আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
36 views
in কুরবানী (Slaughtering) by (4 points)
১. ৪-৫ লক্ষ টাকার কিংবা তার অধিক টাকার স্বর্ণের মালিক হলে এবং নিজস্ব কোনো ইনকাম না থাকলে কোনো নারী কিভাবে তার যাকাত আদায় করবে?

তার পক্ষ থেকে তার বাবা কিংবা স্বামী আদায় করে দিলে উক্ত নারীর যাকাত আদায় হবে?

২. বছরের যেই তারিখে স্বর্ণের মালিক হয়েছে পরের বছর সেই তারিখেই যাকাত আদায় করতে হবে?

৩.যাকাত ফরয হলেই কি উক্ত নারীর জন্য কুরবানী ওয়াজিব হবে?

৪. উক্ত নারীর নিকট ৫ হাজার টাকা আছে, সে কোনো ইনকাম করে না। তাহলে কি কুরবানী ওয়াজিব হবে? এবং সে কিভাবে আদায় করবে?

তার পক্ষ থেকে বাবা কিংবা স্বামী আদায় করে দিতে পারবে?

৫. কুরবানী আদায় করার আগ মুহূর্তে যদি কুরবানী করার মতো অর্থ তার হস্তগত হয়,তবে কি সে নিজেই কুরবানী দিবে?

বাবা কিংবা স্বামী তার পক্ষ থেকে আদায় করে দিলে তার আদায় হবে কি?

৬. স্বর্ণের পাশাপাশি কত টাকা ক্যাশ থাকলে তার জন্যে কুরবানী ওয়াজিব হবে?

1 Answer

0 votes
by (629,460 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী স্বর্ণের ক্ষেত্রে যাকাতের নিসাব হল বিশ মিসকাল। -সুনানে আবু দাউদ ১/২২১; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক  হাদীস ৭০৭৭, ৭০৮২
আধুনিক হিসাবে সাড়ে সাত ভরি।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا بَكْرُ بْنُ خَلَفٍ وَمُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى قَالَا حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ بْنُ مُوسَى أَنْبَأَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ إِسْمَعِيلَ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ وَاقِدٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ وَعَائِشَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَأْخُذُ مِنْ كُلِّ عِشْرِينَ دِينَارًا فَصَاعِدًا نِصْفَ دِينَارٍ وَمِنْ الْأَرْبَعِينَ دِينَارًا دِينَارًا

ইবনু ‘উমার ও ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)  থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি বিশ দিনার বা তার চেয়ে কিছু বেশি হলে অর্ধ দিনার এবং চল্লিশ দিনারে এক দিনার (যাকাত) গ্রহণ করতেন।

ইবনে মাজাহ ১৭৯১ ইরওয়াহ ৮১৩।
দারাকুতনী ১৮৭৯, ১৮৯২।

সাড়ে ৫২ ভরি রুপা হলে তার উপর যাকাত ফরজ। 
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
عن أبي سعيد الْخُدْرِي رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : «ليس فيما دون خمس أَوَاقٍ صدقة، ولا فيما دون خمس ذَوْدٍ صدقة، ولا فيما دُونَ خمسة أَوْسُقٍ صدقة».  
[صحيح] - [متفق عليه]

আবূ সা‘ঈদ আল-খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “পাঁচ উকিয়ার কম রৌপ্যমুদ্রায় যাকাত নেই এবং পাঁচটি উটের কমের ওপর যাকাত নেই। পাঁচ ওয়াসাক এর কম শষ্যের ওপর যাকাত নেই।”
(বুখারী,মুসলিম)

শরীয়তের বিধান হলো যদি কাহারো কাছে সোনা-রুপা, টাকা-পয়সা কিংবা বাণিজ্য-দ্রব্য- এগুলোর কোনোটি পৃথকভাবে পূর্ণ  নিসাব পরিমাণ না থাকে, কিন্তু এসবের একাধিক সামগ্রী এ পরিমাণ রয়েছে, যা একত্র করলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার সমমূল্য বা তার চেয়ে বেশি হয় তাহলে এক্ষেত্রে সকল সম্পদ হিসাব করে যাকাত দিতে হবে।
(মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস ৭০৬৬,৭০৮১; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ৬/৩৯৩)

আরো জানুনঃ  

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নের বিবরণ মতে উক্ত নারীর মালিকানায় থাকা স্বর্ণ যদি সাড়ে ৭ ভরি না হয়,তার মালিকানায় যদি কোনো রুপা না থাকে,তার মালিকানায় যদি দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত কোনো টাকা না থাকে,সেক্ষেত্রে তার উপর যাকাত ফরজ হবেনা।

হ্যাঁ যদি তার মালিকানায় থাকা স্বর্ণ সাড়ে ৭ ভরি বা তার চেয়ে বেশি হয় বা তার মালিকানায় যদি কোনো রুপা থাকে অথবা তার মালিকানায় যদি দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত কোনো টাকা থাকে,সেক্ষেত্রে নেসাব পরিমান সম্পদের উপর বছর পূর্ণ হলে তার উপর যাকাত ফরজ হবে।

★এমতাবস্থায় তার অনুমতি নিয়ে তার পক্ষ থেকে তার বাবা কিংবা স্বামী যাকাত আদায় করে দিলে উক্ত নারীর যাকাত আদায় হবে।

(০২)
হ্যাঁ। 
তবে আগে আদায় করলেও হবে।

সেক্ষেত্রে বছর পূর্ণ হওয়ার দিন যদি আরো কিছু টাকা বা আরো কিছু রুপা বা আরো কিছু স্বর্ণ তার মালিকানায় যোগ হয়, সেক্ষেত্রে ওই অতিরিক্ত টাকা বা রুপা বা স্বর্ণেরও (হিসাব করে) যাকাত দিতে হবে।

(০৩)
কুরবানীর দিন গুলিতে কাহারো নেসাব পরিমান সম্পদ থাকলেই তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে।
,
শরীয়তের বিধান হলো,প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থমস্তিষ্ক সম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী, যে ১০ যিলহজ্ব ফজর থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। টাকা-পয়সা, সোনা-রূপা, অলঙ্কার, বসবাস ও খোরাকির প্রয়োজন আসে না এমন জমি, প্রয়োজন অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সকল আসবাবপত্র কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।

আর নিসাব হল স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি, রূপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি, টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্ত্তর ক্ষেত্রে নিসাব হল এর মূল্য সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া। 

(০৪)
হ্যাঁ, তার উপর কুরবানী ওয়াজিব। 

এক্ষেত্রে সে চাইলে কাহারো থেকে ঋণ নিয়ে কুরবানী দিতে পারে অথবা চাইলে কোন সম্পদ বিক্রি করে কোরবানি দিতে পারে।

(০৫)
তার অনুমতি নিয়ে তার বাবা কিংবা স্বামী তার পক্ষ থেকে কুরবানী আদায় করে দিলে তার কুরবানী আদায় হবে। 

(০৬)
উক্ত স্বর্ণের মূল্য আর তার কাছে থাকা দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত টাকা সব মিলে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরির সমমূল্য হলেই তাত উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে। 

যাহা বর্তমান বাজারে ৮৫-৯০ হাজার টাকার মতো হয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...