা বলে, পোশাক পরে, পুরুষ হয়েও নিজেকে নারী রূপে উপস্থাপন করে।
যারা নারীদের মাঝে প্রবেশ করে ফেতনা ছড়ায় বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নারীসুলভ আচরণ করে
এদের ব্যাপারে নবী (সা.) অভিশাপ করেছেন।"

কিন্তু আমার কেমন যেন এটা পুরোপুরি বিশ্বাস হচ্ছেনা। কেউ ভান করছে কীনা কীভাবে বোঝা যাবে? কেউ খুব ভালো অভিনেতা হলেই তাকে মেয়েদের মাঝে ঢুকতে দেয়া হবে কেন? আর এখন এই সমস্যাকে যেভাবে স্বাভাবিক করার চেষ্টা হচ্ছে এটা কি ইসলামবিরোধী নয়? আর এরকম জন্মগত সমস্যা তো হালকা পাতলা অনেকের থাকে, ঠিকও হয়ে যায়৷ এই ট্রান্স মতবাদ ছড়ানোর কারণে এখন তারাও মনের ভিতরের শয়তানকে বের করে আনছে, যে জিনিস সহজেই ঠিক করে ফেলা যেত সেটা বাড়তে দিচ্ছে অনেকে অপারেশন করে ফেলছে।
এই ব্যাপারে সত্যিকারের আলেমদের মত কী?

1 Answer

0 votes
by (629,460 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 

https://www.ifatwa.info/13536/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 

হিজড়া দুই প্রকার।
এক, মুশকিল।
দুই, গায়রে মুশকিল। 
,
হিজড়াদের ক্ষেত্রে গায়রে মুশকিল যারা,তাদের বিধান হল তাদের নারী বা পুরুষের যে কোন একটি ক্যাটাগরিতে ফেলতে হবে। রাসূল সাঃ এ ব্যাপারে একটি মূলনীতি নির্ধারণ করে দিয়েছেন। সেটা হল, দেখতে হবে হিজড়ার প্রস্রাব করার অঙ্গটি কেমন? সে কি পুরুষদের গোপনাঙ্গ দিয়ে প্রস্রাব করে? না নারীদের মত গোপনাঙ্গ দিয়ে প্রস্রাব করে? গোপনাঙ্গ যাদের মত হবে হুকুম তাদের মতই হবে। অর্থাৎ গোপনাঙ্গ যদি পুরুষালী হয়, তাহলে পুরুষ। যদি নারীর মত হয়, তাহলে নারী। আর যদি কোনটিই বুঝা না যায়। তাহলে তাকে নারী হিসেবে গণ্য করা হবে। সেই হিসেবেই তাদের উপর শরয়ী বিধান আরোপিত হবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
  
أن عليا رضي الله عنه : سئل عن المولود لا يدري أرجل أم امرأة فقال علي رضي الله عنه يورث من حيث يبول

হযরত আলী রাঃ কে এমন বাচ্চা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়, যার ছেলে বা মেয়ে হওয়া পরিস্কার নয়। তখন হযরত আলী রাঃ বললেন, সে যেভাবে পেশাব করে সে হিসেবে মিরাস পাবে। {সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-১২৯৪, কানযুল উম্মাল, হাদীস নং-৩০৪০৩, মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং-১৯২০৪}
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণিত হাদীসে আছে, জনৈক খুনসা বা হিজড়া ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রীদের কাছে আসা-যাওয়া করত। রাসূলের স্ত্রীগণ তাকে আয়াতে বর্ণিত (غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ) এর অন্তর্ভুক্ত মনে করে তার সামনে আগমন করতেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন তাকে গৃহে প্রবেশ করতে নিষেধ করে দিলেন। [দেখুন, মুসলিমঃ ২১৮০] 
,
খুনছা(হিজরা) পুরুষ নাকি মহিলা না সে খুনছা মুশকিল?তার পরিচায়ক আলামত সমূহ কি কি?এসম্পর্কে বিস্তারিত মূলনীতিমূলক আলোচনা হচ্ছে,

ﻳَﺘَﺒَﻴَّﻦُ ﺃَﻣْﺮُ ﺍﻟْﺨُﻨْﺜَﻰ ﻗَﺒْﻞ ﺍﻟْﺒُﻠُﻮﻍِ ﺑِﺎﻟْﻤَﺒَﺎﻝ، ﻭَﺫَﻟِﻚَ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﺘَّﻔْﺼِﻴﻞ ﺍﻵْﺗِﻲ : ﺫَﻫَﺐَ ﺟُﻤْﻬُﻮﺭُ ﺍﻟْﻔُﻘَﻬَﺎﺀِ ﺇِﻟَﻰ ﺃَﻥَّ ﺍﻟْﺨُﻨْﺜَﻰ ﻗَﺒْﻞ ﺍﻟْﺒُﻠُﻮﻍِ ﺇِﻥْ ﺑَﺎﻝ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺬَّﻛَﺮِ ﻓَﻐُﻼَﻡٌ، ﻭَﺇِﻥْ ﺑَﺎﻝ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻔَﺮْﺝِ ﻓَﺄُﻧْﺜَﻰ، ﻭَﺇِﻥْ ﺑَﺎﻝ ﻣِﻨْﻬُﻤَﺎ ﺟَﻤِﻴﻌًﺎ ﻓَﺎﻟْﺤُﻜْﻢُ ﻟِﻸْﺳْﺒَﻖِ، ﻭَﺇِﻥِ ﺍﺳْﺘَﻮَﻳَﺎ ﻓَﺬَﻫَﺐَ ﺍﻟْﻤَﺎﻟِﻜِﻴَّﺔُ ﻭَﺍﻟْﺤَﻨَﺎﺑِﻠَﺔُ ﻭَﺃَﺑُﻮ ﻳُﻮﺳُﻒَ ﻭَﻣُﺤَﻤَّﺪٌ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﺤَﻨَﻔِﻴَّﺔِ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻋْﺘِﺒَﺎﺭِ ﺍﻟْﻜَﺜْﺮَﺓِ، ﻭَﺣُﻜِﻲَ ﻫَﺬَﺍ ﻋَﻦِ ﺍﻷْﻭْﺯَﺍﻋِﻲِّ، ﻷِﻥَّ ﺍﻟْﻜَﺜْﺮَﺓَ ﻣَﺰِﻳَّﺔٌ ﻹِﺣْﺪَﻯ ﺍﻟْﻌَﻼَﻣَﺘَﻴْﻦِ، ﻓَﻴُﻌْﺘَﺒَﺮُ ﺑِﻬَﺎ ﻛَﺎﻟﺴَّﺒْﻖِ، ﻓَﺈِﻥِ ﺍﺳْﺘَﻮَﻳَﺎ ﻓَﻬُﻮَ ﺣِﻴﻨَﺌِﺬٍ ﻣُﺸْﻜِﻞٌ، 

ﻭَﺃَﻣَّﺎ ﺑَﻌْﺪَ ﺍﻟْﺒُﻠُﻮﻍِ ﻓَﻴَﺘَﺒَﻴَّﻦُ ﺃَﻣْﺮُﻩُ ﺑِﺄَﺣَﺪِ ﺍﻷْﺳْﺒَﺎﺏِ ﺍﻵْﺗِﻴَﺔِ :ﺇِﻥْ ﺧَﺮَﺟَﺖْ ﻟِﺤْﻴَﺘُﻪُ، ﺃَﻭْ ﺃَﻣْﻨَﻰ ﺑِﺎﻟﺬَّﻛَﺮِ، ﺃَﻭْ ﺃَﺣْﺒَﻞ ﺍﻣْﺮَﺃَﺓً، ﺃَﻭْ ﻭَﺻَﻞ ﺇِﻟَﻴْﻬَﺎ، ﻓَﺮَﺟُﻞٌ، ﻭَﻛَﺬَﻟِﻚَ ﻇُﻬُﻮﺭُ ﺍﻟﺸَّﺠَﺎﻋَﺔِ ﻭَﺍﻟْﻔُﺮُﻭﺳِﻴَّﺔِ ﻭَﻣُﺼَﺎﺑَﺮَﺓِ ﺍﻟْﻌَﺪُﻭِّ ﺩَﻟِﻴﻞٌ ﻋَﻠَﻰ ﺭُﺟُﻮﻟِﻴَّﺘِﻪِ ﻛَﻤَﺎ ﺫَﻛَﺮَﻩُ ﺍﻟﺴُّﻴُﻮﻃِﻲُّ ﻧَﻘْﻼً ﻋَﻦِ ﺍﻹْﺳْﻨَﻮِﻱِّ، ﻭَﺇِﻥْ ﻇَﻬَﺮَ ﻟَﻪُ ﺛَﺪْﻱٌ ﻭَﻧَﺰَﻝ ﻣِﻨْﻪُ ﻟَﺒَﻦٌ ﺃَﻭْ ﺣَﺎﺽَ، ﺃَﻭْ ﺃَﻣْﻜَﻦَ ﻭَﻃْﺆُﻩُ، ﻓَﺎﻣْﺮَﺃَﺓٌ ﻭَﺃَﻣَّﺎ ﺍﻟْﻮِﻻَﺩَﺓُ ﻓَﻬِﻲَ ﺗُﻔِﻴﺪُ ﺍﻟْﻘَﻄْﻊَ ﺑِﺄُﻧُﻮﺛَﺘِﻪِ، ﻭَﺗُﻘَﺪَّﻡُ ﻋَﻠَﻰ ﺟَﻤِﻴﻊِ ﺍﻟْﻌَﻼَﻣَﺎﺕِ ﺍﻟْﻤُﻌَﺎﺭِﺿَﺔِ ﻟَﻬَﺎ , ﻭَﺃَﻣَّﺎ ﺍﻟْﻤَﻴْﻞ، ﻓَﺈِﻧَّﻪُ ﻳُﺴْﺘَﺪَﻝ ﺑِﻪِ ﻋِﻨْﺪَ ﺍﻟْﻌَﺠْﺰِ ﻋَﻦِ ﺍﻷﻣَﺎﺭَﺍﺕِ ﺍﻟﺴَّﺎﺑِﻘَﺔِ، ﻓَﺈِﻥْ ﻣَﺎﻝ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﺮِّﺟَﺎﻝ ﻓَﺎﻣْﺮَﺃَﺓٌ ﻭَﺇِﻥْ ﻣَﺎﻝ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀِ ﻓَﺮَﺟُﻞٌ، ﻭَﺇِﻥْ ﻗَﺎﻝ ﺃَﻣِﻴﻞ ﺇِﻟَﻴْﻬِﻤَﺎ ﻣَﻴْﻼً ﻭَﺍﺣِﺪًﺍ، ﺃَﻭْ ﻻَ ﺃَﻣِﻴﻞ ﺇِﻟَﻰ ﻭَﺍﺣِﺪٍ ﻣِﻨْﻬُﻤَﺎ ﻓَﻤُﺸْﻜِﻞٌ , ﻗَﺎﻝ ﺍﻟﺴُّﻴُﻮﻃِﻲُّ : ﻭَﺣَﻴْﺚُ ﺃُﻃْﻠِﻖَ ﺍﻟْﺨُﻨْﺜَﻰ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻔِﻘْﻪِ، ﻓَﺎﻟْﻤُﺮَﺍﺩُ ﺑِﻪِ ﺍﻟْﻤُﺸْﻜِﻞ

ভাবার্থঃ- 

বালিগ হওয়ার পূর্বে হিজড়া সন্তান প্রস্রাবের মাধ্যমে পুঃ বা মহিলা নির্ধারিত হবে।নিম্নবর্ণিত আলোচনা লক্ষণীয়। জামহুর উলামায়ে কেরামদের মতে যদি হিজড়া সন্তান পূর্ণ বয়স্ক হওয়ার পূর্বে পুঃলিঙ্গ দিয়ে প্রস্রাব করে তাহলে সে বালক/পুরুষ।আর যদি সে স্ত্রীঃলিঙ্গ দিয়ে প্রস্রাব করে তাহলে সে নারী হিসেবে গণ্য হবে।কিন্তু যদি সে উভয়টা দিয়ে প্রস্রাব করে তাহলে সর্বাগ্রে যেটা দিয়ে প্রস্রাব বের হবে সেটার ধর্তব্য হবে।যদি দুটি থেকে একসাথে প্রস্রাব বের হয় তাহলে মালিকী ও হাম্বলী উলামায়ে কেরামসহ ইমাম আবু ইউসুফ ও ইমাম মুহাম্মদ রাহ এর মতে অধিকাংশের উপর ভিত্তি করে নারী-পুরুষ নির্ধারিত হবে।এবং ইহা ইমাম আওযায়ী রাহ থেকেও বর্ণিত আছে।কেননা দুটি আলামতের মধ্যে একটিতে অধিকাংশ সময়ে প্রস্রাব আসাটার আলাদা একটা প্রভাব অবশ্যই  রহিয়াছে।সুতরাং অধিকাংশকে অগ্রগামীর মত মূল্যায়ন করা হবে।যদি এতেও বরাবর থাকে তাহলে মুশকিল বলেই গণ্য হবে।

আর বালেগ হওয়ার পর নিম্নোক্ত আলামত সমূহের মাধ্যমে হিজড়া বিষয়টির হুকুম-আহকাম নির্ণীত হবে।যদি তার দাড়ি উঠে যায়,বা পুঃলিঙ্গ দিয়ে বীর্য বের হয় বা সে কোনো মহিলাকে গর্ভবতী করে দিতে সক্ষম হয় বা মহিলার সাথে সঙ্গম করতে সক্ষম হয়,তাহলে সে পুরুষ।ঠিকতেমনিভাবে যদি কারো কাছ থেকে সাহসিকতা,গোড়সওয়ারের যোগ্যতা ও প্রবণতা এবং শত্রুর সামনে ধর্য্য ধারণের প্রবণতা প্রকাশ পায়,তাহলেও তা তার পুরুষত্বের উপর প্রমাণ করবে।যেমন ইমাম সুয়ূতী রাহ আল্লামা ইসনাওয়ী রাহ থেকে বর্ণনা করেন।কিন্তু যদি হিজড়া সন্তার বালেগ হওয়ার পর স্তন প্রকাশ পায় এবং তার থেকে দুধ বাহির হয়,বা উক্ত মহিলা হায়েযা হয়ে যায়,এবং পুরুষ তার নির্দিষ্ট স্থানে সঙ্গম করতে সম্ভব হয়,(বা সে পুরুষের সাথে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে সঙ্গম করতে সক্ষম হয়)তাহলে সে নারী।বিশেষ করে সন্তান জন্ম দেয়া বা গর্ভধারণ করা কারো নারী হওয়ার বড় প্রমাণযদি উপরোক্ত কোনো আলামতই পাওয়া না যায়,তাহলে সর্বশেষ আকৃষ্ট প্রবণতার মাধ্যমে নারী-পুরুষ নির্ধারণ করা হবে।যদি সে পুরুষের দিকে আকৃষ্টতা অনুভব করে তাহলে সে মহিলা।আর যদি সে মহিলার দিকে আকৃষ্টতা অনুভব করে তাহলে সে পুরুষ।যদি সে নারী-পুরুষ উভয়ের দিকেই আকৃষ্ট হয় বা নারী-পুরুষ কারো দিকে আকৃষ্টতা অনুভব না করে, তাহলে সে "খুনছা মুশকিল"।ইমাম সুয়ূতী রাহ বলেন,ফেকাহর কিতাবে যেখানেই খুনছা(হিজড়া)র আলোচনা এসেছে সেখানেই খুনছা মুশকিল উদ্দেশ্য।(২০/২১)

মুশকিলঃযার প্রস্রাবের রাস্তা দুটি, যথা পুঃলিঙ্গ(যকর/penis) স্ত্রীঃলিঙ্গ(ফরয/pussy)এবং যাকে বালেগ হওয়ার পরও কোনো ভাবেই (অর্থাৎ উপরোক্ত আলামতসমূহ থেকে কোনো আলামতের মাধ্যমে)পুরুষ বা মহিলা কোনোটার আওতাভুক্ত করা যায় না।

এমন ব্যক্তি খুনছা মুশকিল বা বাস্তবিক অর্থে হিজড়া।এরকম ব্যক্তি পৃথিবীতে খুবই কম।এসব ব্যক্তি নামাযে পুরুষ-মহিলার মধ্যবর্তী স্থানে অর্থাৎ বাচ্চাদের পিছনে মহিলাদের সামনে দাড়াবে(যেখানে নারী-পুরুষের জামাতের সাথে নামায বৈধ হবে)।

এবং এরুপ ব্যক্তি কখনো বিবাহ করতে পারবে না।কেননা কোনোভাবেই বুঝা যাচ্ছেনা সে পুরুষ নাকি মহিলা।
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,  
হিজড়াদের মধ্যে যারা গায়রে মুশকিল,তাদের মধ্যে যাদের বাহ্যিক আকার আকৃতি এবং শারীরিক গঠন নারীদের মতাে হবে তাদের ক্ষেত্রে নারীদের বিধি-বিধান প্রযােজ্য হবে। পুরুষদেরকে তাদের সাথে পর্দা করতে হবে। নারীদের তাদের সামনে পর্দা করতে হবেনা। এবং তারাও অন্যান্য নারীদের মতাে পর্দাবৃত হয়ে চলাচল করবে।

“আর যারা আকার আকৃতি ও শারীরিক গঠন প্রকৃতির  দিক থেকে পুরুষের সাথে বেশী সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং বাহ্যিক অবয়বও পুরুষের মতােই তাদের সাথে পুরুষদের পর্দার প্রয়ােজন নেই।
নারীদের তাদের সামনে পর্দা করতে হবে।
,
★আর যারা মুশকিল, তাদের সামনে মহিলাদের  পর্দা করতে হবে।
,
আরো জানুনঃ 

বিস্তারিত জানুনঃ
,
দারুল উলুম দেওবন্দ এর 172320 নং ফতোয়া দ্রষ্টব্য।
,
★সুতরাং যদি উক্ত হিজড়ার মধ্যে উপরে উল্লেখিত নারী হওয়ার আলামত পাওয়া যায়,তাহলে তাদের সামনে পর্দা করতে হবেনা।
কিন্তু যদি তারা মুশকিল হয়,তাহলে পর্দা করতে হবে।

https://www.ifatwa.info/36980/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
ফাতাওয়ার কিতাবে এসেছেঃ

 وَلَا يَخْلُو الْخُنْثَى مِنْ أَنْ يَكُونَ مُشْكِلًا، أَوْ غَيْرَ مُشْكِلٍ، فَإِنْ لَمْ يَكُنْ مُشْكِلًا بِأَنْ تَظْهَرَ فِيهِ عَلَامَاتُ الرِّجَالِ، فَهُوَ رَجُلٌ لَهُ أَحْكَامُ الرِّجَالِ، أَوْ تَظْهَرَ فِيهِ عَلَامَاتُ النِّسَاءِ، فَهُوَ امْرَأَةٌ لَهُ أَحْكَامُهُنَّ وَإِنْ كَانَ مُشْكِلًا، فَلَمْ تَظْهَرْ فِيهِ عَلَامَاتُ الرِّجَالِ وَلَا النِّسَاءِ (المغنى لابن قدامة-7\208)

সারমর্ম হিজড়া যদি গায়রে মুশকিলা হয়,তাহলে পুরুষের আলামত প্রকাশ পেলে তাকে পুরুষ ধরা।
নারীর আলামত প্রকাশ পেলে তাকে নারীর হুকুম দেওয়া হবে।
আর যদি যদি পুরুষ ও নারীর কোন আলামাতই প্রাধান্য না পায়,তাহলে তাকে ফুক্বাহায়ে কেরাম ‘খুনছায়ে মুশকিল’ বলে উদ্ধৃত করেন। অর্থাৎ এমন হিজড়া যার লিঙ্গ নির্ধারণ সম্ভব নয়।

وَأَمَّا بَيَانُ مَا يُعْرَفُ بِهِ أَنَّهُ ذَكَرٌ، أَوْ أُنْثَى، فَإِنَّمَا يُعْرَفُ ذَلِكَ بِالْعَلَامَةِ، وَعَلَامَةُ الذُّكُورَةِ بَعْدَ الْبُلُوغِ نَبَاتُ اللِّحْيَةِ، وَإِمْكَانُ الْوُصُولِ إلَى النِّسَاءِ وَعَلَامَةُ الْأُنُوثَةِ فِي الْكِبَرِ نُهُودُ ثَدْيَيْنِ كَثَدْيَيْ الْمَرْأَةِ وَنُزُولُ اللَّبَنِ فِي ثَدْيَيْهِ وَالْحَيْضُ وَالْحَبَلُ، وَإِمْكَانُ الْوُصُولِ إلَيْهَا مِنْ فَرْجِهَا؛ لِأَنَّ كُلَّ وَاحِدٍ مِمَّا ذَكَرْنَا يَخْتَصُّ بِالذُّكُورَةِ وَالْأُنُوثَةِ فَكَانَتْ عَلَامَةً صَالِحَةً لِلْفَصْلِ بَيْنَ الذَّكَرِ وَالْأُنْثَى. (بدائع الصنائع، كتاب الخنثى، فصل فى بيان ما يعرف به الخنثى أنه ذكر او انثى-7\327)
সারমর্মঃ
হিজড়ার পুরুষ হবার আলামত হল, দাড়ী উঠা, নারীর সাথে সহবাস করার সক্ষমতা থাকা।
আর নারী হবার আলামত হল, স্তন উঠা, হায়েজ আসা, গর্ভধারণের ক্ষমতা থাকা, দুধ আসা, তার যৌনাঙ্গ দিয়ে সহবাস করা সম্ভম হওয়া ইত্যাদি।

উপরোক্ত আলামত প্রকাশ পায় বালেগ হবার পর। বালেগ হবার আগে পুরুষ নারী বুঝার আলামত হল, তার পেশাবের রাস্তা।
যদি পুরুষালী লিঙ্গ দিয়ে পেশাব করে তাহলে পুরুষ, আর যদি নারী লিঙ্গ দিয়ে পেশাব করে তাহলে নারী। আর যদি দু’টি দিয়েই পেশাব করে, তাহলে পেশাব আগে যে অঙ্গ দিয়ে বের হয়, সেই অঙ্গ হিসেবে নারী পুরুষ নির্ধারিত হবে। অর্থাৎ যদি পেশাব প্রথমে পুরুষাঙ্গ দিয়ে বের হয়, তাহলে পুরুষ আর যদি নারী অঙ্গ দিয়ে বের হয়, তাহলে তাকে নারী ধরা হবে।
আর যদি উভয়টা দিয়ে একই সময়ে বের হয়, তাহলে তাকে খুনছায়ে মুশকিল বলবে।

হাদিস

عَنﺍﻟْﺤَﺴَﻦُ ﺑْﻦُ ﻛَﺜِﻴﺮٍ , ﺳَﻤِﻊَ ﺃَﺑَﺎﻩُ ، ﻗَﺎﻝَ : ﺷَﻬِﺪْﺕُ ﻋَﻠِﻴًّﺎ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ، ﻓِﻲ ﺧُﻨْﺜَﻰ ، ﻗَﺎﻝَ " : ﺍﻧْﻈُﺮُﻭﺍ ﻣَﺴِﻴﻞَ ﺍﻟْﺒَﻮْﻝِ ، ﻓَﻮَﺭِّﺛُﻮﻩُ ﻣِﻨْﻪُ " 

ভাবার্থঃ-হাসান ইবনে ক্বাসির তার বাবাকে বলতে শুনেছেন,তিনি বলেনঃআমি হযরত আলী রাঃ কে দেখেছি তিনি খুনছা(হিজরা)দের বিষয়ে বলেনঃ তোমরা প্রস্রাব প্রবাহিত হওয়ার স্থান দেখে তাদেরকে (পুরুষ-মহিলা রূপে সাব্যস্ত করো এবং)ওয়ারিছ বানাও।(সুনানে বায়হাক্বী-১১৫৯১)

অন্যত্র বর্ণিত রয়েছে

ﻓﻘﺎﻝ ﻋﻠﻲ - ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ - : ﺇﻥ ﺑﺎﻝ ﻣﻦ ﻣﺠﺮﻯ ﺍﻟﺬﻛﺮ ﻓﻬﻮ ﻏﻼﻡ ، ﻭﺇﻥ ﺑﺎﻝ ﻣﻦ ﻣﺠﺮﻯ ﺍﻟﻔﺮﺝ ﻓﻬﻮ ﺟﺎﺭﻳﺔ .

হযরত আলী রাঃ বলেনঃযদি সে পুঃলিঙ্গ দিয়ে প্রস্রাব করে তাহলে সে বালক,আর যদি সে স্ত্রীঃলিঙ্গ দিয়ে প্রস্রাব করে তাহলে সে বালিকা।(আসসুনানুল কুবরা-১২১৮৬)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
যে হিজড়ার বাহ্যিক অবয়ব পুরুষের মত,(দাড়ি গজানো ইত্যাদি) তার  মৃত্যুর পর তার লাশের ক্ষেত্রে পুরুষ মাইয়েতের বিধান প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ গোসল দেয়া, কাফন পরানো, দাফন করা ও জানাযার নামাযসহ সবই পুরুষের মত করা হবে।
আর যে হিজড়ার অবয়ব নারী সদৃশ এবং তার মধ্যে মেয়েলি নিদর্শনই প্রবল তার মৃত্যুর পর  উল্লেখিত সকল ক্ষেত্রে মহিলা মাইয়্যেতের বিধান প্রযোজ্য হবে।

(কিতাবুল আছল ৯/৩২২; শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ৪/১৪৯।)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
যে হিজড়ার বাহ্যিক অবয়ব পুরুষের মত,(দাড়ি গজানো ইত্যাদি) তার  মৃত্যুর পর তার লাশের ক্ষেত্রে পুরুষ মাইয়েতের বিধান প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ গোসল দেয়া, কাফন পরানো, দাফন করা ও জানাযার নামাযসহ সবই পুরুষের মত করা হবে।
আর যে হিজড়ার অবয়ব নারী সদৃশ এবং তার মধ্যে মেয়েলি নিদর্শনই প্রবল তার মৃত্যুর পর  উল্লেখিত সকল ক্ষেত্রে মহিলা মাইয়্যেতের বিধান প্রযোজ্য হবে।

(কিতাবুল আছল ৯/৩২২; শরহু মুখতাসারিত তাহাবী ৪/১৪৯।)

তবে হিজড়া যদি মুশকিলাহ হয়,সেক্ষেত্রে বিধান ভিন্ন।
তার গোসলের বিধান হলোঃ

وَأَمَّا حُكْمُ غُسْلِهِ بَعْدَ الْمَوْتِ فَلَا يَحِلُّ لِلرَّجُلِ أَنْ يُغَسِّلَهُ لِاحْتِمَالِ أَنْ يَكُونَ أُنْثَى وَلَا يَحِلُّ لِلْمَرْأَةِ أَنْ تُغَسِّلَهُ لِاحْتِمَالِ أَنَّهُ ذَكَرٌ وَلَكِنَّهُ يُيَمَّمُ، كَانَ الْمُيَمِّمُ رَجُلًا، أَوْ امْرَأَةً، غَيْرَ أَنَّهُ إنْ كَانَ ذَا رَحِمٍ مَحْرَمٍ مِنْهُ يَمَّمَهُ مِنْ غَيْرِ خِرْقَةٍ، وَإِنْ كَانَ أَجْنَبِيًّا يَمَّمَهُ بِالْخِرْقَةِ وَيَكُفُّ بَصَرَهُ عَنْ ذِرَاعَيْهِ. (بدائع الصنائع، كتاب الخنثى، فَصْلٌ فِي حُكْمُ الْخُنْثَى الْمُشْكِلِ-7\328)

সারমর্মঃ  এই জাতীয় হিজড়া মারা গেলে পুরুষ তাকে গোসল দিতে পারবে না যেহেতু নারী হবার সম্ভাবনা আছে। নারীও দিতে পারবে না, যেহেতু পুরুষ হবার সম্ভাবনা আছে। তাই তাকে তায়াম্মুম করিয়ে দিবে। মাহরাম হলে তার হাত দিয়েই তায়াম্মুম করাবে।
আর যদি গায়রে মাহরাম তায়াম্মুম করাতে আসে, তাহলে হাতে কাপড় পেঁচিয়ে তারপর তায়াম্মুম করাবে।

তার কাফনের বিধান হলোঃ

(قَوْلُهُ وَخُنْثَى مُشْكِلٌ كَامْرَأَةٍ فِيهِ) أَيْ فَيُكَفَّنُ فِي خَمْسَةِ أَثْوَابٍ احْتِيَاطًا لِأَنَّهُ عَلَى احْتِمَالِ كَوْنِهِ ذَكَرًا فَالزِّيَادَةُ لَا تَضُرُّ قَالَ فِي النَّهْرِ إلَّا أَنَّهُ يُجَنَّبُ الْحَرِيرَ وَالْمُعَصْفَرَ وَالْمُزَعْفَرَ احْتِيَاطًا (رد المحتار، باب صلاة الجنازة-2\204)
সারমর্মঃ
নারীদের মত কাফন দেয়া হবে হিজড়ায়ে মুশকিলাহ দের।
তথা পাঁচ কাপড় দেওয়া হবে।

শরীয়তের দৃষ্টিতে  হিজরা কাদেরকে বলা হয়,হিজড়া সংক্রান্ত  বিস্তারিত জানুনঃ  

★ট্রান্সজেন্ডার করে যারা পুরুষ থেকে নারী হবে তাদের সামনে মহিলাদের পর্দা করতে হবে।

হানাফী মাযহাব সহ সকল মাযহাবের ঐক্যমতে ট্রান্সজেন্ডার কিরে লিঙ্গ পরিবর্তন করা স্পষ্ট হারাম

ট্রান্সজেন্ডার সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...