আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
67 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (11 points)
আসসালামু আলাইকুম। আমি একজন নারী চিকিৎসক, একজন মা। সন্তানের বয়স ছয় বছর। আমার স্বামী আলহামদুলিল্লাহ দ্বীনদার। সেও একজন চিকিৎসক।  আমি এমবিবিএস শেষ করে, উচ্চতর পড়াশোনা (পাঁচ বছর মেয়াদী) করছি.। এর তিন বছর এখনো বাকি আছে। আমি গাইনি নিয়ে পড়ছি। গাইনিতে,  পোস্ট গ্রাজুয়েশন করার সময়,  পরিবারে যথাযথ সময় দেয়া সম্ভব হয় না, এটা আমাদের ডাক্তার মহলে সবাই জানে। এমন অনেক দিন হবে, নাইট ডিউটি, ছুটির দিনে ডিউটি ইত্যাদি করা লাগতে পারে। এতে করে অনেক সময়,স্বামীর হক  আদায়ের সমস্যা হতেও পারে। যদিও আমার স্বামী খুব চুপচাপ স্বভাবের  একজন। নিজের মধ্যে চাপিয়ে রাখতে পছন্দ করেন।  নিজের আবেগ গুলি প্রকাশ করেন না। আমাদের মধ্যে, প্রায়ই খুব সমস্যা হয়, খুব ঝামেলা হয়,  আমার স্বামীর দুই বছরের একটা ডিগ্রী কমপ্লিট হয়েছে। এজন্য, নিজেদের মধ্যে , উনি আমার ডিগ্রি নিয়ে, আমার মনে হয় উনি খুব জেলাস ফিল করেন। যেহেতু আমার ডিগ্রিটা বড় ডিগ্রি।

আমার স্বামী, সাধারণত, এমন মানুষ, উনি চান, উনি আমার সব দোষ, ছোট ছোট দোষগুলি, উনি ভুলে যাবেন আমার সামনে,আমি চুপ করে শুনবো , কোন উত্তর করব না, কোন রিয়েক্ট করবো না। কোন রিজন দেখাতে পারবো না। সে ঠিক সব সময়। ভুলেও যদি কখনো, কোন রিয়েক্ট করে ফেলি,একটা কথা বলে ফেলি , সে, রাগ করে বসে থাকবে। এটা সবচেয়ে বেশি হয়েছে, আমার ডিগ্রী চলাকালীন সময়ে। প্রচুর রাগ হয়েছে। সংসার, ছোটখাটো কারণে, ডিভোর্স পর্যন্ত চলে গিয়েছে। আমার অনেক স্ট্রেস থাকে, মাঝেমধ্যে, অনবরত দোষ বলে যাওয়ার মধ্যে, অনেক সময়, হঠাৎ করে কোন কারণ দেখিয়ে ফেলি, তখন, এটা নিয়ে প্রচুর ঝামেলা তৈরি হয়ে যায়। উনি ওনার ফ্যামিলি কে পর্যন্ত জানায়। আমার স্বামী প্রত্যেকটা বিষয়ে উনার ফ্যামিলিকে জানায়। ফ্যামিলির মানুষদের সাথে শেয়ার করতে খুব পছন্দ করে।আমি কোর্স  এ থাকা অবস্থায়, আমার স্বামী , দ্বিতীয় কোন বাচ্চার চিন্তা করতেও চায়না।কখনো কোন বাচ্চা নিতেও চায়না।
এখন আপাতত, এতকিছু স্ট্রেস না নিতে পেরে, আপাতত, ছুটি নিয়েছি।এখন জানিনা, আমার স্বামী  আমাকে সব বিষয়ে দোষারোপ করে, আমার ছোটখাটো ভুলের বিষয়েও। কিন্তু , উনার যেহেতু কোর্সে (৫ বছরের) চান্স হয় নাই , এজন্য,  উনি আসলে আমার ছোটখাটো নরমাল কথাবার্তাও মনে হয় সহ্য করতে পারেন না। এটা আমার মনে হয়। এমতাবস্থায় কি করা উচিত।

২।গাইনি তে বড় ডিগ্রী অর্জন করলে মহিলা মানুষদের সেবা করা সম্ভব হবে ইনশাআল্লাহ। কিন্তু, গাইনীতে ক্যারিয়ারের সময়, আগামী তিন বছর, অনেক সময়, নাইট ডিউটি, শুক্রবারে ডিউটি, স্বামীকে প্রপার  সময় দেওয়া, সম্ভব হবে না হয়তো, এক্ষেত্রে,স্বামীর হক আদায়  করতে, সমস্যা হলে (যদিও আমার স্বামী মুখে কিছু বলেন না, হকের বিষয়ে)। কিন্তু আমি মনে করতেছি, এক্ষেত্রে কি আল্লাহ তায়ালা আমাকে মাফ করবেন?

৩.স্বামীর সাথে, এরকম প্রফেশনাল জেলাসির (দুজনই ডাক্তার, ওয়াইফের  ডিগ্রি বড় , স্বামীর ছোট ডিগ্রী) এরকম অবস্থা তৈরি হলে, ওয়াইফের, ইসলামিক দৃষ্টিতে, , স্বামীর সন্তুষ্টির জন্য কি করা উচিত? তাকে বোঝানো সম্ভব না।কোর্স ছেড়ে দেওয়া উচিত?

৪.বাচ্চাটা কে একজন খাদিমার কাছে রেখে যেতে হয়। এতে করে, গাইনির এই  প্রেসারের   ডিউটি করতে গিয়ে, বাচ্চার হক  আদায় ঠিক মত হবে কিনা, বুঝতে পারছি না।
৫।ক্যারিয়ারের জন্য, নিজের বাবার বাড়ি থেকেও একটা চাপ আছে । কেন ছেড়ে দিব।

৬।ক্যারিয়ার করাকালীন সময়ে, আমার স্বামীর কোন ইচ্ছা নেই, পরবর্তী সন্তান গ্রহণের। এমনকি, পড়াশোনা শেষ করার পরেও। এটা কে কিভাবে হ্যান্ডেল করব?
৭।অনেক সময় ডিউটিতে থাকার সময়, পুরুষ রোগের লোক, অথবা পুরুষ অফিসের কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলতে হয়, অনেক জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি, রোগীদের জন্য, ব্যবহার করতে হয়। অনেক, গীবতের মধ্যেও বাধ্য হয়ে থাকতে হয়। গীবতে অংশগ্রহণ করতে হয়। এই অবস্থা কিভাবে ডিল করব?
দয়া করে প্রত্যেকটা পয়েন্ট কে, সুন্দর করে বুঝিয়ে বললে ভাল হত। কি করবো ঠিক বুঝতে পারছি না। প্রত্যেকটা পয়েন্টের আনসার করলে, অনেক অনেক বেশি উপকৃত হতাম। জাযাকাল্লাহ

1 Answer

0 votes
by (664,170 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
ওয়াবিসা ইবনে মা'বাদ রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻭﻋﻦ ﻭﺍﺑﺼﺔَ ﺑﻦِ ﻣَﻌْﺒِﺪٍ  ﻗَﺎﻝَ : ﺃَﺗَﻴْﺖُ ﺭﺳﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪ ﷺ ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺟِﺌْﺖَ ﺗﺴﺄَﻝُ ﻋﻦِ ﺍﻟﺒِﺮِّ؟ » ﻗُﻠْﺖُ : ﻧَﻌَﻢْ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺍﺳْﺘَﻔْﺖِ ﻗَﻠْﺒَﻚَ، ﺍﻟﺒِﺮُّ : ﻣَﺎ ﺍﻃْﻤَﺄَﻧَّﺖْ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲُ، ﻭﺍﻃْﻤَﺄَﻥَّ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻘَﻠْﺐُ، ﻭﺍﻹِﺛﻢُ : ﻣَﺎ ﺣﺎﻙَ ﻓﻲ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲِ، ﻭﺗَﺮَﺩَّﺩَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺼَّﺪْﺭِ، ﻭﺇِﻥْ ﺃَﻓْﺘَﺎﻙَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻭَﺃَﻓْﺘَﻮﻙَ » ﺣﺪﻳﺚٌ ﺣﺴﻦٌ، ﺭﻭﺍﻩُ ﺃﺣﻤﺪُ ﻭﺍﻟﺪَّﺍﺭﻣِﻲُّ ﻓﻲ " ﻣُﺴْﻨَﺪَﻳْﻬِﻤﺎ ."
তিনি বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট গেলাম।রাসূলুল্লাহ সাঃ আমাকে বললেন,তুমি কি নেকীর কাজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার জন্য এসেছ?আমি বললাম জ্বী হ্যা, ইয়া রাসূলাল্লাহ!
তখন তিনি আমাকে বললেন,তুমি তোমার অন্তরের নিকট ফাতওয়া জিজ্ঞাসা করো।নেকি হল সেটা যার উপর অন্তর প্রশান্তিবোধ করে,এবং যে জিনিষের উপর অন্তর শান্ত থাকে।আর গোনাহ হল সেটা,যা অন্তরে অশান্তি সৃষ্টি করে নাড়িয়ে দেয়,এবং অন্তরকে দ্বিধান্বিত করে ফেলে।যদিও উক্ত কাজ সম্পর্কে মুফতিগণ বৈধতার ফাতাওয়া প্রদাণ করুক না কেন। (মুসনাদে আহমদ-১৭৫৪৫)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১) স্বামীর আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করাই উচিত।
(২) স্বামীর সাথে আলোচনা করে, স্বামীর অনুমতি নিয়ে গেলে কোনো সমস্যা হবে না।
(৩) যথাসম্ভব স্বামী বুঝানো উচিত। স্ত্রীর ভালবাসার সামনে স্বামীর কোনো ইগোই শেষ পর্যন্ত ঠিকে থাকে না। তাই চেষ্টা করুন।
(৪) যতসময় বাসায় থাকবেন, ততসময় ভালো করে সন্তানকে সময় দেয়ার চেষ্টা করুন।
(৫) ইসলাম ও মুসলমান নারীদের সেবার নিয়তে আপনি ডিগ্রি অর্জন করতে পারেন।এমনকি করাই উচিত।
(৬) পরিবার ব্যবস্থা মহব্বতের উপর দাড়ানো থাকে। ভালবাসা সুভাস ছড়িয়ে আপনাকে সন্তান নেয়ার জন্য স্বামীকে রাজী করিয়ে নিতে হবে।
(৭) যতটুকু সম্ভব কর্কশ ভাষায় নিরাপদ দূরত্ব রেখে কথা বলতে পারবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...