আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
41 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (11 points)
আসসালামু আলাইকুম। আমার বিয়ের সাত বছর চলছে। বিয়ের শুরুর দিকে আমাদের দুইজনের মধ্যে বোঝাপড়াটা হয়ে ওঠেনি। দুজনেই চিকিৎসক। প্র্যাক্টিসিং আলহামদুলিল্লাহ। , আমার স্বামী খুব ভালো মানুষ ও রেস্পন্সিবল। কিন্তু, উনি, খুব একটা বাসায় সময় দিতে পারেন না, এটা কোন অসুবিধা না। সমস্যা যেটা, সেটা হল, উনি সারাক্ষণই নেগেটিভ কথা বলতে থাকেন, তুমি এটা করতে পারো  নাই ওটা করতে পারো নাই, বিয়ের শুরুর দিকে,, আমরা আমার ভাসুরের বাসায় থাকতাম। সেখানে আমার জা কে কাজে হেল্প করতাম।কিন্তু আমার হাজবেন্ড ভাবেন আমি জাইয়ের বাসায় কোন কাজ করতাম না। এটা নিয়েও প্রায়ই খোটা দেয়। বাসায় আসার পর থেকে,সারাক্ষণই আমার দোষ, না পারা সব কিছু বলতে থাকে।এর মধ্যে আবার খেয়াল করে আমি মন খারাপ করলাম কিনা । আমি বলি আসলে সব সময় নিতে পারি না। তাকে একটু বুঝিয়ে বলতে গেলে, রাগ করে কথা বলা বন্ধ করে দেয়। এই যে কথার মাধ্যমে কষ্ট দিচ্ছে, এটা বুঝাতে পারিনা। আমিও নিতে পারি না। সব সময় সব সময় আর পারছি না। তাকে একটু বুঝিয়ে বলতে গেলে, মাঝেমধ্যে কোন রিঅ্যাক্ট করে বসলে (পরে যদিও সরি বলি, মাফ চাই) কথা বলা বন্ধ থাকে দিনের পর দিন, আমার স্বামীর পক্ষ থেকে। এই যে সে কথা বলা বন্ধ রাখতেছে,অন্য বিছানায় ঘুমাচ্ছে , এতে কি আমার  গুনাহ হবে? আমি তো শুধু ওনাকে  বলছিলাম একটু সফট হয়ে কথা বলতে।খুব কষ্ট পাই । হুজুর এ অবস্থায় আমার কি করা উচিত। আমি নিজেও, চাকরি করতাম, উচ্চতর পড়াশোনা করতাম। প্রফেশনাল জেলাসির জন্য, সেটা ছেড়ে বাসায় আছি। দোয়া করবেন আমার জন্য।আর আমি কি করতে পারি ? আমার কি গুনাহ হচ্ছে

1 Answer

0 votes
by (629,460 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم

https://www.ifatwa.info/430 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, 
তদরূপ স্বামীর উপর স্ত্রীরও কিছু অধিকার ও হক্ব রয়েছে যেমন, বিয়ের পর স্ত্রীর ব্যক্তিগত অধিকার রক্ষা করে স্ত্রীকে একটি বাসস্থান ও খাদ্য এবং বস্র দান করা।এটা স্বামীর উপর  স্ত্রীর অধিকার ওহক্ব এবং শরীয়ত কর্তৃক ওয়াজিব। এ সম্পর্কে কোরআনের ঘোষনা হলঃ
ﻭَﻋَﺎﺷِﺮُﻭﻫُﻦَّ ﺑِﺎﻟْﻤَﻌْﺮُﻭﻑ
নারীদের সাথে সদ্ভাবে জীবন-যাপন কর। (সূরা নিসা-১৯)

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ عَمْرِو بْنِ الأَحْوَصِ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي أَنَّهُ، شَهِدَ حَجَّةَ الْوَدَاعِ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ وَذَكَّرَ وَوَعَظَ فَذَكَرَ فِي الْحَدِيثِ قِصَّةً فَقَالَ " أَلاَ وَاسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ خَيْرًا… أَلاَ وَحَقُّهُنَّ عَلَيْكُمْ أَنْ تُحْسِنُوا إِلَيْهِنَّ فِي كِسْوَتِهِنَّ وَطَعَامِهِنَّ " .

 

সুলাইমান ইবনু আমর ইবনুল আহওয়াস (রহঃ) হতে তার পিতার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ

বিদায় হজ্জের সময় তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলেন। তিনি আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা ও গুণগান করলেন এবং ওয়াজ-নাসীহাত করলেন। এ হাদীসের মধ্যে বর্ণনাকারী একটি ঘটনা বর্ণনা করে বলেন, তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ স্ত্রীদের সাথে ভালো আচরণের উপদেশ নাও। ... জেনে রাখ! তোমাদের প্রতি তাদের অধিকার এই যে, তোমরা তাদের উত্তম পোশাক-পরিচ্ছদ ও ভরণপোষণের ব্যবস্থা করবে। (সুনানে তিরমিযী ১১৬৩)

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে রয়েছে-

تجب السكني لها عليه في بيت خال

মর্থার্থ: স্ত্রীর জন্য আলাদা ঘরের ব্যবস্থা করা স্বামীর উপর আবশ্যক। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াত, ১/৬০৪)

স্ত্রীর সাথে উত্তম ব্যবহার করা।
স্ত্রীর সঙ্গে প্রয়োজনে একান্তে বসা ও খোশগল্প করা।

অবসরে স্ত্রীর সঙ্গে একান্তে বসে কিছু গল্পগুজব করা, তার মনের কথা জানা-বোঝা, তার কোনো চাহিদা থাকলে তা জেনে নিয়ে পূরণ করা স্বামীর জন্য জরুরি। 
প্রয়োজন মাফিক স্ত্রীকে সময় দেয়া।

বাড়িতে প্রবেশ করে স্ত্রীকে সালাম দেওয়া।

স্ত্রীর প্রতি উত্তম ধারণা রাখা।
স্ত্রীর প্রয়োজনীয় চাহিদা যথাসম্ভব  পূরন করা।
স্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করা ও তাকে গুরুত্ব দেওয়া।

স্ত্রীকে তার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ দেওয়া

স্ত্রীকে তার মা-বাবা, ভাই-বোন ও নিকটাত্মীয়দের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ দেওয়া উচিত। আর এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে নিজে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া বা মাহরাম ব্যক্তিকে সঙ্গে দিয়ে পাঠাতে হবে। ইফকের ঘটনাকালে আয়েশা (রা.) অসুস্থ হলে তিনি পিতার বাড়িতে গমনের জন্য রাসুল (সা.)-এর কাছে অনুমতি চান। রাসুল (সা.) তাঁকে অনুমতি দিলে তিনি পিতৃগৃহে চলে যান। (বুখারি, হাদিস : ২৬৬১

আরো জানুনঃ- 
https://ifatwa.info/26084/

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শত ব্যস্ততার মধ্যেও উনার বিবিগণের সাথে খোশগল্প করতেন। সময় দিতেন।

আয়েশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত।

عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَرَأَيْتَ لَوْ نَزَلْتَ وَادِيًا وَفِيهِ شَجَرَةٌ قَدْ أُكِلَ مِنْهَا، وَوَجَدْتَ شَجَرًا لَمْ يُؤْكَلْ مِنْهَا، فِي أَيِّهَا كُنْتَ تُرْتِعُ بَعِيرَكَ؟ قَالَ: «فِي الَّذِي لَمْ يُرْتَعْ مِنْهَا» تَعْنِي أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمْ يَتَزَوَّجْ بِكْرًا غَيْرَهَا-
তিনি বলেন যে, আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! মনে করুন আপনি এমন একটি ময়দানে গিয়ে পৌঁছলেন, যেখানে একটি গাছের কিছু অংশ খাওয়া হয়ে গেছে। আর এমন কটি গাছ পেলেন, যার কিছুই খাওয়া হয়নি। এর মধ্যে কোন গাছের পাতা আপনার উটকে খাওয়াবেন। মহানবী (ﷺ) উত্তরে বললেন, যে গাছ থেকে কিছুই খাওয়া হয়নি। এ কথার দ্বারা আয়েশা (রাযিঃ) এর উদ্দেশ্য ছিল মহানবী (ﷺ) তাঁকে ছাড়া অন্য কোন কুমারীকে শাদী করেননি।(সহীহ বোখারী-৪৭১০) 

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/109795

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরন মতে এক্ষেত্রে আপনার গুনাহ হবেনা। 

পারিবারিক ভাবে মুরব্বিদের মাধ্যমে আপনার স্বামীকে বুঝালে আশা করি ফলপ্রসূ হবে,ইনশাআল্লাহ। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...