আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
30 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ। আমি ১ মাস আগে ওয়াদা করেছিলাম, যে এই গুনাহটি আমি আর করবো না, যদি করি তাহলে টানা ২০ দিন রোযা রাখবো না হয় আমার ইবাদত কবুল হবে না। এখন আজকে আবারো শয়তানের ওয়াসওয়াসায় পরে সেই গুনাহটি কিরে ফেলেছি। এখন খুবই অনুশোচনা হচ্ছে। আমার কি এখন আর কোনো ইবাদত কবুল হবে না?! আমি যদি খাস দিলে তওবা করি এবং সেই গুনাহটি আর না করি তাহলে কি আল্লাহ আমাকে কবুল করবেন না? নাকি প্রথমে টানা২০ দিন রোজা রাখতেই হবে। এর আগে কি আর কোনো ইবাদত কবুল হবে না? আমি খুব ভয়ে আছি এটা নিয়ে। এবং আমি খুবই অনুতপ্ত। আমি রোজা রাখবো ইনশাআল্লাহ কিন্তু এখনই রাখা সম্ভব না। এখন কি না রাখা পর্যন্ত আমার কোনো ইবাদত কবুল হবে না?

1 Answer

0 votes
by (623,190 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://www.ifatwa.info/375 নং ফাতাওয়ায় উল্লেখ রয়েছেঃ- 
হযরত আয়েশা রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋﻦ ﻋﺎﺋﺸﺔ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﺎ ﻋﻦ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ ﻣﻦ ﻧﺬﺭ ﺃﻥ ﻳﻄﻴﻊ ﺍﻟﻠﻪ ﻓﻠﻴﻄﻌﻪ ﻭﻣﻦ ﻧﺬﺭ ﺃﻥ ﻳﻌﺼﻴﻪ ﻓﻼ ﻳﻌﺼﻪ
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর অানুগত্যশীল কোনো জিনিষ দ্বারা মান্নত করবে,সে যেন তা পূর্ণ করে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর অবাধ্যতা মূলক কোনো জিনিষ দ্বারা মান্নত করবে, সে যেন তা পূর্ণ না করে।(সহীহ বোখারী-৬৩১৮)

যে কোনো জিনিষের মান্নত ওয়াজিব হবে না অর্থাৎ মান্নত করলেই যে শুধু ওয়াজিব হয়ে যাবে বিষয়টা এমন নয়। বরং কুরবতে মাকসুদাহ তথা ইবাদত হিসেবে গণ্য এমন কোনো জিনিষের মত কিছু দ্বারা মান্নত করতে হবে, তবেই তা ঐ ব্যক্তির উপর ওয়াজিব হিসেবে গণ্য হবে। যেমন, কোনো কাজ হয়ে গেলে  প্রাণী জবাহ করার দ্বারা মান্নত করা। এই মান্নত গ্রহণযোগ্য হবে।কেননা প্রাণী যবেহ করা ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। যেহেতু আমরা প্রাণী যবেহ করেই ঈদে কুরবানি করি,ইত্যাদি ইত্যাদি।

যে জিনিষের মান্নত করা হবে,হুবহু সেটাই আদায় করতে হবে? নাকি এর মূল্য বা অন্য কিছু দ্বারা আদায় করলে মান্নত আদায় হয়ে যাবে?এ সম্পর্কে ফুকাহায়ে কেরামদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।
জুমহুর উলামায়ে কেরাম বলেন, হুবহু ঐ জিনিষ দ্বারাই মান্নত আদায় করতে হবে।হানাফি মাযহাবের উলামায়ে কেরাম এক্ষেত্রে কিছুটা শীতিলযোগ্য বিধান প্রণয়ন করেছেন।তারা বলেন,
যদিও মান্নতকৃত জানোয়ারকে সদকা করাই উত্তম ছিলো, তথাপিও তার মূল্য দিয়ে দিলে মান্নত আদায় হয়ে যাবে। (নাওয়াযিলুল ফাতাওয়া-১০/৩০২;ফাতাওয়ায়ে দারুল উলূম-১২/৭৩)


https://ifatwa.info/18326/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
কোনো মানত সহিহ হওয়ার জন্য এবং শরিয়তের দৃষ্টিতে তা মানত হিসেবে ধর্তব্য হওয়ার জন্য কয়েকটি অপরিহার্য শর্ত রয়েছে। নিচে সংক্ষিপ্তভাবে আমরা সেই বিষয়গুলো উল্লেখ করার প্রয়াস পাবো।
১. মানতকৃত বিষয়টি মৌলিক ইবাদত হতে হবে, অন্য কোনো ইবাদতের ভূমিকা বা সহায়ক নয়। যেমন— নামাজ, রোজা, হজ, যাকাত ইত্যাদি মৌলিক ইবাদত; কিন্তু উজু করা, রোজার নিয়ত করা, হজ আদায়ের উদ্দেশ্যে সফর করা, যাকাত প্রদানের মানসে খাদ্য-বস্ত্র ক্রয় করা ইত্যাদি মৌলিক ইবাদত নয়; বরং পূর্বোক্ত ইবাদতসমূহের ভূমিকা ও সহায়ক।
২. মানত সহিহ হওয়ার জন্য মানতকৃত বিষয়ের শ্রেণিভুক্ত কোনো কিছু পারিভাষিক ওয়াজিব বা ফরজে আইন হতে হবে। মানতকৃত বিষয়ের শ্রেণিভুক্ত কোনো কিছু যদি ফরজে আইন বা পারিভাষিক ওয়াজিব না হয়ে থাকে, তাহলে মানত সহিহ হবে না। যেমন কেউ যদি মাদরাসায় পড়ার বা পড়ানোর মানত করে, কিবা মসজিদে প্রবেশের মানত করে, অথবা রাস্তা-ব্রিজ নির্মাণের মানত করে, কিবা কোনো অসুস্থ ব্যক্তির সেবা করার মানত করে ইত্যাদি ক্ষেত্রে তার মানত শরিয়তের দৃষ্টিতে মানত হিসেবে ধর্তব্য হবে না। (মানত হিসেবে ধর্তব্য না হলেই যে তা আর করা যাবে না— এমন তো নয়।)
মানতকৃত বিষয়টির শ্রেণিভুক্ত কোনো কিছু যদি পারিভাষিক ওয়াজিব বা ফরজে আইন হয়ে থাকে, তখনই মানত সহিহ হবে। যেমন কেউ শাওয়ালের ছয় রোজা রাখার মানত করলো, তার এই মানত সহিহ হয়ে যাবে; যেহেতু শাওয়ালের ছয় রোজার শ্রেণিভুক্ত কোনো কিছু ফরজে আইন রয়েছে, আর তা হলো রমযানের রোজা। রোজা, নামাজ, সদকা, ইতিকাফ, ওয়াকফ, তাওয়াফ, দাসমুক্তি, কোরআন তেলাওয়াত, দুরুদ পাঠ, তাসবিহ আদায় ইত্যাদি ক্ষেত্রে মানত সহিহ হবে।

৩. মানতের ক্ষেত্রে মনের নিয়তের বিবেচনা করা হয় না; বরং মুখে উচ্চারিত শব্দের বিবেচনা করা হয়। ভুলেও যদি কোনো কিছুর মানত মুখে উচ্চারণ করে বসে, তাহলেও তা পূর্ণ করা অপরিহার্য হয়ে যায়। বিয়ে, তালাক, কসম এবং মানতের ক্ষেত্রে ভুল বা দুষ্টুমির কোনো বিবেচনা নেই। ভুলে বা দুষ্টুমি করে কোনো কিছু বললেও তা অবধারিত হয়ে যায়।

৪. মানত শর্তযুক্ত হতে পারে, আবার শর্তহীনও হতে পারে। শর্তহীন মানত, যেমন আমি এ বছর শাওয়ালের ছয় রোজা রাখবো। আর শর্তযুক্ত মানত, যেমন আমার ছেলে যদি সুস্থ হয়, তাহলে আমি এতো টাকা সদকা করবো।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরণ মতে এটি কসম নয়।
মান্নতের অন্তর্ভুক্ত। 
এক্ষেত্রে আপনাকে ২০ দিন রোযা রাখতে হবে।

তবে এর আগেও আপনার দোয়া ইবাদত কবুল হবে।
আপনার তওবা কবুল হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...