আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
28 views
in পবিত্রতা (Purity) by (110 points)
১। ফজরের আর ৭ মিনিট ছিল, তাই পাজামা চেঞ্জ করেই ওযু করে নামাযে দাঁড়িয়ে যাই। নামায শেষে লজ্জাস্থানে টিস্যু ধরে দেখি যে সাদাস্রাব টিস্যুতে লেগে গেলো,। এমন না যে যোনীর ভেতরে টিস্যু প্রবেশ করানো হয়েছে, লজ্জাস্থানের এরিয়াতে টিস্যু ধরেছি আর সাদ্রাস্রাব দেখা গেছে।
তবে সাদাস্রাব যে লজ্জাস্থানের বাইরে ছিল এরকম না,


নামায হয়েছে কিনা,? নাকি দোহরাতে হবে?


২। গতকাল তাহাজ্জুদের সময় ও সেইম অবস্থা হয়। যদি নামায দোহরাতে হয়, তবে তাহাজ্জুদের  নফল নামায টাও কি দোহরাতে হবে?


৩। একবার বাস এক্সিডেন্ট করি,তখন বান্ধবীর পা ভেঙে যায় আর আমিও আহত হই। তাকে নিয়ে এক্সিডেন্ট স্পট থেকে নিজ জেলায় এম্বুলেন্সে পৌঁছাতে পৌঁছাতে রাস্তায় যোহর ও আসর মিস যায়। যদিও হাসপাতালে পৌঁছে আসরের ওয়াক্ত ছিল,কিন্তু পায়ের আঘাতের  জন্য হাঁটতে পারছিলাম না,এক্স-রে করা সহ সবমিলিয়ে মাগরিব পর্যন্ত মিস গেছে। পরে রাতে সব কাযা পড়ছি।

প্রশ্ন হলো- আমার তখন কী করণীয় ছিল? ওযু ছিল না, এম্বুলেন্সে ওযু করার তো সুযোগ নাই,

এমন হালতে কি ওযু বাদেও নামায পড়া দরকার ছিল?

পরে এসে আবার কাযা পড়ে নেওয়া লাগত?


আর বান্ধবীর পা ভেঙে যাওয়ায় ওকে দেখা দরকার ছিল,রাস্তা উঁচুনিচু হওয়ায় ওর কষ্ট হচ্ছিল, আমি বাদে কেউ ছিল না

যদি ওযু থাকত-ও,বা নামাযে বসতাম -ও, নামাযের মাঝে ওকে ধরে রাখা কি জায়েজ হতো?

ভবিষ্যতে নিজের/অন্য কারো এমন পরিস্থিতি না হোক,কিন্তু যদি হয়,তাই মাসআলা জেনে রাখার নিয়তে প্রশ্ন করা

1 Answer

0 votes
ago by (620,460 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত,  নিশ্চয় রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
إِنَّمَا الْوُضُوءُ مِمَّا خَرَجَ ، وَلَيْسَ مِمَّا دَخَلَ
শরীর থেকে যা কিছু বের হয় এ কারণে অযু ভেঙ্গে যায়, প্রবেশের দ্বারা ভঙ্গ হয় না। (সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী ৫৬৮)

https://www.ifatwa.info/2142 নং ফাতাওয়ায় উল্লেখ রয়েছেঃ- 
হানাফি মাযহাবের নির্ভরযোগ্য কিতাব ফাতাওয়ায়ে শামীতে এ সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যখ্যা বর্ণিত রয়েছে।
في الدرالمختار-ج:١ـص:١٣٤
(وينقضه) خروج منه كل خارج (نجس) بالفتح ويكسر (منه) أي من المتوضئ الحي معتادا أو لا، من السبيلين أو لا (إلى ما يطهر) بالبناء للمفعول: أي يلحقه حكم التطهير. ثم المراد بالخروج من السبيلين مجرد الظهور وفي غيرهما عين السيلان ولو بالقوة، لما قالوا: لو مسح الدم كلما خرج ولو تركه لسال نقض وإلا لا، كما لو سال في باطن عين أو جرح أو ذكر ولم يخرج،

জীবিত পবিত্রতম কোনো ব্যক্তির প্রস্রাব-পায়খানার রাস্তা দিয়ে অথবা শরীরের অন্যান্য অঙ্গ দিয়ে কোনো নাজাসত বের হলে অজু ভঙ্গ হয়ে যাবে।চায় স্বাভাবিক কিছু বের হোক বা অস্বাভাবিক কিছু বের হোক।প্রস্রাব-পায়খানার রাস্তা দিয়ে যৎ সামান্য কিছু বের হলেই অজু চলে যাবে।আর অন্যান্য অঙ্গ থেকে শুধুমাত্র নাজাসত প্রবাহিত হলেই অজু ভঙ্গ হবে।চায় জোরে হোক বা আস্তে।কেননা ফুকাহায়ে কিরাম লিখেন,যদি কেউ রক্তকে বের হওয়া মাত্রই যখমের মুখ থেকে মুছে নেয়,যদি উক্ত ছেড়ে দেয়া হত,তবে প্রবাহিত হত,এমন প্রকারের যখমের রক্তের কারণে অজু ভেঙ্গে যাবে।নতুবা অজু ভঙ্গ হবে না।তবে যদি রক্ত যখমের ভিতর দৌড়াদৌড়ি করে ,অথবা চোখ কিংবা পুরুষাঙ্গের ভিতরে দৌড়াদৌড়ি করে,কিন্তু বাহিরে আসে না,তাহলে এমন রক্তের কারণে অজু ভঙ্গ হবে না।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,

এখানে সাদা স্রাব বাহিরে আসার দ্বারা লজ্জাস্থানের যে ছিদ্র আছে সেই ছিদ্রের বাইরে বেরিয়ে আসাটাই উদ্দেশ্য। শরীরে/কাপড়ে লাগা আবশ্যক নয়। সুতরাং সাদা স্রাব লজ্জাস্থানের যে ছিদ্র আছে সেই ছিদ্রের বাইরে বেরিয়ে আসলেই আপনার অযু ভেঙ্গে যাবে।

উম্মে আলক্বামাহ তথা মার্জনা (مَوْلاَةِ عَائِشَةَ) হইতে বর্ণিত,
عن أم علقمة أَنَّهَا قَالَتْ : " كَانَ النِّسَاءُ يَبْعَثْنَ إِلَى عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ بِالدُّرْجَةِ فِيهَا الْكُرْسُفُ فِيهِ الصُّفْرَةُ مِنْ دَمِ الْحَيْضَةِ يَسْأَلْنَهَا عَنْ الصَّلَاةِ فَتَقُولُ لَهُنَّ لَا تَعْجَلْنَ حَتَّى تَرَيْنَ الْقَصَّةَ الْبَيْضَاءَ تُرِيدُ بِذَلِكَ الطُّهْرَ مِنْ الْحَيْضَةِ "
তিনি বলেনঃ (ঋতুমতী) স্ত্রীলোকেরা আয়েশা (রাঃ)-এর নিকট ঝোলা বা ডিবা (دُرْجَة) পাঠাইতেন, যাহাতে নেকড়া বা তুলা (كُرْسُفْ) থাকিত। উহাতে পাণ্ডুবৰ্ণ ঋতুর রক্ত লাগিয়া থাকিত। তাহারা এই অবস্থায় নামায পড়া সম্পর্কে তাহার নিকট জানিতে চাহিতেন। তিনি [আয়েশা (রাঃ)] তাহাদিগকে বলিতেনঃ তাড়াহুড়া করিও না, যতক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ সাদা (বর্ণ) দেখিতে না পাও। তিনি ইহা দ্বারা ঋতু হইতে পবিত্রতা (طُهْر) বুঝাইতেন।(মুয়াত্তা মালিক-১২৭)

কুরসুফ ঐ তুলা বা তুলা জাতীয় জিনিষকে বলা হয়,যা পবিত্রতা/অপবিত্রতাকে পরীক্ষা করার জন্য মাসিকের রাস্তার প্রবেশ মুখে রাখা হয়।

এর বিধান সম্পর্কে রাহরুর রায়েক গ্রন্থে বর্ণিত রয়েছে-
ثُمَّ وَضْعُ الْكُرْسُفِ مُسْتَحَبٌّ لِلْبِكْرِ فِي الْحَيْضِ وَلِلثَّيِّبِ فِي كُلِّ حَالٍ وَمَوْضِعُهُ مَوْضِعُ الْبَكَارَةِ وَيُكْرَهُ فِي الْفَرْجِ الدَّاخِلِ. اهـ.
وَفِي غَيْرِهِ أَنَّهُ سُنَّةٌ لِلثَّيِّبِ حَالَةَ الْحَيْضِ مُسْتَحَبَّةٌ حَالَةَ الطُّهْرِ وَلَوْ صَلَّتَا بِغَيْرِ كُرْسُف ٍجَازَ.
অবিবাহিত মহিলাদের জন্য মাসিকের সময় কুরসুফ ব্যবহার করা মুস্তাহাব।আর বিবাহিত মহিলার ক্ষেত্রে সর্বাবস্থায়ই সেটার ব্যবহার মুস্তাহাব।কুরসুফ রাখার স্থান হল, মাসিকের রাস্তার প্রবেশ মূখ। কিন্তু লজ্জাস্থানের ভিতরে কুরসুফ প্রবেশ করানো মাকরুহ।
অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, বিবাহিত মহিলার ক্ষেত্রে মাসিকের সময় সুন্নাত এবং পবিত্র সময়ে মুস্তাহাব। বিবাহিত/অবিবাহিত উভয়-ই যদি কুরসুফ ব্যতীত নামায পড়ে নেয়,তাহলে নামাযে কোনো সমস্যা হবে না।
বাহরুর রায়েক-১/২০৩)

ইবনে আবেদীন শামী রাহ লিখেন-
(ويكره وضعه) وضع جميعه (فى الفرج الداخل)لأنه يشبه النكاح بيدها محيط-
সমস্ত কুরসুফ কে লজ্জাস্থানের ভিতরে প্রবেশ করানো মাকরুহ।কেননা ইহা হস্তমৈথুনের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
(মাজমু'আতু রাসাঈলে ইবনে)

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/497

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(১-২)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সাদা স্রাব যদি লজ্জাস্থানের যে ছিদ্র আছে সেই ছিদ্রের বাইরে বেরিয়ে না আসে,বরং যোনীর ভেতরে টিস্যু প্রবেশ করানোর কারনে টিস্যুতে সাদা স্রাব দেখা যায়,সেক্ষেত্রে আপনার ফজরের নামাজ ও তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় হয়েছে।

পুনরায় আদায় করতে হবেনা।

(০৩)
এক্ষেত্রে পানির ব্যবস্থা করে অযু করে/পানির ব্যবস্থা না থাকলে তায়াম্মুম করে সেখানে কিবলামুখী হয়ে নামাজ পড়বেন।
নামাজের মধ্যে তাকে পুরো সময় ধরে রাখা যাবেনা। জরুরতে কোনো কোনো রুকনে ২/১ তাসবিহ সমপরিমান সময় ধরতে পারবেন।

তবে নামাজের মধ্যে রক্ত লাগা স্থানে ধরা যাবেনা।

গাড়িতে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়া,রুকু সেজদাহ সঠিক ভাবে আদায় করা না গেলে গন্তব্য স্থলে গিয়ে সেই নামাজ দোহরাতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...