বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
যে ব্যক্তি নামাযে ইচ্ছাকৃত কিছু খাবে বা পান করবে,তার নামায ফাসিদ হয়ে যাবে।
ইবনুল মুনযির রাহ বলেন,
" أَجْمَعَ أَهْلُ الْعِلْمِ عَلَى أَنَّ الْمُصَلِّيَ مَمْنُوعٌ مِنْ الْأَكْلِ وَالشُّرْبِ ، وَأَجْمَعَ كُلُّ مَنْ نَحْفَظُ عَنْهُ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ عَلَى أَنَّ على مَنْ أَكَلَ أَوْ شَرِبَ فِي صَلَاةِ الْفَرْضِ عَامِدًا الْإِعَادَةَ "
সমস্ত উলামায়ে কেরাম একমত যে,নামাযে কোনো কিছু খাওয়া বা পান করা নিষিদ্ধ।এবং যে ব্যক্তি নামাযে ইচ্ছাকৃত কিছু খেয়ে ফেলবে বা পান করে ফেলবে,তাকে নামায দোহরাতে হবে।(আল-আওসাত-৫/১০৯)
في النصاب رجل أكل أو شرب قبل الشروع في الصلاة وبقي في فمه فضل طعام أو شراب فأكل أو شرب ما بقي فيه لا تفسد صلاته وعليه الفتوى وكذا لو كان بين أسنانه شيء وهو في الصلاة فابتلعه لم تفسد صلاته وإن كان مقدار الحمصة وهو قول أبي حنيفة وأبي يوسف - رحمهما الله تعالى - كذا في المضمرات.
যদি কেউ নামায শুরু পূর্বে খেয়ে থাকে,এবং তার মুখে কিছু অবশিষ্ট থাকে,এবং সে গিলে ফেলে,তাহলে তার নামায ফাসিদ হবে না।ঠিকতেমনিভাবে যদি কারো দাতের ফাকে কিছু থাকে,এবং সে খেয়ে নেয়,তাহলে তার নামায ফাসিদ হয়ে যাবে,যদিও তা এক ছানা বরাবর হয় না কেন? এটা ইমাম আবু হানিফা ও আবু ইউসুফ রাহ এর মত।
(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/১০২)
প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১) যদি থুথুর পরিমান একছোলার চেয়ে বেশি হয়, এবং তা গিলে ফেলা হয়, তাহলে নামাজ ফাসিদ হবে না।
(২)
ফরয গোসলের ক্ষেত্রে সমস্ত শরীর একবার ধৌত করা ফরয।সুতরাং পানি পৌছতে বাধা দেয় এমন কোনো জিনিষ শরীরের সাথে লেগে থাকতে পারবে না।বরং এমন জিনিষকে শরীর থেকে পৃথক করা বা পৃথক রাখা ফরয।মারাক্বিল ফালাহ কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-
ولا بد من زوال ما يمنع من وصول الماء للجسد كشمع وعجين
শরীরে পানি পৌছতে বাধা দানকারী জিনিষ শরীর থেকে পৃথক রাখতে হবে।যেমন- মোম,বা মাখানো আটা।
মারাক্বিল ফালাহ-১/৪৫
ঠিক তেমনি হাদাছে আসগর থেকে পবিত্রতা অর্জনের উদ্দেশ্যে ওজুর ক্ষেত্রে ওজুর সমস্ত অঙ্গকে ধোত করা ফরয।এবং পানি পৌছতে বাধা প্রদাণ কারী সকল জিনিষকে শরীর থেকে পৃথক রাখা জরুরী।
فِي فَتَاوَى مَا وَرَاءَ النَّهْرِ إنْ بَقِيَ مِنْ مَوْضِعِ الْوُضُوءِ قَدْرُ رَأْسِ إبْرَةٍ أَوْ لَزِقَ بِأَصْلِ ظُفْرِهِ طِينٌ يَابِسٌ أَوْ رَطْبٌ لَمْ يَجُزْ وَإِنْ تَلَطَّخَ يَدُهُ بِخَمِيرٍ أَوْ حِنَّاءٍ جَازَ
যদি ওজুর অঙ্গ সমূহের মধ্য থেকে সুই বরাবর কোনো অংশতে পানি না পৌছে,অথবা নকের মূল অংশের সাথে শুকনা বা ভিজা মাঠি লেগে এঠে যায়,তাহলে ওযু বিশুদ্ধ হবে না।কেউ যদি মেহিদি বা খামির(এক প্রকার রঙ্গিলা গাস) দ্বারা হাতকে রঙ্গিয়ে দেয়,তাহলে তার ওজু হবে।
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৪
গোসলের ক্ষেত্রে সমস্ত শরীরে পানি পৌছানো ফরয,এ মূলনীতির আলোকে সম্পূরক হিসেবে একটি মাস'আলা ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে এভাবে বর্ণিত রয়েছে-
وَفِي الْجَامِعِ الصَّغِيرِ سُئِلَ أَبُو الْقَاسِمِ عَنْ وَافِرِ الظُّفُرِ الَّذِي يَبْقَى فِي أَظْفَارِهِ الدَّرَنُ أَوْ الَّذِي يَعْمَلُ عَمَلَ الطِّينِ أَوْ الْمَرْأَةِ الَّتِي صَبَغَتْ أُصْبُعَهَا بِالْحِنَّاءِ، أَوْ الصَّرَّامِ، أَوْ الصَّبَّاغِ قَالَ كُلُّ ذَلِكَ سَوَاءٌ يُجْزِيهِمْ وُضُوءُهُمْ إذْ لَا يُسْتَطَاعُ الِامْتِنَاعُ عَنْهُ إلَّا بِحَرَج-
আবুল কাসিম রাহ কে লম্বাটে নক বিশিষ্ট ব্যক্তির ওজু সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো?
-যে নকের মধ্যে ময়লা জমে গেছে বা যে ব্যক্তি মাঠির কাজে ব্যস্ত থাকে, বা যে মহিলা নিজ হাতকে মেহদী দ্বারা রঙ্গিয়েছে,অথবা চামড়া বিক্রেতা বা পেইন্টার- উপরুক্ত ব্যক্তির নকের কোনে কোনোকিছু আটকে যাওয়া অস্বাভাবিক নয়।
তখন আবুল কাসিম রাহ জবাবে বলেছিলেন,
প্রত্যেকরই ওজু হবে।কেননা এত্থেকে বেঁচে থাকা প্রায় অসম্ভব।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৪)
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই বোন!
শরীরে এমন কিছু লেগে থাকলে যা ওজু গোসলের সময় শরীরে পানি পৌছতে বাধা প্রদাণ করে।শরীর এমন জিনিষ লেগে থাকাবস্থায় ওজু-গোসল কিছুই হবে না।বিশেষ প্রয়োজনে মূল নকের পরে অতিরিক্ত নক সম্পর্কে শরীয়তে কিছুটা শীতিলতা রয়েছে।যা আমরা ইতিপূর্বে দেখেছি।
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যদি নখের মূল অংশে ময়লা থাকে তাহলে অযু হবে না।কিন্তু যদি মূল নখের অতিরিক্ত অংশে ময়লা থাকে তাহলে অজু হবে।