আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
8 views
ago in কুরবানী (Slaughtering) by (1 point)

আমার কাছে ৫ ভরি স্বর্ণ, মোহরানা বাবদ ৩০ হাজার টাকা পাওনা এবং ২০ হাজার টাকা নগদ আছে, এর উপর কি আমার কুরবানী ওয়াজিব হবে? (এটা আমার মালিকানায় আছে ৬ মাসের কম সময় অর্থাৎ এক বছর হয়নি) আর যদি নগদ ২০ হাজার টাকা কাউকে করয দিই তখন ও কি কুরবানী ওয়াজিব হবে?

1 Answer

0 votes
ago by (618,930 points)
জবাবঃ- 
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَنْ وَجَدَ سَعَةً فَلَمْ يُضَحِّ فَلَا يَقْرَبَنَّ مُصَلَّانَا

আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে কুরবানী করে না, সে যেন অবশ্যই আমাদের ঈদগাহের নিকটবর্তী না হয়। (মুসনাদ আহমাদ ৮২৭৩, ইবনে মাজাহ ৩১২৩, হাকেম ৭৫৬৫-৭৫৬৬)

শরীয়তের বিধান হলো,প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থমস্তিষ্ক সম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী, যে ১০ যিলহজ্ব ফজর থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। টাকা-পয়সা, সোনা-রূপা, অলঙ্কার, বসবাস ও খোরাকির প্রয়োজন আসে না এমন জমি, প্রয়োজন অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সকল আসবাবপত্র কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।

আর নিসাব হল স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি, রূপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি, টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্ত্তর ক্ষেত্রে নিসাব হল এর মূল্য সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া। 

সুতরাং কাহারো কাছে যদি স্বর্ণের পাশাপাশি টাকা থাকে,তাহলে তার জন্য করনীয় হলো এই টাকা আর উক্ত স্বর্ণের মূল্য হিসেব করে সারে বাহান্ন ভরি রুপার সমমূল্য হয়েছে কিনা?
হলে তার উপর যাকাত,কুরবানী আবশ্যক হবে।

যিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখ হতে যিলহজ্ব মাসের ১২ তারিখ সূর্যাস্ত, এ সময়ের মাঝে কোনো সময়ে আপনি যদি সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি সমপরিমাণ মূল্যের (প্রায় ৮৫০০০/৯০০০০ টাকার) মালিক হোন,আর তাহা যদি দৈনন্দিন প্রয়োজন অতিরিক্ত হয়,সেক্ষেত্রে আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে, নতুবা কুরবানী ওয়াজিব হবেনা।

★শরীয়তের বিধান হলো, অনাদায়ী মোহরের টাকা যাকাতের হিসাব থেকে বাদ যাবে না। তবে যদি উক্ত ব্যাক্তি চলতি যাকাতবর্ষের মধ্যেই মোহর আদায় করে দেওয়ার ইচ্ছা করেন তাহলে সেক্ষেত্রে ঐ পরিমাণ টাকা যাকাতের হিসাব থেকে বাদ যাবে।

উল্লেখ্য, বিশেষ কোনো ওজর ছাড়া মহর আদায়ে বিলম্ব করা উচিত নয়। বরং একসাথে না পারলে ধীরে ধীরে হলেও তা আদায় করে দেওয়া উচিত।
(নাজমুল ফাতওয়া ৩/৩৩,ইমদাদুল আহকাম ২/২১১)

قال فی العالمگیریۃ ولوکون لہ ضیعۃ تساوی ثلثۃ الاف ولاتخرج مایکفی لہ ولعیالہ اختلفوافیہ قال محمد بن مقاتل :یجوز لہ اخذ الزکوٰۃ اھ(ص۱۲۲ج۱)وفیہ وذکر البزروی شرح الجامع الکبیر قال مشائخنا رحمھم اللہ فی رجل علیہ مھر موٗ جل لامرأتہ وھولایرید اداء ہ لایجعل مانعاًمن الزکوٰۃ لعدم المطالبۃ بہ عاد ۃ وانہ حسن ایضاًھکذا فی جواھر الفتاوی اھ(ص۱۱۱ج۱)-
সারমর্মঃ-
আমাদের মাশায়েখগন রহঃ সেই ব্যাক্তির ব্যপারে বলেছেন, যার উপর তার স্ত্রীর মোহর মুয়াজ্জাল রয়েছে রয়েছে,আর সে তাহা আদায় করার ইচ্ছায় নেয়,তাহলে এটি যাকাত আদায়ে বাধা প্রদানকারী হবেনা।

বাদাইউস সানায়ে' নামক গ্রন্থে আছেঃ- 
وقال بعض مشايخنا: إن المؤجل لايمنع؛ لأنه غير مطالب به عادةً، فأما المعجل فيطالب به عادةً فيمنع، وقال بعضهم: إن كان الزوج على عزم من قضائه يمنع، وإن لم يكن على عزم القضاء لا يمنع؛ لأنه لايعده دينًا وإنما يؤاخذ المرء بما عنده في الأحكام".
( كتاب الزكاة، فصل في شرائط  الفرضية، ٢ / ٦، ط:  سعيد)
সারমর্মঃ-
মোহরে মুয়াজ্জাল যাকাত আদায়ে বাধা প্রদানকারী হবেনা।
কেননা সেটি চাওয়া হয়না।
কিছু উলামায়ে কেরামগন বলেছেন যে যদি স্বামী তাহা আদায় করার প্রবল ইচ্ছাধারী হয়,সেক্ষেত্রে তাহা যাকাত আদায়ে বাধা প্রদানকারী হবে।
নতুবা তাহা যাকাত আদায়ে বাধা প্রদানকারী হবেনা।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,   
যিলহজ্ব মাসের ১০ তারিখের আগেই যদি আপনি আপনার মালিকানায় থাকা সমস্ত টাকা আপনার স্ত্রীকে মোহরানা আদায় হিসেবে দিয়ে দেন,সেক্ষেত্রে আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবেনা।

অন্যথায় প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...